নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মায়ার কানন

মাধব

নিশ্চুপ আঁধার...

মাধব › বিস্তারিত পোস্টঃ

উপহার

২৩ শে জুলাই, ২০১৬ সকাল ১১:৫৯

অফিস থেকে খন্দকার সাহেব বারবার ফোন করছেন প্রত্যয় কে , “প্রত্যয় আপনি কোথায় আছেন, কতটুকু সময়ে আপনার মিটিং শেষ হবে, মিটিং শেষে ফাইল টা নিয়ে আপনি গুলশানে চলে যাবেন। অতঃপর কাজ শেষ করে অফিসে আসবেন”। প্রত্যয়ের গুলশানে যাওয়ার কোন ইচ্ছে আসলে ছিলো না। অফিসে অলরেডি একটা মিথ্যে বলতে হয়েছে। ও সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত একটা কাজে এখন রিকশায় এলোমেলো ঘুরছে কিন্তু সেটা কতৃপক্ষ জানে না। খন্দকার সাহেবকে জানানো হয়েছে সে অফিসিয়াল একটা মিটিং য়ে ক্লায়েন্টের সাথে মহাখালী তে আছে। খন্দকার সাহেব সেই সুযোগটা কাজে লাগিয়েই ওকে গুলশানের ফাইলের কাজটা ধরিয়ে দিয়েছেন। তা যাই হোক আমার বন্ধু প্রত্যয় এখন বনানীতে মার্কেট খুঁজে বেড়াচ্ছে, তার জানা ছিলো না আজ বনানী এলাকায় মার্কেটগুলোতে সাপ্তাহিক বন্ধ।
সদ্য বিবাহিত বান্ধবীর সাথে দেখা করতে যাচ্ছে সে, সব কিছু আগে থেকেই প্ল্যান করা।বিয়ের অনুষ্ঠানে এক অদ্ভূত কারণে যেতে পারে নি বলেই আজকের এই সাক্ষাত। বান্ধবীর বিয়ের উপহার কিনবার জন্যেই তার এখন রিকশায় ভ্রমণ। বনানী বাজার বন্ধ পেয়ে সে কামাল আতাতুর্কের দিকে হাঁটা শুরু করলো, একসময় ওর ভার্সিটির ক্যাম্পাস ছিলো এখানে। অনেক বছর পর এদিকটায় এসে সে নস্টালজিক হয়ে পড়লো, সেই যে তার নানা রঙ্গে পার করা দিনগুলো। এখন অবশ্য ঐসব ভাবার সময় নেই। সে যে অফিস ফাঁকি দিয়ে বের হয়েছে সেটা ভুলে গেলে চলছে না।
কি উপহার সদ্য বিবাহিত বান্ধবী কে দিবে সেটা আগে থেকে ঠিক করা ছিলো না। ঘুরতে ঘুরতে একটা গিফট শো রুমের দোকান খোলা পেলো সে। অনেক কিছুই দেখছিলো কিন্তু কি দেওয়া যেতে পারে সেটা ভেবে পাচ্ছিলো না। ওদিকে অফিস থেকে একটু পর পর খন্দকার সাহেবের ফোন। অবশেষে একটা ফটো অ্যালবাম পছন্দ হলো তার , মনে মনে ভাবলো জীবনের ঐ বিশেষ মুহূর্তের ছবিগুলো হয়তো সারাজীবন তার এই ফটো অ্যালবামেই স্থান পাবে।
সকাল সাড়ে এগারোটা নাগাদ সে বান্ধবীর বিশ্ববিদ্যালয়ে পৌঁছালো, কিছু সময় পরিচিত সেই লনে অপেক্ষার পর বান্ধবী ক্লাস শেষ করে প্রত্যয়ের সাথে দেখা করলো। কি অপূর্ব সুন্দরী ই না লাগছে মাইশা কে। শাড়ি পরিহিতা লেকচারার যাকে কিনা প্রত্যয় আগে কত শতবার দেখেছে সে যেন নতুন করে দেখলো মাইশাকে। বিয়ে পরবর্তী জীবনে মেয়েদের সৌন্দর্য যে অতিমাত্রায় বেড়ে যায় আজ সে তা দেখতে পেলো। খানিকটা সময় গল্প করে সে বুঝে গেলো বান্ধবী তার দ্বিতীয় জীবনে বেশ সুখেই আছে।
প্রত্যয় কে চলে আসতেই হতো, তাই সে বিয়েতে উপস্থিত না হতে পারায় দু:খ প্রকাশ করে উপহারের প্যাকেট টি মাইশার হাতে দিয়ে ভার্সিটি থেকে বের হয়ে আসলো।
জীবনের কিছু গল্প থাকে যা একসময় না একসময় লেখা হয়েই যায়। প্রত্যয়ের ভালোবাসা ঐ উপহারের গল্পে জড়িয়ে আছে আর ছবিগুলোর গল্পে জড়িয়ে আছে সেই ফটো অ্যালবাম।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.