নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সময়ের চাহিদা মতো মানববিকাশ মূলক যুগোপযোগী ধর্ম~ মহাধর্ম -এর আবির্ভাব ঘটেছে। \'মহাধর্ম\' হলো অন্ধবিশ্বাস মুক্ত, খোলা মনের, যুক্তিবাদী আধ‍্যাত্মিক চেতনা সম্পন্ন, আত্মবিকাশকামী মানুষদের উপযোগী একটি ধর্ম।

মানব ধর্মই মহাধর্ম

মহাধর্ম: মানবধর্ম ভিত্তিক অন্ধবিশ্বাস মুক্ত মানব বিকাশ মূলক ধর্ম। মানুষের মৌলিক ধর্ম।

মানব ধর্মই মহাধর্ম › বিস্তারিত পোস্টঃ

মানবধর্ম আসলে কী

২১ শে এপ্রিল, ২০১৯ সকাল ১০:১৮

মানবধর্ম আসলে কী
~মহর্ষি মহামানস

সংক্ষেপে: যাকে ধারণ ক’রে মানুষ ভালভাবে বাঁচতে পারে, —অপরকে বাঁচাতে পারে এবং আত্মবিকাশের পথে নিজে অগ্রসর হওয়ার সাথে সাথে অপরকে অগ্রসর হতে সাহায্য করিতে পারে, তা-ই হলো মানব ধর্ম। আর এই মানব ধর্মই হলো মহাধর্ম।

কর্ম ও ভোগের মধ্য দিয়ে— জ্ঞান-অভিজ্ঞতা লাভের দ্বারা ক্রমশ মনোবিকাশ তথা চেতনা-বিকাশের পথে এগিয়ে চলাই মানুষের স্বাভাবিক ধর্ম— মৌলিক ধর্ম এবং অন্যতম প্রধান ধর্ম। আর, এ-ই হলো মৌলিক মানবধর্ম।

আমরা সবাই এই একই পথের পথিক— ক্রমবিকাশমান চেতনার পথে। তবে, কেউ চলেছে জ্ঞাতে, আর কেউ অজ্ঞাতে। কেউ পিছিয়ে— আর কেউ এগিয়ে। কেউ অতি ধীর গতিতে এগিয়ে চলেছে, আর কেউ দ্রুত গতিতে। কেউ চেতন-আলোকবিহীন অন্ধকারাচ্ছন্ন পথে অজ্ঞান-অন্ধত্বের কারণে হোঁচট খেতে খেতে, অত্যন্ত দুঃখ-কষ্ট-যন্ত্রনা ও অসুস্থতার মধ্য দিয়ে এই পথ অতিক্রম ক’রে চলেছে, আর কেউ চেতন-আলোকে উজ্বল পথে— স্বচ্ছন্দে— জ্ঞানানন্দে স্ফূর্তিতে পূর্ণ-বিকাশের লক্ষ্যে এগিয়ে চলেছে এই একই পথ ধরে। কেউ মানবধর্ম সম্পর্কেই সজাগ নয়, ওয়াকিবহাল নয়, আর কেউ সজাগ-সচেতনভাবে মানবধর্ম পালন ক’রে চলেছে।

একটাই জগত, পথও একটাই, শুধু চেতনার পার্থক্যের জন্য এক একজনের এক এক দশা, এবং এই পথ ও জগত— এক একজনের কাছে এক এক প্রকার উপলব্ধ হয়। শুধু তা-ই নয়, জ্ঞান ও চেতনার স্বল্পতার কারণে অনেকে এই পথ—এই জগতকেই দুঃখ-কষ্ট-যন্ত্রনাময় নরক ক’রে তোলে।

এরজন্য অনেকাংই দায়ী স্বার্থান্বেষীদের দ্বারা পরিচালিত অন্ধ-বিশ্বাস ভিত্তিক প্রচলিত ধর্ম। ধর্ম--- যাকে ধারণ-পালন করে আমাদের মানব-বিকাশের পথে এগিয়ে যাওয়ার কথা, উল্টে সেই ধর্মই যদি আমাদের বিপথগামী--- নিম্নগামী করে তোলে, তো সেই মিথ‍্যার বেসাতিকে কি ধর্ম বলা যাবে?

এই অজ্ঞান-অন্ধত্ব জাত অশান্তি থেকে মুক্ত হয়ে স্বচ্ছন্দে সানন্দে এগিয়ে যেতে চাইলে, জ্ঞান ও চেতনা-বিকাশের পথে অগ্রসর হতে হবে আমাদের মানব ধর্ম— মহাধর্মের পথ ধরে। (মহাধর্ম সম্পর্কে জানতে, এই ওয়েবসাইট দেখুনঃ http://www.mahadharma.wix.com/bangla

এই প্রসঙ্গে বলি, আমাদের মধ্যে দুটি (প্রায়) বিপরিতমুখী বল-রূপ স্বভাব-ধর্ম কাজ করছে। একটি হলো— আত্ম-বিকাশের তাড়না, যা আমাদেরকে পূর্ণ-বিকাশ লাভের দিকে এগিয়ে নিয়ে চলেছে, এবং সেইসাথে অন্যান্যদের থেকে কিছুটা বিচ্ছিন্ন ক’রে— দূরে সরিয়ে দিচ্ছে। আর, অপরটি হলো— একত্বের টান, যা আমাদেরকে পরস্পর বেঁধে রেখেছে— একত্র ক’রে রেখেছে।

সমস্ত মহাবিশ্ব জুড়েই এই কার্যকলাপ প্রত্যক্ষ করা যাবে। একদিকে মহাবিশ্ব ক্রমশই বিস্ফারিত ও প্রস্ফূটিত হয়ে চলেছে, আবার, একের সাথে অপরকে বেঁধে রেখেছে— টেনে ধরে রেখেছে মহাকর্ষ-অভিকর্ষের মতো টান। আসলে, আদিতে সব বা সবাই তো একই ছিলো, সেই এক থেকে বহু হলেও, নাড়ির টান রয়ে গেছে কোষে কোষে— অনু-পরমানুতে।

মানব ধর্ম— হলো মানুষের প্রকৃত ধর্ম— আদি ধর্ম। আত্ম-বিকাশের ধর্ম। আমরা সেই মানবধর্মকে ভুলে গিয়ে, নানারূপ ধর্ম ও অধর্ম নিয়ে অজ্ঞান-অন্ধের মতো মোহাচ্ছন্ন হয়ে মেতে আছি। চারিদিকে একটু সচেতন দৃষ্টিতে তাকালেই দেখা যাবে— দিনকে দিন ক্রমশ ভয়ানক পরিণতীর দিকে এগিয়ে চলেছি আমরা। আজকের এই ঘোর সঙ্কটকালে— এই সর্বনাশা করুণ অবস্থা থেকে রক্ষা পেতে, অবিলম্বে মানব ধর্মকে পুনঃপ্রতিষ্ঠিত ক’রে, মানব ধর্ম অনুশীলন করতে হবে আমাদের।

কেউ কেউ মনে করেন, শুধু সৎ ও সহৃদয় হয়ে ওঠাই ‘মানবধর্ম’। কিন্তু মানবধর্ম মানে শুধু সৎ ও সহৃদয় হয়ে ওঠাই নয়, মানবধর্ম হলো পূর্ণ বিকশিত মনের মানুষ হয়ে ওঠার জন্য অবশ্য পালনীয় ধর্ম। একজন বিকশিত মানুষ সতঃস্ফূর্তভাবেই সৎ ও হৃদয়বান হয়ে থাকেন।

মহাধর্ম হলো— মানবধর্ম ভিত্তিক অন্ধ-বিশ্বাসমুক্ত মানব-বিকাশমূলক অধ্যাত্মিক-বিজ্ঞান অনুসারী যুগোপযোগী ধর্ম। মহাধর্ম হল— এ’কালের মহা বৈপ্লবিক উত্তাল তরঙ্গ— প্রকৃত মানব বিকাশের জন্য। এ’হলো অত্যুৎকৃষ্ট (সুস্থ—শান্তিপূর্ণ ও যথেষ্ট বিকশিত) জীবন লাভের শ্রেষ্ঠ পথ। মহাধর্ম গ্রহন করতে, এবং দিকে দিকে সংগঠন গড়ে তুলতে, মুক্তমনের সত্যপ্রেমী যুক্তিবাদী আত্ম-বিকাশকামী জ্ঞানপথের উদ্যোগী মানুষদের আহ্বান জানাই।

“চতুর্দিকে মানবকেন্দ্রিক যত অশান্তি, যত সমস্যা ও সঙ্কট ক্রমশ ভয়ানক রূপ ধারণ করতে চলেছে, তার অধিকাংশেরই মূল কারণ হলো— জ্ঞান ও চেতনার স্বল্পতা এবং শরীর ও মনের অসুস্থতা। আর, এর একমাত্র সমাধান হলো— সার্বিকভাবে মহাধর্ম অনুশীলন।”

শরীর ও মনের সুস্থতাসহ মনোবিকাশ এবং সার্বিক উন্নতি লাভের জন্য ‘মহাধর্ম গ্রহন করুন, এবং আত্ম-বিকাশ-যোগ অনুশীলন করুন। পূর্বের ধর্ম ত্যাগ না করেও মানব ধর্ম— ‘মহাধর্ম গ্রহণ করা যাবে। এই ধর্ম প্রচলিত ধর্মের মতো নয়। মানুষকে সচেতন ও সুস্থ করে তোলাই এই ধর্মের মূল উদ্দেশ্য।

মানবধর্ম অনুশীলনের মধ্যদিয়েই প্রকৃত মানব-বিকাশ এবং বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠা সম্ভব হবে। মানবজীবনে এক শুভ পরিবর্তন আসছে— মহাধর্ম-এর পথ ধরে।

কোনো কোনো ধর্মের মানুষ দাবি করেন, তাঁদের ধর্মই মানবধর্ম!

মানব ধর্ম দুই প্রকারের:
এক, মানুষের স্বাভাবিক ধর্ম। নেচরাল ফাংশন অফ হিউম্যান।

দুই, মানুষ গড়ার ধর্ম। এ'হলো একটা আরোপিত ব‍্যবস্থা বা সিস্টেম, যার দ্বারা প্রকৃত বিকশিত মানুষ গড়ে তোলা যায়। এর মধ্যে আবার দুটি ভাগ আছে। একটি হলো তাত্ত্বিক বা দার্শনিক দিক বা শিক্ষা। থিওরীটিক‍্যাল এডুকেশন। আর অপরটি হলো ব‍্যবহারীক দিক বা আচরণগত শিক্ষা। প্র‍্যাকটিকাল এডুকেশন।

যে পথ ও পদ্ধতিকে ধারণ করে একজন মানুষ নিজেকে--- নিজের স্বরূপে উপলব্ধি করতে পারে, আরও ভালো জীবন লাভে সসক্ষম হতে পারে, এবং পূর্ণ বিকশিত মানুষ হয়ে ওঠার লক্ষ্যে দ্রুত অগ্রসর হতে পারে, তা'ই হলো মহাধর্ম।

এখন, এইসব ধর্মের মধ্যে কি' সুন্দর প্রণালীবদ্ধভাবে
সেই শিক্ষা ব‍্যবস্থা আছে? কিছু কিছু তাদের গ্রন্থে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকলে হবে না। সেতো অনেক বইতেই থাকে।

প্রশ্ন হলো, ঐসব ধর্মের অন্তর্ভুক্ত যাঁরা আছেন, ধর্মগুলো যাঁরা নিষ্ঠার সাথে পালন (শিক্ষণ ও অনুশীলন) করছেন, তাঁরা সবাই ঐ ধর্মগুলো পালনের মধ্য দিয়ে যথেষ্ট বা পূর্ণবিকশিত মানুষ হয়ে উঠতে পেরেছেন তো?

বাস্তব কিন্তু তা' বলেনা। আদপে ঐসব ধর্মে মানুষ গড়ার প্রকৃত শিক্ষাই নেই। বরং ঐসব ধর্ম তার অধিনস্ত মানুষদের অজ্ঞান-অন্ধ কুসংস্কারাচ্ছন্ন বিপথগামী, এমনকি অমানুষ বা নীচ প্রবৃত্তির মানুষ তৈরী করে চলেছে। চারিদিকে তাকালেই এই বাস্তব সত্য প্রকটভাবে আমাদের কাছে ধরা দেবে।

কোনো ধর্মের বিরুদ্ধাচরণ করা, কোনো ধর্মকে শত্রু মনে করা আমাদের ধর্ম নয়। কিন্তু, গায়েপড়ে কেউ যদি শত্রুতা করতে আসে, তখন তার সমুচিত জবাব আমাদের দিতেই হবে।

মহামানবপ্রেমিক মহর্ষি মহামানস -এর আহ্বানে সাড়া দিয়ে মানবধর্মকে পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করুন। এই দুঃসহ যন্ত্রণাদায়ক কঠিন পরিস্থিতি থেকে মুক্ত হয়ে সর্বোত্তম জীবন লাভ করুন।

স্বতঃস্ফূর্তভাবে অথবা আরোপিতভাবে প্রকৃত মনোবিকাশের জন্য অনুসরণীয় ধর্মই হলো মানবধর্ম।

যাকে ধারণ করে মানুষ ভালোভাবে বাঁচতে ও সঠিকভাবে বিকাশ লাভ করতে পারে, তা-ই হলো ধর্ম। তাকেই বলা হয়~ মানব ধর্ম।

আর, যাকে ধারণ করে মানুষ অজ্ঞান-অন্ধের মতো নিম্নগামী হয়ে ভুল পথে এগিয়ে যায়, যা মানুষকে অজ্ঞানতার অন্ধকারে গহ্বরে ডুবিয়ে রাখে, তা' কখনোই ধর্ম নয়, তা' হলো অধর্ম।

যারা মানবধর্ম থেকে বিচ‍্যুত হয়েছে, অথবা মানবধর্ম বিস্মৃত হয়েছে, তাদের জন‍্য আজ প্রয়োজন 'মহাধর্ম' নামে আরোপিত মানবধর্ম।

সন্তানদের প্রকৃত মানুষ করে তুলতে চাইলে, শুরু থেকেই তাদেরকে মানবধর্মের পাঠ দিতে হবে। সন্তান অমানুষ তৈরি হলে, তারজন্য দায়ী হবেন আপনারাই, আর, তার কুফল শুধু আপনারাই নন, ভোগ করতে হবে গোটা মানব সমাজকেই।
তাই, আর বিলম্ব না করে, আজই মানবধর্মে দীক্ষিত হোন সবাই।

মানবধর্ম-ই মূর্ত হয়েছে 'মহাধর্ম' রূপে। মানব ধর্মই মহাধর্ম।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ২১ শে এপ্রিল, ২০১৯ বিকাল ৫:৫৯

রাজীব নুর বলেছেন: পোষ্ট টি খুব ভালো লেগেছে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.