নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সময়ের চাহিদা মতো মানববিকাশ মূলক যুগোপযোগী ধর্ম~ মহাধর্ম -এর আবির্ভাব ঘটেছে। \'মহাধর্ম\' হলো অন্ধবিশ্বাস মুক্ত, খোলা মনের, যুক্তিবাদী আধ‍্যাত্মিক চেতনা সম্পন্ন, আত্মবিকাশকামী মানুষদের উপযোগী একটি ধর্ম।

মানব ধর্মই মহাধর্ম

মহাধর্ম: মানবধর্ম ভিত্তিক অন্ধবিশ্বাস মুক্ত মানব বিকাশ মূলক ধর্ম। মানুষের মৌলিক ধর্ম।

মানব ধর্মই মহাধর্ম › বিস্তারিত পোস্টঃ

মুক্তমনার স্বরূপ

২১ শে এপ্রিল, ২০১৯ বিকাল ৫:৫৯

।। মুক্তমনার স্বরূপ ।।
~মহর্ষি মহামানস

সমস্ত প্রভাব থেকে মুক্ত, সম্পূর্ণ স্বাধীণ- সুস্থ ও জাগ্রত মনই হলো প্রকৃত মুক্ত মন। কিন্তু বাস্তবে তেমনটি পাওয়া প্রায় অসম্ভব, তাই, অনেকাংশে প্রভাব মুক্ত, স্বনিয়ন্ত্রনাধীণ- স্বাধীণ ও সুস্থ মনকেই আমরা মুক্তমন বলে থাকি।

এই মন কোনো কিছুর দ্বারা প্রভাবান্বিত হয়ে পড়লেও, -অচিরেই সে সেই প্রভাব থেকে নিজেকে অনেকাংশে বা সর্বাংশে মুক্ত করতে সক্ষম হয়। যে তার মনের অবস্থা বুঝতে পারে- মনকে দেখতে পারে- তেমন আত্মসচেতন মনই হলো- মুক্ত মন।

যে যত জ্ঞানী এবং যার সচেতন মন যত বেশী বিকশিত- সে ততটাই স্বাধীণ। সেই মনই হলো মুক্ত মন, যে যথেষ্ট জ্ঞান ও চেতনার অধিকারী, এবং ক্রমশ আরো বেশি জ্ঞান ও চেতনার অধিকারী হবার জন্য- নিজের মনোবিকাশের জন্য সদা সচেষ্ট থাকে।

জ্ঞান ও চেতনা যত বৃদ্ধি পাবে, ততই আমাদের মন প্রভাব মুক্ত- স্বতন্ত্র- স্বনিয়ন্ত্রনাধীন হয়ে উঠবে। এই প্রভাব শুধু বাইরের নয়, ভিতরেরও। ভিতরের সহজাত প্রবৃত্তি- বদ্ধমূল সংস্কার, অজ্ঞানতা প্রসুত মোহ-মায়া -মিথ্যা অহংকার প্রভৃতি থেকে মুক্তি ঘটলে- তবেই সে হতে পারবে মুক্তমনা।

খুবই কম জ্ঞান ও চেতনা সম্পন্ন মনকে চলতে হয়- বিশ্বাস, অন্ধ-আবেগ এবং তদভিত্তিক কল্পনা, আর কিছু সাধারণ যুক্তির সাহায্য নিয়ে। পরবর্তী উচ্চ চেতনা সম্পন্ন মন- তার সর্বোচ্চ বিকাশ না ঘটা পর্যন্ত, সে ক্রমশ প্রভাব মুক্ত হয়ে প্রায় নিরপেক্ষ যুক্তি-বিচার এবং তদভিত্তিক কল্পনার পথ ধরে এগিয়ে থাকে।

মুক্তমনা মানেই যে সে নাস্তিক হবে- এমন ধারণা ঠিক নয়। আবার, কোনো নাস্তিক যদি নিজেকে মুক্তমনা ভাবে, -সেটাও ঠিক নয়। কারো বিশ্বাসের সাথে কেউ সহমত না হলেই সে নাস্তিক হয়ে যায়না। নাস্তিক কখনোই মুক্তমনা হতে পারেনা। কারণ, নাস্তিক মানেই সে অন্য কোনো দর্শন বা তত্ত্বে দৃঢ় বিশ্বাসকারী।

‘বিশ্বাস’ কথাটি মুক্তমনার খাতায় নেই। সে এগিয়ে চলে- আপাত সত্যের হাত ধরে, পূর্ণ সত্যের লক্ষ্যে। যুক্তি-বিচার -প্রমানাদির মধ্য দিয়ে, তার ঈশ্বর-অস্তিত্বের উপলব্ধি ঘটতেই পারে। যদি সে সত্যানুসন্ধিৎসু হয়ে আত্মজ্ঞান লাভে এবং জীবন রহস্য উন্মোচনে (কে-কি-কেন-কোত্থেকে-কোথায় জানতে) ব্রতী হয়। যদি সে সত্যনিষ্ঠ হয়ে শিকরের সন্ধান করে। তবে, স্বভাবতই- তার ঈশ্বর আর সাধারণ বিশ্বাস প্রবণ মানুষের প্রচলিত ধারণার ঈশ্বর কখোনই এক রূপ হবেনা।

প্রকৃত মুক্তমনা হলো— অনেকটাই উন্নত মনের মানুষ— বিকশিত মনের মানুষ। যথেষ্ট জ্ঞান ও চেতনা বিকাশের ফলে সে মোহ-মায়া— বিশ্বাস-কুসংস্কারের বন্ধন থেকে অনেকটাই মুক্ত।

একজন মুক্তমনা কখনোই আত্মবিকাশ— মনোবিকাশের পথ থেকে সরে আসতে পারেনা— মানবধর্মকে অস্বীকার করতে পারেনা।

মুক্তমনা মানে সমাজ-সংসারের বাধা-বন্ধন, মানবতার দায়-দায়িত্ব থেকে মুক্ত— বাতুল বা বায়ু প্রকৃতির মানুষ নয়। কান্ডজ্ঞানহীন বায়ু রোগগ্রস্ত যথেচ্ছাচারী মানুষ আসলে অসুস্থ মানুষ। আমি মুক্ত— আমি মুক্ত বলে, চিৎকার করলেই, মুক্ত হওয়া যায়না।

চেতনার পূর্ণ বিকাশ না ঘটা পর্যন্ত, কারো পক্ষেই সম্পূর্ণতঃ জাগতিক বন্ধন থেকে মুক্ত হওয়া— পুরোপুরি স্বাধীন হওয়া সম্ভব নয়।

একটি অতিশিশু অথবা অতিশিশু-চেতন স্তরের মানুষকে, অথবা অস্ফূট মনের মানুষকে আমরা মুক্তমনা বলতে পারি না। কোনো অসুস্থ মনের মানুষকেও মুক্তমনা বলা যাবেনা।

প্রকৃত মুক্তমনা মানুষ সচরাচর দেখা না যাওয়ার ফলে, অনেকে ভুল ধারণার বশবর্তী হয়ে, এদেরকেই মুক্তমনা ব’লে, মনে ক’রে থাকে। প্রকৃত মুক্তমনা হতে হলে, অনেক উন্নত মনের— অনেকটাই বিকশিত মনের মানুষ হতে হবে। মনোবিকাশের পথই জীবনের পথ, পূর্ণ মনোবিকাশই আমাদের জীবনের মূল লক্ষ্য।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.