![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মহাধর্ম: মানবধর্ম ভিত্তিক অন্ধবিশ্বাস মুক্ত মানব বিকাশ মূলক ধর্ম। মানুষের মৌলিক ধর্ম।
মহামনন’ আত্মবিকাশ বা মনোবিকাশ শিক্ষাক্রমের ছাত্র-ছাত্রীদের প্রতি মহর্ষি মহামানস
যে বিষয়ে সাফল্যলাভ করতে চাও, —সেই বিষয়ের প্রতি যথেষ্ট আগ্রহী হতে হবে তোমাকে। শয়নে-স্বপনে —জাগরণে প্রায় সময়ে সেই বিষয়টি নিয়ে নিজের মধ্যে ধ্বনাত্মক (পজেটিভ) আলোচনা-পর্যালোচনা এবং কল্পনা-পরিকল্পনা চলবে। তবে এই চিন্তা-ভাবনাগুলি করতে হবে— সুশৃঙ্খলভাবে, এলোমেলো চিন্তা নয়। সেই সঙ্গে সুশৃঙ্খলভাবে চিন্তা-ভাবনা বিচার-বিশ্লেষণ করতেও শিখতে হবে। সত্যে উপনীত হতে, অথবা সত্য উদ্ঘাটন করতে— সুশৃঙ্খলভাবে চিন্তা করতে শিখতে হবে।
তার আগে দেখতে হবে, ঐ ব্যাপারে তোমার যোগ্যতা আছে কি না, যোগ্যতা অর্জন করতে সক্ষম হবে কি না। আর দেখতে হবে, —সুযোগ-সুবিধা —বাস্তব সম্ভাবনা আছে কি না, তোমার কাজের বা ঐবিষয়ের বাস্তবে কেমন চাহিদা আছে— কোথায় চাহিদা আছে।
বিষয়ের প্রতি আগ্রহ কম থাকলে, সেই বিষয়ের মধ্যে রসের সন্ধান করতে হবে। যারা ঐ বিষয়ে অভিজ্ঞ তাদের সাথে আলাপ-আলোচনা করতে হবে। ঐ বিষয়ের উপর পড়াশুনা— খোঁজ-খবর করতে হবে। ক্রমশ নিজের যোগ্যতা বাড়িয়ে তুলতে হবে।
পরিকল্পনা মাফিক ধাপে ধাপে— যুক্তিসম্মত পথ ধরে এগতে হবে তোমাকে। তার সাথে সুযোগ-সুবিধার সন্ধান ক’রে— তাকে কাজে লাগাতে হবে। অজ্ঞান-অন্ধের মতো শুধু নির্বিচারে তথ্য ও তত্ত্বগুলি গ্রহন করলেই হবেনা, বিষয়ের গভীরে প্রবেশ করতে হবে সত্যানুসন্ধানীর দৃষ্টি নিয়ে। নিজেকে সৃজনশীল ক’রে তুলতে হবে। নতুন নতুন দিশার সন্ধান এবং নতুন কিছু উদ্ভাবনের চেষ্টা করতে হবে এবং এ’ ব্যাপারে আগ্রহী হয়ে উঠতে হবে। যে কোনো কাজের আসল মজাই তো এইখানে!
মাঝে মাঝে নিরপেক্ষ অবস্থান থেকে সমস্ত বিষয়-বস্তু এবং তোমার কার্যকলাপ— সমস্ত কিছু পর্যবেক্ষণ করতে হবে। যদি করতে না পারো, তাহলে কিভাবে কিভাবে তা’ করতে হয় শিখতে হবে। আমাদের ‘মহামনন’ আত্মবিকাশ বা মনোবিকাশ শিক্ষাক্রমের মধ্যে— এ’সমস্ত কিছুই শেখানো হয়ে থাকে।
তোমার কাজ বা বিষয়ের প্রতি যত বেশী ভালবাসা থাকবে, তুমি সেক্ষেত্রে তত বেশী সাফল্য লাভ করতে পারবে। এই ভালবাসার মূলে রয়েছে— স্বার্থ। যাকিছু আমাদের স্বার্থ পুরণ করে— আমাদের আনন্দ বা তৃপ্তি দেয়, আমাদেরকে লাভবান ক’রে তোলে— আমাদের চাহিদা মেটায়, —তা-ই আমাদের ভাললাগে, তাকেই আমরা ভালবাসি।
অনেকসময় এর ব্যতীক্রম হতে দেখা যায়, আমাদের বোঝার ভুলে, আমাদের সচেতনতার অভাবে, অথবা উদাসীনতার কারণে। এর প্রতিকার হলেই— তখন তোমার বিষয় বা কাজটির প্রতি ভালবাসা জন্মাবে। যদি অসুস্থতার কারণে ভালবাসার অভাব ঘ’টে থাকে— সেক্ষেত্রে তারও প্রতিকার করতে হবে।
ছাত্র-জীবনেই হোক আর কর্ম-জীবনেই হোক, সাফল্য লাভের পিছনে— অনেক ক্ষেত্রেই গৃহ ও পরিবারের একটা বড় ভূমিকা থাকে। বাড়ির পরিবেশ, পরিবারের বিভিন্ন সদস্যদের আচরণ এবং আর্থিক অবস্থা অনুকূলে থাকলে, সার্বিক সুস্থতা থাকলে সাফল্যলাভ অনেকটাই সহজ হয়।
প্রতিকূল পরিবেশ-পরিস্থিতির সাথে লড়াই ক’রে সাফল্য লাভ করতে প্রয়োজন— অদম্য মনের জোর— তীব্র উচ্চাকাঙ্খা, আর সজাগ-সচেতন-যুক্তিবাদী মন। নানা উপায়— নানা পথ খুঁজে বার করতে গিয়ে অনেক শ্রম— অনেক সময়— অনেক শক্তি ব্যয় হলেও, ব্যক্তি অভিজ্ঞ—কর্মদক্ষ—কৌশলী—সচেতন এবং উদ্ভাবন ক্ষমতা সম্পন্ন হয়ে ওঠে। বাধা-বিঘ্ন —প্রতিকূলতার মধ্য দিয়ে এগিয়ে গিয়ে সাফল্য লাভে— আনন্দ লাভ হয় অনেক বেশি।
কিন্তু বিশেষ মানসিক সহায়তা না পেলে— সবার পক্ষে তা’ সম্ভব হয়ে ওঠেনা। তাই বাড়ির পরিবেশ, পরিবারের সদস্যদের আনুকূল্য বিশেষ প্রয়োজন হয়।
অনেক মা-বাবাকেই দেখা যায়, তাদের আচরণ— সন্তানের বিকাশের পক্ষে মোটেই সহায়ক নয়। দেখা যায়, অনেকেই তাদের সন্তানকে বিকশিত ক’রে তুলতে— মানুষ ক’রে তুলতে চাইছেন, কিন্তু তারা নিজেদের বিকাশের ব্যাপারে মোটেই সচেতন নয়।
সন্তানকে যথেষ্ট বিকশিত মানুষ ক’রে তুলতে চাইলে, —ঐকান্তিকভাবে চাইলে, নিজেদের আত্মবিকাশ ঘটানোর সাথে সাথে— কিভাবে সন্তানকে মানুষ ক’রে তুলতে হয়, তার পাঠ নেওয়া এবং তা’ অনুসরণ ও অনুশীলন করা অত্যন্ত জরুরী। আজকের দিনে— পরিবারে সুখ ও শান্তি চাইলে, পরিবারের প্রত্যেককেই আত্মবিকাশ বা মনোবিকাশের পাঠ নেওয়া এবং তা’ নিয়মিত অনুসরণ ও অনুশীলন করা একান্ত কর্তব্য।
পড়াশোনার সময় অর্থ বুঝে পড়তে বা শুনতে হবে। আর সাথে সাথে তার অর্থ অনুযায়ী তার চিত্ররূপ দিতে হবে— চলমান (যেন জীবন্ত) ছবি কল্পনা ক’রে নিতে হবে। একটি নির্দিষ্ট পাঠের মধ্যে— পর পর বিষয়গুলির মধ্যে যেমন যেমন সম্পর্ক রয়েছে, —তোমার কল্পনার চলচ্চিত্রের মধ্যেও ঠিক তেমনি সম্পর্ক থাকবে।
আর একটি কথা মনে রাখতে হবে, মস্তিষ্ক ও স্নায়ুতন্ত্রে যদি প্রয়োজনীয় রস-রক্ত-খাদ্য বা পুষ্টির অভাব ঘটে, যদি তা’ টক্সিন দ্বারা আক্রান্ত হয়ে থাকে, সেক্ষেত্রে তার কাছ থেকে ভালো কাজ পাওয়ার আশা করা যাবেনা।
আত্মবিকাশ— মনোবিকাশ— মানুষ হওয়া অথবা মানুষ করার ব্যাপারটা অনেকের কাছেই এখনো স্পট নয়। ছেলেমেয়েকে— তাদের নানা আবদার মিটিয়ে, সযত্নে প্রতিপালন করা, তাদের বড় ক’রে তোলাকেই অনেকে ‘মানুষ করা’ বলে, মনে করে। আবার, অনেক মা-বাবা না বুঝেই— নিজেদেরকে যথেষ্ট বিকশিত— পরিপূর্ণ মানুষ ব’লে ভেবে থাকে।
মনীষীরা যখন আশীর্বাদ ক’রে বলেন, —‘মানুষ হও’, তখন তাঁরা কি শুধু খেয়ে-প’রে বড় হওয়ার কথা বলেন? —একবারও ভেবে দেখিনা আমরা। অনেকের বক্তব্য, —মানুষ আবার কি হবো, আমরা তো মানুষই!
আসলে, এই মানুষ হওয়া বলতে বোঝায়, —যথেষ্ট বিকশিত মানুষ হওয়া। অর্থাৎ যথেষ্ট বিকশিত মনের মানুষ হওয়া। আত্মবিকাশের অর্থ হলো— মনোবিকাশ। ‘মনের বিকাশ’ —ব্যাপারটা নিয়েও অনেকে ধন্দে আছে। কেউ কেউ ভাবে, আমাদের অনেক বয়েস হয়েছে— যথেষ্ট জ্ঞান-বুদ্ধি-অভিজ্ঞতা হয়েছে, এর থেকে আবার কি বিকাশ হবে! এদের কাছে— পূর্ণবয়স্ক মানুষ আর পূর্ণবিকশিত মানুষ প্রায় সমার্থক!
বহীর্মুখী দৃষ্টি দিয়ে অন্তরের অন্ধকার—অসুস্থতা—অপূর্ণতা, অন্তরের বিকাশ বোঝা সম্ভব নয়। তার জন্য মন সম্পর্কে সাধারণ জ্ঞান সহ, মন সম্পর্কে সজাগ-সচেতন হতে হবে আমাদের। মনের দিকে তাকাতে— লক্ষ্য রাখতে হবে মাঝে মাঝেই। মনেরাখতে হবে, এই মন আছে ব’লেই— আমরা মানুষ। তাই, একজন মানুষ হিসেবে, আমাদের মন সম্পর্কে ওয়াকিফহাল হতে হবে। যার মন যত বিকশিত— সে ততটাই বিকশিত মানুষ।
মানুষে মানুষে এতো পার্থক্য সৃষ্টির পিছনেও বড় কারণ হলো— আমাদের মন। বিভিন্ন চেতনস্তরের— বিভিন্ন মানসিক গঠন এবং বিভিন্ন ধরণের সংস্কার বা ‘প্রোগ্রাম’ সংবলিত— বিভিন্নরূপ মনের কারণেই আমরা এক একজন এক এক ধরণের মানুষ।
আমাদের এই মনের মধ্যে— বর্তমানে সক্রিয় দুটি অংশী মনের একটি হলো— অন্ধ-আবেগ প্রবণ অবচেতন মন, আর অপরটি হলো— সচেতন মন। এদের সুস্থতা এবং সচেতন মনের বিকাশের উপরেই মানুষের যাবতীয় বিকাশ— উন্নতি— সমৃদ্ধি নির্ভর করে। মানব সমাজের অধিকাংশ অসুখ-অশান্তি-সমস্যার মূলেই রয়েছে— আমাদের এই মন। অজ্ঞান-অন্ধ, অসুস্থ-বিকারগ্রস্ত মন। তাই, সুস্থ-সুন্দর —শান্তিপূর্ণ-সমৃদ্ধ জীবন লাভ করতে— নিজের নিজের মনোবিকাশ ও সুস্থতা লাভের চেষ্টার সাথে সাথে, চারিপাশের সমস্ত মানুষের মনোবিকাশ এবং মানসিক সুস্থতা ঘটাতে সচেষ্ট হতে হবে আমাদেরকে। এটাই মানব জীবনের প্রথম ও প্রধান লক্ষ্য। আর এর জন্য যথাযথভাবে নিয়মিত অনুশীলন করাই হলো— মানবধর্ম।
‘মহামনন’ আত্মবিকাশ বা মনোবিকাশ শিক্ষাক্রমের জন্য, গুগল সার্চ= MahaManan
©somewhere in net ltd.