![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি সকল অন্ধকার শরীরে ধারন করা নারী।
আমি পয়ত্রিশে ঘরহীন যে।
আমার বেচে থাকা,
হ্যা শুধু মাত্র আমার বেচে থাকা নিষিদ্ধ করতেই বেচে আছে ঘুনেধরা সমাজ।
শহর ব্যাপী আমাকে নিষিদ্ধ করে অবশেষে আমার অন্ধকার কুঠুরীতে উপস্থিত আজ!
পয়ত্রিশে নারী ঘরছুট হলে তবে কি এই হয়?
ঘরছুটের তবে কখন সময়?
যখন মাতাল যৌবন ছিল,
আবেগে মাতাল ছিলাম প্রেমিকের সস্তা ছলনায়।
তখন কি সময় ছিল ঘর ছেড়ে একলা ঘর বাধার সময়?
আমার দুনিয়া এভাবেই কি মরে যায়?
যখন হাতছানি দেয় প্রেম,
আর আমিও প্রেমিকের বুককে লাল কাকড়ার দ্বীপ ভেবে মাতাল কিশোরীর ন্যায় ছুটি।
ঘরছুটের নেশার বড়ি তবে কবে খাব??
যখন যৌবন নিংড়ে আমার আত্মহারা প্রেমিক আমায় কেটে শিক কাবাব বানিয়েছিল তার অন্ধকার ঘরে!
দুটি দেহ জেনেছিল আদিমতার স্বাদ।
ডুবে যাওয়া!
কেদে ফেলা!
নাকি অন্ধকার ঘরে নগ্ন হয়ে শুয়ে পর্দাহীন জানলা দিয়ে আকাশ এর দিক তাকিয়েই আমার ঘরছুট হতে হত??
নাকি স্নান সেরে প্রেমিক কে ফের চুম্বনে জানিয়ে দেয়া উচিত ছিল আমি ঘরহীন হতে চাই!
প্রবলভাবে চাই।
হয়ত স্নান শেষে ফেরত চুমুতে নাকে আসা নালার গন্ধ নাকে আসা মাত্র বলা উচিত ছিল আমি চির ঘরছুট হতে জন্মেছি।
আদিমতার স্বাদ জেনে আট টাকা ভাড়ায় ঠিক করা রিকশায় উঠেই গগন মুখী হয়েই হয়ত আমার ঘর ছাড়ার শপথ নিতে হত।
নাকি আমার ঠান্ডা ভাতে কাব্য ঝরে পড়ে স্বপ্নে বিভোর আমি খুব দেরি করছিলাম,
স্বপ্ন দেখার বাতিক কিশোরি আমিকে ঘরছুট হবার সুযোগ দান করে পালিয়েছিল প্রেমিক নামক রক্তবিহীন জীব।
সেদিন ই হয়ত আমি ঘরহীন হতে পারতাম।
ইশশ যদি চাইতাম!
আমাদের ছাদের এক কোনায় ঝিম মেরে বসে মায়ার নগরীর কুকুর দেখেও আমার ঘরহীন হবার আশা ব্যাক্ত করার সুযোগ ছিল।
আমি অভাগীনি করিনি কিছুই।
বাবা মার সাথে সেবার পুরীর সমুদ্রে গিয়েছিলাম।
সমুদ্র আমার পছন্দ না।
ও আমায় ভাসিয়ে দেয়।
আমার পছন্দ পাহাড়।
কত কি ও আটকে দেয়!
হয়ত বাবা অপছন্দ জেনেই আমায় সমুদ্রে নিয়েছিল।
যেন প্রেমিকের ঘামের গন্ধ মুছে সমুদ্রস্নান করে পবিত্র হই।
আমি কেন যে পবিত্র শরীরে একা ঘরহীন হতে চাইলাম না!
বছর ঘুরতেই একা হবার,ঘরহীন হবার নেশা মাথায় তুলে লক্ষী মেয়ের মত,
সরু অনামিকায় আংটি আর বিচ্ছিরি ইয়ার্কি অশান্তি নিয়ে শরীরে অন্য পুরুষের অবাধ প্রবেশ বৈধ করেছিলাম।
নিশ্চয়ই এই মহাক্ষনে ঘরছুট, একা হবার সংকল্প টা করে নিতে পারতাম।
কেন যে করিনি!
নিয়ম রক্ষামুলক অশ্রু তো ছিলই।
অবশেষে আমি ভুলতে বসলাম প্রেমিকের গন্ধ।
আমার শরীরে তখন অন্যের আনাগোনা।
শরীর তো জাগেরে মনা,,
এ তো নিয়ম শরীরের।
মন তো জাগেনা।
মনের তো নিয়ম নেই পাগলা।
অভ্যাস দায় বদ্ধতায় বা ভালবাসায় তার ছাদে এক পশলা সবুজ খুজতে থাকলাম।
এক আধ দিন কাদি।
মন খারাপ হয়।
চুমু খাই। মদ খাই।
চুমু খাই। মদ খাই।
আস্ত চাদ চিবিয়ে খাই!
চুপচাপ পাড়া!
প্রনয়ের এই ক্ষনে আমি ঘরছাড়ার স্বপ্ন দেখতে ব্যার্থ নারী ছিলাম।
অবশেষে প্রনয়ের এক রাতে বৈধ প্রবেশকারী জানালার কাচ নামিয়ে দুরের ঝাপসা ট্রাফিক আলোর ন্যায় ঝাপসা অপবাদ দিয়ে ত্যাগ করল আমায়।
হয়ত সময় মত ঘর ছাড়ার প্রতীজ্ঞা করতে পারিনি বলে সময়ের দেবতার কঠিন অভিশাপে অভিশপ্ত হয়ে কয়েক লক্ষ বছরের জন্য জনবহুল শহরে একাকীত্বের গাছ বুকে নিয়ে একঘরে হলাম এই আমি।
যেহেতু পয়ত্রিশে ঘরছাড়া নারী আমি।
সেহেতু খুজি অন্ধকারের ছন্দকে।
ছন্দকার এসে ধরা দেয়!
আর কেউ আসেনা প্রেমের দাবী নিয়ে।
কেউ আসেনা শরীর এর দাবী নিয়ে।
আমিতো আমার ভিতরে ধারন করতে চাই জ্বলজ্যান্ত প্রেমের অস্তিত্ব।
বয়স?
সে তো ধুর ছাই!
নিয়ম মাফিক সন্ধ্যা।
আমার এক বুক নিস্তব্ধতা।
রেলিং ছুয়ে খবরের কাগজ আসা ভোর।
এই সকলের ভীরে আমি আমার প্রেম হারাতে চাইনা।
আমি নারী।
আমি মানে পৃথিবী।
আমি টেনে নেই দুনিয়ার দীর্ঘ ভ্রমন থেকে মুসাফির কে আমার গভীরে।
জন্ম, মরন,
লাশকাটা ঘর এর গন্ধ সকল বাদ দিয়ে আমি প্রেমে পড়তে চাই।
আর না দায়িত্বের বেড়াজালে আবদ্ধময় জীবন।
কর্তব্য এর জটিল ফাদে নিজস্ব বলিদানে একমাত্র দর্শক হওয়া।
আমি পুনরায় প্রেমে পড়ব।
উড়ব!
চুমু খাব।
তার চিলেকোঠার টুপটুপ শব্দের গভীরে আমি জেনে নিব তার নোনতা শরীরের স্বাদ।
জমিয়ে রাখা সকল ব্যাথা দুজন মিলে উড়াব জাহাজের ছাদে দাড়িয়ে।
মানিয়ে নেয়ার এই শহরে,
বরষাস্নাত চুম্বন উপহার দিব তাকে।
আমি বাচব,
ঘরহীন হয়ে।
আমি বাচব,
ঘর আগলে!
আমি বাচব মধ্যরাতের ফাকা প্লাটফর্ম এ আমার কবির কবিতা আউরে।
যে কবি চোখে ডুব মেরে তুলে আনে কবিতা।
আমি বাচব,
ফেলে যাওয়া বৈধ শরীরে প্রবেশকারির বিষাক্ত ঘর লাথি মেরে ফেলে প্রেমিকের চওড়া বুকে।
যে ঘরে শরীর ও মন নিয়ে মেতে আমরা জন্ম দিব কাদা মাটির গন্ধের ন্যায় প্রানের অপরুপ জীবন।
আমরা হাটব মধ্য রাতের ফাকা হাইওয়েতে।
হারাবো চিরচেনা শহরের নিয়ন্ত্রিত রাস্তা ভেদ করে অচেনা গলিতে।
খুনসুটিতে রাত কাটাবো।
দরজায় ভোর আসবে।
কিন্তু আমরা নগ্ন ই রব।
একঘরে আমি তামাম সমাজকেই একঘরে করে বাচব।
কাম আর মমতা মেলানো চুমুতে প্রেমিক কে জানিয়ে দিব আমার ঘরহীন হবার অতীত।
কিভাবে কিশোরি আমি একা হবার নেশায় নিমজ্জিত হয়ে ভোর দেখেছি।
কিভাবে আমার অস্তিত্ব আমায় ভিজিয়ে নিত।
এখন আর কিশোরি নই।
এখন নারী।
যোনি দেশের রক্তিম চেরাই এর মত রহস্যময় এক নারী।
উন্মাদ হই তীব্র পিপাসায়।
কামনায়।
পয়ত্রিশে ঘরছুট নারীর নেই কি উপায়??
আমি জোস্নার ধবল দুধে ভেজা আমার দেহ মেলে দিতে চাই কবিতার পদতলে।
কবির ওষ্ঠের নিকটে।
আমি ঘরহিন হয়ে হোক,
ঘর থেকে হোক,
মোটকথা প্রান ভরে বাচতে চাই।
ঘোলাটে চাদের জোস্নায় তেতুল বনে চুমু খেতে চাই শেষ প্রেমিক কে!
লিখে দিতে চাই আমার পাপ গুলো।
দিন দুপুরের বরষায় আমার বডড অভক্তি আছে।
মধ্যরাতের বরষায় আমি নারী ছাদে যাব প্রেমিক নিয়ে।
লম্বা টানটান শুয়ে কাচা কাচা অন্ধকার খেয়ে তেষ্টা মিটাবো ঝুম বরষার পানি দিয়ে।
আমি ঘরহীন টেনে নিব তার ওষ্ঠের সকল স্বাদ।
কুড়মুড়িয়ে চাবিয়ে খাব ভুল সময়ে করা সকল একাকীত্বের প্রতীজ্ঞা।
মাথার উপর চাদ ও টেম্পোরারি এই জেনে ভুলে যাব সস্তা ব্রা নিয়ে দরদাম করা আমার দেহের বৈধ দাবীদার কে।
বয়স কে অমান্য করে পুনরায় বাচি।
প্রানভরে।
এসো ঘুনে ধরা সমাজ পেচ্ছাব ও থুথু মিশানো নর্দমার কাদা তোমার গায়ে মেখে নিতে এসো।
জেনে নিও,
নারী বাচে।
হোক পয়ত্রিশ,
হোক পঞ্চাশ।
আমি নারী
আমি ই ধরিত্রী!
মলয় দত্ত
রেশাদ ছাত্রাবাস।।
©somewhere in net ltd.