নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আরব্য উপন্যাসের সেই মরুচারী যে সত্যান্বেষণে জীবন উৎসর্গ করে। সেই উপন্যাসের চরিত্র নিজের ভিতরে লালন পালন ও প্রতিষ্ঠিত করার লক্ষ্যে এই পথচলা।

মামুন রেজওয়ান

মামুন রেজওয়ান › বিস্তারিত পোস্টঃ

"ডায়েরীর কথা"

০৪ ঠা অক্টোবর, ২০২৫ রাত ৯:৪৮



কাজের ফাঁকে একটু ডেস্কে বসেছিলাম। আমার একটা ডেস্ক ডিপার্টমেন্টের গ্রাউন্ডফ্লোরে আরেকটা ডেস্ক প্রোডাকশন ফ্লোরের অফিস রুমে। প্রোডাকশন ফ্লোরে কাজ করছিলাম, দীর্ঘক্ষন এক ফ্লোর থেকে আরেক ফ্লোর ছোটাছুটি করার কারনে একটু বিশ্রামের প্রয়োজন পড়ল। কিছু সময় বসে থাকতে থাকতে মাথায় হঠাৎ করে একটা চিন্তা ঘুরপাক খেয়ে উঠল। একটা দীর্ঘনিঃশ্বাস বুক চিড়ে সন্তর্পণে বেরিয়ে গেল। কতদিন হয়ে গেল খাতা কলমে বাংলা লেখা হয়না! উচ্চ মাধ্যমিকে থাকতে সর্বশেষ নিয়মিত বাংলা লেখা হতো। এরপর ভার্সিটিতে ইংলিশ মিডিয়াম, আর বাংলা লেখা হয়ে ওঠেনি। ভার্সিটি লাইফের শুরুতে ডাইরী হাতে নিয়ে দুই এক লাইন লেখার চেষ্টা করলেও সেটা দুই এক লাইনেই সীমাবদ্ধ থেকে গেছে। এর কারণ অনুসন্ধানে নেমে দেখলাম প্রথম কারন হচ্ছে আমার হাতের লেখা বেজায় খারাপ। খারাপ মানে মারাত্মক লেভেলের খারাপ। আমার হাতের লেখা নিয়ে আমার পরিবারের সদস্য বিশেষত আমার বোন, মা, আমার অর্ধাঙ্গিনী প্রায়শই হাসাহাসি করে। যখন আমার ড্রয়ার বা বুকসেলফ ঝাড়পোঁছ করার হিড়িক পড়ে তখন আমি বেজায় শঙ্কিত থাকি। এই বুঝি আমার পুরাতন কোন লেখা উনাদের হাতে পড়ে গেল! এই লেখা খারাপ হওয়ার পিছনে আমি মুলত দায়ী করব প্রয়াত হুমায়ন আহমেদকে। খুব ছোটবেলায় তার কোন একটা লেখায় পড়েছিলাম যে বাইরে অসুন্দর সে তার অসুন্দরকে ঢাকতে হাতের লেখার প্রতি গুরুত্ব দেয়। আর যার বাইরেটা সুন্দর সে হাতের লেখার প্রতি অতটা নজর দেয় না। এই মোটিভেশন আমাকে এতটা পেয়ে বসেছিল যে, আমার লেখা খারাপের পেছনে দীর্ঘদিন যাবৎ এই বক্তব্যকে যুক্তি হিসাবে ব্যবহার করে এসেছিলাম। যাইহোক পরবর্তীতে নিজের ভুল বুঝতে পেরেছি। একইসাথে লেখক যে কতটা ক্ষতি করতে পারে এবং একইসাথে কতটা উপকার করতে পারে বুঝতে পেরেছি। যাইহোক আমার ডেস্কে ফিরে আসি।

ঐযে বললাম, বাংলা লিখতে না পারার দরুন একটা দীর্ঘশ্বাস বেড়িয়ে আসল। সেই দীর্ঘশ্বাসকে কিছুটা প্রশমিত করতে হাতের ডায়েরীটা নিলাম। দৈনিক কাজের ফিরিস্তিতে বোঝাই এই ডায়েরী। পাতা উল্টিয়ে একটি ফাঁকা অংশ খুঁজে বের করলাম। চোখটা একটু বন্ধ করলাম। বিগত কিছুদিন যাবৎ যে কয়টা বই, যে কয়টা আর্টিকেল পড়েছি সেখান থেকে প্রিয় শব্দগুলো মনে করার চেষ্টা করলাম। শব্দ শুরু হয়েছে ন্যারেটিভ, ভাইব ইত্যাদি দিয়ে এবং শেষ হয়েছে কনটিঞ্জেন্সি আর্গুমেন্ট, টেলিওলোজিকাল আর্গুমেন্ট । মোটামুটি ১৭-১৮টা শব্দ লিখেছি র‍্যান্ডমলি। যেভাবে মাথায় যেটা এসেছে লিখে ফেলেছি। যেহেতু মূল উদ্দেশ্য ছিল বাংলা লিখা তাই কোন কিছু চিন্তা করিনি। কিন্তু লেখা শেষে শব্দের প্যাটার্নগুলো লক্ষ্য করে দেখলাম, আমার সাব কনসিয়াস মাইন্ড অসাধারন একটা কাজ করে ফেলেছে। আমার অবচেতনে শব্দগুলো একটা প্যাটার্ণ তৈরী করে ফেলেছে।

চিত্রটা ভালভাবে লক্ষ্য করুন। শুরুর শব্দগুলোতে সামাজিক আচার , ব্যবহার ফুটে উঠেছে। যেমনঃ- ন্যারেটিভ, গুসবাম্ব, রক এন্ড রোল, হেজিমনি ইত্যাদি। এবং দ্বিতীয় ধাপে চলে এসেছে এই সামাজিক কালচারের বিপরীত ব্যবহারের খারাপ রেজাল্ট। মাঝখানের শব্দগুলো দেখুন আইডেন্টিটি ক্রাইসিস, সুপিরিয়র ইনফিরিয়রিটি, লজিক্যাল ফ্যালাসি ইত্যাদি। যখন আমরা ভুল ন্যারেটিভ, ভুল হেজিমনি, রক এন্ড রোল কালচার, “লাইফ ইজ অন সো লিভ অন্স” ইত্যাদি সমাজ ব্যবস্থায় অভ্যস্ত হয়ে যাব তখন আমরা আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে ভুগব, এক্সিসটেন্স নিয়ে সংশয়ে পড়ব, লজিক্যাল ফ্যালাসির আশ্রয় নিব। কিন্তু এই সকল কিছু থেকে ইউ-টার্ণ হবে কখন। যখন আমি আমার আদর্শে ফিরে আসব। কন্টিঞ্জেন্সি আর্গুমেন্ট , টেলিওলোজিক্যাল আর্গুমেন্ট আপনাকে যৌক্তিকভাবে সেই আদর্শে নিয়ে যাবে, সেই নেসেসারি এক্সিসটেন্সে নিয়ে যাবে ইন-শা-আল্লাহ।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৫ ই অক্টোবর, ২০২৫ বিকাল ৫:৩০

বিজন রয় বলেছেন: আপনার কথা কিছু জানলাম।

আরো লিখুন।

২| ০৭ ই অক্টোবর, ২০২৫ দুপুর ২:৪৩

রাজীব নুর বলেছেন: গ্রেট।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.