নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মামুনুর মামুন

মামুনুর মামুন › বিস্তারিত পোস্টঃ

বাবা [১ম পর্ব]

২৩ শে মে, ২০১৮ সকাল ৮:০৪


বাবা
মামুনুর মামুন
_১
.
"প্রত্যয় তাড়াতাড়ি আসো বাবা। লেইট হয়ে যাচ্ছে তো! "
"আসছি বাবা "
আমার ছেলে 'প্রত্যয়'
ক্লাস টু তে পড়ে।
মেধাবী ছাত্রদের মধ্যে একজন না হলেও,
ও ওর সৃজনশীলতায় অনন্য।
মাঝে মাঝে ওর কাজকর্ম দেখলে বাবার কথা মনে পড়ে যায়।
.
সেদিন কি হলো, প্রত্যয়কে স্কুলে দিয়ে আমি যাবো আমার অফিসে।
প্রত্যয় জানে, রবিবার দিনটাতে আমার অফিসে কাজের চাপ এতটা বেশি যে খাবার খাওয়ার ও সময় খুজে পাওয়া দুঃসাধ্য।
আমি দরজার কাছে জুতা গুলো পলিশ করছি।
এমন সময় শুনি,
প্রত্যয় কাজের ছেলেটাকে বলছে, "সুভ্র ভাইয়া, তুমি তো জানো আজ আব্বুর অফিসে কাজ অনেক।তুমি আজকে আমাকে স্কুল থেকে নিয়ে আসার আগে আব্বুকে প্লিজ খাবারটা দিয়ে এসো"
.
প্রত্যয়কে স্কুলে নিয়ে যেতে আমার ভালো লাগে।
প্রতিটা মুহূর্ত আমি অনুভব করি।
আমিও কোন এক সময় এভাবে যেতাম স্কুলে।
.
আমার বাবা ছিলেন গ্রামের এক প্রাইমারী স্কুলের শিক্ষক।
এক নামে বাবাকে সবাই চিনতো।
এর পিছনে বাবার শিক্ষাগত যোগ্যতার অনেক বড় হাত ছিলো।
তাছাড়া বাবার সম্রান্ত পরিবারের কথা না বললেই নয়।
.
আমি যখন প্রথম স্কুলে ভর্তি হই, তখন বাবা তার স্কুলে ভর্তি করালে পারতেন,
কিন্তু কেন পাশের গায়ের স্কুলে ভর্তি করিয়েছিলেন তা জানার বড় কৌতূহল ছিলো তখন।
কৌতীহলটা ততদিন পর্যন্ত ছিলো যতদিন পর্যন্ত না আমার ছেলে প্রত্যয়ের স্কুলে ভর্তি হওয়ার সময় হয়।
.
বাবার একটা সাইকেল ছিলো,
আর, তখনকার দিনে সাইকেল ছিলো হুন্ডার সমান।
আমি বাবার পিছনে বসে সাইকেল চড়তে ভালোবাসতাম।
বাবার স্কুল শুরু হতো নয়টায়,
আর আমারটা ছিলো সাতটায়।
সেই ভোর থেকে বায়না ধরে বসে থাকতাম,
বাবা স্কুলে সাইকেলে করে দিয়ে আসতে হবে,
না হয় স্কুল এ যাবো না।
এ করে কখনও কখনও বাবা নিয়ে যেতেন,
আর বাকি সময় গুলো এক ফুপুর সাথে হেঁটে যেতাম।
মা আামকে সাইকেলে করে নিয়ে দিয়ে আসাটা পছন্দ করতেন না।
বাবার অনেক কস্ট হতো।
একবার আমাকে অনেকক্ষন সাইকেল চালিয়ে নিয়ে দিয়ে আসা,
এরপর আবার বাবা তার নিজের স্কুলে সাইকেল চালিয়ে যাওয়া, দুয়ে মিলে বাবার কস্টটা মা বুঝতো।
আর আমি!
প্রতিদিন বায়না ধরে বসে থাকতাম, "বাবার সাইকেলে করে স্কুল এ যাবো। "
এর জন্য মায়ের কাছে অনেক বকা খেয়েছি,
মাঝে মাঝে উত্তম মধ্যমও ছিলো।
তবে, বাবা কখনও নিজ থেকে মানা করেনি।
মা যেদিন মানা করবে সেদিন সাইকেলে করে যাওয়া যাবে না,
আর মা'র অনুমতি, বাবার সাথে আমার এক সর্গীয় যাত্রা।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.