নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মানুষের মাঝে মিশে থাকতে চাই, তবে কিভাবে শুরু করব তা ভাবতেই অনেক সময় পেরিয়ে যায়। তাই, গান কবিতা এগুলোর আশ্রয় নিয়ে চলি নিজেকে আড়াল করে।

মায়াস্পর্শ

মনের বিপরীতে পার করে এসেছি সহস্রকাল, হঠাৎ এক উদ্ভ্রান্ত অবয়বে বেঁচে থাকি এপার ওপার।

মায়াস্পর্শ › বিস্তারিত পোস্টঃ

ধোয়া (সিজন-৪) শেষ পর্ব

২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৩

আগের পর্ব সমূহ
ধোয়া সিজন -১)
ধোয়া (সিজন -২)
ধোয়া (সিজন -৩)

সিগারেটের ধোয়া উপরে উঠছে সাপের মতো এঁকেবেঁকে। মনে হচ্ছে , একটা সাদা সাপ একটু উপরে উঠে বাতাসে মিলিয়ে যাচ্ছে একা একা। একটা সিগারেটের দুইটা সমান সমান অংশ , একদিকে ছাই অন্যদিকে তামাক। একধ্যানে বাহিরে রাখা জিপটার দিকে তাকিয়ে আছেন আশুলিয়া থানার ওসি সাহেব। ঝলমলে রৌদ্রোজ্জ্বল দিন। শাহাদৎ আঙ্গুল দিয়ে সিগারেটের উপরে দুইটা টোকা দিলেন , ছাইগুলো পড়ে গেলো সামনে রাখা অ্যাশট্ৰেতে, কিছু উড়ে উড়ে এদিক সেদিক চলে গেলো। শরীরটা ম্যাজমেজে হয়ে আছে আজ , তবে রিপনের খুনের বিষয়টা ঠিক যেন বিদঘুটে রহস্য হয়ে যাচ্ছে তার কাছে।

চেয়ার থেকে উঠে গেলেন মিন্টু মিয়ার দিকে ,
- কী মিন্টু , কেমন আছো ?
-ছার্, শরীরডা বালা পাইতাছিনা,বমি বমি লাগে।
-আগেও লাগতো বমি বমি ?
-না ছার্, অহন লাগে কয়েকদিন অইছে।
-আচ্ছা।
ওসি সাহেব হাত বাড়িয়ে দিয়ে মিন্টুর সাথে করমর্দন করলেন। মিন্টু একটু হা করে তাকিয়ে থাকলো ওসি সাহেবের দিকে।
-মিন্টু তুমি দোকানে কী কী বিক্রি করতে ?
-ছার্ , পান , বিড়ি , সিগ্রেট , রুটি কলা।
-আচ্ছা।
মিন্টুর দিকে একটু হাসি মুখে তাকিয়ে ড্রয়ার থেকে একটা চাবি নিয়ে বের হয়ে গেলেন ওসি সাহেব।
মিন্টুর হাত দুটোতে কড়া পড়ে যাওয়ার মতো শক্ত কয়েকটি দাগ ছিল।

অফিসের ব্যস্ততায় রিপনের খুনের বিষয়টা ভুলেই গিয়েছিলো সবাই , স্বাভাবিক ভাবে চলছিল অফিসের সব কাজকর্ম।
রোমান্টিক ভায়োলিনের সুমধুর একটা রিংটোন বেজে উঠলো।
প্রথমে রিসিভ করলো না। আবার বেজে উঠলো আগের মতো। অচেনা নাম্বার রিসিভ করে না প্রথমবার , এবার রিসিভ করলো।
-হ্যালো , আস সালামু আলাইকুম, কে বলছেন ?
-আমি ডিবি অফিস থেকে বলছি , আপনি কী জুবিয়া ? (পুরুষকণ্ঠ)
-জ্বি , আমি জুবিয়া বলছি।
-আপনাকে ডিবি অফিসে একবার আসতে হবে , আজ বেলা ৩ টাই।
-আমি তো কিছু জানিনা , যতটুকু জানি তা সেদিন বলেছিলাম।
- আপনি ভয় পাবেন না। যেহেতু আপনি কিছু জানেন না , সো আপনার ভয় পাবার কোনো কারণ নেই।
-আচ্ছা আমি আসবো ,আমতা আমতা করে বললো জুবিয়া।
-ওকে।
ওপাশ থেকে ফোনের লাইনটা কেটে গেল। এরপর জুবিয়ার ফোনে ডিবি অফিসের ঠিকানা লেখা একটা মেসেজ এলো। জুবিয়া ইয়াসিন সাহেব কে যেয়ে বললো বেপার টা। ইয়াসিন সাহেব একটু আড়ালে যেয়ে জুবিয়াকে ফিস ফিস করে কী যেন বললো।

বাসায় দুপুরের খাবার রান্না করছিলেন সখি বানু। বেশ ভালো রান্না করেন তিনি। আজ খাসির গোস্ত কষিয়ে সাথে ভুনা খিচুড়ির আয়োজনই চলছিল মনে হয়। একটা অমৃত অমৃত গন্ধ বা সুবাস পাওয়া যাচ্ছিলো। জিভে জল চলে এসেছে এতক্ষনে। সাথে ভাজা শুকনো মরিচ আর কাটা পেঁয়াজের মলিয়ে মলিয়ে ভর্তা নাকি সালাদ হলে জমে যাবে একদম। যাইহোক কাজের কথায় আসি ,
দরজায় টোকা পড়লো। সখিবানু হাত মুছে গায়ের কাপড় ঠিকঠাক করে দরজা খুলতে গেলেন।
কর্কশ গলায় জিজ্ঞেস করে জানতে চাইলেন দরজার ওপাশে কে ?
-আমি ওসি , আশুলিয়া থানা থেকে এসেছি।
- ওহ, আচ্ছা আচ্ছা। খুলতাছি।
এরপর দরজা খুললেন। নিজের এককমাত্র বোবা মেয়েকে নিয়ে থাকেন সাভারের এই বাড়িতে। দুই রুমের একটা বাড়ি। একচালা টিনের আধাপাকা বাড়ি। ।
ওসি সাহেব বাড়িতে ঢুকলেন। তাকে বসতে দেওয়া হলো একটা কাঠের চেয়ার টেনে।
-আমগো রিপন বড় ভালা পুলা আছিলো , কে যে পুলাডারে এমন মারলো , এক্কেবারে দুনিয়াতেই রাকলনা।
আবার ওই আগের মতোই প্যাচাল পারতে লাগলো সখি বানু।
-বাড়িতে কে কে থাকেন আপনারা ?
- আমি আর আমার মাইয়া, দুইজনে।
-সংসার চলে কিভাবে ?
- ব্যাংকত কিছু টাহা রাহন আছে। লাভ পাই , আর এদিক সেদিক ঝুটা বুয়ার কাজ কইরা কিছু টাহা পাই , এই দিয়া আল্লার রহমতে চইল্যা যায় আমগো দুইজনের। বুবা মাইয়াডরে কেউ বিয়া করবার চায় না , রিপনেরে কয়েকবার কইছিলাম ,হেও রাজি অইনাই। ট্যাকা জমাইতাছি , বালা একখান পুলা পাইলে মাইয়াডারে যৌতুক দিয়া অইলেও বিয়া দিয়া দিতাম।
- আচ্ছা , রিপন কেন বিয়ে করতে চাইনি ওকে ?
- মাইয়া বুবা তাই। আর কইছে ,নিজেগোরে ভিত্রে বিয়া সাদি আলা না করাই বালা। হুনছি তার ইদানিং একটা মাইয়ার লগে সম্পক্ক অইচে।
- রিপন নিজেই আপনাকে বলেছিলো সেই সম্পর্কের কথা ?
সখি বানু একটু এদিক সেদিক হয়ে কোনো রকমে বললো
-হুনছি আরকি , এগ্ল্যা কতা কী আর বয়ে থাকে ? বাতাসে ভাইসা বেড়ায়।
ওসি সাহেব ও সখিবানুর চোখের দিকে তাকিয়ে বললেন -
-হুম হুম , তা ঠিক। একদম ঠিক। ধোয়ার মতো ভেসে বেড়ায় বাতাসে বাতাসে।
সখি বানু ঠিক ওসি সাহেবের চোখের দিকেতাকাতে পারছিলো না।
বাড়ি টা ঘুরে ঘুরে দেখে ওসি সাহেব বিদায় নিতে চাইলেন সখি বানুর বাড়ি থেকে। দুপুরের খাবার খাওয়ার জন্য আবদার করলো সখি বানু অনেক , ওসি সাহেব আজকের মতো না করে চলে গেলেন।

দুপুর ৩ টা ২০।
ডিবি অফিসে এসেছে জুবিয়া, বসে আছে ফ্রন্টডেস্ক এর সামনের সোফায়। একজন এসে এক কাপ লাল চা দিয়ে গেল। জুবিয়া ধন্যবাদ বলে চায়ের পিরিচ হাতে নিলো। চা শেষ হওয়ার কিছুক্ষন পর তাকে ডেকে ভেতরে ডেকে নিয়ে গেলেন একজন মহিলা অফিসার। মহিলা অফিসারকে অনুসরণ করে ভিতরে গেলো জুবিয়া।
বড় একটা রুম, মৃদু আলো , অনেকটা রোমান্টিক রেস্টুরেন্ট এর মতো আলো। তবে এখানে বিষয় ভিন্ন। একটা টেবিল , চওড়ায় অনেক বড়। একপাশে বসে আছেন তিনজন অফিসার আর অন্য পাশে জুবিয়াকে বসতে বলা হলো। জুবিয়া বসলো।
-আপনি কতদিন থেকে এই অফিসে জব করেন ?
-জ্বি , আড়াই বছর।
- কী কাজ করেন এই অফিসে ?
-জ্বি , কমার্শিয়াল সাইট টা দেখি , সাথে সাপ্লাই চেইন।
-আপনি যেন কোন সাবজেক্ট এ পড়া লেখা করেছেন ?
- কেমিস্ট্রি তে মাস্টার্স।
- ইরিলেভেন্ট জব।
- মানে কোথাও জব পাচ্ছিলাম না , কিন্তু খুব দরকার ছিল কোনো একটা জব , তাই এখানে ঢুকি। এখানে সবাই খুব ভালো এবং সুযোগ সুবিধাগুলো ভালো পাওয়াতে আর জব সুইচ করিনি। তাছাড়া আমাদের বস ইয়াসিন সাহেব অনেক ভালো মানুষ , উনার আন্ডারে কাজ করা কেউই সহজে জব ছাড়তে চায় না।
- তবে আপনাদের অফিসের ডাটা বলছে, এখানে ঘন ঘন নতুন লোক আসে আবার চলে যায়।
-আসলে ওরা একদমই নতুন তাই হয়তো মন বসাতে পারে না , আর এখানে কাজের প্রেসার অনেকটা বেশি থাকে ,হয়তো তাই।
- রিপন কী জানি সব ব্ল্যাক ম্যাজিক শিখতো আপনি সেদিন বলেছিলেন,
- ইদানিং রিপন বেশিরভাগ সময় ব্ল্যাক ম্যাজিক , প্ল্যান চ্যাট এসব নিয়ে কথা বলতে চাইতো।
আমি অতটা পাত্তা দিতাম না।
- রিপন কী কারো সাথে রিলেশন এ ছিল ?
- তা আমি জানিনা , তবে মাঝে মাঝে কল এলে বাহিরে যেয়ে কথা বলতো।
- আপনি ফেইসবুক ব্যবহার করেন নিশ্চয়।
- জ্বি হ্যাঁ।
- আপনার ফোন টা কী দেখতে পারি ?
- উমম, জ্বি।
- ধন্যবাদ।
জুবিয়া লক খুলে ফোন টা দিলো একজন অফিসারের হাতে দিল। অফিসার কিছুক্ষন স্ক্রল করে জুবিয়াকে বললো ,
- আপনি কী রানী ?
- জ্বি মানে ?
- মানে ভুতের রাজ্যের মহারানী ?
জুবিয়া একটু ভড়কে গিয়ে আমতা আমতা করতে লাগলো, কিছু বলে উঠতে পারলো না। সামনে রাখা গ্লাসের পানি ঢক ঢক করে খেয়ে বললো , ঐটা আমার এক ফ্রেন্ডের আইডি , ও একবার লগইন করেছিল আমার ফোন থেকে। তারপর থেকে ঐটা লগইন হিস্টোরি হয়ে আছে।
- আচ্ছা আচ্ছা। আজকাল সবাই কী জানি সব ভুতের গল্পে আর ভুতুড়ে কর্মকান্ডে মজে গেছে।
-আপনি আজকে আসতে পারেন , তবে প্রয়োজনে আবার আপনাকে ডাকা হবে।
-আচ্ছা বলে জুবিয়া বের হয়ে যেতে লাগলো। যাওয়ার সময় অফিসার বললেন , আপনার কোনো ভয় নেই। আমাদের পুলিশ টিমের বিশেষ নজর থাকবে আপনার ওপর।
রাত ৯ টা বাজে , চৌরাস্তায় ভিড় ভাট্টা একটু কমতে শুরু করেছে। সাদা পোশাকে এসেছেন সেখানে ওসি সাহেব। একটা সিগারেট ধরিয়ে ধীর পায়ে এগুতে লাগলেন মিন্টু মিয়ার ঝুপড়ি দোকানের দিকে। ভাঙাচোরা দুই পার্টের একটা ঢাকনা দিয়ে বন্ধ করে রাখা আছে দোকানটা। এইখানে তেমন লোকজন আসে না। তাই তিনি সিহিজেই ঢাকনার তালা খুলে দোকানের ভিতরে প্রবেশ করলেন। একটা ভ্যাপসা গন্ধ হয়ে আছে , ধোঁয়াটে আঁশটে গন্ধ। দোকানের চারপাশের চারটি খুঁটির মধ্যে একটা খুঁটি লোহার , সাথে কিছু নমনীয় মেটাল দড়ির মতো। সেগুলো দিয়ে দোকানের উপরের চালা শক্ত করে দোকানের ওই লোহার খুঁটির সাথে আটকিয়ে রেখেছে। ওসি সাহেব খুব ভালো ভাবে সেটা পরখ করে দেখলেন। খুব শক্ত ভাবে বসানো হয়েছে লোহার খুঁটিটা।
দোকানের চোকির নিচে একটা তার পেঁচিয়ে রাখার সিলিন্ডারের মতো চাকা , অনেকটা ডিসের তার যেটাতে পেঁচিয়ে রাখে তেমন। একপাশে মিন্টু মিয়ার কিছু পুরোনো কাপড় পুটলা করে রাখা । আঁশটে গন্ধ সেখান থেকেই আসছিলো। কাপড়গুলো খুলে দেখলেন সেখানে কিছু কেমিক্যাল রাখা। পুলিশের ফোর্স কে কল করে আসতে বললেন সেখানে দ্রুত।

আজ ডিবি অফিস সরগরম হয়ে আছে বেশ। টেবিলের চতুর্পাশে বসে আছেন কয়েকজন অফিসার, সাথে আছেন আশুলিয়া এবং মগবাজার থানার ওসি। চা চলছিল বেশ , কড়া লিকার লাল চা । হাসতে হাসতে আশুলিয়া থানার ওসি বললেন ,
-কী বুঝলেন আশরাফ ভাই ( মগবাজার থানার ওসি )।
- সবই তো ভুতের কান্ড একদম। তবে সব ভুলগুলো একত্র করতে পারার ক্রেডিট কিন্তু আপনার মশাই।
-হে হে হে। আমি আর কী এমন করলাম , ভুতের বাড়িতে সেদিন না গেলে ভুত ধরে হতো না।
প্রথম যেদিন ভুত থানায় এলো ভুতের ব্যাগ থেকে আঁশটে আর ধোঁয়াটে গন্ধ আসছিলো , পরে যখন ভুত রিপনের অফিসের ঠিকানা দিলো তখন দেখলাম ভুতের ব্যাগের ভেতর পোটলা করে রাখা ভৌতিক সেই কেমিক্যাল। একদম নিশ্চিত ছিলাম না , তবে সেদিন ভুতের বাড়িতে যখন গেলাম তখন খাসির কষা গোশতের গন্ধকেও হার মানাচ্ছিলো সেই আঁশটে গন্ধ। পেট ভোরে গিয়েছিলো সেই গন্ধে তাই কোনোরকম ওই খাসির ভুনাটা অনিচ্ছা সত্ত্বেও ত্যাগ করে বেরিয়ে এলাম।
হো হো করে হেসে উঠলো সবাই। এবার ডিবি অফিসার বলতে লাগলেন,
- যেদিন জুবিয়াকে জিজ্ঞাসাবাদ করলাম সেদিন এ বুঝে গিয়েছিলাম এ মেয়ে সুবিধার নয় , উল্টাপাল্টা উত্তর দিচ্ছিলো , কিন্তু খুব কনফিডেন্টলি। সেদিন রাতে আমাদের বিশেষ টিম নজর রেখেছিলো ইয়াসিনের বাড়ির ওপর। জুবিয়া সন্ধ্যা সাতটায় ঢুকে বেরিয়েছিল রাত ১০ টায়। কী বাজে একটা অবস্থা একটা খুন সংঘটিত করেও এদের মনে নূন্যতম অনুশোচনা বা ভয় বলতে কিছু নেই। শরীরের চাহিদা মেটানো যেন একপ্রকার নেশা হয়ে গেছে এদের কাছে।
অফিসের মাঝেই জুবিয়া এবং ইয়াসিন নগ্ন অবস্থায় ধরা পরে যায় রিপনের কাছে , অফিস টাইমের পর তারা সেই লীলায় মগ্ন ছিল। কিন্তু হঠাৎই রিপন আবার অফিসে এসে পড়ে তার রেখে যাওয়া স্যালারির টাকা নিতে। তখনই বিপত্তি বেঁধে যায় জুবিয়া আর ইয়াসিনের।
তারা রিপনকে পরের দিন অনেক বুঝিয়ে বলে বেপারটা যেন সে কারো সাথে শেয়ার না করে , কিছু টাকাও সাধে রিপনকে। রিপন টাকা না নিয়েই তাদের সাথে সম্মত হয়। তবে , তাতে ভরসা পায়নি জুবিয়া আর ইয়াসিন।নিজেদের ম্যান সম্মান আর পরিবারের কথা চিন্তা করে নিজেরা আতঙ্কমুক্ত থাকতে খুন করার পরিকল্পনা করে বসে রিপনকে।
সখিবানু রিপনের খালা তবে আপন নয়। সখি বানু কয়েকবার রিপনের অফিসে এসেছিলো তার বোবা মেয়ের সাথে রিপনের বিয়ে দেওয়ার কথা বলতে , কিন্তু রিপন প্রত্যেকবারই সেটা প্রত্যখ্যান করে সখিবানুকে বের করে দিয়েছিলো অপমান করে। এটা সখিবানুর একটা রাগ ছিল রিপনের ওপর। সেই রাগকে আরো জ্বালিয়ে দিয়েছে জুবিয়া আর ইয়াসিন। নিজেরা দায়মুক্ত থেকে রিপনকে খুন করার জন্য সখিবানুকে টাকার লোভ দেখিয়ে এমন কান্ড ঘটায় তারা।

জুবিয়া তার অন্য এক ফেক আইডি থেকে রিপনের সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে , কারণ রিপন কে হত্যা করা এবং সেটা অত্যন্ত সু কৌশলে। রিপন মাঝে মাঝেই অফিসের ডেস্কটপ থেকে লগইন করতো এবং লুকিয়ে লুকিয়ে ফেসবুক চালাতো।
সখিবানু টাকার লোভে মিন্টু মিয়ার সাথে যোগাযোগ করে। মিন্টু মিয়া সিরিয়াল কিলার নয় তবে খুন করার মাস্টার মাইন্ড। এর আগেও সে অনেক পরিকল্পনা করে অন্যদের হত্যাকান্ড ঘটিয়েছে বিভিন্ন জায়গায় , যেগুলো প্রাথমিক ভাবে ফাইন্ড আউট করা খুব কষ্টকর হয়ে যায়।
প্রেমিকা সেজে সেদিন রিপনকে আশুলিয়া ডেকেছিল জুবিয়া নিজেই দেখা করার জন্য। খুন করার প্ল্যান ছিলো রাতেই তাই সে রিপনকে ওই জায়গায় ডেকে নিয়ে গেছে। যখন শেষ মুহূর্তে রিপন বলেছিলো সে মিথ্যা বলছে, তখন রিপনকে ওই দোকানের পিছনে একটা সিগারেট জ্বালিয়ে দাঁড়াতে বলেছিলো। রিপন তাই করতে যায়। ঠিক তখন এ দোকানের পিছনে ওঁৎপেতে থাকা মিন্টুর সাঙ্গপাঙ্গরা রিপনকে ধরে ওই মেটাল তার দিয়ে বিশেষ কায়দায় ওই লোহার শক্ত খুঁটির মাঝখানে বাঁধে। এরপর ওই চাকা ঘুরাতে থাকলে রিপনের মাথা আর হাত শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পরে। আর সেখানে ওই কেমিক্যাল দিয়ে ধোয়ার সৃষ্টি করা হয় এক ভৌতিক পরিবেশ বানানোর জন্য।
আর খুনের এই প্ল্যান জানা ছিলো সখিবানুর। তাই সে মিন্টুর থেকে সেই কেমিক্যাল কিছুটা নিয়েছিল মানুষকে ভয় ভীতি বা ছোটোখাটো চুরি করার জন্য।
বাহিরে এসে সিগারেট ধরালেন দুই ওসি। একটা টান দিয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে ধোয়া ছেড়ে একসাথে বললেন , ধোয়া সবই ধোয়া।

মন্তব্য ১২ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:০৬

রাজীব নুর বলেছেন: আপনার লেখাটা পড়ার পর এখন আমার একটা সিগারেট খেতে ইচ্ছা করছে।

২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:২৩

মায়াস্পর্শ বলেছেন: বাদ দেন খাওয়া। ক্ষতিকর। আমি বাদ দিয়েছি প্রায় ২ বছর হয়ে গেছে।

২| ২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৫

সামিয়া বলেছেন: প্রিয়তে নিলাম,সময় করে পড়বো।

২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ রাত ৮:০৪

মায়াস্পর্শ বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ জানবেন। আমার লেখা প্রথম সিরিজ গল্প। কিভাবে যে কি লিখেছি তা নিজেও জানিনা। ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে পড়বেন।

৩| ২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ রাত ৮:৫৭

মিরোরডডল বলেছেন:




শেষ পর্ব আগের গুলোর চেয়ে ভালো হয়েছে।

২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ রাত ৯:০২

মায়াস্পর্শ বলেছেন: ধন্যবাদ অনেক অনেক। অবশেষে শেষ হলো।

৪| ২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ রাত ৯:১২

মিরোরডডল বলেছেন:




ওম শান্তি নমঃ শিবা !!!!!!
:)

আর লিখবে কখনও সিরিজ?



২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ রাত ৯:১৫

মায়াস্পর্শ বলেছেন: কানে ধরলাম আর কিহ :-P :-P

৫| ২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ রাত ৯:১৮

মিরোরডডল বলেছেন:




এইবার ঠিক আছে :)


৬| ২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ রাত ৯:২২

মিরোরডডল বলেছেন:




সুন্দর সুন্দর কবিতা চাই।
মার্শ কবিতা ভালো লিখে।

২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ রাত ৯:২৫

মায়াস্পর্শ বলেছেন: অবশ্যই লিখবো। ভালো থাকুন সব সময়, ঘুম ডাকছে আমায়। শুভ রাত্রি।

৭| ২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ সকাল ১০:৫৬

রাজীব নুর বলেছেন: পোষ্টে আবার এলাম। কে কি মন্তব্য করেছেন সেটা জানতে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.