নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
একদিন জীবন শেষ হয়ে যাবে তবুও অনেক কিছু করার সাধ জাগে..............
বাহিরে দু'একটা কাঠাল পাতা ঝড়িয়া পড়তেছে, সেদিকে হামিদা বানুর দেখিবার অবকাশ নেই। সে এক মনে বই পড়ছে। পড়তে তার ভাল লাগে। আজ একটা উপন্যাস নিয়া বসেছে, কাহিনিটা দারুণ। শরতের এই অপরাহ্নে তার তাড়া আছে। বিকাল ০৫.০০ টায় টিউশনিতে হাজির হতে হবে। যথা সময়ের ছাত্রীর বাসায় না গেলে, ছাত্রীর মায়ের মুখের যেন শ্রাবনের আকাশ হয়ে উঠে। সহসা তাকানো যায় না।
উঠি উঠি করেও তার উঠা হচ্ছিলনা। শেষ পর্যন্ত বই রেখে তাড়াহুড়া করে বেড়িয়ে যেতে হল।
হামিদা বেড়িয়ে যাবার পর তার মা-বাবা দু'জনে বসে আলাপ করছেন-
মা- মেয়েটা সংসারের জন্য এত খাটে, নিজের শরীরের যত্নই নিতারেনা। জানিনা মাইয়াডার কপালে কী আছে ?
বাবা-যতগুলান বিয়ার কাজ আইছে, সবগুলাই একটা একটা কইরা পাশ কাইটা গেল। কি নাই আমার মাইয়ার-লেহায়, পড়ায়, কামে কাইজে তিরোন্তাজ।
মা- মাইনষে কান ভাঙ্গানি দেয়, খুছি কয়। কেমনে বিয়া অইবো।
বাবা- অর ছাত্রী পড়ান খেমা দিতে অইব। নানান জনে নানান কথা কয়।
মা- ছাত্রী না পড়াইলে সংসারঠা চলব কেমনে ? আপনে-আমি দু'জনেই অসুইক্কা মানুষ। খরচের নাই আহাল।ছোড মাইয়াডা কলেজে ভর্তি হইছে, হের খরচ। চিন্তা ভাবনায় জীবনডা শেষ হইয়া গেল।
ফারহানা বানু তার বাপ-মার কথা আড়াল থেকে সবই শুনেছে।
সে সামনে এসে বলল-তোমগো দুইজনের আর খাইয়া কাম নাই, খালি যহন তহন বুবুর বিয়ার কথা তুইলা বও আর মন মড়া হইয়া থাহ।
ভাল লাগেনা আর।
আমার বান্ধবী একটা বিয়ার কাজ আনছে, পোলা বিদেশ থাহে, বিদেশেরতেনে আইছে এহন বিয়া করবো। বিয়ার পরে আবার বিদেশ চইলা যাইবো। ভবিষ্যতে যদি সুযোগ-সুবিধা করতারে তয় বউরেও বিদেশ লইয়া যাইবো। তোমরা ভাইবা চিন্তা কও আমি বান্ধবিরে জানাই। দেহি এইবার ভাগ্যে কি আছে ?
হামাদার বাবা-মা শলা পরামর্শ কইরা জানাল তারা রাজি। রাজি না হইয়া উপায় আছে মা্ইয়ার বয়স বাইরা যাইতাছে, মানুষের মন্দ কথা আর শুনতে মন চায়না।
ফারহানা তার বান্ধবীর বাড়ি গিয়ে সব জানালো। তারা রাজি। ছেলে পক্ষের লোকজন আইসা হামিদারে দেইখা গেল।
হামিদার বাপও ছেলের বাড়ি গিয়ে সব দেখে শুনে এলো। বিয়ার দিন-ক্ষণ ঠিক হলো।
এদিকে আবিদের কাছে হামিদার চেয়ে ফারহানারে বেশি ভাললাগে। সে একদিন ফারহানার বান্ধবীকে দিয়ে খবর পাঠিয়ে ফারহানার সাথে কথা বলেছে।
আবিদ-ফারহানা আমি তোমারেই ১ম দেখেছি, তোমার বড় বইনরে দেখছি পরে। তোমারেই আমার মনে ধরছে। তুমি যদি রাজি থাহ তোমার বড় বইনের বিয়া অইলে আমি তোমারে বিয়া করমু।
ফারহানা- আবিদ ভাই, জান থাকতে আমার বইনের আগে আমি বিয়া বমু না। আমার সোনার প্রতীমা বইন সংসারের লইগা সারাডা জীবন খাটা খাটনী করছে। হের লাইগা বাপ-মার ঘুম নাই। আপনে হেরে বিয়া করলে সুখী হইবেন।
আবিদ- তুমি যদি রাজি না হও তাইলে আর করার কিছু নাই, কথা যখন হইছে তয় হামিদারেই বিয়া করুম।
সেদিনের পর থেকে ফারহানার মনেও কেন যেন বার বার আবিদের মুখ খানা উকি দেয়। তার কোন কাজে মন বসেনা। সে এর কারণ বুঝতে পারেনা। এক রাতে স্বপ্নেও আবিদ এসে হাজির, আচমকা ঘুম ভেঙ্গে গেল ফারহানার। এস কি হচ্ছে ? মনে মনে বলল সে।
আবিদ আর হামিদার বিয়ে হয়ে গেল। সুখেই দিন যেতে লাগলো কিন্তু আবিদের সাথে ফারহানার দেখা হলেই সে কেমন যেন হয়ে যায়। দিন দিন আবিদেরে আরো কাছ থেকে দেখে তার প্রতি ফারহানা দুর্বল হয়ে পড়ে। কিন্তু সে তা প্রকাশ করেনা। এভাবেতো দিন চলতে পারেনা। আবিদ বিদেশ যাবে আরো ৬ মাস পড়ে। এতদিন কেমনে সে থাকবে, যদি বুবু জেনে যায় তবে সে আত্মঘাতী হবে নির্ঘাত।
এক রাতে ছোট্ট একটা চিঠি লিখে ফারহানা ঘড় থেকে বেড়িয়ে গেল। হামিদা সকালে তার বিছানা গুছাতে গিয়ে বালিশের নীচে পেল এই চিঠি।
প্রিয় বুবু,
আমাগো লাইগা তুই সারাটা জীবন কষ্ট করছস। এখন তোর সুখের দিন আইছে। তোর এই সুখ চিরকার থাক। মানুষের জীবনে হঠাত কইরা কি ঘইটা যায় বলা যায়না। আমার মনের ভিতর কি হইতাছে তা আমি কাউরে বলতে পারুমনা। তুই ভাল থাকিস। বাপ মারে দেইখা রাখিস। আমারে খুজিসনা, চিরদিনের লইগা দূরে চইলা গেলাম।
ইতি
ফারহানা।
হামিদা চিঠি পইড়া কাইন্দা বুক ভাসা্ইলো। তার বাপ মা ছোট মাইয়ার শোকে পাগলের মত হইয়া গেল। এর পর থাইকা যতবারই ফারহানার কথা তার মনে পড়ে বুকের ভিতর ব্যাথাটা মোচড় দিয়া উঠে।
২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৭ রাত ৮:৪২
মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন: আমার লিখা ১ম ছোট গল্প। ১ম মন্তব্যের জন্য অনেক অনেক ধন্যবা। অনুপ্রাণিত হলাম।
২| ২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৭ রাত ৮:৩৫
ওমেরা বলেছেন: কেন বোনের স্বামী চলে গেলে সে চলে আসুক ।
২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৭ রাত ৮:৪৪
মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন: চলে আসুক বললেইতো আর চলে আসা যায় না, ফারহানা তার নিয়তিকে মেনে চলে গেছে আর ফিরে আসবেনা। ধন্যবাদ আপু। ভাল আছেন নিশ্চয়।
৩| ২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৭ রাত ৮:৩৫
ভ্রমরের ডানা বলেছেন:
আহারে....... মর্মান্তিক ঘটনা.... ফারহানার জন্য কষ্ট লাগছে...
২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৭ রাত ৮:৪৬
মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন: তাহলে গল্প সার্থক হলো বলা যায়, যেহেতু গল্পের চরিত্রের জন্য কষ্ট লাগছে। কি বলেন ডানা ভাই ? হা হা........
৪| ২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৭ রাত ৮:৪৯
ভ্রমরের ডানা বলেছেন:
অবশ্যই.... চমৎকার প্লটে খুবই বাস্তবিকতা সাপেক্ষ লেখা। পাঠক হিসেবে আমার ভাল লেগেছে। লেখক হিসেবে বলব কিছু বানানের দিকে মনযোগ দিলে ভাল হয়...
২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৭ রাত ৯:১০
মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন: অনুপ্রাণিত করার জন্য ও বাস্তব মন্তব্যের জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ। ভাল থাকুন চিরকাল।
৫| ২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৭ রাত ৯:৩১
ধ্রুবক আলো বলেছেন: লেখা ভালো হয়েছে। তবে কিছু বানানের দিকে মনোযোগ দিতে হবে।
২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৭ রাত ১০:৪৮
মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে। অনেক দিন পর আমার ব্লগে এসেছেন- স্বাগতম। এখন নিশ্চয় সুস্থ আছেন। ভাল লাগলো অনুপ্রাণিত করায়।
৬| ২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৭ রাত ১০:০৩
নির্বাক শাওন বলেছেন: গল্প ভাল হয়েছে।
শুভকামনা নিরন্তর।
২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৭ রাত ১০:৫০
মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন: প্রথম গল্পে আপনাদের মতামত আশাজাগানিয়া। কবিতার পাশাপাশি এবার গল্পেও মনোযোগ দেব। অনেক অনেক ভাল থাকবেন। শুভ কামনা।
৭| ২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৭ রাত ১০:৩৬
সোহাগ সালেহ বলেছেন: গল্পটা চমৎকার। বাস্তবতা ফুটিয়ে তুলেছেন সুন্দরভাবে। তবে লেখাটিতে সাধু ও চলিত ভাষার মিশ্রণটা ভালো লাগেনি। এই ব্যাপারে যত্নবান হলে গল্পটি আরো ভালো হত। যাইহোক, এরকম বাস্তবসম্মত আরো গল্প প্রত্যাশা করছি। ভালো থাকুন সবসময়।
২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৭ রাত ১০:৫২
মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন: প্রথম গল্পে কিছু ভুল থাকবে এটাই স্বাভাবিক, পরবর্তীতে চেষ্টা করবো আরো ভাল করার। সুন্দর মতামত ও পরামর্শে খুশি হলাম। চেষ্টা করবো আরো গল্প লিখার । পাশে থাকবেন। ভাল থাকুন। ধন্যবাদ।
৮| ২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৭ রাত ১১:০৩
আখেনাটেন বলেছেন: গল্প হিসেবে মন্দ না। ভালোলাগা রইল।
২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৭ রাত ১১:০৭
মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন: শুভ কামনা জানবেন। গল্পের জন্য আলাদা সময় বের করতে হবে। পাশে থাকার আশা করছি।
৯| ২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৭ দুপুর ২:৩৪
জাহিদ অনিক বলেছেন: বড় বোনকে দেখতে গিয়ে ছোটকে ভাল লেগে যায়, এমন হয়, আগেও হয়েছে।
আবিদ আর হামিদার বিয়ে হয়ে গেল। সুখেই দিন যেতে লাগলো কিন্তু আবিদের সাথে ফারহানার দেখা হলেই সে কেমন যেন হয়ে যায়। - বিয়ে হয়ে গেলে হামিদার থাকার কথা আবিদের বাড়িতে অর্থাৎ শ্বশুর বাড়িতে।
এক রাতে ছোট্ট একটা চিঠি লিখে ফারহানা ঘড় থেকে বেড়িয়ে গেল। হামিদা সকালে তার বিছানা গুছাতে গিয়ে বালিশের নীচে পেল এই চিঠি। - তাহলে কি বিয়ের পরেও হামিদা বাবার বাড়িতেই থাকে !
১ম ছোট গল্প ভাল লেগেছে মাইদুল ভাই। শুভ কামনা।
২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৭ সকাল ১০:৪৭
মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন: হামিদার বিয়ে হলেও সে বাপের বাড়িতে বেশি থাকে তাই আবিদও ঘন ঘন হামিদাদের বাড়িতে আসে তাই ফারহানার সাথে দেখা হয়। গল্পে অবশ্য বিস্তারিত উল্লেখ নেই।
গঠনমূলক সমালোচনা করার জন্য ও ভাললাগায় কৃতজ্ঞ। ভাল থাকবেন জাহিদ অনিক।
১০| ২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৭ রাত ১০:২০
শাহরিয়ার কবীর বলেছেন: ভালো লাগা রইলো +
২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৭ সকাল ১০:৪৮
মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ কবীর ভাই।
©somewhere in net ltd.
১| ২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৭ রাত ৮:৩২
শাহাদাৎ হোসাইন (সত্যের ছায়া) বলেছেন: ঘটনা কি সত্যি নাকি গল্প?
জানতে ইচ্ছে করছে।