![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বেশিদিন আগের কথা না।
তখনকার যুগে সারা গ্রাম বা মহল্লা খুজে হাতেগুনা মাত্র কয়েকজন বেশি শিক্ষিত লোক পাওয়া যেতো।তখন ছিলো না A+ B+ আর গ্রেড পয়েন্ট আনসার GPA এর কোনও সিষ্টেম।ছিলো 1st ডিভিশন,2nd ডিভিশন,3rd ডিভিশন,4th ডিভিশন যাচাই করার সিষ্টেম।আর যারা 1st ডিভিশনে পাশ করতো সমাজে ছিলো তাদের কতো নাম দাম,সুনাম।রাস্তা দিয়ে হেঁটে গেলেও লোকে বলতো এই দেখ অমুখের ছেলে কি ভালো রেজাল্টে পাশ করেছে।এমন সন্তানকে নিয়ে পিতা-মাতার ও গর্বের কোনও কমতি হতো না।কারন উনাদের সন্তান যে 1st ডিভিশনে পাশ করেছে।এমনি এমনি কি কেউ 1st ডিভিশন পায়?অনেকজনের মধ্যে সবচেয়ে জ্ঞানী থাকায় ই তো পেয়েছে।
হ্যা,তখন লেখা-পড়ার প্রতি সব মানুষ অগ্রসর ছিল না তবে যারা ছিলো তারা খুব মনযোগ সহকারেই জ্ঞানার্জন করেছে।এখনকার মতন তখন ছিলো না কোনও আধুনিক শিক্ষা দানের সিষ্টেম কিন্তু তবুও শিক্ষকেরা পাঠদানে কোন ত্রুটি রাখেননি।
দিন বদলাতে থাকলো,আস্তে আস্তে বাড়লো শিক্ষার মান।
ভালো কথা,এবার বলি বর্তমান শিক্ষার অবস্থাঃ
উপরের সব কথাই অতীতের।আমরা জানি,অতীত নিয়ে টানা-হেচড়া করতে নেই করলে দুঃখ,কষ্ট,আফসোস তিনটাই বাড়ে।কিন্তু অতীত থেকেই তো জানতে হয়,শিখতে হয়,অতীতই যে আমাদের শিক্ষা দেয় তা কি অস্বীকার করা যায়?
এখনকার যুগ আধুনিক যুগে পরিণত হয়েছে।বদলে গেছে পুরনো সকল অভ্যাস,আচার-আচরন সেই সাথে বদলে গেছে শিক্ষা ব্যবস্থাও।শিক্ষার মান বাড়তে বাড়তে চরম পর্যায়ে পৌঁছে গেছে।এতো আমাদের জন্য অনেক আনন্দের!
কিন্তু দুঃখের কথা কি জানেন?
দেশে শিক্ষার মান বেড়েছে ঠিকই তবে সু শিক্ষার মান আজও অনেক কম।আপনার চারপাশেই নজর দিন প্রমাণ পেয়ে যাবেন।
অবাক হলেন!
অবাক হওয়ার কিছুই নেই।আগেরকার যুগে শিক্ষার মান কম থাকলেও যে দু চারজন শিক্ষিত হয়েছেন তারা ছিলেন অনেক মেধাবী,ভালো ছাত্র যে কারনে তারা 1st ডিভিশনে পাশ করেছিল।
বর্তমানে নামে মাত্র মেধাবী আর ভালো ছাত্রের সংখ্যাই বেশি।যারা এস.এস.সি তে GPA 5 পেয়ে A+ A- পেয়ে পাশ করে কিন্তু মূলত তারা ক্লাস এইটের একটা অংকের ও সমাধান দিতে পারবে না।
সায়েন্স নিয়ে পড়ছে অথচ পদার্থ কি তাই জানেনা,হয়তো সে নিজে পদার্থ নাকি অপদার্থ সেটাই বলতে পারবে না tongue emoticon
নিউটনের মহাকর্ষনের সূত্র গুলোর কথা বললে তো নিউটন কে সেটাই চেনে না।
এইচ.এস.সি তে A+ পেয়েছে কিন্তু ত্রিকোণমিতির একটা সূত্র জানেনা।রসায়ন বিষয়ে GPA 5 কিন্তু রাসায়নিক সংকেত গুলোই তার অজানা।চার্লস কে তা ও জানেনা।পরমাণুর সংঙ্গা বলতে পারেনা।
এমন আরো অনেক উদাহরন আছে যা আমি বাস্তবে প্রমান পেয়েছি।
এরাই আবার দেশের গোল্ডেন পাওয়া শিক্ষার্থীদের তালিকাভুক্ত।
কি আজিব!
এদের নিয়েই আমরা স্বপ্ন দেখি সোনার বাংলার।সত্যিই এরা সোনা দিয়ে ভরিয়ে দিবে দেশ।
হায়রে অধম,শুধুমাত্র সার্টিফিকেটে GPA 5 লেখা থাকলেই সব হয় না।সামান্য একটা কাগজ কি করে তোমার জীবন গড়বে?
জীবন গড়তে দরকার তোমার পারদর্শীকতার,সুন্দর ব্যক্তিতের,গম্ভীর মনোভাবের।
সার্টিফিকেটে লেখা থাক না তুমি পঁচা স্টুডেন্ট তাতে কি,তুমি যদি প্রেক্টিক্যালি দেখিয়ে দিতে পারো বুঝিয়ে দিতে পারো যে তুমি ই সেরা তখন কি দরকার সার্টিফিকেট এর।তখন কি কেউ তোমার সার্টিফিকেট দেখবে নাকি কাজ দেখবে?
অহেতুক শিক্ষার মান বাড়িয়ে কি লাভ যেই শিক্ষা কোন কাজে লাগবে না।এতে ভবিষ্যতে প্রতিটা স্টুডেন্টকে এর মাশুল দিতে হবে।যোগ্যতা ছাড়া যাদের পাশ করে দেওয়া হচ্ছে গোল্ডেন নামক এল্যুমিনিয়াম পাচ্ছে ফেল করে রাখলেও হয়তো তারা আবার শেখার মতো সুযোগটা পেতো।কিন্তু এখনতো তাও নাই।
এখন ঘরে ঘরে গোল্ডেন পাওয়া শিক্ষার্থীদের অভাব নেই কিন্তু আগের মতো কেউই তাদের এতোটা রেসপেক্ট করেনা।আগের যুগে 1st ডিভিশন পেলে সারা পাড়ায় জানতো,সকলে সমাদর করতো এখনকার যুগে তা নেই।কারন সবাই তো জানে এতো গোল্ডেন আর A+ এর রহস্য কি,কেমনে পেলো।
লেখকের কথাঃ নিজেকে কখনোই মেধাবীদের তালিকায় দ্বার করিনা।একসময় মেধাবীদের শীর্ষে ছিলাম কিন্তু এখন তা শুধু ইতিহাসের রুপকথার গল্পের মতো।কোন একসময় ছিল যখন সবার সাথে কন্টেস্ট ধরে লেখাপড়া করতাম কিন্তু এখন কার সাথে কন্টেস্ট ধরবো,ধরেও কোন লাভ নাই তাই কোনরকমে চালিয়ে যাচ্ছি।এ যুগে সবাই পন্ডিত শুধু আমি বাদে।এখন আমি শুধু পাঠ্য বইয়ের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়,পাঠ্য বই পড়তে আর ভালো লাগেনা।সার্টিফিকেটে ভালো ছাত্র হওয়ার কোন ইচ্ছাই নেই আমার।গ্রেড পয়েন্টে আমি সব সময়ই পিছিয়ে থাকতে চাই।আমি অন্যদের মতো ভূয়া শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে সার্টিফিকেট চাই না,ওমন এক টুকরা কলাপাতার কোন প্রয়োজন নেই আমার।
©somewhere in net ltd.