নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

চোখ যেখানে যেমন...

আমার আমি ....

আব্দুর রহমান মিল্টন

শ্রমজীবি মানুষের চোখের এক ফোঁটা জল মুছে দেয়া আমার নিরন্তর প্রয়াস....

আব্দুর রহমান মিল্টন › বিস্তারিত পোস্টঃ

অবরোধ, হরতালে মাঠেই থাকছে ভালবাসার গোলাপ-গাঁদা ১৫০ টাকার ফুলের ঝপা বিক্রি হচ্ছে মাত্র ৫০ টাকায়, ক্ষতিগ্রস্থ ফুল চাষী ও কৃষকেরা

১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ১২:৩৩

অবরোধ, হরতালে মাঠেই থাকছে ভালবাসার গোলাপ-গাঁদা

১৫০ টাকার ফুলের ঝোপা বিক্রি হচ্ছে মাত্র ৫০ টাকায়, ক্ষতিগ্রস্থ ফুল চাষী ও কৃষকেরা



আব্দুর রহমান মিল্টন, ঝিনাইদহ থেকে ,১৩ফেব্র“য়ারী-

অবরোধ-হরতালের মধ্যে এলো বিশ্বভালবাসা দিবস, কিন্তু সেই ভালবাসা বিনিময়ের অন্যতম উপকরন গোলাপ-গাঁদা সহ নানা জাতের ফুল এবার মাঠেই থাকল। ভাষা দিবস ২১ ফেব্র“য়ারীতেও ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয় শহীদদের প্রতি। কিন্তু এবার ফুল বিক্রি না হওয়ায় ধ্বস নেমেছে দেশের অন্যতম ফুল চাষের এলাকাগুলোতে। এদের মধ্যে যশোরের পাশাপাশি ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ সহ ৬টি উপজেলা অন্যতম। অবরোধ ও হরতালের কারণে ফুলের বাজারে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। তিগ্রস্থ হচ্ছেন ফুলনগরী খ্যাত ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার হাজার হাজার ফুল চাষী। একই সাথে অন্যান্য উপজেলার চাষীরাও । মাত্র ৩০-৩৫ দিন আগেও যে ফুল বিক্রি হয়েছে ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা ঝোপা (২০টি মালা) দরে। সেই ফুল এখন বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা ঝোপা দরে। ঝোপা প্রতি কৃষক কম পাচ্ছেন একশত টাকা। আর এই লোকসান ঠেকাতে কৃষক সঠিক মূল্য না পেলেও ভালবাসা দিবস কে কেন্দ্র করে ফুল তুলে বাজারজাত করছেন। তারা খরচ উঠানোর চেষ্টা করছেন। আর ফুল ব্যবসায়ীরা বলছেন, কৃষক বাঁচাতে তারা জীবনের ঝুকি নিয়ে কিছু কিছু মাল দেশের বিভিন্ন স্থানে নিয়ে যাচ্ছেন। যদিও কৃষকের সঠিক মূল্য তারা দিতে পারছেন না। তারাও তিগ্রস্থ হচ্ছেন।

ফুল চাষী ও ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, অব্যহত অবরোধ ও হরতালের কারনে হঠাৎ করেই এই দাম পড়ে গেছে। এই অবস্থা চলতে থাকায় তারা মারাত্বক তিগ্রস্থ হচ্ছেন। তবে এই ভালবাসা দিবস ও আন্তজার্তিক মাতৃভাষা দিবসে তারা ভালো দাম পাবেন এমন আশা করছেন। তার জন্য প্রয়োজন দেশের বর্তমান অবস্থার নিরসন হওয়া। ফুল ব্যবসায়ী সমিতির সাধারন সম্পাদক ফজলুর রহমান বলছেন, প্রতিদিন ঝিনাইদহের বিভিন্ন এলাকার মাঠ থেকে আনুমানিক ৫ হাজার ঝোপা ফুল রাজধানী ঢাকা, বন্দরনগরী চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে যেয়ে থাকে। যশোরের গদখালীর ফুল বাজারের পরই ঝিনাইদহে ফুলের বাজার রয়েছে।



ঝিনাইদহে এবার ২৬৫ হেক্টর জমিতে ফুল চাষ হয়েছে। এর মধ্যে মহেশপুর উপজেলায় ১২৫ হেক্টর, কালীগঞ্জে ৯০ হেক্টর, ঝিনাইদহ সদরে ৩০ হেক্টর ও কোটচাঁদপুর উপজেলায় ২০ হেক্টর জমিতে ফুলের আবাদ হয়েছে। বছরের পর বছর ফুলনগরী হিসেবে খ্যাত কালীগঞ্জ উপজেলার বালিয়াডাঙ্গা মাঠে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মাঠের পর মাঠ ফুল েেত ফুল দাড়িয়ে আছে। হলুদ ও বাসন্তি রং এর গাঁদা ফুলে মাঠ রঙ্গিন হয়ে আছে, আছে গোলাপ ও বিদেশী জাতের ফুল। কৃষকরা মুল্য না পেয়ে ফুল তুলছে না। ফুল না তুললে যে গাছগুলো মারা যেতে পারে শুধুমাত্র সেই গাছ থেকে ফুল তুলে লোকসানে বাজারে বিক্রি করছেন। কথা হয় বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের ফুল চাষী আকরাম হোসেনের সাথে। তিনি জানান, ১৫ বছর ফুলের চাষ করছেন এতো কম মুল্যে কখনও ফুল বিক্রি করতে হয়নি। তার এবার ১০ বিঘা জমিতে ফুল চাষ রয়েছে। তিনি আরো জানান, বছরের যে কোন সময় ফুলের চারা রোপন করা যায়। একটি চারা রোপনের তিন মাস পর থেকে ফুল তোলা যায়। আর গাছটি ফুল দেয় আরো ৩ থেকে ৪ মাস। ৩৩ শতাংশের এক বিঘা জমিতে চাষ করে ফুল তোলা পর্যন্ত তার খরচ হয়েছে প্রায় ১৮ হাজার টাকা। এই জমিতে ২ হাজার ঝোপা ফুল হয়, যা বিক্রি করলে ৩৫ থেকে ৪০ হাজার টাকা আয় হয়। কিন্তু হঠাৎ করে ফুলের দাম কম হওয়ায় তার অনেক টাকা লোকসান হবে। কৃষকের হিসাব অনুযায়ী বর্তমান বাজার মুল্যে এক বিঘায় ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা আয় হবে।

ফুল ব্যবসায়ী আলমগীর হোসেন জানান, চট্ট্রগ্রাম, ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে তিনি ফুল বিক্রি করেন। নিজের দুই বিঘা জমিতে চাষ রয়েছে। পাশাপাশি মাঠ থেকে ক্রয় করে বিভিন্ন স্থানে নিয়ে যান। কৃষককের তে থেকে ফুল ক্রয় করার পর ঝোপা তৈরী করতে হয়। একটি ঝোপা (মালা) তৈরী করতে তাদের ব্যায় হয় ১০ টাকা। এছাড়া রয়েছে পরিবহন খরচ। ফুল বিক্রির পর এই খরচটিও তাদের উঠছে না। তিনি বলেন, মুল্য না থাকায় তে থেকে অনেকে ফুল তুলছেন না। আলমগীর হোসেন আরো জানান, শুক্রবার তিনি ২৪০ ঝোপা ফুল ঢাকায় নেবার চেষ্টা করেছিলেন। সেখানে ১শত ঝোপা পাঠাতে পেরেছেন। বাকিগুলো ফেরত নিয়ে এসেছেন। তিনি বলেন, বর্তমানে ফুল এর এমন অবস্থা দাড়িয়েছে কৃষকের তে থেকে তোলা, আর ব্যবসায়ীদের পরিবহন খরচ হচ্ছে না। যে কারনে ফুল বাজারে নিচ্ছেন না।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, অবরোধের কারনে তারা ফুল বাজারগুলোতে নিতে পারছেন না। যে কারণে দাম কমে গেছে। এই অবস্থা আরো চললে অন্যান্য ফসলের সাথে ফুল চাষীরাও মারাত্বক তিগ্রস্থ হবেন। ব্যবসায়িরা জানান, কালীগঞ্জ থেকেই হানিফ, মামুন, ইউনিক ও শ্যামলী পরিবহনের বেশ কয়েকটি গাড়ি ফুল পরিবহন করতো। এই গাড়িগুলো বর্তমানে বন্ধ হয়েছে।

এ ব্যাপারে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ঝিনাইদহের উপ- পরিচালক শাহ মো: আকরামুল হক জানান, ঝিনাইদহে এবার ২শ ৬৫ হেক্টর জমিতে ফুল চাষ হয়েছে, ফুল চাষের আবাদ ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে তবে হরতাল- অবরোধে ফুল চাষী ও ব্যবসায়ীরা তিগ্রস্থ হচ্ছেন।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ১২:৩৫

প্রামানিক বলেছেন: ফুলের ব্যাবসা, গানের বয়াতী, পিকনিক সব এবার মাঠে মারা গেছে।

২| ১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ১২:৩৯

আব্দুর রহমান মিল্টন বলেছেন: অসাধারণ আপনার কমেন্ট @প্রামািনক

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.