![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
শুধু লিখেই যাই।ভালো মন্দ বিচার বিশ্লেষন করবেন পাঠক
যুলকারনাইন এক আশ্চর্যজনক দিগ্বীজয়ী বীরের আসনে অধিষ্ঠিত হয়েছিলেন।তিনি একের পর এক দেশ জয় করেন।তাঁর দেশ জয় করার উদ্দেশ্য ছিলো জনসাধারণকে অত্যাচারী শাসক চক্রের অত্যাচার হতে মুক্ত করা।তবে কোনরুপ রক্তারক্তির মাধ্যমে নয় বরং উত্তম চরিত্র ও মানবতার প্রভাবে সম্পন্ন করতেন।
যুলকারনাইনের সফর: পবিত্র কোরআনে যুলকারনাইনের তিনটি সফরের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। প্রথম সফর পশ্চিমাঞ্চলে, দ্বিতীয় সফর পূর্বাঞ্চলে, তৃতীয় সফর উত্তরাঞ্চলে কোন এক পর্বতের দিকে।
ইয়াজুজ মাজুজের প্রতিবন্ধক প্রাচীর নির্মান: যুলকারনাইনের তৃতীয় সফর শুরু হয় উত্তরাঞ্চলে এমন এক যায়গায় যেখানকার অধিবাসীরা ইয়াজুজ মাজুজ নামক এক সম্প্রদায়ের অত্যাচারে জর্জরিত ছিলো। তিনি অধিবাসীদের পাশে দুটি পাহাড় দেখলেন।
সে সম্প্রদায় যুলকারনাইনের ভাষা বুঝত না। যুলকারনাইনও তাদের ভাষা বুঝতেন না।ইয়াজুজ মাজুজ দ্বারা অত্যাচারিত অতিষ্ট সম্প্রদায় যুলকারনাইনের মত প্রভাবশালী এবং দিগ্বীজয়ী সম্রাটের সাক্ষাৎ পেয়ে তারা আশান্নিত। তারা ইঙ্গিতের মাধ্যমে যুলকারনাইনের কাছে সাহায্যের আবেদন জানাল। যেন যুলকারনাইন ইয়াজুজ মাজুজ এবং তাদের মাঝে প্রতিবন্ধক প্রাচীর নির্মাণ করে দেন। তারা বলল, যদি যুলকারনাইন তাদের সাহায্য করতে সম্মত হন তবে তারা চাঁদা সংগ্রহ করে তাঁকে আর্থিক সহায্য করবে।
কিন্তু যুলকারনাইন বললেন, আমার প্রতিপালক আমাকে যে সম্পদ দান করেছেন তাই আমার জন্য যথেষ্ট। আমার আর্থিক সাহায্যের প্রয়োজন নেই। তবে তোমরা আমাকে শ্রম দিয়ে সাহায্য কর। তবে আমি তোমাদের ও তাদের মাঝে একটি প্রতিবন্ধক দেয়াল নির্মাণ করে দেব যাতে তারা আর তোমাদের ধারে কাছে আসতে না পারে এবং কোন প্রকার হামলাও করতে না পারে।
তারা জিজ্ঞেস করল, আপনি আমাদের কাছে কি ধরনের সাহায্য চাচ্ছেন? তিনি বলেন, প্রথমে তোমরা শ্রম দিয়ে সহায়তা করবে। অতঃপর দেয়াল নির্মানের জন্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী। তারা জানতে চাইলো, কি কি সামগ্রী প্রয়োজন?
যুলকারনাইন বললেন- তোমরা আমাকে লোহার টুকরা এনে দেবে আর আমি তোমাদেরকে এর মূল্য দিয়ে দেব।
তারা যুলকারনাইনের নির্দেশ অনুযায়ী মোটা মোটা লোহা , শুকনা কাঠ কয়লা সংগ্রহ করে আনলো এবং এগুলো পাহাড়দ্বয়ের মধ্যভাগে রেখে দিল। এবং তাদের সংগ্রহ করা এসব সামগ্রী পাহাড়দ্বয়ের চূড়া পর্যন্ত উচ্চ করে রাখা হল। এবং নির্দেশ দিলেন , এতে আগুন দিয়ে তাপ দিতে থাক। প্রজ্জ্বলিত অগ্নিশিখা এসব সামগ্রীকে জ্বালিয়ে যখন জ্বলন্ত অঙ্গারের ন্যায় করে ফেলল তখন তাদেরকে গলিত তামা আনার নির্দেশ দেয়া হল।তারা গলিত তামা আনায়ন করল। তারপর কোন এক বিশেষ যন্ত্রের সাহায্যে উত্তপ্ত লোহার উপর গলিত তামা ঢেলে দেয়া হল। গলিত তামা লোহার সাথে সংযুক্ত হয়ে পাহাড় সমান মজবুত এক বিশাল তামা মিশ্রিত লোহার প্রতিবন্ধক গড়ে উঠল। তখন পর্যন্ত এত উঁচু , পরু আর মজবুত প্রাচীর কোথাও ছিল না।এটা এতটাই পুরু, মজবুত এবং উঁচু ছিলো যে ইয়াজুজ মাজুজ এই বিশাল প্রাচীর অতিক্রম করে এই পার্শ্বে আসা অসম্ভব হয়ে পড়ে। আর প্রাচীর এত শক্ত ছিলো যে তাতে কোন প্রকার ছিদ্র বা ক্ষয় করাও সম্ভব হয় নি।
যুলকারনাইনের নির্মিত এ প্রাচীর এখনও বর্তমান আছে বলে পবিত্র কোরআনের বিভিন্ন আয়াতে বলা আছে।
কোরআনে ইরশাদ হচ্ছে- ( যুলকারনাইনের বাণী) " অনন্তর যখন আমার রবের প্রতিশ্রুত সময় এসে পড়বে অর্থাৎ ইয়াজুজ মাজুজ প্রকাশ পাওয়ার সময় আসবে তখন আল্লাহ্ এ লৌহ নির্মিত প্রাচীর ধ্বংস করে মাটিতে মিশিয়ে দেবেন।
©somewhere in net ltd.