নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি আমার ছায়া। আকাশ ছোঁয়ার স্বপ্ন নিয়ে বাঁচি, হাতের মধ্যে আকাশ; তবু ছুঁতে পারিনা।

মোহাম্মদ বাসার

আইনজীবী ও মানবাধিকার কর্মী। ফিচার এডিটর- বাংলাপোস্ট, যুক্তরাজ্য।

মোহাম্মদ বাসার › বিস্তারিত পোস্টঃ

একটি অতি প্রাকৃত গল্প এবং ৫৬ বছরে আমিঃ

২৪ শে জানুয়ারি, ২০১৭ সকাল ১০:৪৯

মফিজ ভাই বললেন প্লেটে ভাত রাইখ্যা সালুন নিলা না, ৬ ঘন্টা পর কইত্তোন আইলা? ভাততো শুঁকাইয়া চাউল হইয়া গেছে। সালুনের থিকাও গন্ধ আইতাছে।

আমি মফিজ ভাইর দিকে হা করে তাকিয়ে আছি। আশ্চর্য সে কি বলছে আমি তার কিছুই বুঝতে পারছিনা। হ্যাঁ সে ও আমি ইউনিভার্সিটি লাইফে এক রুমে থেকেছি বটে কিন্তু সেই ১২ বছর আগের কথা সে এখন বলছে কেন? আমি মফিজ ভাইর গায়ে যেয়ে চিমটি কাটলাম। মফিজ ভাই কটমটিয়ে তাকালেন। নিজেও নিজের গায়ে চিমটি কাটলাম, উহু সবইত ঠিক আছে, তাহলে মফিজ ভাই এসব কি বলছে?

মফিজ ভাইকে ডেকে বললাম, শোনেন মফিজ ভাই ১২ বছর পরে দেখা। ভাত, সালুন, শুঁকাইয়া চাউল- কি আবোল তাবোল কথা বলছেন? মফিজ ভাই রেগে মেগে বললেন, মিয়াঁ ছোট মানুষ দিগদারী কইরো না। পাতিলে গরম ভাত আর ফ্রিজে দুপুরের ঠান্ডা তরকা্রী আছে, গরম কইরা খাও। এই বলে সে একটা পাঁচ শত পঞ্চান্ন মার্কা সিগ্রেট ধরিয়ে হন হন করে বাসা থেকে বেরিয়ে গেল।

ওহ ১২ টা বছর! ক্যামনে চলে গেল! টেরই পেলুম না। অবাক কান্ড মফিজ ভাই মাত্র ৬ ঘন্টা বলছে কেন? আর তাছাড়া মফিজ ভাইকে আমি যে রকম দেখে গিয়েছিলাম তিনিতো সেরকমই আছেন। ক্লিন সেভড, নীলচে টি শার্ট তাও আছে গায়ে। আমি ঈশ্বরের অপার মহিমায় আবারও বিস্মিত হলাম। তিনি চাইলে কিনা করতে পারেন।

১৮ বছর আগের কেনা ল্যাপটপ্টা বের করে বিস্মিত হয়ে গেলাম। আহা কি তেলেসমাতি কান্ড! মর্ডান সব টেকনোলোজিতে সমগ্র ওয়েব জগত ভর্তী। পুরোনো ফেসবুক একাউন্টে লগ ইন করতেই দেখি বান্ধবী টুন্টুনির মেসেজ- এই এতক্ষণ কই ছিলা? বন্ধু রফিকের প্রশ্ন এটা কি হলো? শিমুল আপা অন্য এক ভূখন্ড থেকে বললেন প্রিপারেশান দেখে গন্তব্য বোঝার উপায় নেই। আমি সবাইকে ডেকে ডেকে আমার ১২ বছর অন্তর্ধানের কাহিনী বললাম। সকলেই আবোল তাবোল বকছি ভেবে দূরে সরে যাচ্ছে। উপায় অন্তর না দেখে বান্ধবী টুন্টুনিকে বললাম দেখ তুমিতো আমাকে জান, এই বারোটা বছর তুমি কি আমাকে দেখেছ? টুনটুনি ভ্যাবা চ্যাকা খেয়ে আমার দিকে ফ্যাল ফ্যাল করে কিছুক্ষণ তাকিয়ে রইলো। তারপর আস্তে আস্তে টুনটুনি ওর রুমের ড্রেসিং টেবিলের আয়নায় খুব নিখুঁতভাবে বিলি কেটে মাথার চূলগুলো ভালভাবে পরীক্ষা করলো, নাহ ঠিকইত আছে, কোন চুলতো পাকেনি। ১২ টা বছরে কিছুটা হলেওত পাকার কথা। ঘর থেকে বেরিয়ে আবার আমার দিকে তাকাল। বুঝতে পারছিলাম ও কনফিউজড হয়ে যাচ্ছে। আরেকটু মোলায়েম ও করুণভাবে তাকাতেই টুন্টুনি আমার কথা বিশ্বাস করে আমার হাত ধরল। একটা দীর্ঘ নিঃশ্বাস ছেড়ে বলল ঈশ্বর চাইলে সবই হতে পারে।

আমি ঈশ্বরের অপার মহিমায় আরেকবার বিস্মিত হলাম। একজনকে বিশ্বাস করানো গিয়েছে আমার ১২ বছরের অন্তর্ধানের কথা। ১ থেকে ১০০, ১০০থেকে লক্ষ, নিযুত কোটি---, সবই সম্ভব। অসম্ভব বলে বিশ্বব্রক্ষ্মান্ডে কোন কথা নেই। ঈশ্বর সর্বশক্তিমান। ঈশ্বরের জয় হোক।

২৪শে জানুয়ারী ২০১৭
যুক্তরাজ্য।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২৪ শে জানুয়ারি, ২০১৭ সকাল ১১:১০

শামীম সরদার নিশু বলেছেন: খুব ভালো লাগল।
অাসেলই অসম্ভব বলে কিছুই নাই।
চেষ্টা করেল সবিকছু্ সম্ভব।
শুধু চেষ্টা নয় সৎ সাহস ও মনোবল ঠিক রাখতে হবে।

২৪ শে জানুয়ারি, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:১১

মোহাম্মদ বাসার বলেছেন: জ্বী ভাই ঠিক ধরেছেন, ধন্যবাদ।

২| ২৪ শে জানুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ১:৩৪

তারেক ফাহিম বলেছেন: মানুষের চেষ্টার অসাধ্যে কোন কাজ নেই

২৪ শে জানুয়ারি, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:১১

মোহাম্মদ বাসার বলেছেন: ঠিক, একদম ঠিক ধরেছেন। ধন্যবাদ ভাই।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.