![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমার পৃথিবীটা আমার মত করেই সাজাতে চাই ৷
আমার জন্ম বিশ শতকের শেষ দশকের মাঝামাঝি সময়ে, একবারে প্রত্যন্ত গ্রামে ৷ মনমুগ্ধকর সুন্দরবনের পাশের একটি গ্রাম ৷ দেশের অন্যন্য গ্রামের মতই আমাদের গ্রামটিও সবুজ-শ্যামলে ভরা ৷ এমনই একটি গ্রামে কেটেছে আমার শৈশব-কৈশোর ৷
তখন আমাদের ঘুম ভাঙতো মুয়াজ্জ্বিনের সুমধুর কন্ঠে আর এখনকার প্রজন্মের ঘুম ভাঙে দ্বিতীয় অ্যলার্মে ৷ ঘুম থেকে উঠে নিমের দাঁতন দিয়ে দাঁত মাজতে মাজতে মক্তবে চলে যেতাম ৷ আর বর্তমান প্রজন্মের ঘুম ভাঙে ফেসবুকের নোটিফিকেশন চেক করতে ৷ মক্তব থেকে এসে পান্তা খেয়ে যেতাম পাঠশালায় ৷ পাঠশালার কাঠের স্লিটে চক দিয়ে লেখার অনুভূতি হয়তো এই প্রজন্ম কখনো পাবেনা ৷ তারা ক্যান্ডি ক্রাশের ৫০০ স্টেজ পার করার অনুভুতিই শেয়ার করুক ৷ পাঠশালা ছুটি হলে একসাথে গ্রামের পুকুরে ঝাপাঝাপি, দাপাদাপি, শালুক তোলা, হেলাঞ্চ শাকের ডাটা দিয়ে লুকোচুরি খেলে পুকুরের পানি ঘোলা করা অতঃপর গৃহকর্তীর লাঠি হাতে তেড়ে আসার কাহিনীগুলো এদের কাছে নিছক গল্প মাত্র ৷ আম্মুর শাষন-শৃঙ্খল উপেক্ষা করে তার চোখ ফাঁকি দিয়ে দুপুরে রোদে লঞ্চঘাটের পল্টনে, ধানের গোলার আড়ালে অথবা গরুর খড়ের ঝাপের অথবা কলাগাছ বাগানে পলাপলি খেলার মজা বর্তমান প্রজন্ম বুঝবেনা ৷ তিনরাস্তার মোড়ে বন্ধুদের সাথে কিতকিত, জুতা তোলা খেলা কি দেখেছে তারা কখনো? তারা কি জানে বন্ধুদের সাথে ঝগড়া করে আম্মুর সাথে নালিশের পর পরেরদিন পঁচানির গল্প! গ্রামে সন্ধার পর বাবা-মারা আমাদেরকে খুঁজতে বের হতো, শাষন করার সুবিধার্তে বানোয়াট গল্প বলতো ৷ ছোট্টবেলায় মাথায় ঢুকে যাওয়া কনসেপ্ট, গলাকাটা'কে ভয় পাই এখনো! বর্তমান প্রজন্মতো এসবের কিছুই পাচ্ছেনা ৷ তারা বড় হচ্ছে পাঁচ ইঞ্চি স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে তাকিয়ে ৷ এরাই পরীক্ষার রাতে প্রশ্নের জন্য বসে থাকে, অথচ একই সময়ে আমাদের মোবাইল ছিলোনা! ফেসবুক তো অনেক পরের কথা ৷
আচ্ছা এই প্রজন্ম বড় হয়ে আমাদের কি দিবে! জাতির কাছে প্রশ্ন রইলো ৷
©somewhere in net ltd.