লেখালেখি ও অনুবাদে খেয়ানত

১০ ই নভেম্বর, ২০২১ সকাল ১১:৫৭

নতুন একটা প্রকাশনীতে কাজ করি। আমিও কিন্তু লেখক হিসেবে নতুন। আমার উপর ভরসা করে সে অন্য এক দোকানের সাধারণ কর্মচারী থেকে প্রকাশক হয়ে গেছে। আমি ভেবেছিলাম যেহেতু আমার উপর ভরসা করে সে কাজ শুরু করেছে, তাই কেবল আমার মাধ্যমেই কাজগুলো নিবে। কিন্তু নাহ, সেও অনেক বুঝে ফেলেছে। এখন আর কোনো কাজ করতে আমার হেল্প লাগেনা। কেবলমাত্র কোনো বই সে পছন্দ করে ফেললে আমাকে জিজ্ঞেস করে যে এটা করা যায় কিনা। এতটুকুই বা কম কিসে।
মাঝেমধ্যে প্রুফরিডিং আমাকে দেয়। আমি আর কি প্রুফ দেখবো। আমিই তো তেমন অভিজ্ঞ না। তবুও দেখে দেই।
কিছু দিন আগে সেই ধারাবাহিকতায় প্রকাশনীর পক্ষ থেকে একজন আলেমকে একটা বই অনুবাদ করতে দিই। তিনি বয়সে আমার চেয়ে সিনিয়র এবং লেখাপড়াও আমার আগেই শেষ করে খেদমতে লেগে গেছেন। তারই অনুরোধে বইটা দিতে রাজি হই।
অতঃপর সে অনুবাদ করে টাইপ করে আমার কাছে পাঠায়। আমি ভেবেছিলাম দেখতে হবে না। প্রকাশককে দিয়ে দেই। কিন্তু অনুবাদের ক্রস চেক করতে যেয়ে আমাকে রীতিমত অবাক হতে হয়। বেচারার বাংলা সাহিত্য তো ভালই জানা আছে। কিন্তু অনুবাদে খেয়ানতের উপর খেয়ানত। এমনকি হাদিসের অনুবাদেও সে করেছে ভুল। কি আর করবো। পুনরায় অনুবাদ করছি। অথচ বাংলা লেখা আমার চেয়ে অনেক ভাল মানের। উর্দু ও হিন্দি ভাষা কিন্তু বাংলার কাছাকাছি। সহজ বটে। কিন্তু আল্লাহর বান্দার প্রতি মনে হয় খুব বেশি প্রেসার দিয়েছিলাম। যার ফলে সে কুরআনের আয়াত ও হাদিসের মধ্যেও ভুল অনুবাদ করেছে।
আল্লাহ ভরসা। এখন আমি সেটা কমপ্লিট করে তারপর জমা দেব। এরকম খেয়ানত অনেকেই করে। ইসলামি ও অ-ইসলামি সবক্ষেত্রেই চলে। অনুবাদের ক্ষেত্রে লেখক যা বুঝাতে চাইছেন তার সবটুকু যদি উঠে না আসে তাহলে আর অনুবাদ কী করে হয়। অনেকে ছায়া অনুবাদ করে। সেটা ভিন্ন কথা। দিনকে দিন ইসলামি অঙ্গনে লেখালেখি ও সাহিত্য চর্চা বাড়ছে। কিন্তু পাশাপাশি খেয়ানতও বাড়ছে। দীনি কিতাবাদির ক্ষেত্রে খেয়ানত আজিব এক বিষয়। আমাদের লেখালেখি ও সাহিত্য চর্চা সবকিছুই দীন প্রচারের খাতিরে হওয়া উচিত। আর খেয়ানত করে দীন প্রচার হবে না। আল্লাহ পাক সবাইকে সঠিক বুঝ দান করুন। আমিন।

৩ টি +১/-০