![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বিয়ে করেছি আজ প্রায় দুবছর হল। এই দু'বছরে অনেক কিছু শিখলাম। কীভাবে স্ত্রী-কে খুশি রাখতে হয়, কীভাবে ফেমিলি মেন্টেইন করতে হয়। বিয়ে করার পর পর একটা সময় বিবাহিত নারী পুরুষ উভয়েরই মারাত্মক একটা সময় যায়। এই সময়ে যে ধৈর্য না ধরে তার ভাগ্যে মন্দ ছাড়া কিছুই থাকে না।
প্রিয় এক ভাইয়ের মুখ থেকে শুনেছিলাম, যে বিয়ের কিছু দিনের মাথায় তার বৌ তার গলা টিপে ধরেছিল, তাকে যেন তালাক দিয়ে দেয়। ভাইটির মা ছাড়া দেখবার কেউ ছিল না। বউকে খুশি রাখতে গেলে মা বেজার হয়ে যেত। এহেন পরিস্থিতিতে মা এবং শাশুড়ি উভয়ে তাকে তালাক দিয়ে দিতে বলত। কেউ একজন সেই ভাইটির পাশে ছিল না। তার বউ অন্য কোনো ছেলের সাথে সম্পর্কে জড়িয়েছিল বা রানিং কারো সাথে সম্পর্ক চলছে এমন নয়। কোনো কারণ নেই। তার ভালো লাগে না থাকতে। ব্যস। সে থাকবে না। তার সাথে থাকবে না। ভাইটি যথেষ্ট ধৈর্যশীল ছিলেন। দরকার হলে দুদিন পর বউকে তার বাপের বাড়ি দিয়ে আসতেন। দিয়ে আসলে বলতো আমাকে আর নিতে আসবেন না। কিন্তু ভাইটি বারবার গিয়ে হাজির হতেন, এবং জোড় করে হলেও নিয়ে আসতেন। এভাবে চলতে চলতে একপর্যায়ে সে অন্তঃসত্তা। তখনই তার পাগলামি কমলো। এখন ভাইটির দিন খুব ভাল যাচ্ছে। যদি তিনি তখন ধৈর্য না ধরে তালাক দিয়ে দিতেন তাহলে কি হত। মেয়েটিরও যে খুব ভাল হত তেমন নয়। এমন ক্ষেত্রে সাধারণত তালাকই দিয়ে দেয়ে বেশির ভাগ। কিন্তু ভাই আলেম। বুঝেন তালাক হচ্ছে সর্বনিকৃষ্ট বৈধ একটা বিষয়। তাই তিনি ধৈর্য গ্রহণ করলেন। আস্তে আস্তে সবকিছু ঠিক হয়ে গেল।
এবার বলি আমার কথা, আমি আমার খুব কাছের এক আত্মীয়াকে বিয়ে করেছি। আমারই ছোট চাচার মেয়ে। যদিও আমার জন্য এমনটা করা পরিবারের বেশিরভাগ সদস্যের মনঃপুত ছিলনা। তাছাড়া কেনো আলেমাও নয় সে। কলেজপড়ুয়া। কেন করতে যাবো একজন আলেম হয়ে অ-আলেমা মেয়েকে বিয়ে? কেউ রাজি ছিল না। আমার বাবা-মা, চাচা-চাচী কেউ না। বাবার কাছে বলার পর তিনিই কথা বললেন, তার ছোটভাইর কাছে। ছোটভাই বড় ভাইয়ের কথা ফেলতে পারল না। একেবারেই জাঁকজমক মুক্ত পরিবেশে বিয়ে হল। বিয়ের পর বউ বাড়িতে নিয়ে আসলাম। আমাদের বাড়ি ছিল গ্রামের শেষ মাথায়। আর আমার চাচার বাড়ি মধ্যভাগে। বাড়িতে আসতেই তার কান্না। বিয়ের আগেও আমাদের বাড়িতে সে আসেনি তেমন। কারণ আমাদের বাড়ির পরিবেশ তার ভালো লাগে না। আমার বড় চাচার বাড়ি আর আমাদের বাড়ি একসাথে ছিল। সে আসলে বড়চাচার বাড়ি যেত। আমাদের বাড়িতে না। বাড়িতে আসতেই সে কান্না। এ বাড়িতে সে থাকতে পারবে না। তাকে নিয়ে অন্য কোথাও আমি কেমনে থাকবো? কীভাবে থাকবো, কিছুই বুঝতে পারছিলাম না। কোনমতে বুঝিয়ে সুজিয়ে কান্না থামালাম। কিন্তু কতোক্ষণ আর। তারপর অনেক কিছুই হলো। আমি মরে যাবো। কোথাও নিয়ে রেখে আসো, যেখানে কেউ নাই। আরো কত কিছু। তো চলল এভাবে কতোদিন। এর মাঝে ওর হার্টের সমস্যা হয়ে গেল। ঠিক হলো একপর্যায়ে ওষুধ খেতে খেতে। এগুলো চলতে থাকলো পেটে বাচ্চা আসার আগ পর্যন্ত। তারপর আস্তে আস্তে সবকিছু ঠিক হয়ে গেল।
তবে এর মাঝখানে যা কিছু হয়েছিল এতে আমি আমার পরিবারকে সাথে পাইনি। উল্টো আমাকেই বকুনি খেতে হয়েছে। কেমন মেয়ে বিয়ে করলাম। কি করলাম। আরো কত কী! কিন্তু তার মধ্যে যখন একপর্যায়ে গিয়ে পরিবর্তন পেলাম, তখন বুঝে নিলাম ভালো আলেমা মেয়ে হলেও সে ওর মতো হতো না। আজ আলহামদুলিল্লাহ তার সকল বোনের মধ্যে সে সুখে আছে। এটা আমি বলিনি, সে বলেছে এবং তার বোনেরাই বলেছে। আমার বাড়ির সবার কাছেও সে ভাল একজন। সবাই তাকে আদর যত্ন করে। টাকা পয়সা দিয়ে সুখ কেনা যায় না। কেয়ারিং হল আসল। আপনি তাকে কেয়ার করবেন, তাকে আপন করে নিবেন সেও আপনাকে আপন করে নেবে। কিন্তু যদি আপনি কেবল বিয়ে করেন নিজের প্রবৃত্তির উদ্দেশ্যে তাহলে আপনি কয়েক সন্তানের জনক হয়ে গেলেও স্ত্রীর ভালবাসা পাবেন না। একজন স্ত্রীর জীবনের সবকিছু থাকে তার স্বামী।
বিয়ের পর সাধারণত এমন হয়। ভালভাবে মেন্টেইন করতে পারলে সুখের আশা করা যায়। আল্লাহই সকল কিছুর বন্দোবস্ত করে দেবেন। তবে যদি আপনি হারাম পদ্ধতি অবলম্বন করেন, বিয়ের আগে প্রেম প্রীতি করে সেই মেয়েকে বিয়ে করেন, তাহলে সেই মেয়েকে নিয়ে সুখে থাকার কোনো গ্যারান্টি নেই। কারণ যেই সম্পর্কের শুরুটা হারামভাবে তা কখনো সুখের হতে পারে না।
আল্লাহ পাক সবাইকে হেফাজত করুন।
১০ ই নভেম্বর, ২০২১ রাত ৯:১৮
মুহিব্বুল্লাহ বলেছেন: জাযাকাল্লাহ।
২| ১১ ই নভেম্বর, ২০২১ সকাল ১০:২৩
মহাজাগতিক চিন্তা বলেছেন: পোষ্টের সাথে সহমত।
©somewhere in net ltd.
১|
১০ ই নভেম্বর, ২০২১ দুপুর ২:০৭
মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন:
আপনাদের দাম্পত্য সুখের হোক।