![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
১৪৩১ হিজরি সালের রমাদানুল মুবারক এর মাঝে আমার এতেকাফে বসার সুযোগ হল। মসজিদ আবদুল্লাহ রাজেহী রিয়াদ শহরের এক বিশেষ মসজিদ। ইতেকাফের করার নিমিত্তে সেই মসজিদে উলামায়ে কেরাম বক্তব্য দিলেন। এক শায়খ নিম্নবর্ণিত ঘটনা শুনিয়েছেন এবং বললেন যে, এই ঘটনার সত্যতা মিসরের প্রসিদ্ধ আলেম শাইখ মাহমুদ হাসসান নিজেও করেছেন।
মিসরের এক ছোট শহরে একজন মহিলা তার শশুর, মেয়ে এবং ছোট একটি নাতির সাথে অবস্থান করছিল। এই পরিবারটি খুবই গরিবানা হালতের ছিল। ঘরে খাবার জন্য কিছু ছিলনা। এমনকি মানুষের কাছে হাত পাতার মত অবস্থা চলে এলো। এরই মাঝে ছোট নাতিটি অসুস্থ হয়ে গেল। তার চিকিৎসা করার জন্য ঘরে কিছুই ছিল না। এমনকি একরাত সেই বাচ্চাটির অসুস্থতা অনেক বেড়ে গেল। ঘরের চলার মত কিছু নেই তার উপরে আবার অসুস্থতা। মায়ের তো আর কিছু বুঝে আসছিল না। তিনি মুসাল্লা বিছিয়ে রবের দরবারে দুআ করতে লাগলেন: মাওলা আমার! ঘরে খাবারের কিছুই নাই, আমি তোমার কাছে কোন অভিযোগ করিনি, কিন্তু এখন আমার মাসুম নাতিটিই আমার ঘরের আলো। আমার কাছে তো তার চিকিৎসা করানোর মত কোন টাকা পয়সা নেই। তোমার দরজা—ই বাকি আছে। তুমিই সাহায্য করতে পার। তিনি অনেক সময় পর্যন্ত হাত উঠিয়ে দুআ করতে থাকলেন অতঃপর আচানক কেউ জোরে জোরে দরজা খটকটাতে লাগল। দরজা খুলতেই সামনে ডাক্তার তার ব্যক্তিগত জিনিস আর ডাক্তারি জিনিসপত্র সাথে করে নিয়ে দাঁড়ানো ছিল। মাতাজি আপনার নাতি কোথায়? অতঃপর ডাক্তার অসুস্থা বাচ্চাটিকে পরিদর্শন করলেন এবং তার জন্য ওষুধ লিখে দিয়ে বললেন: জলদি মেডিকেল স্টোর থেকে এই ওষুধ নিয়ে আসো, চিন্তা করো না ইনশাআল্লাহ বাচ্চাটি ঠিক হয়ে যাবে।
মহিলাটি বলল: কিন্তু আমাদের কাছে এই ওষুধ কেনার জন্য টাকা পয়সা নেই।
ডাক্তার বলল: যদি তোমাদের নিকট ওষুধ কেনার জন্য কোন পয়সা না থাকে তাহলে আমার ফিস কে আদায় করে দেবে?
ঘরের লোকেরা বলল: কিন্তু আমাদের কাছে তো কিছুই নেই।
ডাক্তার বলল: তোমাদের নিকট কেউ নেই তাহলে রাতে আমাকে ফোন করে কে আসার জন্য বললে? ডাক্তারের চেহারা রাগে অগ্নিশর্মা হয়ে যাচ্ছিল। আর সে বিড়বিড় করছিল।
ঘরের লোকেরা বলল: আমরা তো কাউকে ফোন করিনি। আর আমাদের ঘরেই কোন ফোন নেই, যা দিয়ে আমরা আপনাকে ফোন করতে পারব।
ফায়দা: তায়েফ অবরোধের সময় সাহাবায়ে কেরাম রাদিয়াল্লাহু আনহুম রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট আরজ করলেন যে, ইয়া রাসুলাল্লাহ! ছাকীফ গোত্রের তির তো আমাদেরকে ভস্মীভূত সামান বানিয়ে দিল। তাদের বিরুদ্ধে আল্লাহর কাছে বদদুআ করেন: আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ছাকীফ গোত্রের জন্য দুআ করলেন: ‘হে আল্লাহ! ছাকীফ গোত্রকে হেদায়েত দিয়ে দিন।
- তাহলে আমাকে কে ফোন করে আসতে বলল। এই ঠিকানা কী তোমাদের না? ডাক্তার সাহেব পারচা থেকে ঠিকানা পড়তে পড়তে বললেন।
আসলে এই ঘরের পাশ্ববর্তী ঘরের এক বাচ্চা কঠিন অসুস্থ ছিল। এবং তারাই তাকে ফোন করে আসতে বলেছিল। আল্লাহর কি অপার মহিমা! এই বৃদ্ধা মহিলার দুআকে তিনি কীভাবে কবুল করলেন। ডাক্তার তারই পাশ্ববর্তী ঘরে যাওয়ার কথা ছিল। সেখানে যাবার বদলে সে বৃদ্ধার ঘরে ঢুকে গেল। তারপর ডাক্তার সাহেব পাশের বাসার লোকেরা কথাবার্তা শুনে এদিকে চলে আসে।
ডাক্তার তাদের কাছে গেলেন। একটু পরেই তার অন্তরের অবস্থা পরিবর্তন হয়ে গেল। সে পুনরায় আসলেন আর সত্যায়ন করলেন বাস্তবিক পক্ষেই যে তাদের কাছে তাকে দেওয়ার মত টাকা পয়সাও নেই?
ডাক্তার সাহেব বললেন: তোমরা চিন্তা করো না। বাচ্চার চিকিৎসা আমার দায়িত্বে রইল। তোমার চলার জন্যও আমি মাসিক অজিফার ব্যবস্থা করছি। ডাক্তার সাহেব ওষুধ পাঠিয়ে দিলেন। বাচ্চাটিকে আল্লাহ রাব্বুল ইযযাহ শিফা দান করলেন। এবং সেই ঘরের জন্য মাসিক অজিফার ব্যবস্থা করে দিলেন।
(দুআউ কি কবুলিয়ত কী সুনেহরি ওয়াকিআত)
©somewhere in net ltd.