নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সমাজ বদলাতে হবে। অনবরত কথা বলা ছাড়া এ বদ্ধ সমাজ বদলাবে না। প্রগতিশীল সকল মানুষ যদি একসাথ কথা বলতো তবে দ্রুতই সমাজ বদলে যেতো। আমি ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে, সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে, জাতীয়তাবাদের বিরুদ্ধে, বর্ণবাদের বিরুদ্ধে, নারী নিপীড়নের বিরুদ্ধে অনবরত বলতে চ

মুজিব রহমান

মুক্তচিন্তা ও বিজ্ঞানমনষ্ক মানুষ

মুজিব রহমান › বিস্তারিত পোস্টঃ

একগুচ্ছ ভালবাসার কবিতা

১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১১ সকাল ১০:০১

তোমার পায়ের ছোঁয়ায়



তুমি কতো অবলীলায় পার হও নয়ানজুলি নির্মোহ

অথচ কি তুমুল কেঁপে উঠে বাঁশের সাঁকো

আর আমি সন্ধ্যা সকাল পার করি অনাবিল কেঁপে কেঁপে

তোমার পায়ের ছোঁয়া রেখে যাওয়া সাঁকোর দিকে তাকিয়ে।



আহা বাঁশের সাঁকো! তুচ্ছ বাঁশের সাঁকো

গর্বিত হয়, চোখ মুদে নিঃশ্বাস নেয় সুখের

আহা নয়ানজুলির নির্বোধ কাদাজল তোমার ছায়া পেয়ে

হতভম্ব হয় রোজ, তারপর চোখ মেলে পদ্ম ফোটায় তুমুল।



বাতাসরা ঘূর্ণি খেয়ে তোমাকে ছুঁতে যায়

তুমি ঝড় ভ্রমেও থমকে দাঁড়াও না সাঁকোর উপর কদাচিৎ

গাছের পাতারা যেই আরেকটু ঝুঁকে তোমাকে দেখার জন্য

আচমকাই খসে পড়ে অর্বাচিন, তোমার পায়ের কাছে

ভ্রক্ষেপহীন তুমি পদদলিত কর অনায়াসে নির্মম

এ সবই নখদর্পনে আমার, প্রতিদিন দেখে দেখে

ঐ সাঁকো আমার বিদ্যালয়, আমার জ্ঞান ভাণ্ডার

তোমার পায়ের ছোঁয়ায় কেঁপে উঠে অর্থহীন প্রতিদিন।



অরণ্যে নয় লোকালয়ে



মেয়েটি নিজের নাম নিয়েছিল অটবী মনস্বিতা

এবং বলেছিল, আর লোকালয়ে নয়,

অরণ্য আমার দেবালয়, অরণ্য হবে আমার ঠিকানা।

এরকম কোমল একজনের নাম কি করে এমন কঠিন হয়

তার অধরে আঙ্গুল ছুঁয়ে বলতে চেয়েছিলাম-

এতো কঠিন নাম তোমার জন্য নয়;

তুমি কোন বিভ্রান্তিতে অরণ্যকে দেবালয় ভেবে

আবাস গড়তে চাও গহীন নির্জনতায়?



হয়তো অরণ্যে চাঁদের গুরু মাখবে সারা গায়

হয়তো রাতের পাখিরা সুমিষ্ট কণ্ঠে মোহিত করবে

হয়তো দক্ষিণা বাতাস শান্ত করবে তোমার উত্তপ্ত শরীর

হয়তো সবুজে সবুজে তোমার চোখ শীতল হবে।



কক্ষচ্যুত নক্ষত্ররা কদিন বাঁচে বলো

রক্ত ঝরতে ঝরতে জানোতো নিস্তেজ হয় হৃদয়

অরণ্যের তীব্র সবুজ, নীলের কষ্টের তীব্রতায় অন্ধকারের রং নেয়

কতো বছর আর বাঁচতো বলো নিঃসঙ্গ রবীনসনক্রোশো।



এসো তোমার নামটি বদলে দেই

নাম রাখি ঠিকানা, শুধু আমার ব্যক্তিগত ঠিকানা

আমি তোমার কাছেই থাকবো, তোমাকে ঘিরে

তুমি আমার প্রত্যক্ষে লোকালয়েই থাকো, আমার ঠিকানা হয়ে।



কথা ছিল তোমার সুখে থাকার



জ্যোৎøা প্লাবিত ভোরে যখন আকাশে উড়ে বেড়ায়

শাদা গোলাপ, বেলি, জুঁই, কামিনী, গন্ধরাজ

পাখিরা মাত্র ঘুম থেকে উঠে কলকাকলীতে মেতে রয়

তারা বিস্ময় নিয়ে দেখে আমার নিদ্রাহীনতার সাজ

সারারাত আমার মন-মস্তিষ্ক শুধু তোমার কথাই ভাবায়

চোখ রেখে একটি ঘাস ফড়িংয়ের মায়াবী ডানায়-

আমি তোমার ডাগর আঁখির কথা ভাবি

আমি তোমার চিরসবুজ হৃদয়ের কথা ভাবি

আমি তোমার নৃত্যময় চঞ্চলতার কথা ভাবি

আমি তোমার কবোষ্ণ অধরের কথা ভাবি।



অথচ আজ বৃষ্টির জল আশ্রয় নেয় তোমার চোখে

কষ্টের কথা বলতে গিয়ে কেঁপে উঠে চঞ্চু তোমার

হরিণীর চঞ্চলতা কেড়ে নিয়েছে স্থবির অন্ধকার

অথচ কথা ছিল, আমার কষ্টের বিনিময়ে তুমি থাকবে সুখে



ভেবে পাই না কেন বানেভাসা কুকুরের লাশ ছুঁবে

ফুলের ভারে নুয়ে পড়া আগুন রাঙা কৃষ্ণচূড়ার ডাল

কেন এঁদো ডোবায় আলো ঝলমল কচুরিফুল ফুটে থাকবে

আমিতো আঁধার গিলে তোমায় দিয়েছিলাম চিরসকাল।





যার ঠোঁটে চুমু খাওয়ার কেউ থাকে না



যার ঠোঁটে চুমু খাওয়ার কেউ থাকে না, সে জানে না

বাতাসের দোলায় কেন বিপুল শিহরিত হয় ধানেরশীষ

কতোটা সুখে গতিবান হয় পালতোলা নৌকা

কোকিলের কাতরতা কেবলই উল্লাসের আহবান

ফুলের মেলে ধরা মানে কেবলই এক উষ্ণ চুমুর প্রতীক্ষা।



যে মেয়েটা এখানো কিশোরী- সে ভালোবাসে চুমুর জন্য

যে মেয়েটা হয়ে উঠেছে যুবতী- তার ঠোঁটের কাঁপনও ভালোবাসার জন্য

আর পরিণত একজন নারী- চুমুহীন কাটাবে না একটি দিনও

পৌঢ়াদের চুমুহীন থাকা মানে মৃত্যুর মধ্যে থাকা।

আমৃত্যু পাখিরা জুটিবদ্ধ থাকে- ঠোঁটে ঠোঁট রাখার জন্য

একজোড়া চঞ্চল শালিক কিংবা একজোড়া স্থির পায়রা

তারা একটি বারও ভাবে না চুমুহীন থাকার কথা।

যার ঠোঁটে ঠোঁট রাখার কেউ থাকে না

সে হারিয়ে ফেলে ভালোবাসা, মানবিক গুণাবলী আর মধুর কণ্ঠস্বর

আস্তে আস্তে সে খুনী হয়ে উঠে নির্মমভাবে

ভালোবাসাহীন, চুমুহীন একটি দিনও যেন কারো না আসে।



আমার বা পাশে বসো



আমার বা পাশটায় আকাশের অসীম শূন্যতা

আমি হাঁটতে চলতে বসতে ঘুমাতে অনুভব করি।

আমার বা পাশে অসীম শূন্যতা নিয়ে

রিক্সায় অতিক্রম করি নিউমার্কেট মোড়, কাঁটাবন

আমি গভীর আকাক্সক্ষায় প্রতিক্ষায় থাকি

আলোকিত করে বসবে কেউ আমার বা পাশটায়।

লঞ্চ, স্কুটার, সীবোট, বাস, ট্রেন কিংবা টেক্সিক্যাবে

শূন্যতার বরফ পিষ্ট করে আমার বা পাশটা

আমার আকাক্সক্ষার আকাশে অনাদীকালের খরা

সমস্ত কষ্ট আমার একার

পৃথিবীময় ঘুরে বেড়ানো ভালবাসা

কেবল আমাকে বিকর্ষিত করে অনবরত।

ভালবাসার রঙিন প্রজাপতি বারবার

ভুল করে বসে ভুল মানুষের গায়

অসীম আকাক্সক্ষা নিয়ে আমার সময় বয়ে যায়

আমার বা-পাশে বসে ভালবাসার কেউ নাই।



যখন ভুলে গেছ



কি করে এখনো থাকে আকাশ নীল

কি করে এ বসন্তে গাইছে কোকিল

কি করে এ ফাগুনেও ফুটল ফুল

কি করে ললনারা বেণী করে চুল

কি করে এখনো চাঁদ ছড়ায় মায়া

কি করে মানুষের পাশে থাকে ছায়া

কি করে আজো নিলীমায় উড়ে পাখি

কি করে আজো আয়নায় মুখ রাখি

কি করে আজো আছে পাখির কলরব

কি করে এখনো সচল আছে সব

কি করে ফুলের মতো শিশুরা হাসে

কি করে এখনো হাঁসেরা জলে ভাসে

কি করে প্রজাপতিরা রঙিন থাকে

কি করে নৌকা চলে নদীর বাঁকে

কি করে এখনো লেখা হয় কবিতা

যখন ভুলেছো বলেছিলে সবি-তা।



প্রতিশ্র“তি



ভুলিনি ভালবাসার ঊষালগ্নে তোমাকে দেয়া প্রতিশ্র“তি

বয়ে বেড়ানোর দায় ছিল আমার একার প্রতি

কথাতো আমিই দিয়েছিলাম তোমাকে ছুঁয়ে

কখনো ভাবিনি দায় থাকবে এতো ভারী হয়ে

একসাথে মরবো, একসাথে বাঁচবো প্রতিদিন

বিচ্ছিন্ন করতে পারবে না মৃত্যুও হয়ে অসীন

কাউকেইতো ভালবাসিনি, বাড়াইনি কারো দিকে হাত

মস্তিষ্কের কোষগুলো তোমার নাম জপে দিনরাত

আমার দিকে বাড়ানো নিঃসঙ্গতার হাত গোলাপ সাথে

অবহেলায় অবলীলায় সর্বদায় সরিয়েছি দু‘হাতে

হৃদয় গহিনের টলটলে জলে কারো চোখ হয়নি আনত

অবগাহনের সুযোগ কারো করেছি সুদূর পরাহত

আজ যখন আমার গোলাপ বাগান সাদা কাশ

ফুলে ছেয়ে গেছে তখনই তুমি দিলে বৈধব্যের আভাস

এ অবেলায় নিঃসঙ্গ আমি ঝলমলেরঙেরবাহারহীন

রাত্রির সমুদ্রে সূর্য অস্ত গিয়ে দিন হয়েছে বিলীন

তোমাকে ছাড়া ছোঁব না কাউকে এই সামান্য প্রতিশ্র“তি

আমার দিনকে গিলে খেয়েছে, দেয়নি জীবনকে নিষ্কৃতি

তবুও ভালবেসেছিলাম এই নেশায় করি স্মৃতির তালাশ

সেই স্বর্ণালী ভালবাসাময় ক্ষণ এনে দেয় বাঁচার আশ্বাস।



অস্বাভাবিক এমন কী আর



তুচ্ছ জলইতো থাকে খাল, বিল আর সাগরে

যার ধর্ম নিচের দিকে গড়িয়ে চলার

মেঘ হয়ে ভেসে বেড়ায় আকাশ জুড়ে

সে হিসাবে বামুন হয়ে চাঁদের তরে

হাত বাড়ানো অস্বাভবিক এমন কী আর



কতো অবাঞ্ছিত লম্পট যাচ্ছে তাই

হাকিয়ে বেড়ায় পতাকাশোভিত কার

সে হিসাবে পোস্ট গ্রাজুয়েট আমি এই

তোমার ঠোঁটে ঠোঁট ছোঁয়াতে চাই

রোমাঞ্জিত হয়ে অস্বাভাবিক এমন কী আর



সবই দেখি টাকার মতো বস্তু দামী

বদমাশদের হাতে লুটিয়ে পড়ে হয় পাহাড়

তুমি আর কতো দামী যখন আমি

সাচ্চা প্রেমিক তোমাকে করতে চাই বক্ষগামী

সত্যিকারের ভালবাসায় অস্বাভাবিক এমন কী আর।



নীল



নীল রং দেখলেই কেঁপে উঠি

হৃদপিণ্ড থেকে ছেড়ে যাওয়া রক্ত কণিকাগুলো

ধমনিতে ধমনিতে ধাক্কা খায়। সাগর জলে নীল

আকাশের প্রতিচ্ছবি আমাকে হাহাকার

রাজ্যে নিয়ে যায। আমাকে দ্রুত ফিরে আসতে হয়

সাগরের কাছ থেকে, নীলের কাছ থেকে।

আবারো হন্যে হয়ে নীল খুঁজি...

রেস্তোরা থেকে রাজপথ, সুন্দরবন থেকে সংসদ

কূয়াকাটা থেকে কাঁটাবন, পতিতালয় থেকে পরিবাগ।

নীলকে কাছে পেলেই মনে হয়

নীল ফুঁড়েই বেড়োবে তুমি

যেভাবে বেড়োতে যৌবনে ভালবাসার কালে

নীল শাড়ি, নীল কামিজ, নীল ওড়না ফুঁড়ে।

নীল মাছি, নীল অপরাজিতা, নীল কণ্ঠ পাখি

আমাকে কাঁপিয়ে তোলে

যখন নীল ফুঁড়েই বেড়োও তুমি

হন্যে হয়ে খুঁজে পাওয়া নীল রেখেই পালাই।



ভালবাসার শুরু



আমার ঘাট থেকে নাক বরাবর সাতরিয়ে পুকুরের ঐ পাড়

সানবাঁধানো ঘাটলায় পৌঁছানোর পরেই সময় হতো তোমার আসার

তোমার দাঁত ব্রাশের সময় ছিল ক্লোজ-আপের নীল

পেস্টের সাদা ফেনা ধুলেই দার্জিলিং থেকে দেখা অন্নপূর্ণা ঝিলমিল

কান্তজীর মন্দিরের কারুকার্যময় টেরাকোটায় আটকে থাকা

চোখে ভাসে তোমার ঠোঁট; সেই ঠোঁটেই সব কিছু পরছে ঢাকা

সাবান মাখার সময় ছিল, লাক্সের গোলাপী সাবানের সাদা ফেনায়

তোমার মুখে অঞ্জলিভরা নীল পানির হিরের ছোঁয়ায়

তাকিয়ে দেখি রেঙ্গুনের স্বর্ণ প্যাগোডার ঐশ্বর্যের ছড়াছড়ি

কাব্য সমগ্র শামসুর রাহমানের। ভ্র“যুগল মরুভূমির বালিয়াড়ি

বাতাসের ভালবাসায় কেঁপে উঠে। মায়ামী বীচের নীল সাগর

তোমার রহস্যেভরা নীল আঁখিতে অবগাহন করবো জীবনভর

তোমার নাকের উপর রোদের ছোঁয়া থমকে থাকি আগ্রার

তাজমহলে। চিবুকে দেখি স্বর্গের ছায়া

চিম্বুকের চূড়ায় বসে দেখি জোøারাতে পড়ছে খসে চাঁদের মায়া

কপোল জুড়ে ইডেন গার্ডেন, চোখ জোড়া লাগিয়ে রাখি

একটি বলেই জেগে উঠে লক্ষ দর্শক। গ্রীবার দিকে তাকিয়ে থাকি

লক্ষ বছরের সভ্যতার নগরগুলো জেগে উঠে। সাগর জলে

ঢেউয়ের মেলা ছলাৎ ছলাৎ। রিজার্ভ ব্যাংকের সকল টাকা

ছড়িয়ে আছে। রতœ খুঁজি সাগর তলে

কেশ মালায় তুমি শ্যাম্পু মাখো, কালো সানসিল্কের সাদা ফেনা

কেটে গেলেই অলিম্পিকের দৌড়ের ট্রাক, মিটে যায় সকল দেনা।

তোমার রাজহংসীর গ্রীবা নাটোরের বনলতাকে ছাপিয়ে যায়

দিঘাপাতিয়ার জমিদারের বাগানে শ্বেতপাথরের প্রতিমা। অপেক্ষায়

থাকি এই বুঝি বসন খসে বেরিয়ে আসবে জোৎøামাখা চাঁদের গুরু

এগিয়ে যাই শ্লেজ গাড়িতে শুভ্র বরফাচ্ছন্ন পথ- আমার ভালবাসার শুরু।



অযাচিত অপ্রত্যাশিত



তোমার অপেক্ষায় আছি কতকাল

নিবিড় কান পেতে

তোমার পায়ের নূপুরের ধ্বনী শোনবো ...

অযথাই বুটের তীব্র কর্কষ শব্দ আসে

অশ্লীল আক্রোশে

তোমার জন্য সাজিয়ে রাখা স্বপ্নের বাসর

পদদলিত হয় অসভ্য নিষ্ঠুরতায়।



আমি জেগে জেগে স্বপ্ন দেখি সারাক্ষণ

কখন পরবে দরজায় মৃদু টোকা

দরজা খুললেই পেয়ে যাবো স্বপ্নমাখা জোৎøা ...

অথচ কত অপ্রত্যাশিত

শান্তির জলপাই রঙ আসে

তুমুল গুলিবর্ষণ করতে করতে

নিমিষেই আগুনের লেলিহানে তছনছ করে

আমার স্বপ্নের ভূবন।



আমাদের ভালবাসাময় সম্ভাব্য সময় আসার

মুহুর্তগুলোর তীব্র প্রতিক্ষার অবসান হবে

বুকের গহীনের তীব্র তৃষ্ণা মিটবে

তোমার চোখের গভীরে চোখ রেখে ...

অযাচিত অপ্রতাশিত জলপাই রঙ

নিকষ কালো অন্ধকারে ঢেকে দেয়

সব ভালবাসা, সব স্বপ্ন।



গহীন আকাক্সক্ষা



তোমাকে নিয়ে কখনো কেউ লিখেছিল কোন কবিতায়

তোমার উষ্ণতায়- সাগর উদ্বেলিত

তোমার স্নিগ্ধতায়- শরতের কাশবন

তোমার লাবণ্যতায়- গোলাপের সৌরভ

তোমার সৌন্দর্যতায়- গিরিশৃঙ্গের শুভ্রতা।



লিখেছিল কি কেউ কোন স্বাপ্নিক লিরিকের তš§য়তায়-



আমার ইচ্ছা ডানা মেলে তোমার আকাশে

তুমি যদি হও রাজহংসী, রাজহংস হব আমি

তুমি আমার সমুদ্র সৈকত আমি তোমার উড়ন্ত চুল

দু‘ঠোট আমার দিয়ে দিতে পারি, তুমি যদি চুম্বন দাও।



আমি কবি নাই। আসলে কবিরা কখনো

লিখেনা কবিতা, বাস্তবের নারীকে নিয়ে

লেখা হয়নি ডায়না মারলিন মনরোকে

সবইতো কল্পনার আকাশে বোনা ছন্দের বিলাস

তবুও তোমাকে নিয়ে, লিখতে ইচ্ছে করে খুউব

ঘরভাঙা, মোহন এক স্বাপ্নিক রাখালের মতো

ইকারুশের স্বাধীনতায় উদ্বাস্তু এক কবিতা।



তোমার ফিরে আসা



তোমার উষ্ণতা আমাকে বাঁচিয়ে রেখেছে

কেন তাকে বরফের হাতে তুলে দাও?

আমার সমস্ত ইচ্ছা ডানা মেলে তোমার আকাশে

গোলাপের সখ্যতা নিয়ে চুপিচুপি প্রিয়তামা তুমি

সাজিয়ে দিয়েছো আমার হৃদয়, আমার সময়

সযত্নে বুকের সিন্দুকে আগলে রাখা

তোমার স্মরণযোগ্য যে কোন স্বর্ণালী মুহুর্ত

আজ তীব্র নীল বিষে জর্জরিত, অবিনাশী স্মৃতি।



সুনীলের মতো এখনো পার হয়নি তেত্রিশ

কোন অহংকার নয়, অভিলাষ নয়

আসলে এখনো আসেনি সময় হিসাবের

বরং এই ভাল, অবিনাশী স্মৃতি হয়ে আছো

যাচ্ছে আমার স্বর্ণালী সময় অবহেলায় যাক

আমি জানি জোয়ারে সাগর উদ্বেলিত হলে

নদীর জল ফুলে ফেঁপে উঠবেই

শুরু হবে ক্ষণিকের তরে তোমার ফিরে আসা।



বাঁচি ভালোবাসায় বাঁচি স্বপ্নে



সবাই তোমায় বেশ্যা বলে, আমি বলি ফুল

তোমার হৃদয়ে প্রেম দোলে, লোকে বলে ভুল।

রাজনেত্রীরা সবার হয়, তুমি হলে: বেশ্যা

ভীতু সব জোট বেধে কয়, ওতো অস্পর্শা।

আমি কৃষ্ণ, তুমি হও রাধা, প্রেম যমুনাতে

প্রেমে মানি নাই কোন বাধা, কোন অজুহাতে।

পূর্ণিমার চাঁদ ঢলো ঢলো, তোমার বদনে

বুক ভরা এবাদত হলো, তোমার স্মরণে।

ভালাবাসা যদি স্বস্তি হয়, তুমি শান্ত নদী

জীবন রয় আনন্দময়, তুমি থাকো যদি।

মসৃণ বুকে পাহাড় দোলে, কম্প সর্বনাশা

বুকের সাথে বুক মেলালে, শান্তি ফিরে আসা।

তোমার ঠোঁটে ঠোঁট ছোঁয়াতে, প্রাণ রাখি বাজি

আনন্দরা সব ফিরে রাতে, নব বর সাজি

ভালবাসা শুধু খুঁজে পাই, তোমার শরীরে

এই খানে প্রবঞ্চনা নাই, বাঁচি স্বপ্ন ঘিরে।



সুখ



বলতে পারো কোথায় বেশি সুখ? টাকায় নাকী উর্বশীর স্তনে

ব্যাংকের ক্যাশিয়ার শাহরুখ, দিনভর গ্রাহকের টাকা গুনে।

তবু সুখ নেই নিশ্চিত তাতে, হাত বিনষ্ট হয় ময়লায়

পরনারীর স্তন এলে হাতে, মগজ পুড়ে সুখের কয়লায়

কত সুখ বেশি বেশি টাকা পেলে, বলতে পারে যমুনার বাবুল

টাকায় অহরহ স্তন মেলে, এটাতো করতেই হবে কবুল।



মিশে যেতে চাই তোমার শরীরে



দিনতো কর্মেই কেটে যায়

সন্ধ্যাতেই বসতে চাই তোমার মুখোমুখি

এক কাপ চা, একটু হাসি, চোখে চোখ রাখা

এর বিনিময়ে বিলিয়ে দিতে চাই একটি রঙিন জীবন

গাছদের চিরন্তন সবুজ, মানুষদের অজর পরশ্রীকাতরতা

ধর্মের মিমাংশিত বিভেদ আর আক্রোশ

অতিক্রম করে অনাবিল বৃষ্টির ধারায়

ঝরাতে চাই তোমাকে ঘিরে অনাবিল ভালবাসা।

এডাম স্মীথের সম্পদের অর্থনীতি

আইস্টাইনের আপেক্ষিক তত্ত্ব

অর্থহীন অপ্রয়োজনীয় এসব দু‘পায়ে ঠেলে

আবিস্কার করতে চাই তোমাকে সম্পূর্ণ।

অমাবশ্যা যেভাবে মিশে থাকে অন্ধকারে

সূর্যালোক আকড়ে ধরে দিনকে

সেভাবে তোমার ছায়া বিলিন করে আমার ছায়ায়

মিশে যেতে চাই তোমার শরীরময়।



খুলে দেয় রৌদ্র



এক যৌনকাতর বন্ধু কৈশোরের

বলেছিল, ইশ! আমি যদি তরুণী হতাম

তাহলে কোন কষ্ট থাকতো না তোদের

আমি অবলিলায় আমার সব বিলিয়ে দিতাম।

আমরা সমস্বরে বলেছিলাম, আহা!

তুই কেন মেয়ে হলি না- একটা মহৎ

আমাদের শরীরের তাপ, কষ্টা একটা মেয়েও বুঝেনি এযাবৎ

ওরা মরে গেলেও বুঝবে না তাহা।

আমার সেই বন্ধু মধ্যত্রিশে প্রবাস থেকে এসে

এক কিশোরীকে ঘরে এনে কদিন লুটপাট করে

হুড ঢাকা বোরকায় অবগুণ্ঠিত করে

আবার পাড়ি জমিয়েছে প্রবাসে।

আজ বুঝি আমার বন্ধুটি যদি মেয়ে হতো

ঠিক ঢেকে রাখতো কম্পিত ওষ্ঠ অনন্ত লজ্জায়

শরীর ঢেকে রাখতো নিকৃষ্ট বোরকায়

আমাদের প্রতিটি অঙ্গ থেকে দূরে সরে থাকতো।

আজ যে মেয়েগুলো সহজেই সবাইকে খুলে দেয় রৌদ্র

তারা মহৎ হয়ে উঠেনি, নিয়ে শরীরের কলরব

রঙিন কম্পন, সবুজ পাহাড় আর গহীন সমুদ্র

ঘৃণা, বঞ্চনা আর প্রতারণায় হারিয়েছে সব।



অর্থের বুলেটে ভালবাসা



ভেবেছিলাম লাবণ্য তোমার হাত ধরে সুখী হবো

কবিতায় গানে ভালবাসার ফুলকী ছোটাবো

অথচ কি করে যেন হয়ে গেল এক মিনিট লেট

দেখি ছুটে আসছে একটি অর্থ মোড়ানো বুলেট।

কচি ধানের ডগায় জ্বলজ্বল করা হিরার মতো শিশির

কে জানতো এতো দ্রুত গলে গিয়ে হবে পানির শরীর

ভেবেছিলাম কৃষ্ণচূড়া গাছটি শোকে ঝরাবে লাল ফুল

অথচ দেখি এসে গেছে ফাগুন, ভাঙ্গাতে আমার ভুল।



ভালবাসা



ভুলের আগুনে তপ্ত করেছি

ফুলের ফাগুনে রপ্ত করেছি

তোমার জন্য ভালবাসা

অর্থ হারিয়ে রিক্ত হয়েছি

অশ্রু ঝরিয়ে সিক্ত হয়েছি

চলে গেছে সকল আশা।





বিভেদ



আকাশটা এতো নীল কেন জানো

আমার সমস্ত কষ্ট ওখানে জমা রেখেছি

কিছু কষ্টের অশ্রু ঝরে পড়েছিল সমুদ্রে

সেই থেকে নীল রং সমুদ্রের।

আর চাঁদের দিকে তাকালে দেখি জমা রয়েছে

তোমার স্নিগ্ধতা, তাই চাঁদ হাস্যোজ্জ্বল

তোমার রত্নভাণ্ডার থেকে খসে পড়া পান্নারা

আশ্রয় নিয়েছে প্রকৃতির কোলে, তাই ওরা সবুজ।



কবিতাগুলোর লেখক: মুজিব রহমান

কাব্যগ্রন্থ: মায়াবী ডানা, প্রকাশক- বিশাকা প্রকাশন, একুশে বইমেলা

মন্তব্য ২ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১১ বিকাল ৩:০৪

িময়াজী বলেছেন: বিশ্ব ভালবাসা দিবস কি :

এক নোংরা ও জঘন্য ইতিহাসের স্মৃতিচারণের নাম বিশ্ব ভালবাসা দিবস। এ ইতিহাসটির বয়স সতের শত সাঁইত্রিশ বছর হলেও ‘বিশ্ব ভালবাসা দিবস’ নামে এর চর্চা শুরু হয় সাম্প্রতিক কালেই। দুই শত সত্তর সালের চৌদ্দই ফেব্রুয়ারির কথা। তখন রোমের সম্রাট ছিলেন ক্লডিয়াস। সে সময় ভ্যালেন্টাইন নামে একজন সাধু, তরুণ প্রেমিকদেরকে গোপন পরিণয়-মন্ত্রে দীক্ষা দিত। এ অপরাধে সম্রাট ক্লডিয়াস সাধু ভ্যালেন্টাইনের শিরশ্ছেদ করেন। তার এ ভ্যালেন্টাইন নাম থেকেই এ দিনটির নাম করণ করা হয় ‘ভ্যালেন্টাইন ডে’ যা আজকের ‘বিশ্ব ভালবাসা দিবস’।

বাংলাদেশে এ দিবসটি পালন করা শুরু হয় ১৯৯৩ইং সালে। কিছু ব্যবসায়ীর মদদে এটি প্রথম চালু হয়। অপরিণামদর্শী মিডিয়া কর্মীরা এর ব্যাপক কভারেজ দেয়। আর যায় কোথায় ! লুফে নেয় বাংলার তরুণ-তরুণীরা। এরপর থেকে ঈমানের ঘরে ভালবাসার পরিবর্তে ভুলের বাসা বেঁধে দেয়ার কাজটা যথারীতি চলছে। আর এর ঠিক পিছনেই মানব জাতির আজন্ম শত্রু শয়তান এইডস নামক মরণ-পেয়ালা হাতে নিয়ে দাঁত বের করে হাসছে। মানুষ যখন বিশ্ব ভালবাসা দিবস সম্পর্কে জানত না, তখন পৃথিবীতে ভালবাসার অভাব ছিলনা। আজ পৃথিবীতে ভালবাসার বড় অভাব। তাই দিবস পালন করে ভালবাসার কথা স্মরণ করিয়ে দিতে হয়! আর হবেই না কেন! অপবিত্রতা নোংরামি আর শঠতার মাঝে তো আর ভালবাসা নামক ভালো বস্তু থাকতে পারে না। তাই আল্লাহ তা‘আলা মানুষের হৃদয় থেকে ভালবাসা উঠিয়ে নিয়েছেন।

বিশ্ব ভালবাসা দিবসকে চেনার জন্য আরও কিছু বাস্তব নমুনা পেশ করা দরকার। দিনটি যখন আসে তখন শিক্ষাঙ্গনের শিক্ষার্থীরা বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা তো একেবারে বেসামাল হয়ে উঠে। নিজেদের রূপা-সৌন্দর্য উজাড় করে প্রদর্শনের জন্য রাস্তায় নেমে আসে। শুধুই কি তাই ! অঙ্কন পটীয়সীরা উল্কি আঁকার জন্য পসরা সাজিয়ে বসে থাকে রাস্তার ধারে। তাদের সামনে তরুণীরা পিঠ, বাহু আর হস্তদ্বয় মেলে ধরে পছন্দের উল্কিটি এঁকে দেয়ার জন্য। তারপর রাত পর্যন্ত নীরবে-নিবৃতে প্রেমিক বা প্রেমিকার সাথে খোশ গল্প। এ হলো বিশ্ব ভালবাসা দিবসের কর্মসূচি! বিশ্ব ভালবাসা দিবস না বলে বিশ্ব বেহায়াপনা দিবস বললে অন্তত নামকরণটি যথার্থ হতো।বিশ্ব ভালবাসা দিবস কি :

এক নোংরা ও জঘন্য ইতিহাসের স্মৃতিচারণের নাম বিশ্ব ভালবাসা দিবস। এ ইতিহাসটির বয়স সতের শত সাঁইত্রিশ বছর হলেও ‘বিশ্ব ভালবাসা দিবস’ নামে এর চর্চা শুরু হয় সাম্প্রতিক কালেই। দুই শত সত্তর সালের চৌদ্দই ফেব্রুয়ারির কথা। তখন রোমের সম্রাট ছিলেন ক্লডিয়াস। সে সময় ভ্যালেন্টাইন নামে একজন সাধু, তরুণ প্রেমিকদেরকে গোপন পরিণয়-মন্ত্রে দীক্ষা দিত। এ অপরাধে সম্রাট ক্লডিয়াস সাধু ভ্যালেন্টাইনের শিরশ্ছেদ করেন। তার এ ভ্যালেন্টাইন নাম থেকেই এ দিনটির নাম করণ করা হয় ‘ভ্যালেন্টাইন ডে’ যা আজকের ‘বিশ্ব ভালবাসা দিবস’।

বাংলাদেশে এ দিবসটি পালন করা শুরু হয় ১৯৯৩ইং সালে। কিছু ব্যবসায়ীর মদদে এটি প্রথম চালু হয়। অপরিণামদর্শী মিডিয়া কর্মীরা এর ব্যাপক কভারেজ দেয়। আর যায় কোথায় ! লুফে নেয় বাংলার তরুণ-তরুণীরা। এরপর থেকে ঈমানের ঘরে ভালবাসার পরিবর্তে ভুলের বাসা বেঁধে দেয়ার কাজটা যথারীতি চলছে। আর এর ঠিক পিছনেই মানব জাতির আজন্ম শত্রু শয়তান এইডস নামক মরণ-পেয়ালা হাতে নিয়ে দাঁত বের করে হাসছে। মানুষ যখন বিশ্ব ভালবাসা দিবস সম্পর্কে জানত না, তখন পৃথিবীতে ভালবাসার অভাব ছিলনা। আজ পৃথিবীতে ভালবাসার বড় অভাব। তাই দিবস পালন করে ভালবাসার কথা স্মরণ করিয়ে দিতে হয়! আর হবেই না কেন! অপবিত্রতা নোংরামি আর শঠতার মাঝে তো আর ভালবাসা নামক ভালো বস্তু থাকতে পারে না। তাই আল্লাহ তা‘আলা মানুষের হৃদয় থেকে ভালবাসা উঠিয়ে নিয়েছেন।

বিশ্ব ভালবাসা দিবসকে চেনার জন্য আরও কিছু বাস্তব নমুনা পেশ করা দরকার। দিনটি যখন আসে তখন শিক্ষাঙ্গনের শিক্ষার্থীরা বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা তো একেবারে বেসামাল হয়ে উঠে। নিজেদের রূপা-সৌন্দর্য উজাড় করে প্রদর্শনের জন্য রাস্তায় নেমে আসে। শুধুই কি তাই ! অঙ্কন পটীয়সীরা উল্কি আঁকার জন্য পসরা সাজিয়ে বসে থাকে রাস্তার ধারে। তাদের সামনে তরুণীরা পিঠ, বাহু আর হস্তদ্বয় মেলে ধরে পছন্দের উল্কিটি এঁকে দেয়ার জন্য। তারপর রাত পর্যন্ত নীরবে-নিবৃতে প্রেমিক বা প্রেমিকার সাথে খোশ গল্প। এ হলো বিশ্ব ভালবাসা দিবসের কর্মসূচি! বিশ্ব ভালবাসা দিবস না বলে বিশ্ব বেহায়াপনা দিবস বললে অন্তত নামকরণটি যথার্থ হতো।

২| ১৩ ই জুলাই, ২০১৫ সকাল ৯:২৭

হাবিব কবি বলেছেন: ঐ সাঁকো আমার বিদ্যালয়, আমার জ্ঞান ভাণ্ডার
তোমার পায়ের ছোঁয়ায় কেঁপে উঠে অর্থহীন প্রতিদিন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.