নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সমাজ বদলাতে হবে। অনবরত কথা বলা ছাড়া এ বদ্ধ সমাজ বদলাবে না। প্রগতিশীল সকল মানুষ যদি একসাথ কথা বলতো তবে দ্রুতই সমাজ বদলে যেতো। আমি ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে, সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে, জাতীয়তাবাদের বিরুদ্ধে, বর্ণবাদের বিরুদ্ধে, নারী নিপীড়নের বিরুদ্ধে অনবরত বলতে চ

মুজিব রহমান

মুক্তচিন্তা ও বিজ্ঞানমনষ্ক মানুষ

মুজিব রহমান › বিস্তারিত পোস্টঃ

হুমায়ুন আজাদ ও হুমায়ূন আহমেদের বন্ধুতা এবং শত্রুতা

২৪ শে জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৪:৫৯

বাংলাদেশে আমরা ছয় জন বিশিষ্ট হুমায়ূনকে পেয়েছিলাম। এরা হলেন, লেখক হুমায়ুন কবীর, রাজনীতিবীদ হুমায়ুন রশীদ চৌধুরী, দৈনিক বাংলার সম্পাদক-প্রাবন্ধিক আহমেদ হুমায়ূন, ভাষাবিজ্ঞানী ড. হুমায়ুন আজাদ, অভিনেতা হুমায়ুন ফরিদী এবং জনপ্রিয় ঔপন্যাসিক হুমায়ূন আহমেদ। হুমায়ুন কবীর প্রয়াত হয়েছেন আগেই। একসাথে জীবিত বাকী ৫ হুমায়ূনকে নিয়ে সাংবাদিক সালেহ চৌধুরী লিখতে চেয়েছিলেন ‘পঞ্চ হুমায়ূন’ নামে একটি ফিচার। তিনি হুমায়ূন আহমেদের শহীদুল্লাহ হলের বাসায় উপস্থিত হয়ে আগ্রহের কথা বললেন। হুমায়ূন আহমেদ বললেন, ‘উত্তম প্রস্তাব। তবে এখন নয়। আরও কিছুদিন যাক।’ সময় যেতে লাগল আর হুমায়ূনরা ঝরে পড়তে লাগলেন। প্রথম প্রয়াত হলেন হুমায়ুন রশীদ চৌধুরী, একে একে আহমেদ হুমায়ূন, হুমায়ুন আজাদ, হুমায়ুন ফরিদী এবং সবশেষে হুমায়ূন আহমেদ। তাদের একসাথে করার সুযোগ হল না।

এই পাঁচ জনের মধ্যে পারস্পারিক সম্পর্কও ছিল। হুমায়ুন ফরিদী ও হুমায়ূন আহমেদ পরস্পরকে মিতা বলতেন। তাদের মধ্যে যোগাযোগ থাকলেও ঘণিষ্ঠতা থাকার নমুনা দেখা যায়নি। এই হুমায়ূনদের মধ্যে সবচেয়ে ঘণিষ্ঠতা ছিল হুমায়ূন আহমেদ ও হুমায়ুন আজাদের মধ্যে। আবার সবচেয়ে শত্রুতাও ছিল তাদের দুজনের মধ্যেই। এক আড্ডাতে হুমায়ূন আহমেদ, হুমায়ুন আজাদ, শামসুর রাহমান ও সালেহ চৌধুরীর আদুল গায়ের ছবিও দেখেছি। তাদের আড্ডায় আরেকজন থাকতেন। তিনি হলেন ইমদাদুল হক মিলন। সবার চেয়ে কণিষ্ঠও তিনি। হুমায়ূন আজাদ ও হুমায়ূন আহমেদের বয়সও কাছাকাছি। আহমেদ ১৩ নভেম্বর ১৯৪৮ সালে নেত্রকোনায় জন্মগ্রহণ করেন আর আজাদ ২৮ এপ্রিল১৯৪৭ সালে বিক্রমপুরে জন্মগ্রহণ করেন। আজাদ দেড় বছরের বড়। দুজনের কয়েকটি চমৎকার মিল আছে। দুজনেই জন্মগ্রহণ করেছেন নানা বাড়িতে। দুইজনেই নিজের নাম নিজেই বদলেছেন। হুমায়ূন আজাদের নাম ছিল হুমায়ুন কবীর। একই নামে আগেই জন্মেছিলেন আরেক লেখক। হুমায়ূন আহমেদ এর নাম ছিল শামসুর রহমান। আগেভাগে বদলিয়ে ভালই করেছিলেন। একই সময়ের প্রধান কবি ছিলেন শামসুর রাহমান- প্রায় একই নাম হয়ে যেত। দুজনেই এসএসসিতে স্ট্যান্ড করেছিলেন। মেধাবী ছাত্র। অন্য বিশ্ববিদ্যালয় ঘুরে দুজনেই ঠাঁই নিয়েছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। দুজনেই প্রগতিশীল এবং লেখক। তাই ঘণিষ্ঠতা হওয়া স্বাভাবিকই ছিল। কিন্তু তাদের মধ্যে ঘণিষ্ঠতা ছাপিয়ে দ্বন্দ¦ই দৃশ্যমান ছিল আমৃত্যু।

একসময় এই দুই হুমায়ূনেরমধ্যে গভীর বন্ধুত্ব ছিল। পরবর্তীতে তাদের বন্ধুত্বের সমাপ্তি ঘটে। হুমায়ুন আজাদ এক লেখায় হুমায়ূন আহমেদের উপন্যাসকে ‘অপন্যাস’ এবং তার বেশি বেশি লেখার পরপ্রেক্ষিতে ‘ইতর প্রাণী প্রসব করে বেশি’ ধরনের মতামত প্রকাশিত হলে বন্ধুত্ব তো দূরের কথা যোগাযোগই থাকে না। তারা পরস্পরের শত্রু হয়ে উঠেন। হুমায়ূন আহমেদ তার নিজ বাসভবনেই আড্ডার আয়োজন করতেন। সেখানে হুমায়ুন আজাদ বিষয়ক গল্প করতেন। এই গল্পটি বহুবার বলেছেন, ‘আজাদ সাহেব আমাকে প্রায়ই বলতেন তোমার লেখা ভাল, কিন্তু গভীরতা নাই। একবার গভীরতা আনার জন্য আমি মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়য়ের একটি গল্প নিজ হাতে কপি করে নিয়ে গেলাম। শুধু চরিত্রের নামগুলোকে মুসলমান করলাম, পরিবর্তন শুধু এটুকুই। হুমায়ুন আজাদ এই গল্প পড়ে বললেন- হুম, সবই ঠিক আছে, গভীরতা একটু কম।’ তার বাসভবনের এই আড্ডায় অন্য লেখক-সাহিত্যিকদের নিয়েও নানা রকম কৌতুক করতেন। বিশেষ করে যেসব লেখক তাকে তুলোধুনো করতেন- তাদের গল্প বেশি করতেন।

হুমায়ুন আজাদ হুমায়ূন আহমেদ ও ইমদাদুল হক মিলনকে একটি কাব্যগ্রন্থ উৎসর্গ করেছিলেন। বইটির নাম ‘সব কিছু নষ্টদের অধিকারে যাবে’। দুইজনেই মনে করলেন, এখানে ঔপন্যাসিক হিসাবে তারা দুজনই নষ্ট এমন সূক্ষ্ম ইংগিত রয়েছে। মিলন প্রতিশোধের বাসনায় হুমায়ুন আজাদকে একটি বই উৎসর্গ করলেন। বইটির নাম ‘বনমানুষ’। আজাদ এই ঘটনায় যথেষ্টই বিরক্ত হয়েছিলেন এবং আহমেদ যথেষ্টই মজা পেয়েছিলেন। হুমায়ূন আহমেদের একটি বিষয় হল তিনি নিজে আক্রমনাত্মক ছিলেন না, আক্রান্ত হলেও সহ্য করতেন। তিনি আহমদ ছফাকে যথেষ্ট শ্রদ্ধা করতেন। স্বাধীনতার পরে যখন দুষ্কৃতকারীরা হুমায়ূন পরিবারকে বাড়ি থেকে উচ্ছেদ করে তখন ছফা এর প্রতিবাদে কেরোসিনের টিন নিয়ে রাস্তায় দাঁড়িয়েছিলেন। উচ্ছেদ বন্ধ না হলে গায়ে আগুন ধরিয়ে দিবেন। উচ্ছেদ বন্ধ হয়েছিল। হুমায়ূনের প্রথম উপন্যাস ‘নন্দিত নরকে’ প্রকাশের ব্যবস্থা করেছিলেন। এই আহমদ ছফাই যখন হুমায়ূন আহমেদকে নিমাই ভট্টাচার্যের সমমানের লেখক হিসাবে উল্লেখ করলেন তখনও হুমায়ূন আহমেদ নিশ্চুপ ছিলেন। ছফার প্রতি নেতিবাচক মন্তব্য দূরে থাকুক বিরক্তও প্রকাশ করেননি। বাড়ির আড্ডার বাইরে অন্য লেখকদের নিয়ে প্রকাশ্যে নিশ্চুপ থাকতে দেখেছি। শুধু হুমায়ুন আজাদের বিষয়ে তার বিরক্তিটা তিনি প্রকাশ করেছেন। অবশ্য তিনি দৈনিক মানবজমিন পত্রিকার উপরও যথেষ্ট বিরক্ত ছিলেন।

বিভিন্ন বিষয়ে তাদের চিন্তা ও আচরণে বিপরীত অবস্থাও দেখা যায়। হুমায়ুন আজাদ অধ্যাপক ইউনুছকে বলেছেন, ‘কাবুলিওয়ালা মাত্র’। তিনি মনে করতেন এই গ্রামীণ ব্যাংকের সাহায্যে দেশের কোন উন্নতি হয়নি। ইউনুছ সাহেব দেশে দেশে তার বিভিন্ন কর্মকা-ের স্তুপ পাঠায় আর পুরষ্কার অর্জন করে। হুমায়ূন আহমেদ ভিন্ন অবস্থানে। তিনি বলেছেন, অধ্যাপক ইউনুছ যখন নোবেল পান তখন আমি নাটকের একটা ছোট্ট দল নিয়ে কাঠমুন্ডুর হোটেল এভারেস্টে থাকি। হোটেল লবিতে বসে চা খাচ্ছি। হঠাৎ আমার ইউনিটের একজন চেঁচাতে চেঁচাতে ছুটে এল। সে বলছে, স্যার, আমরা নোবেল পুরস্কার পেয়েছি। স্যার আমরা নোবেল পুরষ্কার পেয়েছি। সে বলেনি, অধ্যাপক ইউনুছ নোবেল পুরষ্কার পেয়েছেন। সে বলেছে আমরা পেয়েছি। অধ্যাপক ইউনুছের অর্জন হয়ে দাঁড়িয়েছিল বাংলাদেশের অর্জন। এই আনন্দ সংবাদ শোনার পর শুটিং বাতিল করে উৎসবের আয়োজন করি। সেই উৎসবের শিখা বুকে জ্বালিয়ে রেখেছি। দেশের বাইরে যখন সবুজ পাসপোর্ট নিয়ে যাই তখন আগের মতো হীনমন্যতায় ভুগি না। কারণ এই সবুজ পাসপোর্ট অধ্যাপক ইউনুছও ব্যবহার করেন। আমি ব্যক্তিগতভাবে সবসময়ই তার পেছনে থাকবো।

বিগত দুই-তিন দশকে বাংলাদেশে সবচেয়ে জনপ্রিয় লেখক ছিলেন হুমায়ূন আহমেদ ও ইমদাদুল হক মিলন। হুমায়ূন আজাদ তাদের উপন্যাসকে অপন্যাস বলে মনে করতেন। তারা পাঠককে বইমুখী করেছে কিনা জানতে চাইলে একটি মাসিক পত্রিকাকে হুমায়ুন আজাদ বলেছিলেন, এ-ধারণাটি বেরিয়েছে মগজহীন বুদ্ধিজীবীদের মাথা থেকে, যারা অনেকটা মানসিক প্রতিবন্ধী। তারা কিছু ঠিক মতো ব্যাখ্যা ও বিশ্লেষণ করতে পারে না, প্রতিবন্ধীদের পক্ষে তা সম্ভব নয়; তাই এ- ধরনের হাস্যকর কথা বলে। তারা অপ্রাপ্তবয়স্ক কিশোরকিশোরীদেরই মনে করে সাহিত্যের বিচারক; ক্লাশ নাইনের মেয়েটি ওই বইয়ের জন্যে পাগল ব‘লে ওই বইট ভালো! হুমায়ূন-মিলন তরুণদের বইমুখি করেনি, বরং প্রকৃত সাহিত্যবিমুখ করেছে, প্রকৃত বই থেকে সরিয়ে নিয়েছ্ েওদের বই একশোটি পড়লেও কোনো উপকার নেই, একটিও না পড়লে কোনো ক্ষতি নেই। ওদের বই সাহিত্য বা শিল্পসৃস্টি নয়; ওগুলো শস্তা বিনোদন, যার জন্যে মগজের দরকার পড়ে না। হুমায়ূন-মিলন তো শুদ্ধ বাঙলাও লিখতে পারে না। ওদের বই পড়ে সাধারণত পঞ্চম থেকে দ্বাদশ শ্রেণীর কিশোরকিশোরী তরুণ তরুণীরা। তারা সাহিত্য উপভোগ করতে চায় না, মজা পেতে চায়, শস্তা প্রেমের গল্প পড়তে চায়। ওরা শিশুসাহিত্যকেও নষ্ট করেছে ওরা বই লেখে অস্টম শ্রেণীর ছাত্রদের ভাষায়। ওরা ওদের কিশোরকিশোরী পাঠকপাঠিকাদের মানসিক প্রতিবন্ধীতে পরিণত করে, ওদের বই পড়ে তারা বারো-তেরো বছর বয়সেই আটকে থাকে; তাদের মনের বয়স বাড়ে না। ওদের বই যারা পড়ে, তারা কোনো উৎকৃষ্ট সাহিত্য পড়তে পারে না; উৎকৃষ্ট সাহিত্য তাদের কাছে কঠিন লাগে। কেননা তারা সাধারণত মানসিকভাবে প্রাপ্ত বয়স্ক হয় না। তারা কখনো রবীন্দ্রনাথ বা সুধীন্দ্রনাথের লেখা পড়তে পারবে না। একটু বড়ো হয়ে তারা আর বই পড়ে না। অবশ্য কেউ কেউ ওদের বইয়ের স্তর থেকে উঠে আসে; অনেক তরণতরুণী আমার কাছে এসে বলে যে ওই সমস্ত বাজে বই পড়ে তারা সময় নষ্ট করেছে, এখন তারা লজ্জাবোধ করে; আর অধিকাংশই বড়ো হয়ে ওদের বইয়ে কোনো মজা পায় না, আবার উৎকৃষ্ট সাহিত্য পড়তে গিয়েও বিপন্ন বোধ করে। আমাদের অধ্যাপক থেকে সাংবাদিক থেকে বুদ্ধিজীবী থেকে মন্ত্রীরাও সাহিত্যের ব্যাপার মানসিকভাবে অপ্রাপ্তবয়স্ক, তাই ওদের নিয়ে মাতামাতি করে। এর পেছনে অবশ্য একটু ব্যবসাও আছে। উৎকৃষ্ট সাহিত্যের জটিলতা ওদের পাঠকেরা বুঝতে পারে না। তাই ওরা পাঠক সৃষ্টি না করে পাঠক ধ্বংস করেছে, যারা পাঠক হতে পারতো তারা কখনো পাঠক হবে না। নীহাররঞ্জন গুপ্ত, ফাল্গুনী মুখোপাধ্যায়, শংকর, নিমাই ভট্টাচার্য, আকবর হোসেনের বইও এক সময় জনপ্রিয় ছিলো; কিন্তু তারা কোনো লেখক নন। এ-দুজনও তাই। ওরা টিকে আছে টেলিভিশনের সিরিয়াল নির্ভর করে। অজ¯্র চ্যানেলে অজ¯্র সিরিযাল চলে, ওগুলোর লেখকদের নাম কেউ জানে? আমাদের নি¤œসংস্কৃতির দেশেই সিরিয়ালঅলাদের লেখক বলা হয়। ক্রিস্টি, চেজ, হ্যার- রবিন্স ও আরো শতো শতো লেখকের বই মিলিয়ন মিলিয়ন কপি বিক্রি হয়েছে ও হচ্ছে কিন্তু ইংরেজি সাহিত্যে তাদের কোনো স্থান আছে? এখন হ্যারি পটার লিখে যে-মহিলা বিলিয়নঅলী হয়েছেন, আরো হবেন, তাঁর কোন স্থান আছে ইংরেজি সাহিত্যে? হুমায়ূন আমার সঙ্গে প্রথম দেখা করেছিলো এক বোঝা বই কাঁধে করে নিয়ে এসে। হুমায়ূন সুবিধা ও নাম ও টাকার জন্যে সব কিছু করতে পারে, আবুল ফজলের কাছ থেকে প্রশংসাপত্র আনতে পারে, আবার নাজমুল হুদার কাছে গিয়ে দাঁড়াতে পারে অনুদানের জন্যে। এক সময় এদের সঙ্গে আমার বেশ সম্পর্ক ছিলো, আমার বাসায় প্রায়ই পানের (মদ্যপানের) আড্ডা বসতো। ওরা দুজন কয়েক বছর ধরে চেয়েছিলো, ওদের প্রশংসা করে কিছু লিখি; দুটো বইও তারা আমার নামে উৎসর্গ করেছিলো। আমি উৎসর্গ করেছিলাম দুজনকে একটি বই। এতে অনেকে ক্ষুন্ন হয় যে আমি ওদের নামে বই উৎসর্গ করেছি। ওদের মতে এতো নি¤œমানের লেখকদের আমি বই উৎসর্গ করতে পারি না। হুমায়ূন-মিলন সিরিয়াল-প্যাকেজ নাটক-অ্যাড-ডকুমেন্টারির ব্যবসায়ী, এতে কোটি কোটি টাকা আসে। তাই ক্ষমতায় যে দলই আসে, সে-দলের কাছেই বিনীত থাকে; হাসিনা এলে ওরা মুজিবের জয়গান গায়, খালেদা এলে জিয়ার জয়গান গায়। হুমায়ূন-মিলন উৎকৃষ্ট সাহিত্য লিখবে কী, তারা উৎকৃষ্ট সাহিত্য পড়েও নি কখনো।

হুমায়ুন আজাদ আরো বলেছেন, হুমায়ূন-মিলন একসময় আমার বাসায় প্রায়ই আসতো, হুমায়ূন তখন ধনী হয় নি, আমার থেকে ৫০০ টাকাও ধার নিতো। টিভি সিরিয়াল তার ধনের খাল খুলে দেয়। টাকা হলে মানুষ কতো কী করে- গাধার জন্যে প্রাসাদ বানায়, সমুদ্রে বাড়ি বানায়, লোকেরা ওই বাড়িকে বলে পাগলের বাড়ি। হুমায়ূন এসে ধরলো তার পিতার নামে গ্রামে পাঠাগার করবে, ওই অনুষ্ঠানে আমাকে যেতে হবে- সঙ্গে নির্মলেন্দু ও মিলন। হুমায়ূনের স্ত্রী, কন্যা, মা, ও অন্যরা তো ছিলোই। অমন বিরক্তিকর পরিস্তিতিতে আমি কখনো পড়ি নি। কিশোরগঞ্জ না কোথাকার এক পাটক্ষেতের ধারে সন্ধ্যার পর আমরা নামলাম, খেতের আলে হাঁটু পানি, ওই পানিতে কয়েক ঘণ্টা হেঁটে, অন্ধকারের মধ্যে কোথায় গিয়ে যে উঠলাম, কেমনে উঠলাম তা আমি বুঝতে পারলাম না। একটি সমস্যা হলো ওদের ওখানে কোনো পায়খানা নেই, পাটখেতে বা অন্য কোনো খেতে যেত হয়, ওা প্রকৃতির ডাক শুনে দৌঁড়ায়। এক ইস্কুলের বিএ পাশ, বেশ সুন্দরী, এক শিক্ষয়িত্রী এক বদনা পানি নিয়ে চললো আমার সঙ্গে, আমি বিব্রত বোধ করতে থাকলে; সে বললো, স্যার, আপনি করেন, আমি আছি। আরেকটি সমস্যা হলো- যে বাড়িতেই যাই নির্মলেন্দু, হুমায়ূন, মিলন বুড়োবুড়ীদের পা ছুঁয়ে প্রণামে/সালামে মেতে উঠতে থাকে, আমি পাশে দাঁড়িয়ে থাকি। শহর থেকে লেখকেরা গেছি প্রণাম/সালাম করতে? এটা আমার জন্যে একটি সমস্যা হলো। এ নিযে আমার ওই পদধূলিপবিত্র তিনজনের সঙ্গে বেশ তর্ক হয়ে গেলো। ওই ভ্রমণটা ছিলো আমর জীবনের সবচেয়ে অসাধারণ ভ্রমণ। পা ওরা এখনো ছুঁয়ে চলছে, কখনো হাসিনার কখনো খালেদার, আরো অনেকের। হাসিনা-খালেদার মতো অতো ওপরে যেতে হবে না, দরকার হলে ওরা সহকারি সচিবেরও পাও ছুঁতে পারে। ওরা কাঁচা বই লিখলেও মানুষ হিশেবে পাকা।

এভাবেই চূড়ান্ত আক্রমণ করে হুমায়ুন আজাদ তৃপ্তি পেতেন। তিনি হুমায়ুন আহমেদ ছাড়াও আহমেদ ছফা, তছলিমা নাসরিন, সৈয়দ শামসুল হকসহ অনেক লেখকের সাথেও দ্বন্দ্বে জড়িয়েছেন। আক্রান্তও হয়েছেন। আহমেদ ছফা তাকে উদ্দেশ্য করে বলেছিলেন, শুকরের বাচ্চার যখন নতুন দাঁত গজায় তখন বাপের পাছায় কামড় দিয়ে পরীক্ষা করে দাঁত শক্ত হয়েছে কিনা। হুমায়ূন আহমেদও আজাদের কিশোরগঞ্জ কাহিনী নিয়ে মন্তব্য করেছেন খুবই সামান্য- ‘যথেষ্ট বিরক্ত করেছেন’। অবশ্য সৈয়দ হকের সাথে হুমায়ূন আহমেদও দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েছিলেন।

হুমায়ূন আহমেদের দ্বিতীয় বিয়ে বা পরকীয়াতে জড়িয়ে পড়ার আগেই মৃত্যুবরণ করেছিলেন হুমায়ুন আজাদ। তা না হলে হুমায়ূন আহমেদের দুইবার দুইজন বালিকাকে বিয়ে করা নিয়ে চটুল কোন মন্তব্য হয়তো আমরা পেতাম। হুমায়ুন আজাদ এক্ষেত্রে তার সহপাঠিনীকে বিয়ে করেছেন। যখন তার সহপাঠিনী মাস্টার্স শেষ করেছেন। হুমায়ূন আজাদ বিতর্ক সৃষ্টি করতেন; হুমায়ূন আহমেদ সযতেœ বিতর্ক পরিহার করতেন। হুমায়ূন আজাদ ছিলেন ঈশ্বরে অবিশ্বাসী আর হুমায়ূন আহমেদ ছিলেন ঈশ্বরে সন্দেহবাদী মানুষ। হুমায়ুন আজাদ আক্রমন করতেন প্রায় সবাইকেই। তিনি প্রথাবিরোধী ছিলেন বলে দাবী করতেন। প্রতিটি রাজনৈতিক দলকে আক্রমণ করেছেন তীব্র ভাষায়। জামায়াত, কমুনিস্ট, বিএনপি, আওয়ামীলীগ সবাইকে। পার্থক্য অবশ্য আছে। জামায়াতকে তিনি সবচেয়ে বেশি আক্রমন করতেন। বহুমানুষকে তিনি আক্রমণ করেছেন। অনেকেই ভীত থাকতো, কখন থলের বিড়ালটি হুমায়ূন আজাদ বের করে দেন। হুমায়ূন আহমেদ এক্ষেত্রে নির্বিকার। তিনি পারতপক্ষে কাউকেই আক্রমন করতেন না। তার বই পড়ে ধর্মান্ধরা বুঝতে পারতো না তিনি ধর্মের বা ঈশ্বরের বিরুদ্ধে না পক্ষে। তিনি একাত্তরের পরাজিত শক্তির বিরুদ্ধেও সোচ্চার ছিলেন না। উগ্র মৌলবাদীদের বিরুদ্ধেও সেভাবে কিছু বলতেন না। অর্থাৎ তিনি উটকো ঝামেলায় জড়াতে চাননি। হুমায়ুন আজাদ লিখতেন, ভাষাবিজ্ঞান, কবিতা, উপন্যাস ইত্যাদি। নিজেকে বহুমার্ত্রিক লেখক বলতেন। তিনি লিখেও আক্রমন করতেন, আবার মুখেও আক্রমন করতেন। হুমায়ূন আহমেদ লিখেও কারো জবাব দিতেন না, মুখেও আক্রমন করতেন না। লিখতেন প্রধানত উপন্যাস। এছাড়া নাটক-সিনেমা বানাতেন। দুজনের পাঠকও ভিন্ন। হুমায়ূন আজাদ সাক্ষাৎকার দিতে পছন্দ করতেন। অনেক সাক্ষাৎকার দিয়েছেন। চারজন ব্যক্তির সাক্ষাৎকার নিয়েছেনও। এসব নিয়ে কয়েকটি বইও রয়েছে। হুমায়ূন আহমেদ এর সাক্ষাৎকার সেভাবে জনপ্রিয় ছিল না। একেবারে শেষে প্রকৃতি আরেকটি বিষয়ে তাদের মিলিয়ে দিলেন। দুজনেরই মৃত্যু হল বিদেশের মাটিতে। দুজনেরই লাশ আসলো দেশে। অগণিত ভক্ত-আত্মীয়-স্বজন অশ্রুসজল চোখে তাদের লাশ সমাহিত করেছে প্রকৃতির মধ্যে- হুমায়ুন আজাদকে বিক্রমপুরের রাঢ়িখালে, হুমায়ূন আহমেদকে গাজীপুরের নুহাশপল্লীতে।

দুজন লেখকের মধ্যে দ্বন্দ্ব থাকতেই পারে। বাংলা বা বিশ্বসাহিত্যে এটা অস্বাভাবিক নয়, এধরনের ঘটনা হরদমই ঘটেছে। তাদের মধ্যে যত দ্বন্দ্বই থাকুক, তারা দুজনই বাংলাদেশের দুই মহান, শ্রদ্ধেয় ও গুরুত্বপূর্ণ লেখক।

মন্তব্য ৪০ টি রেটিং +১৮/-০

মন্তব্য (৪০) মন্তব্য লিখুন

১| ২৪ শে জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৫:৩৯

রসিক বাঙ্গাল বলেছেন: বেশ কিছুটা জানাই ছিল, আরো কিছু জানলাম। কোন সন্দেহ ছাড়াও দুইজনই অসাধারণ লেখক। আজাদের লেখা, চিন্তাভাবনা সবকিছুই আমার কাছে খুবই গভীর মনে হয়েছে। কিন্তু, সমস্যা হচ্ছে উনি ইচ্ছা করে বিতর্কিত হতেন, ইচ্ছা করে অন্যের নামে অতিরিক্ত নিন্দা করতেন - এইটা কখনোই ভাল লাগে নাই।

এইদিক দিয়ে আহমেদ ভাল ছিলেন। আর আহমেদের বই পড়লে সাহিত্য বোঝা যায় না, এইটা ভুল। আমি আহমেদের বই পড়েই জানতে পেরেছি আজাদ নামে একজন লিজেন্ড আছেন বাংলায়।

২| ২৪ শে জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৫:৪৫

মুজিব রহমান বলেছেন: ধন্যবাদ। কিছু বিষয়ে সহমত পোষণ করছি।
আমি এখানে একজনের সম্পর্কে অন্যজনের মতামত এবং তথ্য প্রকাশ করেছি। নিজস্ব মতামত প্রকাশ করিনি।

৩| ২৪ শে জানুয়ারি, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:২৪

মাহমুদুর রাহমান বলেছেন: এমন ও শুনেছি শাহ জাদা আর হারাম জাদা এমন নাকি মিল আহমেদ ও আজাদের।


তবে নিজে আহমেদ ভালবাসি। আজাদ কে ঘৃণা করি।

৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৪:২০

মুজিব রহমান বলেছেন: হুমায়ূন আহমেদকে ভালবাসা সহজ। আজাদকে ভালবাসা সহজ নয়। আজাদকে বুঝতে হলে প্রচুর জানতে হবে, বুঝতে হবে।

৪| ২৪ শে জানুয়ারি, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৪০

রসিক বাঙ্গাল বলেছেন: আজাদ সম্পর্কে কতটুকু জেনে আপনি তাকে ঘৃণা করেন জানতে পারলে ভাল লাগতো @মাহমুদুর রহমান।

আর, এইটাও খেয়াল রাখতে হবেফ, অপছন্দ করা আর ঘৃণা করা এক জিনিস না। অপছন্দ সশস্ত্র হামলার দিকে নেয় না, ঘৃণাই নেয়।

আপনি কষ্ট পেলে পেতে পারেন, তাও বলছি, ঘৃণা করা পাব্লিকের জন্যই আজাদের উপ্রে হামলা হইসে। অনুরোধ এক, তার সম্পর্কে জানার চেষ্টা করুন।

দুই, ভাল না লাগলে অপছন্দ করুন, ঘৃণা করবেন না।

৫| ২৪ শে জানুয়ারি, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৪৭

নোমান নমি বলেছেন: অনেক কিছুই জানা ছিল। কিছু নতুন জানলাম। ধন্যবাদ শেয়ার করার জন্য।

৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৪:২১

মুজিব রহমান বলেছেন: অন্যবাদ আপনাকে। মুক্তমনা, প্রগতিশীল, সচেতন মানুষ ছাড়া আজাদকে ভালবাসা সম্ভব নয়।

৬| ২৪ শে জানুয়ারি, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৫৬

হুমায়ুন তোরাব বলেছেন: manusher mon boro odvut....
valo lglo.
priyo te nilam..

৭| ২৪ শে জানুয়ারি, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:০১

প্লিওসিন অথবা গ্লসিয়ার বলেছেন: হুমায়ুন আজাদ এবং হুমায়ুন আহমেদ দুইজন ই প্রিয় ! ভালো লেগেছে পোস্ট ।

৮| ২৪ শে জানুয়ারি, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৩৮

মোঃ মুশফিকুর রহমান বলেছেন: হুমায়ন আজাদ বাংলা সাহিত্যের সব চেয়ে শক্তিশালি লেখক। তিনি সত্য বলতেন বুক চিতিয়ে। কিন্তু তিনি হুমায়ন আহমেদের মত জনপ্রিয ছিলেন না। লেখাটি ভালো লেগেছে।

৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৪:২২

মুজিব রহমান বলেছেন: আপনার সঠিক মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

৯| ২৪ শে জানুয়ারি, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৫৪

এম.এ.আই পাভেল বলেছেন: "সত্য সবসময় জনপ্রিয় হয় না, সব জনপ্রিয়ই সত্য নয়"- আজাদ ও আহমেদ এর ক্ষেত্রে এই লাইনটি বোধহয় যথোপযুক্ত!!!!!!

৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৪:৫৩

মুজিব রহমান বলেছেন: ঠিকই বলেছেন। আরেকটি ব্যাপার আছে- আহমেদ সহজ ভাষায় লিখতেন। এটা অবশ্যই দক্ষতা। তার জনপ্রিয়তার পেছনে সহজ উপস্থাপনাটাও অন্যতম বিষয়।

১০| ২৪ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ৮:১১

বল্টু মিয়া বলেছেন: +++

১১| ২৪ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ৮:২৭

ক্লান্ত কালবৈশাখি বলেছেন: অনেক কিছু নতুন জানতে পারলাম, ধন্যবাদ...

১২| ২৪ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ৯:৩২

সাইফুল আলী বলেছেন:

১৩| ২৪ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ৯:৪৮

একজন সৈকত বলেছেন: একজন মানুষ হুমায়ূন আহমেদ একজন হুমায়ূন আজাদের চেয়ে যে কত উপরে ছিলেন এই লেখা পড়ে তা বোঝা যায়। আর লেখক হুমায়ূন আহমেদের মূল্যায়ন মহাকালই প্রমাণ করবে.....
লেখককে ধন্যবাদ।

৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৪:৫৫

মুজিব রহমান বলেছেন: কিভাবে বুঝলেন তা আমি বুঝিনি। এখানে কোন ভাবেই হুমায়ূন আহমেদকে মানুষ হিসাবে উপরে স্থান দেয়া হয়নি। মানুষ হিসাবে হুমায়ূন আজাদ অনন্য।

১৪| ২৪ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১০:২৩

পরদেশী মেঘ বলেছেন: দু জনের জনপ্রিয়তায় বিশাল পার্থক্য। হুমায়ুন আজাদ যে পরশ্রীকাতর ছিলেন তা এই লেখা থেকেই পরিষ্কার। আজাদ গবেষণাধর্মী কিছু বই প্রকাশ করে মৌলিকত্বের বড়াই করতেন, যেখানে সিংহভাগ কৃতিত্বের দাবীদার অন্যরা।

১৫| ২৪ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১০:২৫

ত্রিভকাল বলেছেন: অসম্ভব ভালো লাগলো ...+++++++++++++++++

১৬| ২৪ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১০:২৭

তানিয়া হাসান খান বলেছেন: একজন সৈকত বলেছেন: একজন মানুষ হুমায়ূন আহমেদ একজন হুমায়ূন আজাদের চেয়ে যে কত উপরে ছিলেন এই লেখা পড়ে তা বোঝা যায়। আর লেখক হুমায়ূন আহমেদের মূল্যায়ন মহাকালই প্রমাণ করবে.....
লেখককে ধন্যবাদ।

সহমত

১৭| ২৪ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১০:৫৮

বিষাদ সজল বলেছেন: তারা দুজনেই যথেষ্ট জ্ঞাণী ।
তাদের পাঠকও ছিল ভিন্ন ভিন্ন দুটি শ্রেণীর ।
আপনার লেখা পড়ে অনেক কিছু জানতে পারলাম ।
দুজনের প্রতিই রইল শ্রদ্ধা ।

১৮| ২৫ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১২:১১

ৎঁৎঁৎঁ বলেছেন: অনেক কিছু জানতে পারলাম। দারুন লেখা হয়েছে।

/তাদের মধ্যে যত দ্বন্দ্বই থাকুক, তারা দুজনই বাংলাদেশের দুই মহান, শ্রদ্ধেয় ও গুরুত্বপূর্ণ লেখক।/

সহমত।

ভালো থাকবেন।

৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৪:৫৬

মুজিব রহমান বলেছেন: ধন্যবাদ। আপনিও ভাল থাকবেন।

কিন্তু আপনি ভূত নাতো...

১৯| ২৫ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১২:২৫

মেঘনা পাড়ের ছেলে বলেছেন: পোষ্টের থিমটা দারুন লাগলো, সাথে তথ্যগুলিও, যদিও অনেকটাই জানা ছিলো। +++++++++++

আমার রিলেটেড একটা পোষ্ট আছে। চাইলে ঘুরে আসতে পারেন (আমরা বেঁচেছিলাম হুমায়ুনদের সময়ে)http://www.somewhereinblog.net/blog/mushfic1975/29643788

২০| ২৫ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ২:৫৫

তন্ময় ফেরদৌস বলেছেন: +++++

২১| ২৫ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ৩:০৯

মোহামমদ মশিউর রহমান বলেছেন: বিশ্বাস করবেন না অসম্ভব ভাল লাগলো দুই মহারথীর বিষয়ে নতুন করে কিছু পড়ে । সরাসরি লাইক , প্রিয় এবং ভাললাগার মন্তব্য।

৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৪:৫৭

মুজিব রহমান বলেছেন: ধন্যবাদ।

২২| ২৫ শে জানুয়ারি, ২০১৩ সকাল ৯:০৬

*অ্যাকিলিস* বলেছেন: +++++

২৩| ২৫ শে জানুয়ারি, ২০১৩ সকাল ১১:৪৩

বিপদেআছি বলেছেন: DU এর সব জিনিয়াস :D :D

২৪| ২৭ শে জানুয়ারি, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৪৭

মুজিব রহমান বলেছেন: সবাইকে ধন্যবাদ। হুমায়ূন আহমেদ ও হুমায়ুন আজাদ ভিন্ন মানের লেখক। দুজনই গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করি। আমি হুমায়ুন আজাদের অনুরাগী আবার হুমায়ূন আহমেদের পাঠকও বটে। তার ভাষা ভাললাগে।

২৫| ২৭ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১০:০০

ইফতেখার কাদির বলেছেন: দুজনকেই ভালো লাগে। তবে আহমেদকে একটু বেশী।

২৬| ২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৪:৪১

মুজিব রহমান বলেছেন: আপনাকে ধন্যবাদ। দুজনকেই ভাললাগে এমন পাঠক কিন্তু খুব বেশি নেই। হুমায়ূন আজাদকে এদেশের বেশিরভাগ মানুষই অপছন্দ করে। এতে তাঁর কোন ক্ষতি নেই।

২৭| ২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ১২:৩৪

পদ্মার ঢেউ বলেছেন: অসাধারণ লাগলো লেখাটা।

২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ সকাল ৯:৪৭

মুজিব রহমান বলেছেন: ধন্যবাদ

২৮| ২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ সকাল ১০:৪৩

নরাধম বলেছেন:

আজাদ ছিলেন চোর। মানুষ হিসেবে ছিলেন অত্যন্ত নিম্নমানের।

আমি যদ্দুর জানি তিনি মুক্তিযুদ্ধও করেন নি, আহমেদও করেননি, কিন্তু তিনি সেটা তার কাপুরুষতা ছিল সেটা স্বীকার করেছেন।

Click This Link

Click This Link

২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১:৫৯

মুজিব রহমান বলেছেন: দেশে মুক্তিযুদ্ধ করেছেন হয়তো ৭২ হাজার, তালিকাভূক্ত ২/৩লাখ। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে ছিলেন অধিকাংশ মানুষ। হুমায়ুন আজাদ মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের একজন। তার সান্নিধ্য পেয়ে বুঝেছি তিনি অসাধারণ মানুষ ছিলেন। আপনি তার সান্নিধ্য পাননি। তাকে বুঝতে হলে তাকে পড়তে হবে। আপনি যে ভাষা ব্যবহার করেছেন তা নিম্নমানের। এটা আপনার পরিচয় বহন করবে। কোন মানুষকেই আমি নরাধম বলতে চাই না। সবার উপরে মানুষ সত্য।

২৯| ২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ২:২০

নরাধম বলেছেন:
আমি হিটলারের সাথেও কোনদিন মিশিনাই, তাতে সে ভাল মানুষ না খারাপ মানুষ সেটা বুঝতে সমস্যা হচ্ছে না। আপনার যুক্তির সমস্যা নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছেন। আমি বঙ্কিমের সাথে মিশিনাই, কিন্তু তিনি সাম্প্রদায়িক ছিলেন সেটা বুঝতে সমস্যা হচ্ছেনা, ঈশ্বরচন্দ্রের সাথে মিশিনাই, কিন্তু তিনি একজন অসাধারণ বড় মানুষ ছিলেন সেটা বুঝতে সমস্যা হচ্ছে না। হুমায়ুন আজাদ চুরি করছে সেটা তার লেখা পড়লে বুঝা যায়, তার সান্নিধ্যে আসতে হবে কেন? আপনার কাছে লেখাচোরের বিরাট সম্মান থাকতে পারে কেননা আপনায় নৈতিক স্ট্যান্ডার্ডে হয়তবা লেখাচুরিকে শ্রদ্ধার চোখে দেখেন। কিন্তু আমার কাছে চোরের কোন সম্মান নেই, বিশেষ করে লেখাচুরির তো নয়ই। আমি পশ্চিমে লেখাপড়া করেছি/করছি, এখানে লেখাচোরকে সবাই থুথু দেয়, কোন লেখাচোরকে কোনদিন কেউ ভুলেও সম্মান করে না। বাংলাদেশে সাধারণত ঘুষখোর-দূর্নীতিবাজরা সামাজিকভাবে প্রতিষ্ঠিত, তাদেরকে সম্মান করা হয়, তাই লেখাচোরকেও আপনার মত লোকেরা বিরাট সম্মানের আসনে বসায়, এজন্য লেখাচুরি করেও লোকে পার পেয়ে যায়।


মুক্তিযুদ্ধের সময়কালে যারা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে মুক্তিযুদ্ধে জড়িত ছিলেন না, বিশেষ করে সুযোগ থাকা সত্ত্বেও, তাদের মুক্তিযুদ্ধের পরে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে থেকে লাভ কি? এরা ভীরু কাপুরুষ, এদের মুখে অত মুক্তিযুদ্ধের গুনগান শোভা পায়না। সাধারণ মানুষরা অনেকে হয়ত বুঝতে পারেননি বা সুযোগ ছিল না, হুমায়ুন আজাদ তো ব্যাপক জ্ঞানী মানুষ, তিনি নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছিলেন পাকিস্তানি কুত্তার বাচ্চারা আমাদেরকে কিভাবে অত্যাচার করতেছিল, মা-বোনদের ধর্ষণ করছিল, কিন্তু তিনি চুপচাপ বসেছিলেন, ভীরু কাপুরুষ না বলে এদেরকে আর কি বলা যায়? মুক্তিযুদ্ধ শেষ তো ইঁদুরের মত গর্ত থেকে বের হয়ে বিরাট মুক্তিযুদ্ধপন্থী সেজে গেল, এদেকে বড়জোড় সুবিধাবাদী বলা যায়, এর বেশি কিছু না।

আমার পরিচয় নিয়ে চিন্তিত না, বরং চোরদেরকে যারা সম্মান করে এরা দেশের এবং সমাজের শত্রু, কেননা এদের জন্যই দেশে লোকে চুরি-দূর্নীতি করার প্রশ্রয় পায়। আপনি সুশীল সেজে মিষ্টি মিষ্টি কথা বলেন আর আজাদের মত চোরের এবং কাপুরুষের ভক্ত সাজেন, আমি চোরকে চোর বলব, কাপুররুষকে কাপুরুষ বলব, কোন রাখঢাক না রেখেই, সেখানে আপনার মত সুশীলগিরি চু**তে পারবনা।

৩০| ০৪ ঠা মার্চ, ২০১৩ দুপুর ২:১৬

মুজিব রহমান বলেছেন: ড. হুমায়ুন আজদের উপর আপনার আক্রোশ মৌলবাদীদের মতো। তিনি কোথায় থেকে চুরি করেছেন তার বর্ণনা দেন নি। প্রবন্ধ লিখলে রেফারেন্স সবাই-ই নেন, তিনিও নিয়েছেন। তার নারী অনেক লেখকের রেফারেন্স নিয়ে লেখা। ভাষা বিষয়ক বইগুলোও তাই। এগুলোকে চুরি বলে না। তিনি কি উপন্যাস কবিতা চুরি করেছেন? তার নিকটজনরাতো তার সম্পর্কে বেশি ভাল জানবে এজন্যই বলেছি। হিটলারকে অনেকে পছন্দ করে বলে দেখবেন এদেশে কিছু মানুষ হিটলার নামে পাবেন। কিন্তু তিনিতো বেশিরভাগ মানুষের পছন্দের নন।

৩১| ১৭ ই নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১১:০৮

রাখালছেলে বলেছেন: ব্যাপারটা কিছু কিছু জানতাম । আপনার লেখায় বোঝা যায় যে, ব্যাপারটা খুবই মারাত্মক পর্যায়ে ছিল । তারপরও দুই লেখকেই সালাম ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.