নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সমাজ বদলাতে হবে। অনবরত কথা বলা ছাড়া এ বদ্ধ সমাজ বদলাবে না। প্রগতিশীল সকল মানুষ যদি একসাথ কথা বলতো তবে দ্রুতই সমাজ বদলে যেতো। আমি ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে, সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে, জাতীয়তাবাদের বিরুদ্ধে, বর্ণবাদের বিরুদ্ধে, নারী নিপীড়নের বিরুদ্ধে অনবরত বলতে চ

মুজিব রহমান

মুক্তচিন্তা ও বিজ্ঞানমনষ্ক মানুষ

মুজিব রহমান › বিস্তারিত পোস্টঃ

লেখকদের মধ্যেকার দ্বন্দ্ব সংঘাত

২৪ শে নভেম্বর, ২০২০ রাত ১০:২৮

বিতার্কিকদের একটি শ্লোগান হল, ‘তর্কে দ্বন্দ্ব আর বিতর্কে বন্ধুত্ব’। আমাদের বহুসংখ্যক লেখকদের মধ্যে সরাসরি তর্ক না হলেও তারা মিডিয়ার মাধ্যমে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়তেন মাঝেমধ্যে। এটা যে শুধু জাতীয় পর্যায়ে হচ্ছে তা নয় স্থানীয়ভাবেও হচ্ছে অহরহ। ইতিবাচক হোক কিংবা নেতিবাচক, লেখকদের এই দ্বন্দ্ব লেখার উপর প্রভাবতো পড়বেই। আড্ডা সাহিত্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বাংলাদেশে শামসুর রাহমান, আল মাহমুদ, শহীদ কাদরীরা বিউটি বোডিং এ যে আড্ডা দিতেন তার ফল হল, আড্ডাকারীদের সকলেই দেশের প্রধান প্রধান লেখকে পরিনত হয়েছেন। আড্ডায় পারস্পারিক মতবিনিময় পরস্পরকে সমৃদ্ধ করে। ফরাসী রেনেসার সময় শিল্পীরা আড্ডা দিতেন। আড্ডা লেখার মানকে উন্নত করে। আড্ডায় মত বিনিময় হয়, বিতর্ক হয় এতে বন্ধুত্ব বাড়ে। আমৃত্যু শামসুর রাহমানের বন্ধু ছিলেন শহীদ কাদরী।

কালের পরিক্রমায় বিউটি বোর্ডিং এর লেখকরা বিচ্ছিন্ন হয়েছেন। এর মধ্যে নিজেরাও ভিন্নপথে চলে গেছেন। শামসুর রাহমান ও আল মাহমুদ দুজনই একদা প্রগতিশীল ছিলেন। পরবর্তীতে আল মাহমুদ প্রবল ধর্ম বিশ্বাসের দিকে ঝুঁকে পড়েছেন। আরেকটি আড্ডা হয়েছে অধ্যাপক হুমায়ুন আজাদের বাড়িতে। এখানে হুমায়ূন আহমেদ, ইমদাদুল হক মিলনরা আড্ডা দিতেন। তারা আড্ডা দিতে দিতে মদ্যপানও করতেন। এর মধ্যে হুমায়ূন আহমেদ ও হুমায়ুন আজাদ দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েন। অবশ্য আক্রমনটা একপাক্ষিকই ছিল। হুমায়ুন আজাদ বাংলা ভাষায় নতুন একটি শব্দ প্রবেশ করান। সেটি হল ‘অপন্যাস’। তিনি হুমায়ূন আহমেদ এবং ইমদাদুল হকের উপন্যাসকে বলতেন, অপন্যাস। হুমায়ূন আহমেদ হুমায়ুন আজাদের মানসিক বিকৃতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন ‘পাকসার জমিন সাদবাদ’ উপন্যাসটির জন্য। হুমায়ূন আজাদ অবশ্য দ্বন্দ্বে জড়িয়েছেন সৈয়দ শামসুল হক, আহমদ ছফা, তছলিমা নাসরিনসহ অনেকের সাথেই। অনেক লেখককেই তিনি মূর্খ বলতেন। অনেক প্রখ্যাত পণ্ডিতের পাণ্ডিত্য নিয়েই প্রশ্ন তুলতেন। তাই অনেকেই ভয়ে থাকতেন, কার কখন লেখক ভাব খসে পড়ে। সৈয়দ শামসুল হকও হুমায়ূনের লেখার সাহিত্যমূল্য নিয়ে একদা প্রশ্ন তুলতেন। সৈয়দ হকের সাথে একবার রাস্তায় দেখা হওয়ার পর হুমায়ূন আহমেদকে বলেন, সাহিত্য টাহিত্য কিছু লিখছেন কিনা? হুমায়ূন বলেন, ‘এইসব দিনরাত্রী’ লিখছি। সৈয়দ হক একই প্রশ্ন আবারো করলে হুমায়ূন আহমেদ বুঝতে পারেন সৈয়দ হক টিভি সিরিয়াল ‘এইসব দিনরাত্রী’ সাহিত্য নয় বলেই বোঝাতে চাচ্ছেন। মাসিক বিচিত্রায় তারা দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েছিলেন। অবশ্য দুজনই দুজনার ছোটগল্পের প্রশংসা করেছেন বিভিন্ন সময়। মিডিয়ার মাধ্যমেই আহমদ ছফা ও হুমায়ুন আজাদ দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েন। হুমায়ুন আজাদ আহমদ ছফাকে গুরুত্ব দিতেন না। তুচ্ছতাচ্ছিল্য করতেন। আহমদ ছফাও দাঁতভাঙ্গা জবাব দিতেন। তিনি হুমায়ুন আজাদকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘শুকরের নতুন দাঁত গজালে, বাপের পাছায় কামড় দিয়ে পরীক্ষা করে শক্ত হয়েছে কিনা।’ হুমায়ুন আজাদ অনেককে আক্রমণ করে ক্ষতবিক্ষত করলেও কেউ এরকম জবাব দিতে পারেনি। তিনি ড. মুহম্মদ শহিদুল্লাহ সম্পর্কে বলেছিলেন, তিনি খারাপ ছাত্র ছিলেন, পরে যে-জ্ঞানচর্চা করেছেন, তা খুবই তুচ্ছ। অধ্যাপক আব্দুর রাজ্জাকও একই ধরনের। মুহম্মদ শহীদুল্লাহর ব্যাকরণ বইট প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত ভুল; এর ভাষা ও ব্যাকরণবোধই ভুল। জিল্লুর রহমান সিদ্দিকীকে বলেছেন, তিনি নিজে কোন গবেষণা করেননি, গুরুত্বপূর্ণ কোন কাজ করেননি। সবসময় তোষামোদ করে বেড়ান। আজাদ নজরুলকেও আক্রমণ করে বলেছেন, তিনি প্রকৃত কবি নন, তিনি একজন বড়ো পদ্যকার, এবং তিনি প্রকৃতপক্ষে বিদ্রোহীও নন, তিনি ব্রিটিশবিরোধী; তাঁর পদ্যের বড়ো অংশ প্রতিক্রিয়াশীলতার জয়গানে মুখরিত। আরো অনেককে তিনি আক্রমন করেছেন। অনেক তথাকথিত জ্ঞানীকে মূর্খ হিসাবে প্রমাণ করেছেন। অবশ্য হুমায়ূন আজাদ নিজেকে সমাজের সাথে খাপ না খাওয়া মানুষই বলতেন। অর্থাৎ মিসফিট। আহমদ ছফা আর ফরহাদ মজহারের মধ্যে দীর্ঘকাল সুসম্পর্ক ছিল। পরস্পরের মধ্যে সন্দেহও ছিল। ছফা মনে করতেন, ফরহাদের ভিতরটা পরিষ্কার নয়। এজন্য ফরহাদ সেরকম জনপ্রিয় হয়ে উঠেনি। ফরহাদ পরবর্তীতে বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েন। আমাদের নারী লেখিকাদের মধ্যে পারষ্পরিক দ্বন্দ্ব সংঘাতটা কম ছিল। একমাত্র তসলিমা নাসরিন ছাড়া অন্যরা সেই অর্থে ব্যাপক জনপ্রিয়তাও পাননি। অবশ্য রোমেনা আফাজ সাময়িক জনপ্রিয়তা পেয়েছিলেন। রোমেনা আফাজের সময় অন্য কোন জনপ্রিয় নারী লেখিকাও ছিল না। তবে তুলনার ক্ষেত্রে বাংলাদেশে সবচেয়ে এগিয়ে রয়েছেন দুই নারীই। তসলিমার সাথে বেগম রোকেয়ার তুলনাটা মনে হয় দীর্ঘদিন থাকবে। কে বেশি ভূমিকা রেখেছে নারী জাগরণে, কে বেশি প্রগতিশীল? এখানে অবশ্য বিতার্কিকদের ভাগটা আস্তিক-নাস্তিকে বিভক্ত। আস্তিকরা বেশিরভাগ বেগম রোকেয়ার পক্ষে আর নাস্তিকরা তসলিমার পক্ষে। সারাদেশে নাস্তিক নগণ্য হলেও ব্লগে কিন' নাস্তিকের সংখ্যা আনুপাতিক হারে অনেক বেশি। এখানে ব্লগের বিতর্কটাই বলা হচ্ছে। ব্লগারদের নিয়ে কিছুকাল ব্যাপক বিতর্ক হয়েছে। ব্লগারগণ প্রকৃতপক্ষে লেখক নন। তারা সিংহভাগ বড়জোর মন্তব্যকারী। অনেকে দৈনিক পত্রিকা কপি করে পেস্ট করেন। সামান্য কয়েকজনই বড় ও মৌলিক লেখা পোস্ট করেন। বিষয়টা পর্দার আড়ালেই ছিল। কয়েকজন ব্লগারের ধর্মবিদ্বেষ নিয়ে দেশে তুলকালাম কাণ্ড ঘটে যায়। এতে ব্লগারগণ ব্যাপক পরিচিতি পেয়ে যায়। ব্লগিংটা বিতর্কিত হয়েছে রাজনৈতিক কারণে। তবে দেশে মুক্তচিন্তার সূচনা হয় মূলত ব্লগেই।
পশ্চিমবঙ্গেও লেখকদের মধ্যে দ্বন্দ্ব প্রকট। সেটা বর্তমানকার লেখকদের মধ্যেও আবার প্রয়াত লেখকদের মধ্যেও। সুধীন্দ্র নাথ দত্ত জীবনানন্দ দাশকে কবি হিসাবেই মেনে নিতে চাননি। সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের সাহিত্য আড্ডা নিয়ে, যৌন হয়রানীর অভিযোগ করেছেন কেউ কেউ। আগের লেখকদের মধ্যে বঙ্কিম, বিদ্যাসাগরকে মূর্খ বলতে দ্বিধা করেননি। বিদ্যাসাগরকে তেমন লেখক বলেও মানতে চাননি। বিদ্যাসাগর নাকি কোন মৌলিক রচনা লেখেননি। ‘সীতার বনবাস’ পড়ে তিনি বলেছিলেন, এতো কান্নার জোলাপ। তারাশাঙ্করের মতে, বিমল মিত্র মস্ত লেখক নন; ইতিহাসে হাতটা মন্দ না হলেও সমকালকে তেমন ম্যানেজ করতে পারেন না। বিমল মিত্রের রীতিমতো দুশ্চিন্তা তারাশঙ্করের গল্প ছাত্রপাঠ্য হয়েছে; বাঙালিদের একটা প্রজন্ম ভুল বাঙলা শিখবে। লোকটা বাঙলা জানে না।

বিশ্ব সাহিত্যে এই পরশ্রীকাতরতা বা দ্বন্দ্বও অনেক। অ্যাডাম স্মিথ আধুনিক ইকনমিক্সের জন্মদাতা। বার বছরের সাধনায় এককানা জম্পেস বই লিখলেন ‘ওয়েলথ অফ নেশনস’‌। ইনি যখন পণ্ডিতদের আড্ডা চক্রের সভ্য হলেন তখন বসওয়েলের মনে কি দুঃখ, তিনি বললেন এই আড্ডা চক্রের আর ইজ্জত রইল না। যদু মধু সবাই এখানকার সভ্য হতে চলেছে। ইংরেজি কবি গিবনস সম্পর্কে কবি কোলরিজ বলেছেন, ওর ইংরেজি স্টাইল এতো খারাপ যে কহতব্য নয়। হেমিংওয়ে সম্পর্কে একজন সমকালীন লেখক বলেছেন, ওর স্টাইল আবার স্টাইল নাকি! উনিতো বুকে পরচুলা পরে ঘুরেন। জেমস জয়েস সম্পর্কে ভার্জিনিয়া উলফ বলেছেন, অপরিপক্ক স্কুলের ছাত্রের লেখা, সারাক্ষণ যে, মুখের ব্রণ টিপসে। কবি কীটস সম্পর্কে লর্ড বায়রনের উক্তি- ‘লেকের ব্যাঙ’। সামপ্রতিক পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি বিক্রি হওয়া বই হ্যারি পটার সিরিজ। পৃথিবীর বরেণ্য লেখক ও সমালোচকগণ হ্যারি পটারের লেখিকা জে কে রাউলিংকে সুসাহিত্যিক বলতে রাজি নন। ভলতেয়ার ও রুশোর মধ্যে দ্বন্দ্ব ছিল প্রচণ্ড। জ্যঁ জাক রুশো একবার নগর সভ্যতার বিরুদ্ধে এবং মানুষের বন্য জীবনের পক্ষে একটি নিবন্ধ লিখে পত্রিকায় প্রকাশ করে তা দেখাতে নিয়ে আসেন ভলতেয়ারের কাছে। ভলতেয়ার লেখা পড়ে বললেন, ‘এতো কাল আগে হামাগুড়ি ছেড়ে হাঁটতে শিখেছি আবার হামাগুড়িতে ফিরে যাবো?’। রুশো খুবই অপমানিত বোধ করেন এবং আর কখনোই ভয়তেয়ারকে ক্ষমা করেন নি। আলবেয়ার কাম্যু আর জ্যঁ পল সার্ত্র এর কথা বলতেই হয়। তারা ব্যক্তিগতভাবে পরিচয়ের আগেই পরস্পরের রচনা নিয়ে পত্রিকায় ইতিবাচক লিখে বন্ধু হয়ে উঠেন। বন্ধু হওয়ার জন্য মিলও ছিল অনেক। দুজনই ফ্রান্সের, দুজনই বামপন্থী ছিলেন আবার কমিউনিস্ট পার্টি ছেড়েছেন, দুজনই শৈশবে পিতৃহারা হন, দুজনই প্রতিবাদী বয়সও কাছাকাছি, দুজনেই অস্তিত্ববাদী, দুজনেই আড্ডাবাজ, দুজনেই থিয়েটার পাগল, দুজনেই নোবেল পেয়েছেন। তবুও সম্পর্কে ফাঁটল ধরে থিয়েটারকে কেন্দ্র করেই। এরপর সার্ত্রর পত্রিকায় কাম্যুর একটি বইর রিভিউতে খারাপভাবে সমালোচনা প্রকাশিত হলে দুজনের সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে যায়। কাম্যু এসেছিল আলজেরিয়ার এক দরিদ্র পরিবার থেকে। মা মানুষের বাসায় কাজ করে সন্তানদের মানুষ করেছেন। আর সার্ত্রে বড় হয়েছেন ধনাঢ্য নানা বাড়িতে। কাম্যু নোবেল গ্রহণ করলেও সার্ত্র তা প্রত্যাখ্যান করেন। তারাও বাকি জীবন দুজন দুজনার শত্রু হিসেবেই কাটান।

লেখকদের মধ্যে দ্বন্দ্বের অন্যতম কারণ হয়তো জনপ্রিয়তা। একজন জনপ্রিয় হলে অন্যরা তাকে টেনে নামাতে চান। আবারো এটাও সত্য সাময়িক জনপ্রিয়রা প্রায়শই হারিয়ে যান। নোবেল পাওয়ার পরে রবীন্দ্রনাথও তুমুল জনপ্রিয়তা লাভ করেছিলেন। এখনো তিনি জনপ্রিয়। তবে সব জনপ্রিয়রাই মানসম্মত নন। জে কে রাউলিং বা আমাদের হুমায়ূন আহমেদকে নিয়ে এ ধরনের আলোচনা হয়ে থাকে।

রাজনীতিবীদদের নিয়ে দ্বন্দ্বটা স্বাভাবিক। এই দ্বন্দ্বের ভিতর দিয়েই তারা এগিয়ে যায়। এক দলের বিরুদ্ধে বলেই আরেক দল ক্ষমতায় যায়। দলের ভিতরও দ্বন্দ্বটা প্রকট থাকে। একজনকে ল্যাং মেড়েই আরেকজন উপরে উঠে যায়। বাংলাদেশে শেখ হাসিনা এবং খালেদা জিয়ার মধ্যে দ্বন্দ্বটা শুধু দল ভিত্তিকই নয়। তাদের দ্বন্দ্বটা অনেকটা ব্যক্তি বিদ্বেষের মতো। সাহিত্যিকরা শুধু জনপ্রিয়তার দৌড়ে এগিয়ে যাওয়ার জন্যই দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েন না। এসব ক্ষেত্রে মতভেদটাই প্রধান। দেশের অনেক লেখকই ভিন্ন মতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল নন। দলকানা বুদ্ধিজীবী ও লেখকদের অধিকাংশই একটি দলের প্রতি অনুগত। ছোট দলের প্রতি কেউ ঝুকে পড়লেই তাকে আর লেখক গণ্য করা হয় না। অবশ্য দেশের রাজনৈতিক দল যেমন আওয়ামীলীগ এবং এন্টি আওয়ামীলীগ এই দুই শিবিরে বিভক্ত। লেখকরাও একইভাবে এই দুই শিবিরে বিভক্ত। দেশের সব লেখকই এই দুই শিবিরে বিভক্ত। এখন বিরোধী দল অস্তিত্ব সংকটে থাকায় অধিকাংশ লেখক/বুদ্ধিজীবীই এক দলের দিকেই ঝুঁকে পড়েছে। পৃথিবীর বহু বরেণ্য লেখকই রাজনীতির ধারে কাছে ঘেষতেন না। আমাদের এখানে দল করলে আর্থিক সুবিধা ও পুরষ্কার পাওয়া যায়। এই রাজনৈতিক মতভেদের কারণেই বাংলাদেশের নজরুল পরবর্তী প্রধান দুই লেখক শামসুর রাহমান এবং আল মাহমুদকে দুই শিবিরে ফেলে দেয়া হয়েছিল। ফলে এক সময়কার বিউটি বোডিং এর দুই বন্ধুর মধ্যে বন্ধুত্ব আর থাকেনি। এই দুই মহৎ কবিই নিপাট ভদ্রলোক। তারা অন্যকে আক্রমণ করতেন না। তাদের মধ্যেকার সম্ভাব্য দ্বন্দ্বটাও তাই প্রকাশ্যে আশেনি। লেখকদের মধ্যেকার এই দ্বন্দ্ব বিতর্ক টিকে থাকুক। এই দ্বন্দ্ব বিতর্কের মধ্যে দিয়েই সৃষ্টি হোক মহান সাহিত্য।
তথ্যসূত্র:
১। প্রসঙ্গঃ জ্যঁ পল সার্ত্র- খান আনওয়ার হোসেন
২। মাসিক বলাকা- হুমায়ুন আজাদ সংখ্যা

মন্তব্য ১৩ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১৩) মন্তব্য লিখুন

১| ২৪ শে নভেম্বর, ২০২০ রাত ১১:০৭

খায়রুল আহসান বলেছেন: সুন্দর আলোচনা করেছেন। অনেক কিছু জানা হলো।
"এই দুই মহৎ কবিই নিপাট ভদ্রলোক" - কবিদের তো ভদ্রলোকই হবার কথা। জনপ্রিয়তা অনেক সময় তাদেরকে অকবি করে তোলে। তাই তারা অভদ্রতার দিকে ঝুঁকে পড়ে।

পোস্ট ভাল লেগেছে। + +

২৫ শে নভেম্বর, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:১৬

মুজিব রহমান বলেছেন: ধন্যবাদ।

২| ২৪ শে নভেম্বর, ২০২০ রাত ১১:৪২

চাঁদগাজী বলেছেন:



আপনি কি তিল থেকে তাল বানাতে জানেন?

২৫ শে নভেম্বর, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:১৮

মুজিব রহমান বলেছেন: যখন সাহিত্য সৃষ্টি করি তখনতো সামান্য ঘটনাকেই বিস্তৃত করতে হয়। সেক্ষেত্রে তিল থেকে হাতিও হতে পারে। তবে যখন সেটা প্রবন্ধ বা নিবন্ধ হবে তখন থাকতে হয় তথ্য নির্ভর। সেক্ষেত্রে সর্বোচ্চ তিল থেকে তেল বানানো যায়।

৩| ২৫ শে নভেম্বর, ২০২০ রাত ১২:৩০

নুরুলইসলা০৬০৪ বলেছেন: লিখেছেন অনেক কিছু ,কিন্তু পেচাল ছাড়া কিছুই বুঝা গেল না।

২৫ শে নভেম্বর, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:১৯

মুজিব রহমান বলেছেন: ধন্যবাদ।
মনোযোগটা দিতে পারেন নি বলেই এমনটা মনে হয়েছে।

৪| ২৫ শে নভেম্বর, ২০২০ রাত ১২:৩৩

রাজীব নুর বলেছেন: আসলে কেউ মিলেমিশে থাকতে পারে না।
কথায় আছে, এক ঘরে দুই পীর থাকতে পারে না।

২৫ শে নভেম্বর, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:২০

মুজিব রহমান বলেছেন: ধন্যবাদ।
বিতর্ক বা দ্বন্দ্বকে নেতিবাচকভাবে উপস্থাপন করিনি। এটা তেমন মন্দ কিছু নয়। দ্বন্দ্ব ও বিতর্ক থেকেই লেখকরা যেমন নিজেরা সমৃদ্ধ হতে পারেন পাঠকও তাদের ভালমন্দ দিকগুলো জানতে পারেন।

৫| ২৫ শে নভেম্বর, ২০২০ রাত ১২:৪৯

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: লেখকদের মধ্যে দ্বন্দ্ব আর বিতর্ক টিকে থাকুক কিন্তু সেটা যেন ভদ্রতার সীমা না ছাড়ায়। যেসব বিতর্ক আর দ্বন্দ্বের উল্লেখ করেছেন বেশীর ভাগই ঈর্ষা আর হিংসার কারণে, নিরপেক্ষ মতামত বা পর্যবেক্ষণ নয়। মনিষীদের কাছ থেকে সাধারণ মানুষ এগুলি আশা করে না। তবে একটা জিনিস বোঝা গেছে যে লেখকদের মধ্যে এই ঈর্ষা আর হিংসা শুধু বাংলাদেশে নয় বিশ্বের সর্বত্রই আছে।

২৫ শে নভেম্বর, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:২২

মুজিব রহমান বলেছেন: ধন্যবাদ।
বিদেশের আরো কিছু তথ্যও ছিল। আকার বড় হয়ে যাচ্ছে দেখে তা আর প্রকাশ করিনি। বিতর্ক ও দ্বন্দ্ব মন্দ কিছু নয়। এথেকে লেখক ও পাঠক উপকৃত হতে পারেন।

৬| ২৫ শে নভেম্বর, ২০২০ ভোর ৪:০০

অনল চৌধুরী বলেছেন: শেষ পর্যন্ত যোগ্যরাই টিকে থাকবে।
কারো মুখের কথায় কেউ বড় বা ছোটো হবে না।

হুমায়ন আযাদকে উপন্যাস লেখক কেউই মনে করে না।
আর হুমায়ন আহমদের বইয়ের বেশীরভাগ পাঠক ছিলো স্কুল-কলেজের।

২৫ শে নভেম্বর, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:২৫

মুজিব রহমান বলেছেন: হুমায়ুন আজাদের উপন্যাসও আলোচিত হয়েছিল। সবকিছু ভেঙ্গে পড়ে আলোচিত হয়েছিল। পাকসার জমিন সাদবাদ তাকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিয়েছে। অর্থাৎ এ উপন্যাস লেখার কারণেই তিনি মৌলবাদীদের কোপানলে পড়েছিলেন। এরপরও হুমায়ুন আজাদের মূল পরিচয় তিনি ভাষাবিজ্ঞানী।

৭| ২৬ শে নভেম্বর, ২০২০ রাত ১:৪২

অনল চৌধুরী বলেছেন: পাকসার জমিন সাদবাদ উপন্যাস না হয়ে প্রবন্ধ হয়েছিলো।
তসলিমার মতো ধর্মকে হেয় কেরে আলোচিত হওয়ার জন্য লেখা হয়েছিলো।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.