নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

দেশের জন্য ভালবাসা

কলম সৈনিক হিসেবে নিজেকে গড়ে তোলা আর দেশের জন্য কিছু কাজ করা এই অঙ্গীকার নিয়েই পথ চলা....

মঞ্জুর হোসেন

নিজের বিবেক যা কিছু সত্য বলে তা অকপটে স্বীকার করা এবং লিখে অন্যকে জানানোই আমার অঙ্গীকার

মঞ্জুর হোসেন › বিস্তারিত পোস্টঃ

হায়রে গণতন্ত্র, হায়রে মানবতা, হায়রে বিবেক, হায়রে সরকার!!!

২০ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১:২৬





“আ’লীগ নেতা হত্যা, দু’ঘণ্টা বাস চলবে না টাঙ্গাইলে”, “প্রধান অতিথি না করায় বিদায় অনুষ্ঠানে ছাত্রলীগের ভাঙচুর”, “ইবি ও বাকৃবি ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্ত”, “ছাত্রলীগের গুলিতে শিশু মৃত্যুর জের অনির্দিষ্টকালের জন্য বাকৃবি বন্ধ”, “রাজধানীতে ধর্ষণের শিকার শিশুর অর্ধগলিত লাশ”, “কাশফিয়া’ ধর্ষণ: ডেটলাইন বড়টেক”, “সাভারে গার্মেন্টস কর্মীকে ধর্ষণ, আটক ১”, “মা গোলাগুলি অইতাছে, দাদীরে ডাকবার গেলাম”, “চট্ট্রগ্রাম নগরীতে তরুণীর আত্মহত্যা”।



বাংলাদেশের গণতন্ত্র চিৎকার দিয়ে কাঁদছে, আর বলছে আমাকে বাঁচাও-আমাকে বাঁচাও। বাংলাদেশের মানবাধিকার লজ্জিত হয়ে বলছে, আমার কথা আর তোমাদের দেশে উচ্চারিত করো না, বাংলাদেশের নারীরা বলছে, এ দেশে জন্মগ্রহন করে আজন্ম পাপ করেছি। বাংলাদেশের বীর মুক্তিযোদ্ধারা হুংকার দিয়ে বলছে, এই জন্য কি জীবন কে বাজি রেখে ৭১ সালে পাক হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছিলাম? বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ বলছে, সাংবাদিক নির্মল সেনের সেই ঐতিহাতিস উক্তি “স্বাভাবিক মৃত্যুর গ্যারান্টি চাই”।



আজ ১৯শে জানুয়ারী’১৩। আজকে সূর্য উদয়ের সাথে সাথে বিরোধী দল তাদের দলের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান, স্বাধীনতার ঘোষক, সফল রাষ্ট্রপতি শহীদ জিয়াউর রহমানের ৭৭তম জন্ম বার্ষিকী উপলক্ষে সারা দেশ ব্যাপী নানা কর্মসূচী পালন করেছে। বিনম্র শ্রদ্ধায় স্মরণ করেছে তাদের সংগঠনের শ্রেষ্ঠ্র মানুষটিকে। যিনি এ দেশের গণতন্ত্রকে উপহার দিয়েছিলেন, ফিরিয়ে দিয়েছিলেন সংবাদ পত্রের স্বাধীনতা, বহুদলীয় গণতন্ত্র এবং সকলকে কথা বলা ও রাজনীতি করার অধিকার।



সেই ভাবগাম্ভীর্যপূর্ন দিনটিতে বাংলাদেশের ইতিহাসের পাতায় উঠে আসলো বর্তমান সরকারের দুঃশাসনের কিছু কালিমা। ১০ বছরের শিশুর আত্ম চিৎকার এ দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রী না শুনলেও ১৬ কোটি জনতা প্রতি মুহুর্তে শুনতে পারছে আর উপলব্ধি করতে পারছে ঐ শিশুটি বেঁচে থাকার অধিকার নিয়েই ভূমিষ্ঠ হয়েছিলো যে দিন শিশুদের চলচিত্র নিয়ে ষষ্ঠ ফেষ্টিবল ডে পালিত হচ্ছে সেদিনই ছাত্রলীগের নিজেদের অভ্যন্তরীন কোন্দলে রক্তাক্ত বলি হলো যে শিশুটি বলি হওয়ার কয়েক মিনিট আগেও তার প্রিয় মাকে চিৎকার করে বলেছিলো “মাগো, ওখানে গুলি হচ্ছে, আমি আমার দাদীকে ডেকে নিয়ে আসি”। সন্তানের মুখে মা তার শেষ ডাক শুনবে তখনো বুঝতে পারে নি। ঐ অরক্ষিত বুলেট তার সন্তানের জন্য ঘাতকরা তুলে রেখেছিলো একথাও জানতে পারে নি। তা হলে, হয়তো মা’ও চিৎকার করে বলতো, না বাবা গুলির ভিতরে তোর যাওয়ার কোন দরকার নেই।



এগুলো এখন স্মৃতি, ঘটনা হলো বাকৃবিতে আবারো লাশের গন্ধ, চারিদিকে ছোপ ছোপ রক্ত। পবিত্র আর নিস্পাপ রক্তের ফোটা ফোটা দাগ গুলো এখনো বাকৃবিতে স্পষ্ট হয়ে আছে। অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বে ছাত্রলীগ ক্যাডারদের বন্দুকযুদ্ধে শিশু রাব্বির মৃত্যুর জের ধরে বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী হলে হামলা ও অগ্নিসংযোগ করার পর বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধের ঘোষণা দিতে বাধ্য হয়েছে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি) কর্তৃপক্ষ। ছাত্র লীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) ও ময়মনসিংহের বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি) ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করে।





উল্লেখ্য, অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের জের ধরে শনিবার সংঘর্ষ ও বন্দুকযুদ্ধে লিপ্ত হয় ছাত্রলীগের বিবদমান দুই গ্রুপ। সভাপতি শামসুদ্দিন আল আজাদ ও সাধারণ সম্পাদক রফিকুজ্জামান ইমনের অনুসারীদের মধ্যে এ সংঘর্ষ চলাকালে ছাত্রলীগ ক্যাডারদের গুলিতে নিহত হয় রাব্বী নামের স্থানীয় এক দরিদ্র শিশু।



শিশু রাব্বীর মৃত্যুর ঘটনায় উত্তেজিত এলাকাবাসী একজোট হয়ে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে ঈসা খাঁ ও শহীদ জামাল হোসেন হলের চারটি ব্লকে আগুন ধরিয়ে দেয়। এখন ক্যাম্পাসে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। ঠিক সেই মুহুর্তে আরেকটি দুঃসহ বেদনার কথা উঠে আসলো বিভিন্ন স্যাটেলাই চ্যানেলের মাধ্যমে।



রাজধানীর সবচেয়ে ব্যাস্ততম এলাকা, পল্টন মোড়স্থ ট্রপিক্যাল টাওয়ারের এক ফ্লাটের বাথরুমে দরিদ্র পরিবারের নাবালক শিশুর অর্ধ গলিত লাশ উদ্ধার করলো পুলিশ। প্রাথমিক পর্যায়ে পুলিশ জানালো সম্ভবত মেয়েটিকে ধর্ষন করে মেরে বাথরুমে রেখে দিয়েছে। শিশু মেয়েটির মায়ের বুকফাটা আর্তনাদে আকাশ বাতাশ ভারী হয়ে গেছে। থেমে থেমে কান্নার চিৎকার সীমারের হ্রদয়কেও যেন বেদনার স্পর্শ করেছে। মা মেয়ে বাসায় ভাত রান্না করে পল্টনের বিভিন্ন অফিসে অফিসে দিয়ে আসতে। মায়ের অবর্তমানে মাকে সহযোগীতা করার জন্য নাবালক শিশুটি হয়তো তার পিতৃতূল্য মানুষগুলোর কাছেই খাবার পৌছে দিতো। শিশুটি জানতো না সেই চেনা জানা মানুষদের মধ্যে একটি নিষ্ঠুর, পাষন্ড, মনুষত্বহীন, পশুচরিত্রের অধিকারী অমানুষ ছিলো। তাহলে হয়তো সে তার মাকে বলতো বা মা তার মেয়েকে বলতো- মাগো তোর ভাত নিয়ে যাওয়ার কাজ নেই। এখন আর কেউ কাউকে কিছু বলবে না। মায়ের বুক খালি করে চিরদিনের মত বিদায় নিয়েছে নাবালক শিশু মেয়েটি।



আমি ধর্ষকের দোষ দেবো না, তার আগে দোষ দেবো যারা ধর্ষনকারীদের মামলা রাজনৈতিক বিবেচনায় প্রত্যাহার করে। ধর্ষনের সেঞ্চুরিয়ানকে মর্যাদার সাথে পুর্নবাসন করে। আজ তাদের কারোনেই এই ব্যাস্ততম নগরীতে এই জঘন্যতম অমানুষিক নৃশংস কাজটি করার ধৃষ্টতা দেখিয়েছে। হয়তো যখন নরপিশাচ এই অনৈতিক কাজটি করছিলো, ঠিক সেই মুহুর্তে নারীবাদীরা ধর্ষকদের বিচারের দাবীতে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মাইক বেধে চিৎকার করে বলছিলো ধর্ষকের ফাঁসি চাই, ফাঁসি চাই, টাঙ্গাইলে কলেজ ছাত্রী ধর্ষিত হলো কেন, রাষ্টের কাছে জবাব চাই। আর সেই আওয়াজ ধর্ষকের কর্নকুহরে প্রবেশ করা স্বত্তেও নির্বিঘ্নে অপকর্মটি করতে সাহস পেয়েছিলো। হয়তো এ্ কারনেই এ দেশে ধষির্ত হলে, সে ও তার পরিবার সমাজে বঞ্চিত, লাঞ্চিত, নির্যাতিত হয়। কিন্তু ধর্ষক বার বার পুরস্কৃত হয়।



এদিকে, সরকার দলীয় একজন সংসদ সদস্যের এপিএস’র ধর্ষণের শিকার কাপাশিয়ার এক গৃহকর্মী কিশোরী। স্বামীর অপকর্মে ক্ষিপ্ত স্ত্রীও অমানবিক নির্যাতন চালিয়েছে মেয়েটিরই ওপর। পরে মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে ফেলে রাখা হয় কাপাসিয়ায় ওদের বাড়ির কাছাকাছি একটি জঙ্গলের ভেতর। কোন ঘটনার পরম্পরায় হত্যভাগ্য মেয়েটির জীবনে এই অমানিষা?



কদিন আগেই কুষ্টিয়ার কুমার খালীতে ঢাকার ৫৬নং ওয়ার্ডের সাধারণ সশ্পাদক রফিকুল ইসলাম মজুমদারকে নৃশংসভাবে হত্যা করে পুলিশী হাতকড়া পরা অবস্থায় ফেলে রেখেছিলো সেই ব্যাপারে সে দিন যদি সরকার খুনীদের খুজে বের করতো এবং তাদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির ব্যাবস্থা করতো তা হলে হয়তো আজ টাঙ্গাইলে সরকার দলীয় সাবেক সংসদ সদস্য জেলা আওয়ামী লীগ নেতা, মুক্তিযোদ্ধা এবং বাস ও মিনিবাস মালিক সমিতির উপদেষ্টা ফারুক আহমেদকে (৬০) এই নির্মম হত্যাকান্ডের ঘাতকরা তাকে হত্যা করার পরিকল্পনারও সাহস করতো না। অথচ এলাকার একজন জনপ্রিয় জনপ্রতিনিধি যিনি যুগ যুগ জনগনের পাশে থেকে, কাছে থেকে কাজ করেছে আজ তারো হত্যার খবর জাতিকে শুনতে হলো।



স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রাতে টাঙ্গাইল পৌরসভার কলেজ পাড়া পানির ট্যাংকির পেছনে আওয়ামী লীগ নেতা ফারুক আহমেদকে পড়ে থাকতে দেখে পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শামীম চিৎকার দেন। আশপাশের লোকজন ছুটে এসে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে দায়িত্বরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ব্যাপারে নিহতের স্ত্রী নাহার আহমেদ বলেন, “আমার স্বামীকে আওয়ামী লীগের লোকজনই হত্যা করেছে। আমি তাদের বিচার চাই।”



সবার একই আর্তনাদ, বিচার চাই, বিচার চাই, গণতন্ত্র চাই, স্বাভাবিক মৃত্যুর গ্যারান্টি চাই। এই আর্তনাদের বানী কে শুনবে? এদেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী এই বিষয়ে চোখে দেখেন না, কানেও শুনেন না। তিনি সীমান্তে হত্যার বিষয়ে নির্বিকারে বলেন, যেসব বাংলাদেশীরা সীমান্তে হত্যার শিকার হয়েছে তদন্ত করে খুজে বের করতে হবে হত্যার সময়ে তারা কোন সীমান্তে ছিলো? ধিক্কার জানানোরও ভাষা নেই। অভিযোগ করার জায়গা নেই। শিক্ষকদের মরিচগুড়া স্প্রে করে যে দেশে পুলিশ নৃশংসভাবে হত্যা করে, যে দেশে ফেলানীর লাশ কাটাতারে ঝোলে, উলঙ্গ হাবিব নির্যাতিত হওয়ার পরেও প্রতিবাদ হয়না, সে দেশে ধর্ষন, খুন, গুম প্রতিদিন বাড়বেই। এখনই সময় জেগে উঠতে হবে সমাজকে, জেগে উঠতে হবে বিশ্ব বিবেক’কে, জাগিয়ে তুলতে হবে নিজের বিবেক।



অন্যায় যেই করুক, আর যেখানেই করুক, সে যত শক্তিশালী হোক না কেন, তার বিরুদ্ধে আমাদের রাজপথ বেছে নিতে হবে। আন্দোলনের অগ্নিমশাল জ্বালিয়ে দিতে হবে। সেই জলন্ত আগুনে জনগনের প্রতিবাদের পেট্রোল ঢেলে দিতে হবে। তখন যে অভ্যুথ্যান ঘটবে সেই অভ্যুথ্যানে যদি এই দুঃশাসনের পতন হয় সেই প্রত্যাশায় জেগে উঠার শুভ কামনায় নতুন সূর্যউদেয়র অপেক্ষা সবার।

মন্তব্য ৭ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৭) মন্তব্য লিখুন

১| ২০ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১:৩১

ইবনে 'উমার বলেছেন: ভালো লিখেছেন। ভিডিওটা পাবেন এখানে

নিষ্পাপ শিশুটিকে এভাবে ওরা মেরে ফেললো, ভিডিও দেখে কান্না পাচ্ছে

২| ২০ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১:৩৩

বাকরুদ্ধ আমি বলেছেন: বিচার চাই চাই চাই

৩| ২০ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১:৩৭

রিওমারে বলেছেন: বাংলাদেশের মিলিটারীরা কি চোখে কালো চশমা দিয়া থাকে।।দেশে এত অত্যাচার জুলুম চলতাছে তাদের কি কিছু করার নেই?? বন্দুকের নল যদি সকল ক্ষমতার উৎস হয়ে থাকে তাহলে সেই নল গুলো চুপ চাপ কেন??

৪| ২০ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১:৪০

আহম্মেদ রানা বলেছেন: হুম সেটাই চাই.

৫| ২০ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১:৪৯

shapnobilash_cu বলেছেন: বাকশাল বাকশাল।

৬| ২০ শে জানুয়ারি, ২০১৩ ভোর ৫:৪৮

বিডি ফুল বলেছেন: কুত্তার দল

৭| ২০ শে জানুয়ারি, ২০১৩ সকাল ১০:৪৩

আহসান২০২০ বলেছেন: দেশে একটা গনঅভ্যুথ্থান দরকার।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.