নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নিজেকে বোঝার আগেই মনের মধ্যে একটা চেতনা তাড়া করে ফিরতো। এই ঘুণে ধরা সমাজ ব্যবস্থাকে বদলাতে হবে, একটা বিপ্লব দরকার। কিন্তু কিভাবে?বিপ্লবের হাতিয়ার কি? অনেক ভেবেছি। একদিন মনের মধ্যে উঁকি দিয়ে উঠলো একটি শব্দ, বিপ্লবের হাতিয়ার \'কলম\'।

মুঃ গোলাম মোর্শেদ (উজ্জ্বল)

পৃথিবীতে ঘুরতে আসা কিছু দিনের পর্যটক

মুঃ গোলাম মোর্শেদ (উজ্জ্বল) › বিস্তারিত পোস্টঃ

সাতু দু ব্রুই ও দোভিল সুমদ্র সৈকতের একদিন (পর্ব-১)

০৪ ঠা অক্টোবর, ২০১৮ রাত ২:০২

মিশেল গরমের ছুটিতে তার মায়ের সঙ্গে বাংলাদেশে।টিভি রিমোটের কন্ট্রোল পুরপুরিই আমার হাতে। কাজ শেষ করে বাসায় এসে সিনেমা দেখা, বারান্দায় গাছের টবগুলোতে পানি দেয়া,তিনদিনে একদিন রান্না করা, ঘর গোছানোর কাজ এখন সপ্তাহে একদিন করলেই চলে, দিন শেষে নিস্তব্ধ নীরবতা নেমে আসা ফ্ল্যাটে নিজের মতো করে একটু ভাবনার সুযোগ, এরপর পরবর্তী দিনের শক্তি সঞ্চারের জন্য ঘুমের প্রস্তুতি।এভাবেই কেটে যাচ্ছিলো সাময়িক একাকী জীবন।
গত ৯ আগস্ট থেকে শুরু হলো নয় দিনের ছোট্ট গরমের ছুটি। ভাবনায় ছিল কয়েক দিনের জন্য সবুজের চাঁদরে মোড়া কোন পাহাড়ের নির্জন কোনে সময় কাটাবো। কিন্তু দীর্ঘ দিনের কাজের ক্লান্তির আলস্য এমনভাবে শরীর মনকে চেপে বসল যে ছুটির দিনগুলোর অধিকাংশই হেলায় ঘুরেফিরে অপরিকল্পিত ভাবে কেটে যাচ্ছিল।সিদ্ধান্ত নিলাম একদিনের জন্য কোথাও থেকে ঘুরে আসবো।ইন্টারনেট ঘাটাঘাটি করে আলীওনস ভয়াসের(Allionce Voyage) একদিনের একটি ভ্রমনের রেজিস্ট্রেশন করলাম, স্থান দোভিল।এটি নরমাণ্ডী রেজিওর কালভাদোজ দোপার্টতোমোর একটি সমুদ্র উপকূলীয় শহর।সমুদ্র সৈকতের জন্য মূলত এই শহর অধিক পরিচিত।প্যারিস থেকে বাসে মাত্র তিন ঘণ্টার যাত্রা পথ।আজ থেকে পাঁচ বছর পূর্বে প্যারিসের বাংলাদেশের একটি আঞ্চলিক সমিতির আনন্দ ভ্রমণের সঙ্গী হয়ে ইতোপূর্বে এই শহরের সৈকতের নোনা জলে আমার শরীর ভেজানোর সুযোগ হয়েছে।কিন্তু এবারের ভ্রমণটা একটু ভিন্ন রকম, ভ্রমণ এজেন্সি দিনের প্রথম পর্বে আমাদের নিয়ে যাবে কানাপভীল নামে একটি গ্রামের মদ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের ফ্যাক্টরি পরিদর্শনে,এবং আমি একমাত্র এই ভ্রমণে সঙ্গীহীন পান্থ।

১৬ আগস্ট প্যারিসের দফের রসু (Denfert Rochereau) থেকে আমাদের ভ্রমণ বাস যাত্রা শুরু করলো, ভ্রমণ সঙ্গীদের অধিকাংশই জীবনের পাতাঝরা শীতকালে অবস্থান করছে, আমিই একমাত্র বসন্তের সায়াহ্নে অবস্থানকারী মানুষ।আমাদের ভ্রমন নির্দেশনাকারীও সত্তরোর্ধ্ব প্রাণোচ্ছল মহিলা।শহর পেরিয়ে কিছুক্ষণের মধ্যে ভ্রমণ বাস প্রবেশ করলো ধু ধু বিস্তীর্ণ মাঠের মধ্য দিয়ে বয়ে চলা মহাসড়কে।আমি সব সময় প্যারিসের বাইরে গেলে চলার আনন্দটা দারুণভাবে উপভোগ করি। কারণ ফ্রান্সের কৃষি ভূমি এবং গ্রাম ছবির মতই সুন্দর।তিন ঘণ্টার যাত্রা অতিক্রম করে আমরা প্রবেশ করলাম কানাপভীল(Canapville) গ্রামে।পাহাড়, সমভূমি এবং সবুজ অরণ্যে বেষ্টিত অঞ্চল।এই সুন্দর গ্রামের মধ্যে অবস্থিত সাতু দু ব্রুই (Chateau du bruil)।এটি এক সময়ের রাজবাড়ী হলেও এখন মূলত একটি মদ উৎপাদন কারখানা।কিছু ক্ষণের মধ্যেই আমরাদের ভ্রমণ বাস প্রবেশ করলো সাতুর মধ্যে।বৃক্ষ আর ফুলে শোভিত ছায়া শীতল সাজানো গোছানো একটি বাগানবাড়ী।প্রথম দেখাতে বোঝার উপায় নেই এটি একটি মদ উৎপাদনকারী কারখানা।বাস থেকে নেমেই সবাই প্রবেশ করল সাতু দু ব্রুই উৎপাদিত মদের প্রদর্শনী কেন্দ্রে,এখানে নানা আকৃতির বোতলে মোড়কীকরন করে সাজিয়ে রাখা হয়েছে তাদের পণ্য সামগ্রী।বিক্রয় কর্মীরা দর্শনার্থীদের জন্য উৎপাদিত ওয়াইনের স্বাদ গ্রহণের জন্য আপ্যায়নের ব্যবস্থা রেখেছেন। দর্শনার্থীদের অনেকেই প্রদর্শনী কেন্দ্র ঘুরে পছন্দের স্বাদের ওয়াইন কিনলেন। এই পণ্যের স্বাদের সঙ্গে এখন পর্যন্ত যেহেতু আমি পরিচত নই তাই নতুন করে স্বাদ গ্রহণের ইচ্ছে হলো না।আমি একাই চার পাশ ঘুরে ছবি তুলতে নিজেকে ব্যস্ত করলাম। ইতোমধ্যে আমাদের ভ্রমণ নির্দেশনাকারীর ডাক পড়লো।সকল ভ্রমণারথী একত্রিত হওয়ার পর আমাদের ভ্রমণ দলকে সাতুর একজন কর্মকর্তা নিয়ে গেলেন মদ উৎপাদনের প্রক্রিয়াকরণ একটি ইউনিতে। এখানে আমাদের দেখানো হল আপেল থেকে রস তৈরির পর কিভাবে জ্বালানোর মাধ্যমে মদে রূপান্তর করা হয়।ভালোভাবে বোঝার জন্য কর্মকর্তা একটি ভিডিও প্রজেকশনের মাধ্যমে পুরো উৎপাদন প্রক্রিয়া আমাদের সামনে উপস্থাপন করলেন।এরপর নিয়ে গেলেন যেখানে আপেল থেকে উৎপাদিত ওয়াইন সংরক্ষণ করা হয়।সংরক্ষণাগারটির বাহিরের চেহারা অনেকটাই আমাদের দেশের কৃষকদের ধান গম সংরক্ষণের গুদাম ঘরের মতোই। ভেতরের দৃশ্য অনেকটাই আমাদের দেশের স্থানীয় ভোজ্য তৈল উৎপাদনকারী মিলের মতো।কাঠের নির্মিত সংরক্ষণাগারে ওয়াইনে ভরপুর সুবিশাল কাঠের গোলাকৃতির কনটেইনার দুই সারিতে সাজিয়ে রাখা হয়েছে।প্রতিটি কনটেইনারে সংরক্ষণ সংক্রান্ত লেবেল লাগানো।আমাদের সবাই খুব আগ্রহ নিয়েই মদের এই সংরক্ষণাগারটি ঘুরে দেখতে লাগলেন।এখানে সবচেয়ে আকর্ষণীয় যে বিষয়টি ছিল, তাহলো আপেল গাছে ফুল ফোঁটা থেকে শুরু করে বাগান থেকে আপেল সংগ্রহ এবং সংগৃহীত আপেলের রস মদে রূপান্তর করে মজুদ ও বাজারজাতকরণের প্রতিটি স্তরের একটি ভিডিও চিত্র কয়েকটি কনটেইনার উপর প্রোজেক্টরের মাধ্যমে ব্যতিক্রমধর্মী ভাবে উপস্থাপন।





















সাতু দু ব্রুই ও দোভিল সুমদ্র সৈকতের একদিন (শেষ পর্ব) পড়তে ক্লিক করুণ

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +৫/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ০৪ ঠা অক্টোবর, ২০১৮ রাত ৩:৫৯

স্বপ্নের শঙ্খচিল বলেছেন: লেখায় আবিস্কারের নেশা
তবে আমাদের পাঠক উপোযগী লেখা হলে
সবাই উপকৃত হবো ।

০৪ ঠা অক্টোবর, ২০১৮ বিকাল ৪:৪৮

মুঃ গোলাম মোর্শেদ (উজ্জ্বল) বলেছেন: ধন্যবাদ প্রিয় স্বপ্নের শঙ্খচিল ...

২| ০৪ ঠা অক্টোবর, ২০১৮ সকাল ৯:২৮

রাজীব নুর বলেছেন: খুব সুন্দর।

০৪ ঠা অক্টোবর, ২০১৮ বিকাল ৪:৪৯

মুঃ গোলাম মোর্শেদ (উজ্জ্বল) বলেছেন: ধন্যবাদ প্রিয় ব্লগার রাজীব নুর ......।

৩| ০৬ ই অক্টোবর, ২০১৮ রাত ৯:৩৮

মনিরা সুলতানা বলেছেন: সুন্দর বর্ণনা দিয়েছেন, ভালোলেগেছে !
ফুলের ছবি'টা দারুণ।

০৭ ই অক্টোবর, ২০১৮ রাত ১:৩৫

মুঃ গোলাম মোর্শেদ (উজ্জ্বল) বলেছেন: ধন্যবাদ প্রিয় ব্লগার মনিরা সুলতানা...।।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.