নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ভবের ঘড়ে থাকি আমি ভবেই বসবাস

শুন্য হয়ে ঘুরিফিরি থাকি পরবাস

মোতিমহল

ভবের ঘড়ে থাকি আমি ভবেই বসবাস শুন্য হয়ে ঘুরিফিরি থাকি পরবাস

মোতিমহল › বিস্তারিত পোস্টঃ

মৃত্যু দূতের সাথে কথোপকথন

১৫ ই জুলাই, ২০১৪ রাত ২:৩৮

এক মুমূর্ষু ব্যক্তি মৃত্যুর আগে মৃত্যু দূতের আগমন টের পেলেন। হাসপাতালের বিছানায় শোয়া অবস্থায় তিনি দেখলেন মৃত্যুদূত ধীরে ধীরে তার দিকে এগিয়ে আসছেন। তার হাতে একখানা বড় সুইটকেস ।



মৃত্যুদূতঃ আপনার যাবার সময় হয়েছে। আমি আপনাকে নিয়ে যেতে এসেছি।



ব্যক্তিঃ একটু তারাতাড়ি হয়ে গেল না? আর কিছুদিন কি সময় দেয়া যায় না? আমার তো অনেক কিছুই করার পরিকল্পনা ছিল। জীবনের অনেক কিছুইতো এখনও বাকি আছে।

মৃত্যুদূতঃ আমি দুঃখিত। আমি শুধু স্রষ্টার আদেশ পালন করতেই এসেছি। যখন যার সময় হয় আমি স্রষ্টার নির্দেশে তখন তাকেই নিয়ে যেতে আসি। এক্ষেত্রে আমার করার কিছুই নেই।



ব্যক্তিঃ আপনার সুইটকেসের ভিতর কি আছে জানতে পারি কি?



মৃত্যুদূতঃ এর ভেতর আপনার সারা জীবনের সঞ্চিত জিনিস-পত্তর।



ব্যক্তিঃ আমার সঞ্চিত জিনিস-পত্তর? তার মানে আমার কাজ, অর্থ-বিত্ত, কাপর চোপড় ইত্যাদি?



মৃত্যুদূতঃ না। সেইগুলো তো পার্থিব সম্পদ এবং তা সব সময়ই পৃথিবীর অধিকার ভুক্ত ।



ব্যক্তিঃ তাহলে আপনার সুইটকেসে কি আমার জীবনের সমস্ত স্মৃতি ভরে নিয়ে এসেছেন?



মৃত্যুদূতঃ ভুল ধারনা করলেন। সেইগুলো তো শুধুমাত্র একটা বিশেষ সময়ের অধিকার ভুক্ত।



ব্যক্তিঃ তাহলে কি ওখানে আমার মেধা, বুদ্ধি, আবেগ-বিবেক সঞ্চিত?



মৃত্যুদূতঃ না। সেইগুলো তো সব সময় আপনার পরিবেশ ও পরিস্থিতির অধিকার ভুক্ত। যে পরিবেশে জীবন ধারন করেছেন।



ব্যক্তিঃ তাহলে কি ওখানে আমার পরিবার, আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব?



মৃত্যুদূতঃ দুঃখিত। আবারও ভুল ধারনা করলেন। তারা তো শুধুমাত্র পথের সাথী। যেই পথ ধরে এতোগুলো বছর হেঁটে চলেছেন।



ব্যক্তিঃ তাহলে কি ওখানে আমার স্ত্রী-সন্তান?



মৃত্যুদূতঃ না। তারা তো আপনার হৃদয় ও মনের অধিকারে থাকে।



ব্যক্তিঃ তাহলে আপনি নিশ্চয়ই আমার দেহ কে নিয়ে এসেছেন।



মৃত্যুদূতঃ না, না। দেহ তো মাটি আর ধুলো-বালির অধিকারে থাকে।



ব্যক্তিঃ আমি নিশ্চিত। আপনি আমার আত্নাকে সুইটকেসে নিয়ে এসেছেন।



মৃত্যুদূতঃ আমি দুঃখিত। আবারও ভুল ধারনা করলেন। মানুষের আত্না থাকে স্রষ্টার অধিকারে।



অতঃপর মৃত্যুদূত তার হাতের সুইটকেসটি মুমূর্ষু ব্যক্তির বিছানার কাছে নিয়ে খুলে দিলেন। ভয়ার্ত ও অশ্রুসিক্ত নয়নে মৃত্যুপথ যাত্রী ব্যক্তি সুইটকেসটির ভেতর আপাদমস্তক পর্যবেক্ষণ করলেন। কিন্তু ওখানে শুন্যতা ছাড়া কিছুই দেখতে পেলেন না।



ব্যক্তিঃ আপনি আমার মৃত্যু কালে শুধু একটা খালি সুইটকেস নিয়ে এসেছেন। সারা জীবনে আমার কি কিছুই অর্জন ছিল না?



মৃত্যুদূতঃ ঠিক তাই। আপনি পৃথিবীতে কখনই কোন কিছুর প্রতি অধিকার নিতে পারেন নি কিংবা অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে পারেননি।



ব্যক্তিঃ তাহলে এই পৃথিবীর জীবনে আমার বলতে আসলে কি ছিল?



মৃত্যুদূতঃ পৃথিবীতে বেঁচে থাকার প্রতিটি মুহূর্ত ছিল আপনার জন্য বরাদ্দকৃত। আশা করি সেই প্রতিটি মুহূর্তের ব্যাবহার ছিল অর্থবহ। এবার আমার সাথে চলুন।



উপসংহার:



জীবন হচ্ছে অসংখ্য মুহূর্তের সংঘবদ্ধ দল। ওরা দ্রুত আসে আবার দ্রুত চলে যায়। কখনও ওরা জীবনের জন্য নিয়ে আসে হাসি-আনন্দ, কখনওবা আবার দুঃক্ষ-কান্না। এই হাসি-কান্নার মাঝখানের পথটির নাম হচ্ছে জীবন। জীবন খুবই ক্ষণস্থায়ী। প্রতিদিনের আলো-বাতাসে আমাদের বেচে থাকার মুহূর্তগুলো হয়ে উঠুক অর্থবহ। নিজের জন্য, সবার জন্য।



--জামাল সৈয়দ

মিনেসোটা, যুক্তরাষ্ট্র

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১৫ ই জুলাই, ২০১৪ সকাল ৯:৪৫

নিজাম বলেছেন: মরণের সময় শুধু ঈমান আর আমল মানুষের সাথে যাবে।

২| ১৫ ই জুলাই, ২০১৪ সকাল ১১:১৪

সুমন কর বলেছেন: হাসি-কান্নার মাঝখানের পথটির নাম হচ্ছে জীবন। জীবন খুবই ক্ষণস্থায়ী। প্রতিদিনের আলো-বাতাসে আমাদের বেচে থাকার মুহূর্তগুলো হয়ে উঠুক অর্থবহ। নিজের জন্য, সবার জন্য।

৩| ১৫ ই জুলাই, ২০১৪ দুপুর ১২:৩৩

আমি ব্লগার হইছি! বলেছেন: খুব সুন্দর!

৪| ১৫ ই জুলাই, ২০১৪ রাত ৮:৫৯

মোতিমহল বলেছেন: পড়া ও মন্তব্যের জন্য সবাইকে ধন্যবাদ

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.