নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি বিশ্বাসী, কিন্তু মনের দরজা খুলে রাখাতে বিশ্বাস করি। জীবনে সবথেকে বড় অনুচিত কাজ হল মনের দরজা বন্ধ রাখা। আমি যা জানি সেটাই সত্য, বাকি সব মিথ্যা…এটাই অজ্ঞানতার জন্ম দেয়।

মুক্তমনা ব্লগার

“Ask yourself often, why do I have to think like other people think?”

মুক্তমনা ব্লগার › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমাদের কোন অপরাধ নেই ?

১২ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ৩:১৪

অভিজিত রায়, ওয়াশিকর রহমান বাবু, অনন্তের হত্যাকান্ড নিঃসন্দেহে একটা বৃহত্তর পরিকল্পনার অংশ। কিন্ত মাথাটা আওয়ামী লীগের না বাংলাদেশে আই সি সিস সিম্প্যাথাইজারদের সেটা বুঝতে অসুবিধা হচ্ছে । অভিজিতের মৃত্যুর আগেও হাসিনা কোনঠাসা ছিলেন গণতন্ত্রের প্রশ্নে। ইউ এন থেকে ইউরোপের নানান দেশ তাকে চাপ দিচ্ছিল খালেদার সাথে বসতে। এখন সেই চাপ উধাও। বাংলাদেশে ব্লগার হত্যা এমন ভাবে বিদেশে প্রচারিত, এখন হাসিনার ওপর চাপ জঙ্গী দমনের জন্য। বিদেশে কেও আর বাংলাদেশের গণতন্ত্র নিয়ে চিহ্নিত না । এটা হাসিনার সামনে বিরাট সুযোগ। তিনি আগামী মাসগুলিতে চোর পুলিশ খেলিয়ে বিদেশীদের চোখে “আমি নইলে চলিবে না ” কনসেশন আদায় করে নিতে পারবেন। ব্লগার হত্যার প্রেক্ষাপটে বিদেশী রাষ্ট্রদূতরা আর বাংলাদেশে গণতন্ত্র নিয়ে হাসিনার ওপর চাপ সৃষ্টি করছেন না ।

আসলে এই সংসদীয় বুর্জোয়া রাজনীতিতে সব পার্টিই ভোটপন্থী। এরা নানান ভোটিং ব্লককে তুষ্ট করার চেষ্টা করে। কারন ক্ষমতা পাওয়া মানেই কোটি কোটি টাকার বরাত পাওয়া। কোন আদর্শের যদি ভোটিং ব্লক থাকে তবেই এরা সেই আদর্শের কথা শুনবে। বাংলাদেশের অধিকাংশ মুসলমান যেখানে সপ্তম শতাব্দির আরবে বাস করতে চান, সেখানে ক্ষমতাসীন পার্টি কি করে প্রগতিশীল চিন্তাধারাতে চলবে ?

মুশকিল ! কি যে হচ্ছে কিছুই বোঝা যাচ্ছে না । শুনছি বাংলাদেশের মিলিটারীর মধ্যে একটা অংশ নাকি জঙ্গীদের সাথে-তারা দক্ষিন বাংলাদেশে আগে আই সিসের ফ্ল্যাগ ওড়াবে। বাংলাদেশের মিলিটারী এবং প্যারামিলিটারির একটা অংশ নাকি জঙ্গিদের সাথে যোগ দেবে। গৃহযুদ্ধ আসন্ন ? এগুলো কন্সিপিরেসি থিওরী? অভিজিত-বাবু-অনন্তের মৃত্যুর পরে কোনটা যে ষড়যন্ত্র তত্ত্ব, আর কোনটা যে বিশ্বাসযোগ্য-কিছুই বুঝছি না । কারন এদের হত্যাকারীরা ধরা পড়ছে না । ফলে আওয়ামী লীগ-জঙ্গী আঁতাতের প্রশ্ন উঠছে। কারন স্বাভাবিক বুদ্ধিতে সেখানেই লাভের গুড়ের গন্ধ পাচ্ছে সবাই।

পশ্চিম বঙ্গে ইসলামিক জঙ্গীদের দুটো উইং কাজ করছে। একটা হচ্ছে সরাসরি বোমা বন্দুক একশন কমিটি। এরা আবার স্থানীয় রাজনৈতিক পার্টির পেয়ারের লোক। কারন এদের বাহুবলেই ভোট হয় আজকাল। অন্যটা হচ্ছে এদের শিক্ষিত ইন্টেলেকচুয়াল উইং-তারা মুসলিমদের বিরুদ্ধে বঞ্ছনার প্রশ্ন গুলি তুলে ( যে বঞ্চনাগুলিও বাস্তব রূঢ় সত্য ), একটা বিরাট অংশের মুসলিমকে খেপিয়ে তুলছে। ওপরে দেখাচ্ছে জামাতের নামে মুসলমানদের অধিকার নিয়ে এরা কাজ করছে। এরাই হাসিনার বিরুদ্ধে কোলকাতায় সমাবেশ ডাকছে। বাংলাদেশের দক্ষিন বঙ্গে আই সিসের সমর্থকরা স্বাধীন রাষ্ট্র গঠনে সমর্থ হলে, পশ্চিম বঙ্গে চব্বিশ পরগণা, নদীয়া এবং মুর্শিদাবাদে কাষ্মীরের মতন পরিস্থিতি তৈরী হবে। বদ্বীপের এই সব জেলাগুলিতে মুসলমানদের সংখ্যা বেশী-কিন্ত অর্থনৈতিক ও অন্যান্য ক্ষমতা হিন্দুদের হাতে। ফলে এই সব জেলাগুলিতে কাষ্মীরের স্টাইলে মুজাদিহিন তৈরী হবে। কাশ্মীরি পন্ডিতদের মতন এইসব জেলাগুলি থেকে হিন্দু বিতরন আর কয়েক দশকের অপেক্ষা। ছোটখাট যেসব দাঙ্গা হচ্ছে-সেগুলো বড় ভুমিকম্পের আগের মৃদু কম্পন।

মূল সমস্যাটা অবশ্যই সেই ধনের বৈষম্য এবং সমাজের প্রান্তিক শ্রেনী- পিলসূজ-সেই দরিদ্র নিপীড়িত জনগণের জন্য গণতন্ত্রের ব্যর্থতা । যেখানে এই শ্রেনীটাকে ভাঙিয়ে বাকি সবাই লুঠছে। যন্ত্র সভ্যতার অগ্রগতির সাথে সাথে এরা আরো প্রান্তিক। এদের কায়িক শ্রমের প্রয়োজন ও আস্তে আস্তে বিলুপ্ত হতে চলেছে। আমি দেখেছি, ১৯৮০ সাল থেকে একজন শিক্ষকের মাইনে বেড়েছে প্রায় ২৫ গুন, ইনফ্লেশন এডজাস্ট করলে সেটা ছগুনের কাছাকাছি। সমসায়মিক সময়ে একজন কৃষি শ্রমিকের লেবার চার্জ বেড়েছে মোটে ছগুন, ইনফ্লেশন এডজাস্ট করলে সেই বৃদ্ধি কিছুই না । আর যারা ফ্যাক্টরি মালিক , তাদের ধনের বৃদ্ধি সম্ভবত কয়েকশোগুন, হাজারগুন ও হতে পারে। এই বঞ্চনাকে ধর্মের নামে চালিয়ে দিয়ে এই বঞ্চিত শ্রেনীকে ধর্মের বুলডগ বানানো খুব সহজ।

ধর্ম এবং জঙ্গীবাদকে আমরা যত ইচ্ছা গালাগাল দিতে পারি, কিন্ত, আমাদের নিজেদের দোষটাও দেখা উচিত। বাস্তবে, আমরা সবাই স্বার্থপর -যে যার মতন নিজেদেরটা গুছিয়েছি । এই হত দরিদ্র শ্রেনীটি কিভাবে আছে, কিভাবে দিনানিপাত করে, তার কোন খোঁজ আমরা কোন দিন নিই নি। আজ তারা তখন একটি বিশেষ ধর্মের ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে জঙ্গী হচ্ছে, আমরা নিরাপদ দূরত্ব থেকে ইসলামিক জঙ্গীপনা বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে শুধু লিখে চলেছি। যে মানুষের শরীরে পুষ্টি নেই, তার শরীরে ভাইরাসের আক্রমন সবার আগে হবে। এই জন্যেই জন্ম হয়েছে আই সিসের। সিরিয়াতে দীর্ঘদিন সুন্নীরা বঞ্চিত হয়েছে শিয়াদের ছড়ি ঘোরানো অব্যাহত থাকায়। আসল সমস্যা বস্তুবাদি বঞ্চনার সমস্যা। এবং অপরাধী আমরা নিজেরাও—-রবীন্দ্রনাথের ভাষায়-

সঙ্গী হয়ে আছো যেথায় সঙ্গীহীনের ঘরে
সেথায় আমার হৃদয় নামে যে
সবার পিছে, সবার নীচে
সব-হারাদের মাঝে।

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ১২ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ৩:৩৪

মহা সমন্বয় বলেছেন: ধর্ম এবং জঙ্গীবাদকে আমরা যত ইচ্ছা গালাগাল দিতে পারি, কিন্ত, আমাদের নিজেদের দোষটাও দেখা উচিত। বাস্তবে, আমরা সবাই স্বার্থপর -যে যার মতন নিজেদেরটা গুছিয়েছি । এই হত দরিদ্র শ্রেনীটি কিভাবে আছে, কিভাবে দিনানিপাত করে, তার কোন খোঁজ আমরা কোন দিন নিই নি। আজ তারা তখন একটি বিশেষ ধর্মের ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে জঙ্গী হচ্ছে, আমরা নিরাপদ দূরত্ব থেকে ইসলামিক জঙ্গীপনা বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে শুধু লিখে চলেছি। যে মানুষের শরীরে পুষ্টি নেই, তার শরীরে ভাইরাসের আক্রমন সবার আগে হবে। এই জন্যেই জন্ম হয়েছে আই সিসের। সিরিয়াতে দীর্ঘদিন সুন্নীরা বঞ্চিত হয়েছে শিয়াদের ছড়ি ঘোরানো অব্যাহত থাকায়। আসল সমস্যা বস্তুবাদি বঞ্চনার সমস্যা। এবং অপরাধী আমরা নিজেরাও।
এই কথাগুলো খুবই সুন্দর বলেছেন।



১২ ই মার্চ, ২০১৬ সকাল ৯:০৯

মুক্তমনা ব্লগার বলেছেন: চলুন আমাদের হারিয়ে যাওয়া সহযোদ্ধাদের স্বপ্ন পূরণের প্রচেষ্টাকে অব্যহত রাখি।

২| ১২ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ৩:৫২

সাগর মাঝি বলেছেন: ব্লগার হত্যার পিছনে আর কেউ থাকুক না থাকুক ইসলামী জঙ্গি এর পিছনে কাজ করতেছে এটা নিশ্চিন্তে বুঝে নেওয়া যায়।

১২ ই মার্চ, ২০১৬ সকাল ৯:১১

মুক্তমনা ব্লগার বলেছেন: সব আমরা আমজনতা বুঝি কিন্তু সরকার বুঝেও বুঝে নাহ বড্ড দুখের বিষয়রে ভাই।

৩| ১২ ই মার্চ, ২০১৬ দুপুর ১:৫৩

ফাহিম আবু বলেছেন: যারা আসলে কিছুই জানে না,তারাই পারে আপনার মত প্রান্তিক মন্তব্য করতে । এটা যে নিজের নাক কেটে পরের যাত্রা বঙ্গ নয় বা অবৈধ ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য একটা গেম নয় ,সেটার কি কোন নিশ্চয়তা দিতে পারবেন ।

১২ ই মার্চ, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৪৮

মুক্তমনা ব্লগার বলেছেন: তাহলে আপনিই ক্লিয়ার করুন ব্যাপারটা।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.