নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সৈয়দপুর নীলফামরী জেলার একটি উপজেলা শহর হলেও অনেক জেলার থেকে সমৃদ্ধ। এই উপজেলা বৃটিশ আমল থেকেই রয়েছে বিভিন্ন জাতির বসবাস ও গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা। বিমান বন্দর, রেলওয়ে জংশন, রেলওয়ে যন্ত্রাংশ/বোগি তৈরির কারখানা, ক্যান্টনমেন্টসহ অসংখ্য স্কুল কলেজের মধ্যে চিনি মসজিদকে আমার নিকট অনন্য স্থাপনা মনে হয়েছে।
নীলফামারীর সৈয়দপুর বাংলাদেশের প্রাচীন শহরগুলোর মধ্যে একটি। ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য এই শহরটি অনেক আগে থেকেই প্রসিদ্ধ হলেও অনেকের কাছে সৈয়দপুর ‘রেলের শহর’ বলে বেশি খ্যাত বা পরিচিত হয়ে রয়েছে । চিনি মসজিদটি নীলফামারী সদর থেকে ২০ কিলোমিটার দূরে সৈয়দপুরে অবস্থিত। এই শহরের প্রাচীন সৌন্দর্যের স্থাপত্য নিদর্শন হচ্ছে সৈয়দপুরের এই ‘চিনি মসজিদ’। যা অনেকের কাছে ‘চীনা মসজিদ’ নামে বেশি পরিচিত।
ঐতিহাসিক এই মসজিদ নির্মাণের প্রেক্ষাপট ও ইতিহাস বেশ সুদীর্ঘ। ১৮৬৩ সালে হাজী বাকের আলী ও হাজী মুকু নামের দু’জন ধর্মপ্রাণ বাসিন্দা সৈয়দপুর শহরের ইসবাগ এলাকায় ছন ও বাঁশ দিয়ে প্রথমে মসজিদটি নির্মাণ করেন। পরবর্তীতে এলাকাবাসীর সহায়তায় তা টিনের ঘরে রূপান্তরিত হয়। পরে এলাকার লোকেরা মসজিদটি নির্মাণের লক্ষ্যে একটি ফাণ্ড গঠনে উদ্যোগী হয়। এরই প্রেক্ষিতে স্থানীয়রা তাদের মাসিক আয়ের একটি অংশ দান করে মসজিদ নির্মাণের জন্য একটি ফান্ড গঠন করেন। এরপর শুরু হয় মসজিদের নির্মাণ কাজ।
লোকমুখে শোনা যায়, শঙ্কু নামের জনৈক হিন্দু রাজমিস্ত্রী দৈনিক ১০ আনা মজুরিতে মসজিদের নির্মাণ কাজ নতুনভাবে শুরু করেন। স্থানীয় এলাকাবাসী স্বেচ্ছাশ্রমের মাধ্যমে তাকে সাহায্য করতে থাকে। মসজিদের সৌন্দর্য বাড়াতে মসজিদের দেয়ালে চিনামাটির থালার ভগ্নাংশ ও কাঁচের ভগ্নাংশ বসানো হয়। এই পদ্ধতিকে বলা হয় ‘চিনি করা’ বা ‘চিনি দানার কাজ করা’। এখান থেকেই মসজিদের নাম হয়- চিনি মসজিদ বা চীনা মসজিদ। সৌন্দর্যের কাজে ব্যবহৃত চিনামাটির উপকরণসমূহ আনা হয়েছিল কলকাতা থেকে। ঐতিহাসিক এই মসজিদের নকশা করেন মো. মোখতুল ও নবী বক্স।
মসজিদের অনন্য কারুকার্যে সত্যিই মুগ্ধ হতে হয়। মসজিদের দেয়ালে অঙ্কিত ফুলদানি, ফুলের ঝাড়, গোলাপ ফুল, একটি বৃত্তে একটি ফুল, চাঁদতারাসহ নানা চিত্র রয়েছে। এ মসজিদ তৈরিতে প্রচুর মার্বেল পাথর ব্যবহার করা হয়েছে। চিনি মসজিদের সৌন্দর্য দেশ- বিদেশের প্রচুর পর্যটককে আকর্ষণ করে বলেই তারা ছুটে আসেন। নিজ চোখে না দেখলে চিনি মসজিদের সৌন্দর্য উপলব্ধি করা যাবে না। ২৭টি মিনার রয়েছে মসজিদটিতে। এই মসজিদের পিছনে রয়েছে খ্রিস্টানদের প্রাচীন একটি কবরস্থান। মসজিদে ২৪৩টি শংকর মর্মর পাথর রয়েছে। রয়েছে ছোট ছোট ৩২টি মিনারসহ ৩টি বড় গম্বুজ। মসজিদে একসঙ্গে প্রায় পাঁচ শতাধিক লোক নামাজ আদায় করতে পারেন।এই মসজিদে রয়েছে উত্তর ও দক্ষিণে দু’টি ফটক। মসজিদের গোটা অবয়ব রঙিন চকচকে পাথরে মোড়ানো। আর বারান্দা বাঁধানো সাদা মোজাইকে।
পঞ্চগড় থেকে ফেরার পথে ঠাকুরগাঁও, দিনাজপুর হয়ে গতকাল রাতে এই মসজিদ এর সৌন্দর্য দেখতে আমরা চারজন ছুটে গিয়েছিলাম সৈয়দপুর। মসজিদের কারুকার্য আমাদের সকলকে বিমোহিত করেছে।
২৪ শে নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ২:১৫
রবিন.হুড বলেছেন: ধন্যবাদ পড়ার জন্য। ঝটিকা সফরে উত্তরবঙ্গের যা দেখলাম তাই ভালো লাগলো।
২| ২৪ শে নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১
মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন:
- দেখতে চাওয়ার তালিকায় এই মসজিদটি আছে আমার। এখনো দেখার সুযোগ হয়ে উঠে নাই।
২৪ শে নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ২:১৭
রবিন.হুড বলেছেন: আপনার মতো ভ্রমণ পিপাসু খুব দ্রুতই চিনি মসজিদ চিনে আসবেন বলে আশাবাদী।
৩| ২৪ শে নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:৪৯
শাম্মী নূর-এ-আলম রাজু বলেছেন: সৈয়দপুরে এখনো যাওয়া হয়নি তবে আপনার ব্লগ পড়ে ঐতিহাসিক স্থাপনা সম্পর্কে আগ্রহ তৈরি হলো। ধন্যবাদ আপনাকে।
২৪ শে নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ২:১৮
রবিন.হুড বলেছেন: আমিও সৈয়দপুর প্রথম গেলাম। আবার আরও সময় নিয়ে যাব ইনশাল্লাহ।
৪| ২৪ শে নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১:৩১
মেহবুবা বলেছেন: সৈয়দপুর অনেক আগে গিয়েছি, তবে এটি দেখা হয় নি।
অনেক বছর আগে চলার পথে রেলওয়ের পুরোন নজরকাড়া কোয়ার্টার এবং তার কাঠের ছোট ছোট লম্বা সীমানা প্রাচীর এবং তেমনি
নীচু গেইট দেখে মনে হোত বাড়ীর ভেতর উত্তম কুমার আছে; এখুনি ধূতির কোচা ধরে তার নিজস্ব ভঙ্গিতে বেরিশে আসবে! কল্পনায় সেই কবে পরলোকগত উত্তম!
৫| ২৪ শে নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ২:১৯
রবিন.হুড বলেছেন: সৈয়দপুর রেল লাইনের পাশে বিহারীসহ আরও অনেকজাতের মানুষের বসবাস দেখলাম। তাদের জীবন ধারা সম্পর্কে জানার আগ্রহ আছে।
৬| ২৪ শে নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ২:২০
সৈয়দ কুতুব বলেছেন: দেখতে যেতে হবে দেখছি!
©somewhere in net ltd.
১| ২৪ শে নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:২৯
ইফতেখার ভূইয়া বলেছেন: অসাধারণ সুন্দর কারুকাজের অনেকটাই বোঝা যাচ্ছে। এ ধরনের কালজয়ী দৃষ্টি-নন্দন স্থাপনাগুলো সরকারিভাবে সংরক্ষণ তথা বিশ্বের সামনে তুলে ধরা জরুরী। লিখার জন্য ধন্যবাদ জানবেন।