নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

দেখা না দেখার বয়ান

নাজিব তারেক

নাজিব তারেক › বিস্তারিত পোস্টঃ

শিক্ষা

০৫ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১০:১২

বঙ্গবন্ধু, গান্ধীর পর বাংলাদেশের রাজনীতিতে তাজউদ্দিন আহমদ (মুজিবনগর সরকারের প্রধানমন্ত্রী, তার নেতৃত্বেই ১৭ এপিল ১৯৭১ থেকে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ পরিচালিত হয়) আমার প্রিয় চরিত্র।

নভেম্বর’৭৫ তাহার হত্যার ঘটনাটি আমায় বহুবার বহুভাবে কাঁদিয়েছে। বছর ৫/৬ আগে একটি ঘটনা জানবার পর আমার হৃদয়ের কান্না করুনায় পরিনত হয়েছে-

১৯৭১-এর ২৫ মার্চ রাতে জোহরা তাজউদ্দিন সন্তানদের সহ প্রতিবেশী এক হবু সচিবের বাসায় উপস্থিত হোন আশ্রয়ের আশায়। অধিক নিরাপদ আশ্রয়ের কথা বলে সে ব্যক্তি জোহরা তাজউদ্দিনকে একটি নির্মানাধীন ভবনের পাশে দাড় করিয়ে রেখে পালিয়ে যান।

সেদিন সে হবু সচিব দু’টি অপরাধ করেন- একটি সাধারন মানবিক অপরাধ, অপরটি পেশাগত অপরাধ। প্রথমটি নিয়ে কিছু বলছি না, ২য়টি নিয়ে বলি-তাজউদ্দিন আহমদ, বিরোধী পক্ষের ২য় নেতা (প্রথম জন মুজিব) তার পরিবার জেনেভা কনভেনশন অনুযায়ী যে মর্যাদা পায় তাতে এ পকিস্তানী সচিবের দায়ীত্বের মধ্যেই পড়ে তাকে আশ্রয় দেয়া। আর বাংলাদেশের পক্ষে অবস্থান নেবার এর চেয়ে ভালো সুযোগ হচ্ছে পক্ষ ত্যাগ করে নিজেকে বাংলাদেশী ঘোষনা করা, যা অনেকই করেছিলেন। ১৯৭১-৭২-এর সরকারের উদারতার নির্বুদ্ধিতায় নিয়োগ পাওয়া এ সচিবের বা সচিবদের (এবং সামরিক কর্তাদের) প্রমোশনের ফাইলে সম্মতি স্বাক্ষর দিয়ে ১৯৭৩-এই তাজউদ্দিন আহমদ ও অন্যান্যেরা ১৯৭৫ কালের হত্যাকান্ডের বা নিজেদের মৃত্যু পরোয়ানায় নিজেরাই স্বাক্ষর করেন। আর এইসব সচিব ও সামরিক কর্তারা পরবর্তী সামরিক শাষন বা আমলাতন্ত্রের জয়জয়কারে দেশকে ভরে রেখেছেন আজো...

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মাসিক সম্মানী ও সচিবদের বেতন এবং মর্যাদার যে সংকট তা সেই ইতিহাসেরই ধারাবাহিকতা...




সম্ভবত ২০০৪/৫, অফিস থেকে বাসায় ফিরছি, কিছুদিন আগে চালু হওয়া গেটলকবাসের সর্বশেষ আসনে বসে আছি, আমার সামনের আসনে বসে আছেন এক ৫০ দশকের বাংলা সিনেমার কেরানী চরিত্র। বাসের চকচকে অন্যান্য চরিত্রের পাশে বড়ই বেমানান। মহাখালী ফ্লাই ওভার বা ওভারব্রিজ এর নির্মান কাজ চলছে, তাই সে পথে একঘন্টার যানজট প্রাত্যহিক (এখোনো খুব উন্নত হয়নি)। হঠাৎ সেই কেরানী চরিত্র আমার দিকে তাকিয়ে বললো ‘আচ্ছা বলেনতো, এই যে প্রাইভেট গুলাতে যে লোক গুলা বসে আছে এরা কি? এরাতো সকলেই ক্ষমতাশালী গুরত্বপূর্ণ লোক তাই না, এরা চাইলেই তো এ অবস্থার অবসান করতে পারে তাই না?’




একটি বহুজাতিকের চাকুরে আমি, সকলে জানতে চাইলো বাসা কোথায়? বললাম ঢাকা শহরের সবচেয়ে অভিজাত এলাকায়...

-বরিধারায়!

-না

-গুলশানে!

-না

এইসব ফখিরা জায়গায় নয় (গুলশানের রাস্তায় ওয়াসার গাড়ী থেকে সে সময়েই পানি বিতরন করা হচ্ছে এবং অফিস ভবনের জেনারেটরটা সকাল থেকেই চলছে। এইটা বলে অভিজাত এলাকা, হা হা হা...)



নগরের মাঝখানে বা সাধারন নিরস্ত্র জনতার ঢালের নিরপদ আশ্রয়ে অবস্থিত পৃথিবীর একমাত্র ক্যান্টনমেন্ট-এর বাসা থেকে খালেদা জিয়াকে যখন বের করে দেয়া হলো, জানলাম সে বাসার আয়তন ৭ একর (ব্রিটিশ জেনারেলদের অনুকরনে)




জেলা প্রশাসকদের বাসার আয়তনও ক’একর। দেশের শিল্পপতিদের বাসার আয়তন মাত্র ক’বিঘা এবং তাহাদের বাসায় বিদ্যুত ও পানি সরবরাহ নিরবিচ্ছিন্ন নয়।

এ দেশে অভিজাত বা এলিটেরা কোথায় আছেন?

গতকাল (৪ জানুয়ারি ২০১৬) ব্রিটিশ শিক্ষা বোর্ডের অধিনে ইংরেজী মিডিয়াম স্কুলের পক্ষে বক্তিতা দিচ্ছিলেন এক সামরিক শাষকের তৈরী বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদী প্রফেসর...



১৭৮৪ ফ্রাইখেন বার্ক ভারতকে খ্রীস্ট ধর্ম বা ব্রিটিশ সংস্কৃতির অধীনে আনবার যে কর্মসূচী নিয়েছিলেন তাহাই ১৮২৯-এর ম্যাকলে ও বেন্টিকের ভারতীয় শিক্ষার নীতি। সে নীতির অধীনে যে শিক্ষাব্যবস্থা সেই শিক্ষা ব্যবস্থার ফসল এ সচিবেরা (সামরিক ও বেসামরিক), স্বাধীন সত্তার বঙ্গবন্ধুর নীতি ও আর্দশ এই সচিবেরা বাস্তবায়ন করতে দেবে বলে কার কার মনে হয়, হাত তুলুন...

বিপরীতে এদেশের মুক্তি সংগ্রামের সূতিকাগার আবার এ বিশ্ববিদ্যালয় গুলিই...




ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাষনকালে পন্ডিতের সারা মাসের সম্মানী ছিল ইংরেজ সাহেবের কুকুরে একটি পায়ের সমান, পাকিস্তান আমলে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকেরা প্রানে বাঁচতে দেশ ছেড়েছেন। যারা ছাড়েননি, বাংলাদেশের প্রথম সামরিক শাষকের তৈরী বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদী নেতার মতে তারা ১৪ ডিসেম্বর ১৯৭১-এ নির্বোধের মত প্রান হারিয়েছেন...



স্বাধীন ও গনতান্ত্রীক দেশেই শুধু শিক্ষক যথাযথ মর্যাদায় অভিসিক্ত হতে পারেন বলেই প্রাচীন ভারতীয় (কলিঙ্গ) ইতিহাস বলে...

মন্তব্য ০ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.