নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

দেখা না দেখার বয়ান

নাজিব তারেক

নাজিব তারেক › বিস্তারিত পোস্টঃ

লাট সাহেবের কুকুরের ঠ্যাং ও পন্ডিতের পরিবার

১২ ই জানুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৫:১৭

শিক্ষকদের মর্যাদা নিয়ে লেগেছে গন্ডগোল!

সমস্যাটা কোথায়?

ইতিহাসের দিকে তাকাই...

শিক্ষক (Teacher) শব্দটি আসলে সাম্প্রতিক শব্দ, ভারতীয় কিংবা আরবীয় (এ দেশের অধিংকাশ মানুষ নিজেদের মুসলীম ও আরবী উত্তরাধিকার কল্পনা করে, তাই...) অঞ্চলে শিক্ষক শব্দটির বহুল প্রচলন ব্রিটিশ উপনিবেশের অবদান। গুরু বা ওস্তাদই এ অঞ্চলের বহুল প্রচলীত শব্দ, ইদানিং ইউরোপ/আমেরকিায় Mentor (গুরু বা ওস্তাদ) শব্দটির চল বাড়ছে।

গুরু/ওস্তাদ বা শিক্ষক একই শ্রেনী বা জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধিত্ব করলেও সমাজ গঠন ও ধরনের কারনেই গুরত্বটি আলাদা।

গুরু/ওস্তাদ-এর শিক্ষাদান পদ্ধতি ও সামাজিক প্রেক্ষিত আর শিক্ষকের শিক্ষাদান পদ্ধতি ও সামাজিক প্রেক্ষিত এক নয়। কৃষি সমাজে গুরু ছিলেন স্বাধীন সত্তা, তিনি একটি আশ্রমের অধিপতি। কোন রাজ্য বা রাজার অধীন তিনি নন। কিন্তু আধুনিক রাষ্ট্র ব্যবস্থায় বিশ্ববিদ্যালয় সমূহ সার্বভৌমত্ব সম্পন্ন হইলেও স্বাধীন কি? শিক্ষকেরা কি রাষ্ট্রের কর্মচারী নন? তৃতীয় বিশ্বে অবশ্যই রাষ্ট্রের কর্মচারী।

শিক্ষা ব্যবস্থার সংকটটি কোথায়? আসুন আরো একবার ইতিহাসের পথে হাটি। ইউরোপে শিক্ষা কেন্দ্রগুলির নাম ছিল মঠ বা monastery, ভারতে অাশ্রম, আরবে (মূলত পারস্যে) মাদ্রাসা। মঠ গুলি ছিল স্বাধীন কিংবা একাধিক নাইট বা রাজার অনুদানে পরিচালিত। মাদ্রাসা গুলিও তদ্রুপ। যে সেখানে যেত সে যেত জ্ঞান অর্জন করতে কিংবা দক্ষ হতে। ইউরোপের রেঁনেসা পুরো সমাজ কাঠামোকেই পালটে দিতে থাকলো। শিল্প বিপ্লব ও রাষ্ট্র পত্তনের মধ্যদিয়ে পালটে গেল সমাজ কাঠামো। ব্যপারটি একদিনে হয়েছে কি? না পুরো সমাজটিই নড়াচড়ার মধ্যদিয়ে আজকের শিক্ষা বাস্তবতায়ে এসেছে [প্রাথমিক (কিন্ডারগার্ডেন) থেকে বিশ্ববিদ্যালয়]। পাঠশালা (মক্তব) ও আশ্রমের (মাদ্রাসা) যে যোগসূত্র। প্রাথমিক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের যোগসূত্র এক নয়।

শিল্প উৎপাদন ও সু নাগরিক নির্মানের জন্য যে শিক্ষা কাঠামো (আধুনিক) তার সঙ্গে শিল্প বিপ্লব পূর্ব শিক্ষা কাঠামোর রয়েছে যোজন যোজন দূরত্ব। মঠের গুরু ও (বিশ্ব)বিদ্যালয়ের শিক্ষক এক নয়। একজন জ্ঞান বিতরন করেন, অপর জন দক্ষতা বাড়াতে সাহায্য করেন। কিন্তু জ্ঞান ব্যতীত সভ্যতা যে হইতেছে বিলিন...

রাষ্ট্র কাঠামোয় তাই পুরো শিক্ষা কাঠামোটিই এমন ভাবে সাজানো যে দক্ষতা ও জ্ঞান একই ‘ফাইবার অপটিক লাইন’ দিয়ে প্রবাহীত। প্রাচীন কৃষি সমাজ কাঠামোর ‘মর্যাদা’ তাই এখানেও প্রতিস্থাপিত।

এতো গেল রাষ্ট্র কাঠামোয় শিক্ষার ব্যবস্থা। কিন্তু উপনিবেশের শিক্ষা কাঠামোর ব্যবস্থা কি রাষ্ট্রের অনুরূপ হইবে? না, ম্যাকলে সে সমস্যারই সমাধান করলেন। উপর কাঠামো একই থাকলো কিন্তু ভিতর কাঠামোয় ‘জ্ঞান’টিকে ছেটে দিলেন। (বিদ্যালয় ও বিশ্ববিদ্যালয় গুলির পাঠাগার ও গবেষনার অবস্থা দেখীলেই...) দাস ও প্রভুর এটাই পার্থক্য।

আমরা যারা উপনিবেশ বা আজকের তথাকথিত ‘স্বাধীন’ রাষ্ট্র তাহাদের সমাজে আধুনিক শিক্ষা কাঠামোটি ম্যাকলের হাতে গড়া। আমাদের আমলাতন্ত্রও ইংরেজ বা ইউরোপীয় প্রভুদের অনুকুলেই তৈরী। যার ভেতর কাঠামোয় এতাদিন নিরব থাকা জ্ঞানহীনতার ফাকা টিন। ফাঁকা টিন বাজে, ঠ্যান ঠ্যান করে বাজে বা ‘ফাঁকাটিন বাজে বেশী’ এ যে আমার হাজার বছরের গ্রাম্য অভিজ্ঞতাই।

পরিশিষ্ট: ‘আর্ন্তজাতিকতার’ বা ‘বিশ্বায়নের’ (ইউরোপীয় উপনিবেশের সমকালীন নাম) উন্নয়নের (বা উপনিবেশের) কালে তৃতীয় বিশ্বে (উপনিবেশে) শিক্ষকদের মর্যাদা একটি অলিক স্বপ্ন মাত্র। ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পীনর গভরনর/জেনারেলদের নিচে বা অধিনেই সকল ‘দক্ষ’ Native people...




(শিরোনাম প্রসঙ্গ: মুজতবা আলী রচিত একটি ছোট গল্প স্কুল পাঠ্যবইয়ে ছিল, ছোটকালে পড়িয়া ছিলাম, নামটি মনে নাই)

মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১২ ই জানুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৫:৩৬

প্রামানিক বলেছেন: (শিরোনাম প্রসঙ্গ: মুজতবা আলী রচিত একটি ছোট গল্প স্কুল পাঠ্যবইয়ে ছিল, ছোটকালে পড়িয়া ছিলাম, নামটি মনে নাই)

গল্পের নামটি "পাদটীকা"।

২| ১৪ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১১:২৯

নাজিব তারেক বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই প্রামানিক

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.