নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

দেখা না দেখার বয়ান

নাজিব তারেক

নাজিব তারেক › বিস্তারিত পোস্টঃ

উন্নয়ন ও সুন্দরবন

১৪ ই মার্চ, ২০১৬ দুপুর ২:৩৬

উন্নত বিশ্ব বা ইউরোপের উন্নয়ন ঘটবার কালে পৃথিবীর ৯৭ শতাংশ বনভূমি লোপাট হয়েছে গত ২৫০ বছরে। ৭০ শতাংশ প্রান বৈচিত্র টিকে আছে অ্যালবার্ট মিউজিয়ামের চিত্রশালায় অথবা আমেরিকান ন্যাশনাল মিউজিয়ামের শোকেসে, আরো কিছু বিলীনতা ঘটেছে/ঘটছে আমাদের আগোচরেই। লোপাট হয়েছে ভূগর্ভস্থ খনিজ আর মানবাকৃতি জন্মেছে পঙ্গপালের মত; মরেছেও সেরকমই, তারপরও পৃথিবীর মানবাকৃতির সংখ্যা ৭০০ কোটি প্রায়।



স্বর্গ বা বেহেস্ত-এর স্বপ্ন আমাদের সকলেরই, সেটা মুসলীমদের যেমন তেমনি হিন্দু, ইহুদী ও খ্রীস্টানদেরও আর চৈনিক বামেরাতো আমাদের জীবদ্দশাতেই সেটা সরবরাহ করতে প্রতিশ্রুত। সে লোভের বিপরীতে স্বর্গদেবার প্রতিশ্রুতি দিতে কেন পিছপা হবে আই এস, ভারতীয় সংঘ পরিবার, জায়ানিস্ট কিংবা ভ্যাটিকান! সে স্বর্গের নাম ‘উন্নয়ন’



ধর্মকালে প্রাপ্তিটা ঘটতো মৃত্যুর পরে। রাষ্ট্র ব্যবস্থার প্রবক্তারা সেটা জীবদ্দশাতেই দিতে চাইলেন। কয়লা পোড়ানো কার্বন-ডাই-অক্সাইড বাতাসে মিশিয়ে জাহাজ ছুটলো পৃথিবী গোল প্রমানে। ফিরে এলো দাস ও সম্পদে ভরে। ইউরোপের বন্দর ও নগরে ছুটলো স্বর্গ পানিয় মদিরা ও হুরপরিদের হুল্লোড়…

ইউরোপের বাহিরে কেপটাউন, লাসভেগাস, সিডনি, মন্ট্রিল, নিউইয়র্ক এবং অারো কিছু স্বর্গ উদ্যানের নাম



কিন্তু ‘তোমারে বধিবে যে গোকুলে বাড়িছে সে’। মার্কস ও জায়ানিস্ট উভয়ই নীলভাসী মোজেসের সন্তান।



মানবাকৃতি বেড়ে শতকোটি পার। তাহাদের রাষ্ট্র স্বর্গ চাই। ইসরাইল কিংবা পাকিস্তান তো নয় ভ্যাটিকান। পাকিস্তান ব্যর্থ হলে ভারতই হোক ধর্মরাষ্ট্র। এখানেই অভিবাসিত আদিবীজ জরথ্রুস্ট-এর, এখানেই কোন একদিন এসে আশ্রয় নিয়েছিলেন মূসা পুত্র আর স্বয়ং যিশুই জেরুজালেম ছেড়ে এসেছিলেন কাশ্মিরে…



স্বর্গ স্বপ্নে আজ ধর্ম ও রাষ্ট্র মিলে একাকার। উন্নয়ন চাই উন্নয়ন। সভ্যতা মানে স্থাপত্য। চীমনির ধোঁয়াই সভ্যতার জীবনের প্রমান। প্রান মাত্রেই অক্সিজেন নেয় আর কার্বন-ডাই-অক্সাইড বাতাসে মিশিয়ে দেয়। আর জীবের মৃত শরীর মিথেন, কয়লা ও পেট্রলের আঁধার। একদা অক্ষরেখা ভরেছিল ছিল বৃক্ষ ও প্রান। সুন্দরবন কিংবা আমাজন অসভ্য ইতিহাসের সাক্ষ্য। আমরা সভ্য হতে চাই। উন্নত হতে চাই ইউরোপের মত। তাই ইউরোপীয় ভাষায় (মূলত ইংরেজী) কথা বলতে চাই। ইউরোপীয়দের মতই স্বর্গীয় সেক্সচ্যাট করতে চাই; টাওয়ার বসেছে তাই সুন্দরবনে, হে মৌমাছি এবার তোমার বিদায়। ল্যাপটপ, ফোন চালাতে; স্টার জলসা দেখতে চাই টিভি, ঠান্ডা বোতলজাত পানিয়ের (বেহেস্তি হালাল মদিরা ও অন্যান্য) ব্যবস্থা করতে চাই ফ্রিজ; ইজিবাইক চালিয়ে ঘুরতে, এমএমএস তৈরী ও প্রচার করতে বিদ্যুৎ চাই।

রামপালে হোক তাই কয়লা বিদ্যুৎ, হোক তবে রূপপুর পারমানবিক প্রকল্প। আমরা হবো রপ্তানী কারক উন্নতদেশ। আমাদের নদীতীর ও সমুদ্রতটে বাতাস নেই গো মানিক… ধান ক্ষেত দোলে কার ইসারায়।



উন্নয়নের ধোয়ায় চীনের আকাশে বহুদীন সূর্য্য উঠেনা। একাত্তরেও উঠেনি। চৈনিক বাংলাদেশীরা তখনো ইংরেজীতেই কথা বলতো-লিখতো, তাই তারা তখন বলেছিল ‘এটা দুই কুকুরের লড়াই’। আজো তারা ইংরেজীতেই কথা বলে-লিখে শুধু পথযাত্রার ব্যানারটি লেখা হয় বাংলায়-চার কোটি মানুষের ক্ষতি করে বিদ্যুৎ কেন্দ্র হতে পারে না। সুন্দরবন হরিয়েগেলে শুধুই চারকোটি মানুষের ক্ষতি! বাংলাদেশেই স্বর্গলোভী মানবাকৃতির সংখ্যা ১৭ কোটি, ভারতের ১৫০ কোটি। আর সুন্দরবন পৃথিবীর সুন্দরতম ও প্রান-বৈচিত্রময় বনভূমি, জগতের ৭০০ কোটি মানবাকৃতির কোন ক্ষতিই হবে না। ও হো আমরাতো বিশ্ব নাগরিক বা আর্ন্তজাতিক! ক্ষতি হবে মাত্র চার কোটি মানবাকৃতির…



ইতিহাসের প্রাগ-কাল থেকেই ভারত বাংলাকে দূরে রেখেছে। বাংলা ছিল পলায়ন কিংবা লুণ্ঠনের জায়গা। সংস্কৃতভাষী ভারত, ফার্সিভাষী ভারত একই আচরন করেছে হাজার হাজার বছর ধরেই। ইংরেজী ভারতও কলকাতা থেকে দিল্রীতে গেছে সে অভ্যাসেই। উর্দু-ইংরেজীর সিন্ধু বা হিন্দুও (পাকিস্তান) সে পথেই হেটেছিল। হিন্দী-ইংরেজী ভারত কি অন্য কিছু করতে সক্ষম?



বাংলাদেশ নামক একটি রাষ্ট্রের উন্নয়ন আসলে কি?

তা সরকার জানে, আমরা জানি ফেসবুকে (অনলাইন কিংবা অফলাইনের ল্যাপটপে) বিশেষজ্ঞ মতামত লিখতে আমাদের বিদ্যুত চাই।

বাংলাদেশ নামক একটি রাষ্ট্রের উন্নয়ন আসলে কি?

তা সরকার জানে, আমরা জানি মাইকে আজান দেবার জন্য আমাদের বিদ্যুৎ চাই।

বাংলাদেশ নামক একটি রাষ্ট্রের উন্নয়ন আসলে কি?

তা সরকার জানে, আমরা জানি দুবাই/কুয়ালালামপুর মার্কেট থেকে আমার শ্রমে ঘামে কেনা স্মার্ট ফোনের স্কাইপেতে নিজের চেহারা দেখাতে আমাদের বিদ্যুৎ চাই।

বাংলাদেশ নামক একটি রাষ্ট্রের উন্নয়ন আসলে কি?

তা সরকার জানে, আমরা জানি স্টার জলসার পাখীকে দেখতে অথবা অস্কার মঞ্চের ইউরোপী বা আর্ন্তজাতিক ফ্যাশন গাউনে প্রিয়ংকাকে দেখতে আমাদের বিদ্যুৎ চাই।

আল্লাহই সর্বজ্ঞ…

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.