নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

দেখা না দেখার বয়ান

নাজিব তারেক

নাজিব তারেক › বিস্তারিত পোস্টঃ

কি লিখবো কোথায় লিখবো?

০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সকাল ১১:০৭

আল মাহমুদ নামে বাংলা সাহিত্যে একজন কবি ছিলেন।
১৯৭২ সালে মুক্তিযুদ্ধের পর তিনি আরোসব ধনীর দুলাল চীনপন্থি বা ম্যাওবাদী বন্ধুদের সহায়তায় তাদের ন্যায় মুক্তিযোদ্ধার সার্টিফিকেট গ্রহন করেন। ১৯৭২-১৯৭৫ সময়কালে রাষ্ট্র ও সরকারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন কর্মকান্ডের অপরাধে গ্রেফতার হন।* ১৯৭৫-এর ১৫ আগস্টের পটপরিবর্তনের পর আরো অনেকের মতই তিনি পূনঃবাসীত হন। সে পূনঃবাসনের প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবেই তিনি ১৯৭১-এ বাংলাদেশ বিরোধী রাজাকার- আলবদরদের দল জামায়াতের পত্রিকা ‘দৈনিক সংগ্রামের’ সম্পাদক নিযুক্ত হন। সাংবাদিক, প্রাক্তন কবি এবং সমকালীন পদ্যকার হিসেবে তিনি দেশের ২য় সামরিক শাষক এরশাদ, দেশের প্রথম সামরিক শাষক জিয়ার স্ত্রী ও দেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার কাছ থেকে জমি ও অর্থ গ্রহন করেন।
৭২ পরবর্তী সময়ে তিনি অনেক পদ্য ও গদ্য রচনা করেছেন বিধায় সাহিত্য ব্যপারীরা তার পদ্যকে ‘কবিতা’ অভিধায় বাজারে বিক্রয় করে যাচ্ছেন। যা রাজনৈতীক ভাবে বাংলাদেশ ও মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্ব প্রদানকারী দল আওয়ামী লীগ বিরোধী (আলী বর্তমানে সরকারী দল)। তার এ সময়ের ‘আল্লাহ’ নামাংকৃত পদ্য সমুহকে বাংলাদেশ ও আওয়ামী বিরোধীরা মহান ইসলামী কবিতা হিসেবে প্রচার করে। ‘কোরান সর্বত্তম কবিতা’ (আল্লাহই এর রচয়ীতা) এবং প্রার্থনায় (নামাজ ও অন্যান্য) কুরানের আয়াত ব্যতীত অন্য কিছু পাঠ বা তেলাওয়াত করা নিসিদ্ধ বা কুফরী। এরপরও আল্লাহ বা ইসলামী কবিতা রচনার প্রয়াসকে কি আমরা কুফরি বলবো না?

তার ৮০তম জন্মদিন উপলক্ষে বাংলাদেশ ও আওয়ামী* বিরোধীরা (তারা সমকাল, আধুনিকতা ও মানবিকতা বা মানবতা বিরোধীও) ফেসবুক, অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ও তাদের নিয়ন্ত্রিত পত্রিকায় এ নিয়ে অনেক উচ্ছাস ও উল্লাস করবে…

শিল্পের ছাত্র হিসেবেই জানা কথা—কবি (বা যে কোন শিল্প) মাত্রেই সমকালীন বা আধুনিক হতে হয়। চলমান আধুনিকতা হচ্ছে ধর্ম কিংবা অন্য যে কোন অচলায়তন ও পরনির্ভরতা থেকে ব্যক্তির দায়ীত্বশীলতা বা স্বাধীনতায় উত্তরনের প্রয়াস। সে প্রয়াসেরই একটি ধাপ ধর্মীয় নির্ভরতা থেকে গণতন্ত্র বা রাষ্ট্র ব্যাবস্থায় উত্তরন, যা হচ্ছে- ঐশরিক/অলৌকিক বা প্রভু নির্ভরতা থেকে নিজ বা আমিত্বে বা মানবিকতা বা মানবতায় উত্তরন। সে হিসেবে তার এ সময়ের রচনা সমূহ কোন সাহিত্য পদবাচ্য নয়। প্রার্থনা ছত্র মাত্র। সাহিত্যের মনযোগী দায়ীত্বশীল সৎ পাঠকেরা জানেন এ জাতীয় রচনা আরব/পার্সী ভাষায় হাজার বছর ধরেই সাহিত্য পদবাচ্য নয়। রুমি বা অনুরুপ রচয়ীতাদের রচনা সাহিত্য হিসেবে বিশ্ববাসির কাছে উপস্থিত হয়েছে ইংরেজ তথা ইউরোপীয়দের দ্বারা, তাদের উপনিবেশ বিস্তারের প্রয়োজনে এবং ইউরোপীয় পঠন বৈচিত্রের অংশ হিসেবে মাত্র। যদিও প্রাথমিক ভাবে রুমির রচনায় প্রার্থনা ভাব পরিলক্ষীত তথাপি তার রচনার গভীর পাঠেও প্রার্থনা ছত্র নেই। আমার ধারনা ‘রুমীর রচনায় প্রার্থনা ভাব’ অনুবাদকের কর্ম।
(প্রথম অনুভব ১৯৯৪, লিখিত আকারে প্রথম প্রকাশ: ১১ জুলাই ২০১৫, ফেবু স্ট্যাটাস।)

লেখক কি লিখছেন
শিল্পী কি আঁকছেন
সেটাই তার পরিচয়





লেখক কোথায় লিখছেন?
হ্যা তার পরিচয়ের এটাও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কোন প্রকাশক তার লেখা প্রকাশ করছে বাজারে এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। প্রকাশকের ‘ভাবমূর্তি’ নবীন লেখকের বিজ্ঞাপন। কিন্তু প্রবীন লেখকের ‘ভাবমূর্তি’ নবীন বা ব্রাত্য প্রকাশকের বিজ্ঞাপন। লেখককে তাই ভাবতেই হয়।
এই যে জানা ও ভাবনার প্রয়োজনীয়তা, এটা ইউরোপীয়দের অধিকার কিংবা দায়ীত্ব। আমরা যারা তৃতীয় বিশ্ব যাহাদের অর্থ ও ভাবিতে পারিবার অভাব আছে অথাৎ যাহারা দরীদ্র, সাধুর ভাষায় ‘চিন্তা-দরীদ্র’ যাহার বাঁচিবার উপায়, তাহার জন্য প্রকাশ হওয়া ও অর্থপ্রাপ্তিই মূখ্য। ‘চিন্তা-দারীদ্রের’ অধিকারে আমরা প্রথমেই আমাদের জন্ম তারিখ পরিবর্তন করে ‘বস্তুনিষ্ঠ’ থেকে ‘ভাববাদি’ হই; অতঃপর, প্রবাসী হইতে ব্যাকুল, বিদেশী পাসপোর্ট বা পরিচয় গ্রহনে ব্যকুল হয়ে উঠি এবং ভাব-এর উন্নয়নে লেগে পড়ি। তো প্রথমে জন্ম তারিখ পরে ‘পাসপোর্ট’ বা আইডি পরিবর্তন যে সমাজের উন্নয়নের মডেল সে সমাজে লেখক কোন পত্রিকায় লিখলেন তা কত বড় অপরাধ? না জেনে কিংবা অর্থের বিনিময়ে ব্রাত্য পত্রিকার বিজ্ঞাপন লিখা একজন লেখকের কতবড় অপরাধ?
...আর না জেনে কি লেখক হওয়া যায়?



আমিও এরকম এক পত্রিকায় লিখেছিলাম। সেটা জেনেই লিখেছিলাম। শর্ত দিয়েছিলাম, বিল নেব না এবং একটি শব্দও কাটা যাবে না...
লেখক কি লিখছেন
শিল্পী কি আঁকছেন
সেটাই তার পরিচয়






*মুক্তিযুদ্ধের মধ্যে দিয়ে আমাদের ছাত্র ও যুবসমাজ সমাজতন্ত্রের প্রতি ব্যাপকভাবে আকৃষ্ট হয়েছিল। প্রতিশ্রুতিশীল সাহসী ও মেধাবী এই প্রজন্মকে বৈঞ্জানিক সমাজতন্ত্রের কথা বলে দক্ষতার সাথে বিপথগামী করা হয়েছে এবং আজো হচ্ছে। ‘লাল ঝান্ডা দিয়ে লাল ঝান্ডা ঠেকানো’র সাম্রাজ্যবাদী কৌশল সেদিন সফলও হয়েছিল। শুধু তাই নয়, তাদের এই কর্মকান্ড স্বাধীনতা বা বাংলাদেশ বিরোধীদের প্রতিষ্ঠিত করতে পথ তৈরী করে।

প্রতিকার নাম ‘গণকন্ঠ’। সেই পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন আল মাহমুদ। পত্রিকাটির কাজ ছিল প্রতিদিন মিথ্যা তথ্য উপাত্ত দিয়ে সংবাদ পরিবেশন করে জণগনকে উত্তেজিত করা।

**১৯৭১ এ বাংলাদেশ বিরোধীরা-মুসলীম লীগ, জামায়াতে ইসলামী, মাওবাদী বা চীনপন্থি কমুনিস্ট

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.