![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
এশিয়া কাপের ফাইনাল বিষয়ে কাটা মাথা নিয়ে একটা নোংরামি হয়ে গেলো। এ বিষয়ে সবাই মোটামুটি নিন্দা জানিয়েছে, অন্ততঃ যাদের আমরা মানুষ বলে বিবেচনা করতে পারি, তারা।
বাকিরা নিজেদের মুসলমান বলে বিবেচনা করে, আইসিস নামের মধ্যযুগীয় বর্বর সংগঠনের রূপ পরিগ্রহ করাকে দেশ প্রেম মনে করে, তারা এই নোংরামিটার শুরু করে, এবং ইন্ডিয়ানটা বিনিময়ে প্রয়োজনের চেয়ে নির্মমভাবে খেলায় বাংলাদেশের ক্রিকেট একাদশকে রীতিমতো দমন করে।
ইন্ডিয়ানদের খেলা দেখে বোঝা গেছে, শুরু থেকেই তারা বাংলাদেশকে ধ্বংস করতে আগ্রহী ছিলো। খেলোয়ার সুলভ কোন আচরন তাদের মাঝে দেখা যায় নাই। ক্রুদ্ধ ও নির্মমভাবে বাংলাদেশের ব্যাটিং ধ্বংস করেছে, এবং বোলার কিংবা ফিল্ডারদের প্রায় অদৃশ্য জ্ঞাণ করেছে। আমার অনুভূতি অনেকটা বাংলাদেশ দলকে ঘোড়ার পেছনে দড়িতে বেঁধে গঞ্জের রাস্তা দিয়ে হিঁচরে নিয়ে যাবার মতো। তবে পুরোটাই ছিলো, খেলোয়ারী নিমর্মতা। শীতল দক্ষতার সাথে তারা বাংলাদেশের মর্যাদা ধ্বংস করেছে। হাই র্যাংকিং বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সেই 'গর্বিত' পারফরম্যান্সের দেখা মেলে নাই।
এই পুরো মচ্ছবে, বাংলাদেশের পত্রিকা, এবং সোশাল মিডিয়ার ভূমিকা আমারকাছে বরাবরই হাস্যকর ঠেকে। বাংলাদেশের বিপুল গরব, দুর্দান্ত টাইগার ইত্যাদি বিশেষণে বাঙালীকে রীতিমতো সাত আসমানের ওপরে উঠিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় মিডিয়ার বান ডেকে, তাতে 'হুজুগ' শব্দটা বার বার চোখের সামনে ভাসতে থাকে।
এই বিপুল জনপ্রিয় ফেসবুক মহাপুরুষদের আবেগে টইটুম্বুর, তেল চুপচুপে পোস্টে মানুষের বানের জলের মতো ভেঙ্গে পড়া, সবাই বুকে থাবা দিয়ে 'জিতবোই জিতবো' জাতীয় 'শপথ' দেখি আর হাসি। বাঙালী মুসলমান নামের এই উদ্ভট জাতিটাকে কতো সহজেই না আবেগের বন্যায় ভাসিয়ে একবার উত্তর মেরু, পরক্ষণেই সাহারা মরুভুমিতে নিয়ে যাওয়া সম্ভব। বাঙালী জাতীয়তাবাদ 'সুদৃঢ়' করবার উদ্ভট সব বানিজ্যিক প্রকল্পে রাজনৈতিক দলগুলি যুক্ত হয়। সকলের মিলিত আগ্রহে হারিয়ে যেতে বসা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা রাজাকারদের মূলধন ইসলামের আগ্রাসনের শিকার আজ, ক্রিকেট খেলা, জাতীয় সংগীত ইত্যাদি বানোয়াট কার্যক্রমে হুকুমের গনমাধ্যম, কিনে নেয়া সামাজিক গনমাধ্যমের মিলিত মচ্ছবে বাংলাদেশী পরিচয়টা শক্ত করার ব্যার্থ চেষ্টাই শুধু বার বার।
আর ইসলামী সোশাল মিডিয়ার কথা বলাটা আরো জরুরী। বাংলাদেশী রাজনীতি, ব্যাবসায়ী, সকলেই এদের সউদি বিনিয়োগের সুতোয় বাঁধা। অর্থের বিনিময়ে সমাজ, রাজনীতি, রাষ্ট্র সর্বক্ষেত্রে ইসলাম কায়েমের এক আত্মঘাতী প্রতিযোগিতায় বাঙালীকে টেনে নিয়ে যাচ্ছে সর্বনাশের দ্বার প্রান্তে। আমাদের হুঁশ ফিরে না। এই ইসলামী শক্তিই হয়তো কাটা কল্লার ছবিটা তৈরি করেছিলো। ছড়িয়েছিলো বাঙালীকে ইসলামী জঙ্গীবাদের সাথে খেলার শরবত বানিয়ে খাওয়ানোর উদ্দেশ্যে।
সেই ইসলামী গনমাধ্যম বাংলাদেশকে ইন্ডিয়ার কাছে আরেকবার খেলো করে তুলেছে। খেলোয়ারী মনোভাবের স্থানে আজ ভারতীয় খেলোয়ারেরা অপমানের জবাব দিয়েছে রোড-রোলার দিয়ে বাংলাদেশ দলকে একেবারে ফ্ল্যাট করে দিয়ে।
তার পরেই ইন্ডিয়ার ট্রল বাহিনী টুইটারে নেমেছে। তারা এবার বাংলাদেশী খেলোয়ারের কল্লা কেটে তার হাতেই ঝুলিয়ে দেয়ার বিবিধ ফটোশপ ছড়িয়ে দিচ্ছে। কিন্তু তাদের দোষ দেয়া যায় না। শুরুটা আমাদের তরফ থেকেই করা, এবং খেলার আগেই।
তবে ইন্ডিয়ান আর বাংলাদেশী ট্রলের মাঝে পার্থক্য হলো, আমরা খেলায় হেরেছি, আর ইন্ডিয়ানরা জিতেছে। আমরা খেলার আগে্ই অস্থির হয়ে ট্রলে নেমে গেছি, ইন্ডিয়ানরা খেলা জিতে, শিরোপা হাতে নিয়ে, তার পরেই মধুর প্রতিশোধের সাথে ট্রলে নেমেছে।
এতোসব বলার উদ্দেশ্য হচ্ছে, ট্রল যে কেউ করতে পারে, কিন্তু খুঁটি যদি না থাকে, তবে সেই ট্রল হয়ে ওঠে অপদার্থের অন্তঃসার শুণ্য লম্ফঝম্ফ। বাংলাদেশী ইসলামী মিডিয়া আমাদের সেই অপমানের শিকার করেছে।
আমাদের কোন প্রয়োজন নেই ইসলামের, সউদি বা পাকিস্তানী এজেন্টদের। আমরা বাঙালী, মানবতাবাদী, ভবিষ্যতের দিতে দৃষ্টি নিবদ্ধ। ইসলাম, বা মুসলিম হবার আর প্রয়োজন নেই।
একটা সাইড নোট। যেই সউদি আব্বাদের জোরে আমরা এতোদিন কড়া মুছলিম ছিলাম, সেই সউদি নিজেই আর ঋণ নিতে বিবিধ ব্যাংকের দারস্থ হয়েছে। অন্যদিকে আমেরিকা, মানে সউদিের আব্বা, ইরানের সাথে মিল মিশ করে নিচ্ছে।
এই অবস্থায় বাংলাদেশের ভেতরে সউদি অর্থের আর তেমন কোন গরম থাকবে না। ধর্মের গরম আমাদের আর থাকবে না। বৈশ্বিক এই পরিবর্তনের হাওয়া বাংলাদেশেও লাগা উচিত। দেশের ভেতরে ইসলামী ব্যাবসাগুলি ধ্বংস করার দরকার, এদের সকল শক্তি আমাদের দখল করা দরকার।
ওপরের পুরো কাহিনীতে একজনই মুক্তিযোদ্ধার খোঁজ পাই। 'মাহমুদুল্লা'। এই একটা ছেলে আজকে আমাদের ইজ্জত কিছুটা হলেও বাঁচিয়ে দিয়েছে।
©somewhere in net ltd.