![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
১ম অংশঃ
আজ ফেব্রুয়ারি মাসের ১৭ তারিখ, সারারাত ঘুম হয়নি ফাহাদের। ভাবছে কী করবে সে? আগামীকাল ক্লাস কিভাবে করবে? ফাহাদ ইসলামিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪র্থ বর্ষের ছাত্র। খুব পেট ব্যাথা করছিল তার। হঠাৎ ভার্সিটি গিয়ে ছুটি নিয়ে আসে। সর্বদা ক্লাসে উপস্থিত থাকতে চেষ্টা করে। খুব ভালো অসুস্থতা না থাকলে ক্লাস মার যায় না তার। কিন্তু কোনো কারণ ছাড়ায় ছুটি নিয়ে আসাতে অধ্যক্ষ একটু অবাকই হলেন। যা হোক, ছুটি যেহেতু নিয়েই ফেলেছে, সেহেতু ছুটিটাকে কাজে লাগাবে সে।
ফাহাদ আজ সকাল হতে না হতেই ফোন দিল তার বড় আপাকে আর বলল,আজ খুলনা যেতে চাই রে আপা। তার আপার নাম রুহি। রুহি বলল, আমাকে বলে লাভ নেই বাবাকে বল আর তিনি যদি অনুমতি দেন তাহলে আমার কিছু বলার নেই। ফাহাদের মা মারা গেছে প্রায় ৪ মাস হতে চলল। মা চলে যাওয়ার পর সে বড় একা হয়ে গেছে। মায়ের কষ্ট ভুলে থাকতে সে একটু ঘুরে বেড়াতে চায়। কিন্তু সব চাওয়া তো আর পূরণ হবার নয়। তবুও তার বাবাকে ফেলে যেতে কষ্টই হচ্ছে। অবশেষে অনুমতি মিলল তবে শর্তসাপেক্ষ বাবা যদি অনুমতি দেন। এখানে সে বুদ্ধি খাটাল যদি বাবাকে সাথে নেই তাহলে সমস্যা সমাধান। কিন্তু বাবা সাথে যেতে পারবে না অনেক দূরের পথ, তবে ছেলেকে ঠিকই অনুমতি দিলেন আর বললেন বেশী দেরী করিস না।
২য় অংশঃ
ফাহাদ একটু ইসলামিক মানসিকতার। সবকিছুই আল্লাহ করেন এটা সে তার মনে গেঁথে নিয়েছে এবং আল্লাহর কাছ থেকে নেওয়ার সবরকম পথ অবলম্বন করে। মা এখন নেই, কিন্তু মা যেন সবসময়ই পাশে আছেন ফাহাদের মনে। কারণ সে প্রায়শই মাকে স্বপ্ন দেখে। হযরতকে বিষয়টি বলতেই বলল, অনেক দিন তোমাকে দেখি নি আর স্বপ্নের কথা বলছ এর জন্য বেশি বেশি মায়ের জন্য দুয়া করতে হবে। অতএব এই কারণে খুলনা যাওয়ার পরিকল্পনা। ওযু করে দূর -পাল্লার বাস স্টপে এসে ফাহাদ দেখে কোনোই গাড়ী নেই, ঘণ্টা খানেক পর সকাল ১০টায়। এখন কী করা যায় তাই সে ভাবছে? সে মনে মনে আওড়াতে থাকল, কুরআনুল কারীম সাথে আছে পড়ে সময় পার করতে পারবে।
অবশেষে গাড়ী ছাড়ার সময় ডাক পড়ল তার গাড়ীর নম্বর ২৪২ কিন্তু গাড়ী কেন ছাড়ছে না? তখন মনকে শান্ত করে বলে এখনো সময় হয়নি। এখন পূর্বে ফিরে যাই,
ফাহাদের মন খারাপ কেন? (১) তার মা মারা গেছেন, (২) রাতে তার ঘুম হচ্ছে না, (৩) তাছাড়া মানুষের মন সবসময় একরকম থাকে না। এসকল কিছু আল্লাহর হাতে, As a muslim তাকে এগুলোর প্রতি বিশ্বাস করতেই হবে কারণ এটি ফরজে আঈন অর্থ্যাৎ অকাট্য বিষয় নাহলে ঈমানই থাকবে না। এবার প্রসঙ্গে আসি, রাতে ঘুম নেই তাই নফল নামাজ পড়ে দুয়া করে। তার ঘুম আসার পর, ঘুম ভেংগে গেলে ঘুম আসে না। এজন্যই হযরতের দারস্থ হওয়া, যিনি আল্লাহর ইচ্ছায় সকল সমস্যাদির উপায় বাতলে দেন। এক্ষেত্রে যিনি সুন্নত অনুযায়ী জীবন গঠন করবেন তিনিই হবেন উপযুক্ত।
৩য় অংশঃ
আজ বৃহস্পতিবার ১৭ তারিখ, গাড়ী ছাড়ার সময় হলে চলতে আরম্ভ করল। অল্প কিছু পথ যেতেই একজন মহিলা তার পাশের সীটে বসল। যে কিনা দেখতে অবিকল তার মায়ের মত। কিছু সময় পার হতেই সে তার আবেগ ধরে রাখতে না পেরে বলেই ফেলল, Excuse me, Aunty কিছু মনে করবেন না আমি কী আপনার সাথে কথা বলতে পারি? ভদ্র মহিলা বললেন, অবশ্যই এত দূরের পথ কথা না বলে পারা যাবে না।
এরপর আলাপচারিতার এক পর্যায়ে ভদ্র মহিলা ফাহাদকে তার নাম ও বাড়ীর খবর জানতে চাইলেন? উত্তরে সে বলল, "আমরা ২ ভাই-বোন আর বাবা।" প্রশ্ন করলেন তিনি, তোমার মা? ফাহাদ বলল,"আমার মা মারা গেছেন ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে। একথা শুনে তিনি কেঁদে ফেলেন, নিজেকে সামলে নিয়ে পুনঃরায় জিজ্ঞেস করলেন, তোমার কোনো খালা? ফাহাদ না সূচক উত্তর করল। দুজনেই খুব সাবধানী, কারণ যুগ অত্যন্ত খারাপ। অতঃপর গাড়ী একপর্যায়ে ফেরী ঘাটে এসে ভিড়ল, পাশে বসে থাকা মহিলাটি বললেন, বাবা, কিছু মনে না করলে আমার সাথে খাবার খাবে তোমার জন্য অপেক্ষা করব? ফাহাদ বলল, দুঃখিত আমি কারো জিনিষ ধরি না বা খাই না।
৪র্থ অংশঃ
এভাবে পথিমধ্যে অনেক কথা হয় দুজনের। অবশেষে মহিলার নামার স্থলে গাড়ী থামলে তিনি নামবেন এমন সময়ে তার নম্বরটি দিয়ে গেলেন। এখনো অনেক পথ বাকী, কখন নামবে ফাহাদ পথ যেন ফুরাতেই চায় না। একপর্যায়ে গাড়ী এসে থামে তার সেই কাঙক্ষিত সোনাডাঙ্গায়, সে অবতরণ করে এবং মোবাইলে ব্যালেন্স ভরে। হযরত তার জন্য অপেক্ষা করছেন। সে পা রাখল খানকায়, আর হযরত তাকে জড়িয়ে ধরে মুয়ানাকা অর্থ্যাৎ কোলাকোলি করেন আর একটি সুসংবাদ দেন তাহলো তার বন্ধু, জিহাদ যাকে সে দীর্ঘদিন দেখেনি, সে আসবে। ক্লান্তিকর ভ্রমণ শেষ করে এখন সে যেন তার আশ্রয় খুঁজে পেয়েছে আর ফোনালাপের মাধ্যমে জানিয়েছে যে, সে পৌছেছে।
©somewhere in net ltd.
১|
২৪ শে মার্চ, ২০১৫ সকাল ৯:৩৩
নাঈম মাহমূদ বলেছেন: ভালোই হয়েছে, তবে একটু ছোট হলে ভাল হত