![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
২৮শ পর্ব:
দেখতে দেখতে ফ্লাইটের সময় কাছিয়ে এল আর মাত্র ৩দিন। রিফাত মনে মনে নিজেকে সৌভাগ্যবান ভাবে কারণ এই মাসে তার জন্মদিন ও বিবাহবার্ষিকী তাও আবার হচ্ছে হাজ্জ্ব পালনরত অবস্থায়। শেষবারের মত সবকিছু সাথে নিয়েছে কিনা চেক করে নিচ্ছে। বাবা ও মায়ের ঔষুধ, নিজেরটা সাথে কিছু দরকারি কাগজপত্র। আজকে সেইদিন সে নিজেও একজন আলেম তাই নিয়ম কানুন তার নখদর্পণে। মুয়াল্লিমের সাথে বসে ঝালিয়ে নিচ্ছে। সকলেই হাজ্জ্বি ক্যাম্পে অবস্থান করত ইরহাম বেধে হাজ্জ্বের নিয়্যত করে নিল। আরেকবার নিয়মগুলো আয়ত্ত্ব করে নিল। আজ সকাল ৯টায় ফ্লাইট যেন রিফাতের ঘোর কাটছে না। প্লেন যখন উড়াল দিল তখন সংবিৎ ফিরে পেল রিফাত। রিফাতের পাশে আজও তার মা আর অন্যপাশে মৌমিতা। ডানপাশে রিফাতের বাবা ও শ্বশুড়-শ্বাশুড়ি। তাই একটু সাহস পাচ্ছে মনে মনে আর ঠিক করে নিল ১ম ক্বাবাঘর দেখার পর দোআ কী করবে। সবাইকে বলে দিল ব্যাপারটি। একপর্যায় প্লেন ল্যান্ড করল, রিয়াদ এয়ারপোর্টে। ওখান থেকে হোটেল ২০মিনিটের পথ, একেবারে ক্বাবাঘরের সবচেয়ে কাছের হোটেল মাত্র ২মিনিটের পথ। কিন্তু ক্বাবাঘর এখনো চোখে পড়ে নি। এবারে মালপত্র হোটেলে রেখে ফ্রেশ হয়ে জোহরের নামাযের উদ্দেশ্যে বের হয় প্রায় ২ঘন্টা আগে। আরেকটা ব্যাপার দলগতভাবে থাকতে হবে না তো হারিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা বেশী। রিফাত নিজেই আলেম তাই তার সাথে একজনমাত্র হুজুর যিনি কিনা পরিবারসহ তাদের সাথেই আছেন। তিনিই তাদের মুয়াল্লিম, আর একজন রাহাবর যিনি পথ চিনিয়ে হোটেল থেকে বের হবেন আবার হোটেলেই পৌছে দিবেন। এবারে ক্বাবাঘর ১ম দেখেই সবাই সবার মত দোআ করলেন যে, হে আল্লাহ্! যতদিন আপনার ঘরের সাথে লেগে থাকব ততদিন আমাদের নেক দোআগুলোকে কবুল করে নিন। একপর্যায় নামায শেষে হাজ্জ্বের কার্যক্রম শুরু হল। এভাবে প্রায় শেষ পর্যন্ত সকল কাজ ঠিকভাবে পালিত হল, বাকি থাকল তোয়াফে যিয়ারত যা হাজ্জ্বের সর্বশেষ কাজ। এবারে দোআর পালা, রিফাতের বামপাশে মা ও বাবা, ডানপাশে মৌমিতা ও তার পরিবার। রিফাত দোআ করল, হে আল্লাহ্! আমাকে ১টি ভাই ও নেক সন্তান দাও যাতে করে তারা আপনার শুকরিয়া জ্ঞাপন করতে পারে। রিফাতের এ দোআ শুনে মা কেঁদে দিলেন আর তার দোআ করলেন। মৌমিতা দোআ করল, হে আল্লাহ্! আমাকে আমার স্বামীর জন্য লিবাস বানিয়ে দাও আর তাকে আমার জন্য লিবাস বানিয়ে দাও যেমনটি তুমি বলেছ। এভাবে সকলেই সকলের দোআ করলেন। একপর্যায় সকল কাজ সমাপ্ত হলে ফেরার পালা। ভুলেই গিয়েছিলাম মদীনা যাওয়ার সময় সকলেই এ দোআ করল, হে আল্লাহ্! মদীনার আবহাওয়া আমাদের অনুকূল করে দিন, প্রতিকূল করে দিয়েন না। বাংলাদেশ ফেরার ফ্লাইট সেপ্টেম্বর ১৩ তারিখ শুক্রবার। মজার ব্যাপার হল, মক্কায় এসেছিল এই শুক্রবারেই। অনেক কিছু সাথে নিয়ে যাচ্ছে আজওয়া খেজুর, জুব্বা, রুমাল, হিজাব ও রিফাতের কিছু দরকারি বই যেগুলো কেবল এখানে পাওয়া যায়। অবশেষে খারাপ লাগছে আল্লাহ্ ও তার রাসূলের আবাসভূমি ছেড়ে যেতে, মনে মনে প্রতিজ্ঞা করে তিনি সামর্থ্য দিলে আবার আসবেই।
Click This Link
©somewhere in net ltd.