নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নাজমুল

নাজমুল ইসলাম মকবুল

নাজমুল ইসলাম মকবুল

জীবন একটা.......................

নাজমুল ইসলাম মকবুল › বিস্তারিত পোস্টঃ

ডিজিটাল নাটক!

০৩ রা জুলাই, ২০১৩ দুপুর ১২:৫১

ডিজিটাল নাটক!

নাজমুল ইসলাম মকবুল

আমার ছোট্ট শালিকার নাম রেশমা। শালিরা দুলাভাইয়ের সাথে একটু আধটু টাট্টা মশকরা করা নাকি সমাজের রেওয়াজ। কথার ফুলঝুরিতে যখন আমাকে কোনঠাসা করার চেষ্টা করে তখন আমি ডিজিটাল বয়ান শুরু করলেই কেল্লা ফতে। বর্তমানে দুর্ভাগ্যজনক আরেকটি সুযোগ কারা যেন সৃষ্টি করে দিলো। বলতে পারি তোমরা রেশমারা নাকি নাটক করতে পারো। এক্কেবারে তরতাজা নাটক। তবে এমন নাটক না করলেও পারতে যে নাটকে অভিনয় করার সময় ধরা খেয়ে যাও। চুলতো কেটেছিলে ভালই করেছিলে। আঙ্গুলের নখগুলো লম্বা করে গেলেতো আর ডিজিটাল জামানার চতুর ফেসবুকওয়ালা ব্লগারওলা টুইটারওয়ালারা সন্দেহ করে অগনিত মুখরোচক পোস্ট দিয়ে দেশবাসীকে লজ্জায় ডুবাতে পারতো না। দাতগুলোতে ময়লা আবর্জনা দিয়ে লেপটে দিলেতো হতো। হাই রেজুলেশনের ক্যামেরার সামনে ধবধবে সাদা দেখা যেতোনা। নতুবা বিতলা ওই সাংবাদিকদের ক্যামেরার সামনে আঙ্গুলগুলো বিশেষ ভঙ্গিমায় লুকিয়ে ও মুখ বন্ধ রেখে চকচকে দাঁতগুলো ঠোটের নিচে আটকে দিলেওতো আর দুরবীনওয়ালারা ছবিতে তা দেখিয়ে নানা প্রশ্নবানে জর্জরিত করার সুযোগ পেতোনা। নোংরা ময়লা কমদামী কিছুটা ছেড়াফাড়া একসেট কাপড় পরিয়ে ড্রামা শুরু করলে সন্দেহের জন্ম দিতোনা অনুসন্ধানীদের মনে। উদ্ধারের পর প্রধানমন্ত্রীর সাথে আলাপ বা দেখা করার ওই আগ্রহটা ক’দিন পরে করলেওতো আর এমন প্রশ্নের উদ্রেক হতোনা। আসলে যারা ফেসবুক টুইটার ব্লগে দিনরাত ঘুর ঘুর করে ওদের আর যেন কোন কাম কাজ নেই। এমন কি সাবেক প্রেসিডেন্ট একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরীও। এসব খুটিনাটি বিষয় নিয়েই ওরা খামাখা প্যাচাল পাড়েন।

রেশমা উদ্ধার হওয়ার সাথে সাথে নারায়ে তাকবির আল্লাহু আকবার বলে তকবির দেয়া হয়। ওই তকবির নিয়েও ফেসবুকওয়ালারা প্রশ্ন তোলে। বলে এতোদিন যারা ওই তকবির দিয়েছে ওদের কত পিটুনিই না দেয়া হলো কিন্তু রেশমা উদ্ধারের সময় ওই তকবির দেয়ার মাজেজাটা কি।

তকবির ওয়ালাদের উপর যে দমন পীড়ন অত্যাচার নির্যাতন করে মনের আনন্দে হাসি টাট্টা মশকরা চলছে তা তো দেশবাসীর চোখের সামনেই চলছে অবাধে। তকবির ওয়ালাদেরকেই উদ্দেশ্য করে সত্তর লাখের বস্তা এবং কালা বিলাই খ্যাত একজনতো প্রকাশ্য সভায় বলেই দিলেন যে, পিটুনির চোটে ওরা সুবহানাল্লাহ সুবহানাল্লাহ বলে দৌড়াতে থাকলো। হাসি টাট্টা মশকরা করে সময় পার করার নিরাপদ এসি রুম কবির ভাষায় ডাকাতের গ্রাম খ্যাত পার্লামেন্টে পয়েন্ট অব অর্ডারে বক্তব্য রাখতে গিয়ে বিরোধী দলীয় ভারপ্রাপ্ত চীফ হুইপ শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী উত্থাপন করলেন আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় ঝড় তোলা ওই নাটক প্রসঙ্গ। তবে তিনি রেশমা উদ্ধারের সময়ের ফেসবুকে ঝড় তোলা ও বিভিন্ন মিডিয়ায় প্রকাশিত ছবিগুলো সেখানে প্রদর্শন করে রেশমার নখ ও দাঁতগুলো আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিলে ডুগডুগির বাদক মতিয়া আপু জবাব দিতে গিয়ে ওই প্রসঙ্গ ছেড়ে বিরোধী দলীয় নেত্রীকে বিষোদগার করে চিরাচরিত ভঙ্গিমায় গলাবাজি হয়তো আরেকটু বেশি বা কম করতেন। কাঁচা মিছা কথা হয়তো অন্যভাবে বলতেন যে, দু-তিনদিন পরপর রানা প্লাজায় আটক রেশমার ওই কে রাতের আধারে বিএনপি নেতৃবৃন্দ সন্তর্পণে ঢুকে গিয়ে নেইল কার্টার দিয়ে রেশমার নখ কেটে দিয়ে আসতেন। টুথব্রাশ ও পেস্ট সাথে করে নিয়ে গিয়ে দাঁতও ব্রাশ করে দিয়ে আসতেন। করুনার বশে খাদ্য ও পানীয় দিতেন তবে তা অল্প পরিমাণে। এজন্য ওর দাঁত এতো পরিস্কার ও নখ কাটা দেখা গেছে। সতের দিন আন্দার থেকে বের হয়ে প্রচন্ড রোদ্রের মধ্যেও তাকাতে অসুবিধা না হওয়ার বিষয়ে হয়তো বলতেন ওইটা আমাদের দোয়ার ফল।

আরও বলতেন, বিএনপি পারেনা এমন কোন কাজ নেই। ওর দলীয় পিকেটাররা রানা প্লাজা বিল্ডিংয়ের খুটি ধরে নড়াচড়া করলো আর তখনি তা হুড় হুড় করে ধ্বসে পড়তে পারলো। যারা ভবন নড়াচড়া করে ধ্বসাতে পারে তাদের পে আমাদের বেকায়দায় ফেলার জন্য রেশমার মতো একটা সাধারন মাইয়ার নখ কেটে দেয়া ও দাত ব্রাশ করে দেয়া মামুলি ব্যাপার। নতুন দামী জামা এবং চকচকে ওড়নাও ওরা দিয়ে এসেছে। যাতে মেয়েটা মিডিয়ার সামনে নার্ভাস ফেল না করে। কেন ওরা নড়াচড়া করে বিল্ডিংটা ফেলে দিল, সতের দিন যাবত মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়া রেশমার দাঁত কেন ওরা ঘষে দিলো, কেন ওর নখ কেটে দিল, কেন সেখানে মরা লাশের সাথে থাকা খাদ্য ও পানীয় থাকা সত্ত্বেও ওকে খাদ্য ও পানীয় দিল সেজন্য বিএনপির নেতাকর্মীদের উপর মামলা দিয়ে গ্রেফতার করে রিমান্ডে নিয়ে বেধড়ক পিটুনী দেয়া দরকার। যাতে ওরা পিটুনীর চুটে আল্লাহ নবীর নাম লইতে বাধ্য হয়। আর কালা বিলাই সাহেবতো বলেই দিলেন রানা প্লাজার ঘটনা ওটা তেমন কিছুইনা।

এ্যানী সাহেব পার্লামেন্টে বললেন, হেফাজতের গণহত্যার সংবাদ থেকে মিডিয়ার দৃষ্টি ঘুরিয়ে দিতে সাজানো হয় রেশমা নাটক। এর জবাবেই শুরু হয় কাঁচা হাছা কথা। এর আগের কাঁচা পাঁকা হাছা কথাগুলি আমরা একটু তকরির করে দেখি। প্রধানমন্ত্রী সংসদে দাঁড়িয়ে নির্জলা হাছা কথা কইলেন, হেফাজতের নেতা কর্মীরা নাকি গায়ে লাল রং মেখে শাপলা চত্ত্বরে মরার ভান করে শুয়েছিল, পুলিশ গিয়ে তাদের শরিরে নড়াচড়া করলে উঠে দৌড় দিলো। তিনি রঙ্গের হাসি হেসে প্রশ্ন রাখলেন লাশ উঠে দৌড় দেয় কেমনে। ওদের উপর গুলি করা হয় নাই। গুলি করলে আশপাশের বিল্ডিংয়ে গুলির দাগ নেই কেন। আবার কালা বিলাই সাহেব বললেন, পিটুনির চোটে ওরা সুবহানাল্লা সুবহানাল্লা বলে পালিয়ে গেল। শেখ পরিবারের আরেক জাদরেল নেতা পার্লামেন্টে ঘোষনা দিলেন একজনও নিহত হওয়ার প্রমাণ দেখাতে পারলে উনি কি যেন একটা ঘটিয়ে দেবেন। এখন জাতি কার কথা বিশ্বাস করবে। ওই রাতে যদি নীরিহ আলেমদেরকে হত্যা না করে প্রধানমন্ত্রীর রঙ্গরসের ভাষায় রংমাখা ঘুমন্ত আলেমদের নাড়ানোর মাধ্যমে শাপলা চত্ত্বর থেকে সরিয়ে দেয়া হয়ে থাকে তাহলে লাইভ প্রচার করার কারণে দুটি টিভি চ্যানেলকে বন্ধ করে দেয়া হলো কেন। অপারেশনের পুর্বে সেখানকার সকল বৈদ্যুতিক বাতি নিভিয়ে দেয়া হয়েছিল কেন। অনেকেই আশপাশের বিল্ডিং থেকে মোবাইলসহ বিভিন্ন ডিজিটাল যন্ত্রপাতির মাধ্যমে সেই অভিযানের ছবি ও ভিডিও ফুটেজ ধারন করে সাথে সাথে ফেসবুক ও টুইটারে শেয়ার করেন। সেইসব ভিডিও ফুটেজে যে নির্বিচারে গুলি বর্ষনের দৃশ্য দেখা যায় তা কি বিদেশী পত্র পত্রিকায় ছাঁপা হওয়া রেশমার মতো সাজানো নাটক। যে লাশগুলো ফুটেজে দেখা যায় সেগুলোও কি নাটক। ভোর হওয়ার আগেই রাস্তার রক্তস্রোত ধুয়ে মুছে সাফ করে দেয়া হলো তাও কি এফডিসি থেকে ধার করে আনা ফুটেজ। অধিকারসহ বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠনের দেয়া তথ্যগুলোও কি কাঁচা মিছা কথা।

ফেসবুকে একটি ভিডিও ফুটেজে দেখলাম অগণিত অস্ত্রধারীরা সাজ সাজ রবে পুরো রণপ্রস্তুতি নিয়ে কমান্ডো স্টাইলে ঘুমন্ত আলেম ওলামাদের উপর গুলি ছুড়তে ছুড়তে সামন দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। সাথে লাটিপেটাও চলছে। এমন সময় শরিরের সমস্ত শক্তি দিয়ে উচ্চ স্বরে বিকট ভাষায় একজন গালি দিয়ে বলতেছে ‘পিটা শুয়োরের বাচ্চাদের পিটা’। দৃশ্যটি দেখে আমার শরিরের লুমকুপগুলো যেন খাড়া হয়ে গেলো। অশ্র“ সংবরণ করতে পারলামনা। কোন দেশে বাস করছি আমরা। ওই জনগনের ট্যাক্সের টাকা দিয়ে ওই রাস্তা বানানো। আর ওই খোলা রাস্তায় কান্ত শ্রান্ত অবসন্ন ুধার্ত পীপাসার্ত মুসাফির আলেমদের একরাত ঘুমানোর সুযোগ নেই কিন্তু একই ধরনের রাস্তা শাহবাগে জমির চাচার ভাতিজা ভাতিজিরা দিন রাত রাষ্ট্রের খরছে ও মজাদার খাবার খেয়ে নর্তন কুর্দন ও ইসলামের বিরুদ্ধে বিষোধগার করলে ওরা দ্বিতীয় মুক্তিযোদ্ধার মর্যাদা পায়।

আসল কথা হলো বর্তমানে আমরা দেশের আম পাবলিক কাঁচা আর পাঁকা মিছা কথা শুনতে শুনতে এক্কেবারে অভ্যস্থ হয়ে গেছি। এসব শুনলে আর আমাদের বিবেকে তেমন একটা বিধেনা, যেন গা সওয়া হয়ে গেছে। তাই তারা কতো জাতের নয়া পুরানা ডিজিটাল টক ঝাল মিস্টি নাটক জাতির ঘাড়ে চাপিয়ে দিয়ে মজা লুটেন, এসি রুমে বসে হাসি টাট্টা মশকরা করেন আর আমরা জনগন হই তাদের হাসির খোরাক, করুনার পাত্র!





মন্তব্য ১ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ০৩ রা জুলাই, ২০১৩ দুপুর ১:০১

মদন বলেছেন: :)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.