নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আলহামদুলিল্লাহ। যা চাইনি তার চেয়ে বেশি দিয়েছেন প্রিয়তম রব। যা পাইনি তার জন্য আফসোস নেই। সিজদাবনত শুকরিয়া। প্রত্যাশার একটি ঘর এখনও ফাঁকা কি না জানা নেই, তাঁর কাছে নি:শর্ত ক্ষমা আশা করেছিলাম। তিনি দয়া করে যদি দিতেন, শুন্য সেই ঘরটিও পূর্নতা পেত!

নতুন নকিব

যবে উৎপীড়িতের ক্রন্দল-রোল আকাশে বাতাসে ধ্বনিবে না, অত্যাচারীর খড়্গ কৃপাণ ভীম রণ-ভূমে রণিবে না- বিদ্রোহী রন-ক্লান্ত। আমি সেই দিন হব শান্ত।

নতুন নকিব › বিস্তারিত পোস্টঃ

শিশুদের পদচারণায় মুখরিত হোক আমাদের মসজিদগুলো

২০ শে জানুয়ারি, ২০২৩ দুপুর ১২:০৫

শিশুদের পদচারণায় মুখরিত হোক আমাদের মসজিদগুলো

মসজিদে নববীর ছবিটি অন্তর্জাল থেকে সংগৃহিত।

'নামাজে পেছনের কাতারগুলো হতে যদি বাচ্চাদের কলকাকলি আর কোলাহলের আওয়াজ শুনতে না পান তাহলে পরবর্তী প্রজন্মের নামাজী হিসেবে গড়ে ওঠার বিষয়ে শঙ্কিত থাকুন' - জ্বি, তুরস্কসহ মধ্যপ্রাচ্যের কোনো কোনো দেশের মসজিদে ঢুকলে মসজিদের দেয়ালে সেটে দেয়া এমন কথাই দৃষ্টিগোচর হতে পারে আপনার। চমৎকার কথা বটে। এই কথাগুলোর পেছনেরও কিছু কথা নিশ্চয়ই রয়েছে। কী সেই কথাগুলো? কেন এমন কথা লেখা হলো মসজিদের দেয়ালে? এইজাতীয় কথা মসজিদের ভেতরে লেখার প্রয়োজনই বা পড়লো কোন প্রেক্ষিতে?

মূলতঃ মসজিদে বাচ্চারা একটু আধটু হৈ হুল্লোড় করলে তাদেরকে ধমক দেয়া, মসজিদে বাচ্চাদের নিয়ে আসতে বড়দের নিরুৎসাহিত করা, এমনকি বাচ্চাদেরকে মসজিদ থেকে তাড়িয়ে দেয়া বা বের করে দেয়ার মত অনাকাঙ্খিত ঘটনাগুলোই যে এসব কথা লিখে দেয়ার প্রেক্ষাপট তৈরি হয়েছে, সেটা খুব সহজেই বোধগম্য। বস্তুতঃ যারাই এই জাতীয় কথা মসজিদে লিখে থাকুন; নিঃসন্দেহে একটি ভালো কাজই করেছেন। প্রচলিত অজ্ঞানতা ও কূপমন্ডুকতার বেড়াজাল ছিন্ন করার ক্ষেত্রে এটি রীতিমত একটি যৌক্তিক উদ্যোগ এবং পাশাপাশি প্রতিষ্ঠিত একটি অন্যায়ের বিরুদ্ধেও এটি সাহসী প্রতিবাদ বটে। এসব লেখার পেছনে যারাই রয়েছেন তাদেরকে সাধুবাদ জানাতে হয়। বাস্তবিকপক্ষে বাচ্চাদের সাথে অধিকাংশ মসজিদে যেসব অনাকাঙ্খিত আচরণ প্রায়শই পরিলক্ষিত হয়, এগুলো কোনোভাবেই কাম্য নয়। বরং শিশুদের মসজিদে উপস্থিতির সামগ্রিক বিষয়টিকে দেখতে হবে ইসলামের সেই উদার দৃষ্টিভঙ্গিতেই, যেভাবে দেখেছিলেন প্রিয় নবীজী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। বক্ষমান আলোচনায় আমরা জানার চেষ্টা করবো, শিশু কিশোর এবং কচি-কাঁচা ছোট বাচ্চা সোনামনিদের মসজিদে উপস্থিতির বিষয়ে ইসলাম কেমন নীতি-আদর্শ আমাদের সামনে উপস্থাপন করেছে।

শিশুরা হাসি আনন্দের প্রতীকঃ

শিশুরা স্বভাবতই আমোদপ্রিয়। ছোটাছুটিপ্রিয়। তারা চঞ্চল। চাঞ্চল্যই তাদের স্বভাব। শিশুরা হাসি আনন্দেরও প্রতীক। উৎফুল্লতা এবং মুগ্ধতারও পরিচায়ক। এই কারণে তাদেরকে মসজিদে নিয়ে এলে একটু আধটু ছোটাছুটি যে তারা করবে, এতে অস্বাভাবিকতারও কিছু নেই। এর বিপরীতে এটাও একেবারেই সঠিক যে, মসজিদ আমোদ আহলাদ কিংবা হৈ হল্লার কোনো স্থান নয়। মসজিদ বরং নিঃসন্দেহে ইবাদত বন্দেগীরই জায়গা। ভাবগাম্ভীর্যপূর্ণ নিরব এবং শান্ত পরিবেশই মসজিদের জন্য কাঙ্খিত। কিন্তু বাচ্চাদের জন্য এই কঠোর নিয়ম পূর্ণভাবে মেনে চলা সহজ নয় এবং পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে শিশুদের থেকে এমন আচরণ প্রত্যাশাও করা যাবে না। শিশু শিশুই। তাদের থেকে বষ্কদের আচরণ প্রত্যাশা করার যুক্তি নেই। একটু সুযোগ পেলে তারা কথা বলে উঠবে। হাসি খেলায় মত্ত হবে। কাতারের ভেতরে বা পেছনে একটু আধটু হইহুল্লোড় বা আমোদ ফুর্তিতেও মেতে উঠবেই। তাই বলে তাদেরকে মসজিদ থেকে দূরে সরিয়ে রাখাই কি এর প্রজ্ঞাপূর্ণ সমাধান? না, এমনটা সমাধানের পথ হতে পারে না। এই সমস্যার সমাধান এভাবে করা উচিতও নয়। মসজিদের ভাবগাম্ভীর্য এবং শৃঙ্খলা রক্ষার অযুহাতে বাচ্চাদের মসজিদমুখী করা হতে বিরত থাকার নীতিও কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। এটি সুন্নাহসম্মত পথ এবং পদ্ধতিও নয়। বাচ্চাদের উপস্থিতি বরং মসজিদগুলোতে বাড়ানোর প্রতিই আমাদের মনযোগী হতে হবে। মসজিদের দরজাকে তাদের জন্য অবারিত করে দিতে হবে। আল্লাহর ঘরের দুয়ার বরং সকল শ্রেণির মানুষের জন্য সদা উম্মুক্ত রাখার ব্যবস্থাকেই সুসংহত করতে হবে। প্রতিবন্ধকতার সকল ঝঞ্জাট সরিয়ে বিশেষত বাচ্চাদের মসজিদে আসার পথকে ছন্দে-আনন্দে পূর্ণ করে তুলতে হবে। তারা যেন মসজিদে এসেই তাদের প্রাণের খোড়াক লাভ করতে পারে। তারা যেন মসজিদে আসতে পারে নির্ভয়ে এবং নির্ভাবনায়। শঙ্কাহীন চিত্তে। মসজিদের সাথে যাতে তাদের কায়েম হতে পারে অবিচ্ছিন্ন এমনই এক দৃঢ় বন্ধন, যার সুতো প্রোথিত থাকবে মহান মালিক আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা এবং তার ঘর মসজিদের ভালোবাসার অতলান্ত গভীরে। তারা যেন মসজিদে আসতে পারে আবাবীল পাখির মত- ঝাকে ঝাকে, দলে দলে, হর্ষধ্বনিতে, আনন্দিতচিত্তে। ছোট্ট এই পাখিদের মসজিদে আগমনের ফুলেল পথ আকীর্ণ হোক প্রাণের টানে, প্রাণোচ্ছলতায়। তারা আসুক মসজিদে। নামাজ আদায় করুক। আনন্দের সাথে বিচরণ করতে থাকুক মসজিদের কাতারে কাতারে, পুরো মসজিদ জুড়েই থাকুক তাদের অবাধ বিচরণের অধিকার। ভাবগাম্ভীর্যপূর্ণ মসজিদের পিনপতননিরব পরিবেশকে প্রাণপ্রাচুর্য্যে ভরিয়ে তুলুক তারা কখনও কখনও, বৈচিত্র্যতায় মুগ্ধ করে তুলুক ইবাদতগুজার বান্দাদের মসজিদের বিমুগ্ধ পরিবেশ-প্রতিবেশ - চোখ জুড়ানো এমন দৃশ্যই প্রতিভাত হয়ে উঠুক পৃথিবীর প্রতিটি মসজিদে মসজিদে।

বাচ্চাদের মসজিদে নিয়ে আসায় অভিভাবকদের পর্যন্ত শাসানো হয়ঃ

আরব দেশগুলোর পাশাপাশি অন্যান্য অঞ্চলের অনেক দেশেও মসজিদে বাচ্চাদের আশাব্যঞ্জক উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। বাচ্চাদের যেখানে ইচ্ছে, খেয়ালখুশী মতোই তারা কাতারে দাঁড়ায়। সাধারণতঃ বড়দের তাদেরকে কিছু বলতে দেখা যায় না। বড়রা বাচ্চাদের তিরষ্কার করেন না। ধমকান না। ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বের করেও দেন না মসজিদ হতে। আমাদের দেশেও এই ঐতিহ্য দীর্ঘ দিনের হলেও দুঃখজনকভাবে অনেক মসজিদে ইদানিং চোখে পড়ছে এর বিপরীত চিত্রও। বাচ্চারা মসজিদে একটু কথা বলে উঠলে মুহূর্তেই পাল্টে যায় অবস্থা। পরিস্থিতি পরিগ্রহ করে ভয়ঙ্কর একটি রূপ। বয়স্ক কিছু লোককে মারমুখী হয়ে তেড়ে আসতে দেখা যায় বাচ্চাদের দিকে। ভয়ভীতি দেখিয়ে তাদেরকে মসজিদ থেকে দূরে সরিয়ে দেয়ার চেষ্টা পরিলক্ষিত হয়। ধমকাতে দেখা যায় শিশুদেরকে। এমনকি তদেরকে গালিগালাজ পর্যন্ত করতে দেখা যায় কোথাও কোথাও। বস্তুতঃ বাচ্চাদেরকে ধমক দেয়া, শাসনের নামে তাদেরকে ভয়ভীতি প্রদর্শন করার মাধ্যমে তাদের কোমল হৃদয়ে আঘাত দেয়া মোটেই সঠিক কোনো পদ্ধতি নয়। গ্রহণযোগ্যও নয় কোনো বিচারেই। এসব কাজে মসজিদ কমিটির লোকজনকে প্রায়ই অগ্রণী ভূমিকায় দেখা যায়। এমনকি মসজিদ কমিটির দায়িত্বশীল নন এমন লোককেও বাচ্চাদেরকে কোনো কোনো মসজিদে ধমকাতে দেখা যায়। আতঙ্কিত হওয়ার মত বিষয় হচ্ছে, কোথাও কোথাও মসজিদে বাচ্চাদের গায়ে হাত তোলার ঘটনাও অহরহ ঘটে। উপরন্তু বাচ্চাদেরকে মসজিদে নিয়ে আসার অপরাধে অভিভাবকদের পর্যন্ত শাসানো হয়। এসব ঘটনা সচরাচরই এখন প্রত্যক্ষ করা যায়।

প্রশ্ন হচ্ছে, বাচ্চাদের মসজিদে নিয়ে আসার বিষয়ে ইসলামী শরিয়াহ কী বলে? চলুন, এই বিষয়টি হাদিস এবং সীরাতের আলোকে অনুধাবন করার চেষ্টা করি।

ছোট বাচ্চাদের মসজিদে নিয়ে যাওয়ার গুরুত্ব বা তাৎপর্য কী?

প্রথম কথা হচ্ছে, ছোট বাচ্চাদের সঙ্গে নিয়ে মসজিদে নামাজ পড়তে আসার প্রয়োজন আদৌ আছে কি না। অথবা, এর কোনো গুরুত্ব, তাৎপর্য বা বিশেষত্ব রয়েছে কি না। এর উত্তর জানতে আমরা একটি হাদিসের নির্দেশনা অনুধাবন করে দেখতে পারি, যে হদিসে বলা হয়েছে-

«مُرُوا أوْلاَدَكُمْ بِالصَّلاةِ وَهُمْ أبْنَاءُ سَبْعِ سِنينَ، وَاضْرِبُوهُمْ عَلَيْهَا، وَهُمْ أبْنَاءُ عَشْرٍ، وَفَرِّقُوا بَيْنَهُمْ في المضَاجِعِ»

তোমরা নিজেদের সন্তান-সন্ততিদেরকে নামাজের আদেশ দাও; যখন তারা সাত বছরের হবে। আর তারা যখন দশ বছরের সন্তান হবে, তখন তাদেরকে নামাজের জন্য প্রহার কর এবং তাদের বিছানা পৃথক করে দাও। -আবু দাউদ, সনদ: হাসান। রিয়াযুস সালিহীন, হা/৩০৬, অধ্যায়: ১/ বিবিধ (كتاب المقدمات) তাওহীদ পাবলিকেশন

⁠উল্লেখ্য যে, সাত বছরের শিশু বলতে বুঝায়, যার বয়স সাত বছর পূর্ণ হয়ে আট বছর সূচনা হয়েছে।

প্রসঙ্গতঃ রোজার ক্ষেত্রে তা তাদের শারীরিক সক্ষমতার দিকে খেয়াল রেখে নির্দেশ প্রদান করতে হবে। (এ ক্ষেত্রে কোনও কোনও আলেম দশ বছরের কথা বলেছেন)। যেমন: হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, সাহাবিগণ তাদের বাচ্চাদেরকে বাল্য বয়সে রোজা রাখার ব্যাপারে উৎসাহিত করতেন এবং তাদেরকে মসজিদে নিয়ে যেতেন।

উপরোক্ত হাদিসের নির্দেশনা মোতাবেক বুঝা যায় যে, শিশুর সাত বছর বয়স পূর্ণ হলে তাকে নামাজের নির্দেশ দিতে বলা হয়েছে। একটু চিন্তা করলে খুব সহজেই বুঝা যায় যে, ৭ বছরের ছোট শিশুকে নির্দেশ দেয়ার অর্থ হচ্ছে, তাকে নামাজে অভ্যস্ত করে তুলতে সচেষ্ট হওয়া। তাকে সাথে নিয়ে নামাজে দন্ডায়মান হওয়া। নামাজের সাথে তার পরিচয় ঘটিয়ে দিতে করণীয়গুলোতে সচেষ্ট থাকা। এরপরে একই হাদিসের শেষাংশে 'শিশু ১০ বছর বয়সে উপনীত হয়েও নামাজে অভ্যস্ত না হলে তাকে নামাজে অবহেলার কারণে মৃদু শাস্তি প্রদানের কথাও' বলা হয়েছে।

অত্র হাদিসে শিশুদের শাস্তি প্রদানের নির্দেশনায় কারও কারও আপত্তি থাকতে পারে বিধায় বিষয়টি একটু খোলাসা করা প্রয়োজন। মূলতঃ এখানে এমন হাল্কা শাস্তির কথা উদ্দেশ্য, যা নামাজের গুরুত্ব উপলব্ধিতে বাচ্চাদের জন্য সহায়ক হয় এবং তাদেরকে নামাজে অভ্যস্ত করে তুলতে সাহায্য করে। কারণ, ইসলামী শরিয়তের হুকুম অনুসারে প্রাপ্ত বয়স্ক না হওয়া পর্যন্ত একটি বাচ্চার আমল বাধ্যতামূলক নয়। যেমন, উম্মুল মুমিনীন আয়েশা রা. সূত্রে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

رُفِعَ الْقَلَمُ عَنْ ثَلَاثَةٍ: عَنِ النَّائِمِ حَتَّى يَسْتَيْقِظَ، وَعَنِ المُبْتَلَى حَتَّى يَبْرَأَ، وَعَنِ الصَّبِيِّ حَتَّى يَكْبُرَ

তিন ধরণের লোকের উপর থেকে কলম উঠিয়ে নেয়া হয়েছে। যথা: ১. ঘুমন্ত ব্যক্তি, যতক্ষণ না জাগ্রত হয়, ২. অসুস্থ (পাগল) ব্যক্তি, যতক্ষণ না আরোগ্য লাভ করে এবং ৩. অপ্রাপ্ত বয়স্ক বালক, যতক্ষণ না প্রাপ্তবয়স্ক হয়। -সুনান আবু দাউদ (তাহকিক কৃত) ৩৩/ অপরাধ ও তার শাস্তি, পরিচ্ছেদ: ১৬. পাগল চুরি বা দণ্ডযোগ্য অপরাধ করলে-সহিহ

তো, হাদিসের ভাষ্য চিন্তা করলেই বুঝা যায় যে, ১০ বছর বয়সে একটি শিশুর নামাজে অভ্যস্ত হয়ে ওঠার কথা উঠে এসেছে এই হাদিসে। এখানে প্রথম প্রশ্ন হচ্ছে, তার এই অভ্যাসটি গড়ে উঠবে কখন? হাদিসের বক্তব্যেই এ বিষয়টি পরিষ্কার যে, নামাজের এই অভ্যাসটি তার ভেতরে গড়ে উঠবে তার ৭ বছর বয়সের পর থেকেই। অর্থাৎ, ৭, ৮ এবং ৯, দীর্ঘ এই তিন/ চারটি বছরের প্রাকটিসেই তার ভেতরে নামাজের একটি অভ্যাস তৈরি হবে। দ্বিতীয় প্রশ্ন, এই অভ্যাসটি তৈরি হবে কোথায় এবং কীভাবে? সে কোথায় নামাজ পড়ে তার এই অভ্যাসে অভ্যস্ত হয়ে উঠবে? তার বাসায়? ঘরে কিংবা বাড়িতে? না কি, মসজিদে? এর উত্তর হচ্ছে, হ্যা, তার ভেতরে নামাজের এই অভ্যাস গড়ে তুলতেই তাকে নামাজের নিয়মিত প্রাকটিসে অংশ নেয়ার সুযোগ করে দিতে হবে বাসা বাড়িতে এবং তাকে নিয়ে যেতে হবে মসজিদেও। বাসা বাড়িতে বড়দের সাথে সাথে সেও দাড়িয়ে যাবে নামাজের মুসল্লায়। যাবে মসজিদেও। বিশেষতঃ মসজিদের পরিবেশে গিয়ে সে অন্যদের নামাজ দেখবে, দেখতে দেখতে উৎসাহিত হবে, বিশ্বজাহানের মালিকের সামনে আত্মসমর্পনে নিজেকে অবনত করতে শিখবে, এভাবেই শিশু পৃথিবীর আলো বাতাসের সংস্পর্শে আসার পরে কোনো একটি দিন প্রথমবার সিজদায় অবনমিত করবে তার মস্তক- এভাবেই অন্যদের নামাজ আদায়ের দৃশ্য দেখে দেখে প্রাকটিস করতে থাকবে নিজেও। আর মুসল্লিদের সাথে নামাজে অংশগ্রহণ করতে করতে একসময় সেও শিখে নিবে নামাজ। এর মাধ্যমেই তার ভেতরে গড়ে উঠবে নামাজের অভ্যাস এবং নামাজ কন্টিনিউ করে যাওয়ার ঐকান্তিক অভ্যস্ততা। তার ভেতরে তৈরি হবে নামাজের প্রতি একনিষ্ঠতা, একাগ্রতা ও ঝোক। তার কচি কোমল অন্তরে স্থান করে নিবে নামাজ আদায়ের গুরুত্ব ও আহমিয়াত।

তো, আমরা যারা ছোট শিশুদের মসজিদে নিয়ে যাওয়ার বিষয়টিকে মামুলি জ্ঞান করে থাকি, আমাদের জন্য উপরোল্লিখিত হাদিস বিশেষভাবে অনুধাবনযোগ্য। শিশুর ৭ বছর বয়সে তাকে নামাজ আদায়ের নির্দেশ প্রদান করা এবং ১০ বছর বয়সে উপনীত হওয়ার পরেও নামাজে অভ্যস্ত হয়ে না উঠলে তাকে মৃদুমন্দ শাসনের আওতায় আনার যে কথা হাদিসে এসেছে- এই নির্দেশনার অনুশীলন এবং বাস্তবায়ন শিশুর মসজিদে গমনের পথকে পুরোপুরিভাবে কন্টকমুক্ত করার মাধ্যমেই যে সম্ভব, একটু গভীরভাবে চিন্তা করলেই বিষয়টি দিবালোকের মত স্পষ্ট হয়ে যায়।

শিশুবেলায় মসজিদে যাতায়াত, অন্তরে স্থায়ী আসন গড়ে নেয়ঃ

ছোট শিশু-কিশোররা একা চলাফেরায় সক্ষম নয় বলেই তাদেরকে মসজিদে আসতে হয় তাদের বাবা, চাচা, মামা কিংবা বড় ভাই শ্রেণির অভিভাবকদের সঙ্গে। অভিভাবকদের সাথে নামাজ আদায় করতে আসে তারা। আর এভাবেই তারা ধীরে ধীরে অভ্যস্ত হয়ে ওঠে মসজিদে আসতে। ছোট বাচ্চাদের এভাবে মসজিদে আসা একটি দীর্ঘ পারিবারিক ও ধর্মীয় ঐতিহ্য। অন্ততঃ আমাদের সমাজের এটাই সুদীর্ঘকালের বাস্তবতা। কোমলমতি শিশু-কিশোররা এভাবে মসজিদমুখী হয়ে নামাজের গুরুত্ব অনুধাবনের সুযোগলাভ করে। শিখে নিতে পারে দ্বীনের বিভিন্ন বিষয়। শিশুবেলায় এই যে তাদের মসজিদে যাতায়াত, এটি তাদের কোমল-কচি অন্তরে স্থায়ী আসন গড়ে নিতে সক্ষম হয়। বিশ্বাস করুন, তারা বড় হয়ে কোনো কারণে যদি নামাজ ছেড়েও দেয়, কোনো পরিস্থিতি যদি তাদেরকে নামাজ এবং মসজিদ থেকে দূরে সরিয়েও নেয়; তাদের ভেতরে সুপ্ত হয়ে থাকা ঐ যে ছোটবেলার মসজিদে যাতায়াতের স্মৃতি, শিশুবেলার নামাজের উদ্দেশ্যে মসজিদে গমনের সেই সুখস্মৃতি তাদেরকে পুনরায় মসজিদমুখী করে দিতে সুবিশাল ভূমিকা রাখে। পথ হারাতে হারাতেও তারা পথ পেয়ে যায়। পথহারা হয় না। ভুল পথে পা বাড়াতে বাড়াতে তারা আবারও ফিরে আসে সঠিক পথে।

সাহাবিগণ তাদের বাচ্চাদেরকে মসজিদে নিয়ে যেতেনঃ

রুবাঈ বিনত মুয়াওবিয ইবনে আফরা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,

فَكُنَّا بَعْدَ ذَلِكَ نَصُومُهُ وَنُصَوِّمُ صِبْيَانَنَا الصِّغَارَ مِنْهُمْ إِنْ شَاءَ اللَّهُ وَنَذْهَبُ إِلَى الْمَسْجِدِ فَنَجْعَلُ لَهُمُ اللُّعْبَةَ مِنَ الْعِهْنِ فَإِذَا بَكَى أَحَدُهُمْ عَلَى الطَّعَامِ أَعْطَيْنَاهَا إِيَّاهُ عِنْدَ الإِفْطَارِ ‏

অত:পর আমরা এ দিন (আশুরার দিন) সাওম পালন করতাম এবং আমাদের ছোট ছোট সন্তানদেরকেও আল্লাহ চাহে তো সাওম পালনে অভ্যস্ত করে তুলতাম। আমরা তাদেরকে মসজিদে নিয়ে যেতাম এবং তাদের জন্য পশমের খেলনা বানিয়ে দিতাম। যখন তারা খাওয়ার জন্য কাঁদত, তখন আমরা তাদেরকে সে খেলনা প্রদান করতাম। এমনি করে ইফতারের সময় হয়ে যেত। -সহীহ মুসলিম (ইসলামিক ফাউন্ডেশন), অধ্যায়: ১৪/ সিয়াম (রোজা) পরিচ্ছেদ: ১৯. আশুরার দিনে কেউ ভোরে খেয়ে ফেললে অবশিষ্ট সময় সে পানাহার থেকে বিরত থাকবে

শিশুদেরকে মসজিদ থেকে দূরে রাখার নীতি; বাধাগ্রস্ত করছে ইসলামের চিরন্তন চেতনার বিকাশকেঃ

‘শিশু-কিশোররা বড়দের কাতারে একসাথে দাড়িয়ে নামাজ পড়লে নামাজ মাকরুহ হয়ে যাবে’ -বলে একটি কথা আমাদের সমাজে বহুল প্রচলিত। এই প্রচলিত কথার উপরে ভিত্তি করে অনেক মুসল্লিকেই দেখা যায়, তারা নিজেদের 'নামাজকে মাকরুহমুক্ত রাখতে' ছোট শিশু দেখলেই তাদেরকে ধুর-ধুর করে তাড়িয়ে দেন। তাদের অন্তরে ভয়, পাশে শিশু দাড়ানোর কারণে নিজের নামাজ মাকরুহ হয়ে যায় কি না! বলাবাহুল্য, বাংলাদেশের অধিকাংশ মসজিদের চিত্রই এমন। অধিকাংশ মুসল্লিদের ভাবনাও যে এমন- সে কথা আর বলারই অপেক্ষা রাখে না! বলতে দ্বিধা নেই, বাচ্চারা এ ধরনের নেতিবাচক আচরণে ক্রমশঃ যে মসজিদবিমুখ হয়ে পড়ে, মসজিদের প্রতি বিতশ্রদ্ধ হয়ে ওঠে তাদের কচি অন্তর, তাতে সন্দেহের অবকাশ নেই। অনেক বাচ্চাকে এমনও দেখা গেছে যে, নামাজ পড়ার জন্য মসজিদে যাওয়ার কথা বললে তারা আঁতকে ওঠে। ভয় পায়। কেন এমন পরিস্থিতির উদ্ভব হচ্ছে? শিশুবয়সে এমন কষ্টদায়ক কিছু স্মৃতি আমাদেরও কমবেশি হয়তো অনেকেরই ছিল। ছোটবেলায় একবার বাংলাদেশের একটি বিভাগীয় শহরের কোনো এক মসজিদে নামাজ পড়তে গিয়ে এক বয়ষ্ক লোকের হাতে এমন কঠিনভাবে চিমটি খেয়েছিলাম যে, কনুইয়ের উপরের দিকের হাতের চামড়ায় দাগ বসে গিয়েছিল। বয়সে ছোট হওয়ায় এবং বয়স্ক কোনো অভিভাবক তখন সাথে না থাকায় প্রতিবাদ করতে পারিনি সে দিন। কান্নারত অবস্থায় বাসায় ফিরে গেলেও দীর্ঘ দিন মসজিদের প্রতি মনের ভেতর এক ধরণের ভীতি কাজ করেছিল সেই ঘটনায়। তাই আমাদের মনে রাখা দরকার যে, বাচ্চাদের প্রতি এই ধরণের রূঢ় আচরণ, তাদেরকে ধমকানো, তাদের প্রতি মাত্রাতিরিক্ত কঠোরতা আরোপ কিংবা অন্যায় ও অন্যায্য ব্যবহার তাদের কচি মনে মসজিদ এবং মসজিদের মুসল্লিদের আচার আচরণ এবং ব্যবহার সম্পর্কে অভাবনীয় নেতিবাচক একটি ধারণার সৃষ্টি করছে, যার প্রতি আমাদের অনেকেই হয়তো তেমন ভ্রুক্ষেপ নেই। এভাবে চলতে থাকলে এই শিশু-কিশোররা হয়তো ভবিষ্যতে সহজেই আর মসজিদমুখী হতে চাইবে না, কিংবা সাহসী হবে না। মসজিদে শিশুদের প্রতি এসব অন্যায় আচরণ কোনভাবেই কাম্য নয়। নেতিবাচক এসব আচরণ শিশুদের অধিকারকেই শুধু খর্ব করছে না, বরং একটি ঐতিহ্যবাহী ধর্মীয় শিক্ষাকেও ম্লান করে দিচ্ছে। বাধাগ্রস্ত করছে ইসলামের চিরন্তন চেতনার বিকাশকে। অধিকন্তু আমাদের কচিকাচা ও ছোট সোনামনিদের বঞ্চিত করছে ইসলামের আলো এবং প্রভা থেকে।

মসজিদে বাচ্চাদের সাথে রাসূলে কারিম স. -এর অনিন্দ্য কিছু স্মৃতিঃ

এবার চলুন, দেখে নিই মসজিদে বাচ্চাদের সাথে রাসূলে কারিম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর আচরণ কেমন ছিল। নবী কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শিশুদের প্রতি ছিলেন সর্বাধিক স্নেহপ্রবন। সবচেয়ে দরদী। সবার থেকে প্রিয়জন। মসজিদে কিংবা মসজিদের বাইরে, সর্বাবস্থায়ই শিশুদের প্রতি সর্বাধিক কোমল আচরণের প্রকাশ লক্ষ্য করা যেত তার থেকে। তিনি শিশুদেরকে আনন্দ দিতেন; কখনও কখনও আপন পরিবারের শিশুদেরকে কাঁধে চড়িয়ে আদর পর্যন্ত করতেন। তাদের আহ্লাদ-আবদার পুরন করতেন। যেমন, এক হাদিসে বর্ণিত হয়েছে-

حَدَّثَنَا أَبُو قَتَادَةَ، قَالَ خَرَجَ عَلَيْنَا النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم وَأُمَامَةُ بِنْتُ أَبِي الْعَاصِ عَلَى عَاتِقِهِ، فَصَلَّى فَإِذَا رَكَعَ وَضَعَهَا، وَإِذَا رَفَعَ رَفَعَهَا‏

আবূ ক্বাতাদাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ একদা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের সম্মুখে আসলেন। তখন উমামাহ বিনতি আবুল ’আস (নবীজীর কন্যা যয়নব রা. -এর মেয়ে) তাঁর কাঁধের উপরে ছিলেন। এই অবস্থায় নবী কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সালাতে দন্ডায়মান হলেন। যখন তিনি রুকূতে যেতেন, তাকে নামিয়ে রাখতেন, আবার যখন উঠে দাঁড়াতেন, তখন তাকেও উঠিয়ে নিতেন। -সহীহ বুখারী, হাদীস নং আধুনিক প্রকাশনী-৫৫৬১, ইফা প্রকাশনী- ৫৪৫৭; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৫৪৩; সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ৯১৮; সুনানে নাসায়ী, হাদীস ৮২৭, ১২০৫

অপর এক হাদিসে বর্ণিত হয়েছে,

حَدَّثَنِي عَبْدُ اللَّهِ بْنُ بُرَيْدَةَ، أَنَّ أَبَاهُ، حَدَّثَهُ قَالَ رَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ يَخْطُبُ فَأَقْبَلَ حَسَنٌ وَحُسَيْنٌ عَلَيْهِمَا قَمِيصَانِ أَحْمَرَانِ يَعْثُرَانِ وَيَقُومَانِ فَنَزَلَ النَّبِيُّ ـ صلى الله عليه وسلم ـ فَأَخَذَهُمَا فَوَضَعَهُمَا فِي حِجْرِهِ فَقَالَ ‏"‏ صَدَقَ اللَّهُ وَرَسُولُهُ ‏(إِنَّمَا أَمْوَالُكُمْ وَأَوْلاَدُكُمْ فِتْنَةٌ)‏ رَأَيْتُ هَذَيْنِ فَلَمْ أَصْبِرْ ‏"‏ ‏.‏ ثُمَّ أَخَذَ فِي خُطْبَتِهِ ‏.‏

আবদুল্লাহ ইবনে বুরাইদা (রাঃ) থেকে তার পিতার সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খুতবা দিচ্ছিলেন। তখন (শিশু) হাসান ও হোসাইন (রাঃ) লাল জামা পরিহিত অবস্থায় আছাড়-পাছাড় খেতে খেতে সামনে এসে দাঁড়ালেন। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মিম্বার থেকে নেমে এসে তাদের উভয়কে তাঁর কোলে তুলে নিলেন এবং বললেনঃ আল্লাহ ও তাঁর রাসূল সত্য বলেছেন, ’’তোমাদের সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি তো পরীক্ষা বিশেষ ’’ (সূরা তাগাবুনঃ ১৫)। এ দু’জনকে দেখে আমি ধৈর্য ধারণ করতে পারলাম না। অতঃপর তিনি আবার খুতবা দিতে শুরু করেন। -ইবনে মাযাহ ৩৬০০, তিরমিযী ৩৭৭৪, নাসায়ী ১৪১৩, আহমাদ ২২৪৮৬, সহীহ আবু দাউদ ১০১৬ হাদিসের মান- সহীহ তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ২০৯৫, ১০/৪০ নং পৃষ্ঠা

নাতনিকে কাঁধে নিয়ে রাসূলের ইমামতির বিপরীতে মসজিদে শিশুদের ঢুকতে না দেয়ার আমাদের নীতিঃ

এখন প্রশ্ন হলো, রাসূলে কারিম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যদি নিজের নাতনিকে কাঁধে নিয়ে ইমামতি করতে পারেন, তাহলে আমাদের ছেলেমেয়েদের মসজিদে নিয়ে আসতে দোষ কী? তারা মসজিদে এলে কোন যুক্তিতে আমরা বড়রা তাদেরকে বকাঝকা করে থাকি কিংবা ধমক প্রদান করি? কোথায় পেলাম আমরা এই ধমক দেওয়ার কিংবা শিশুদেরকে তাদের জায়গা থেকে উঠিয়ে দেওয়ার শিক্ষা? এই ব্যবহার কি ইসলামের মূল আবেদনকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে না? এ কথা স্বীকার করতেই হবে যে, ছোট বাচ্চারা মসজিদে এসে দুষ্টুমি করে কিংবা হাসিঠাট্টা বা গল্পগুজবও করে। এসব কারণে বড়দের নামাজ বা অন্যবিদ ইবাদত আমলে একটু আধটু ব্যাঘাতও ঘটে। কথা হচ্ছে, ছোটদের অভ্যাসই তো এমন। এ ক্ষেত্রে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আমাদের করণীয় কী? চলুন, জেনে নিই কিছু করণীয়ঃ

মসজিদে ছোট বাচ্চাদের শামলে রাখতে বড়দের যা করা উচিতঃ

ছোট বাচ্চাদের কয়েকজন যাতে একসঙ্গে মিলে বসতে না পারে, সেটি নিশ্চিত করতে হবে। কারণ, তারা কয়েকজন একত্রে বসার সুযোগ পেলেই সাধারণতঃ মসজিদে অনভিপ্রেত আচরণগুলো করার সুযোগ পায়। এ জন্য তাদেরকে যদি বড়দের কাতারের মাঝে মাঝে জায়গা করে দেয়া হয়, তাহলে আর কোনো সমস্যা থাকার কথা নয়। বড়দের সঙ্গে থাকলে তারা আর হাসাহাসি বা দুষ্টুমি করার সুযোগই পাবে না। এভাবে স্নেহ, আদর ও ভালোবাসা দিয়ে মসজিদে আসা শিশু-কিশোরদের অভ্যাস পরিবর্তন করানোর চেষ্টা করতে হবে; কোনো অবস্থায়ই তাদেরকে ধমক দিয়ে কিংবা বকাঝকা করে নয়। এ ব্যাপারে আমরা প্রত্যাশা এবং অনুরোধ রাখবো, মসজিদের সম্মানিত ইমাম এবং খতিব মহোদয়গণ স্বপ্রণোদিত হয়ে যাতে মুসল্লিদের সামনে অতি গুরুত্বপূর্ণ এই বিষয়টি নিয়ে যথাযথভাবে আলোচনা করেন। এর মাধ্যমে আশা করা যায়, সকলের ভ্রান্তি নিরসন করা সম্ভব হবে এবং শিশুদের ন্যায়সঙ্গত একটি অধিকারও প্রতিষ্ঠিত ও সমুন্নত হতে ভূমিকা রাখবে।

একেবারে অবুঝ শিশুকে মসজিদে আনা বিধেয় নয়ঃ

একেবারে ছোট ও অবুঝ শিশু, যারা মসজিদের আদব, সম্মান এবং নামাজের গুরুত্বের জ্ঞান রাখে না, তাদের মসজিদে আনা উচিত নয়। কেননা এতে সাধারণত মুসল্লিদের নামাজে বিঘ্ন ঘটে। এ জন্যই হাদিসে এসেছে, হযরত ওয়াসিলা রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু সূত্রে বর্ণিত, রাসূলে কারিম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, ‘তোমরা তোমাদের মসজিদকে অবুঝ শিশু ও পাগলদের থেকে দূরে রাখো, তদ্রূপ ক্রয়-বিক্রয়, বিচার-আচার, উচ্চস্বর, দণ্ডদান ও তরবারি কোষমুক্ত করা থেকে বিরত থাকো।’ -ইবনে মাজাহ, হাদিস: ৭৫০

অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়, শিশুরা না বুঝে মসজিদের আদব বহির্ভূত কিছু কাজ করে ফেলে। উচ্চৈঃস্বরে কথাবার্তা, হৈ-হুল্লোড় বা পরস্পর এমন আচরণ করে থাকে, যেগুলো মসজিদের আদবপরিপন্থী। একটি হাদিসে মসজিদে উচ্চ আওয়াজ ও চেঁচামেচিকে কিয়ামতের নিদর্শন হিসেবে উল্লিখিত হয়েছে। এমনকি কিছু বাচ্চা মসজিদে এসে প্রস্রাব-পায়খানাও করে দিতে দেখা যায়। শিশুরা অবুঝ বলে এতে তাদের গুনাহ না হলেও শিশুদেরকে এ সুযোগ করে দেওয়ায় বড়দের গুনাহগার সাব্যস্ত হওয়ার একটি ভয় থেকে যায়।

শিশুদের ভীত ও আতঙ্কিত করা যাবে নাঃ

রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ছিলেন শিশুদের প্রতি সর্বাধিক স্নেহপ্রবন। শিশুদের ভয়ভীতি প্রদর্শন বা তাদেরকে আতঙ্কিত করা তিনি পছন্দ করতেন না। একটি হাদিসের প্রতি লক্ষ্য করলে আমাদের সম্যক ধারণা নেয়ার সুযোগ হবে যে, শিশুদের প্রতি তার অন্তর কতটা প্রশস্ত ছিল। সাহাবি আবু লায়লা রা. বলেন, আমি রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট বসা ছিলাম। হাসান বা হুসাইন নবীজীর বুকে বসা। হঠাৎ দেখি সে ফিনকি দিয়ে পেশাব করছে। (তাকে সরানোর জন্য) আমরা উঠলাম। তিনি বললেন-

دَعُوا ابْنِي، لَا تُفْزِعُوهُ حَتّى يَقْضِيَ بَوْلَهُ.

আমার ছেলেকে (নাতিকে) পেশাব শেষ করতে দাও। তাকে আতঙ্কিত করো না; পেশাব শেষ করতে দাও। -মুসনাদে আহমাদ, হাদীস ১৯০৫৯

ভাবা যায়, শিশুদের প্রতি প্রিয় নবীজীর কোমল হৃদয় কতটা প্রশস্ত ছিল! কতখানি হৃদ্যতার পরশে তিনি শিশুদের প্রতি সিক্ত ছিলেন।

শিশুদের অপ্রীতিকর আচরণ উদারচিত্তে বরদাশত করা প্রিয় নবীজীর অভ্যাসঃ

শিশুদের থেকে অপ্রীতিকর কিছু প্রকাশ হলে তা বরদাশত করা ছিল প্রিয় নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের অনন্য অভ্যাস। উম্মুল মুমিনীন আয়েশা রা. বলেন- নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট শিশুদের নিয়ে আসা হত। তিনি তাদের জন্য বরকতের দুআ করতেন এবং তাহনীক করতেন। খেজুর ইত্যাদি ভালো করে চিবিয়ে শিশুর মুখে সামান্য একটু দেয়াকে তাহনীক বলে।

إِنّ النّبِيّ صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلّمَ أُتِيَ بِصَبِيٍّ لِيُحَنِّكَهُ، فَأَجْلَسَهُ فِي حَجْرِهِ، فَبَالَ عَلَيْهِ، فَدَعَا بِمَاءٍ، فَأَتْبَعَهُ إِيّاهُ.

একদিন এক শিশুকে তাহনীক করার জন্য তাঁর কাছে আনা হল। তিনি শিশুটিকে কোলে বসালেন। শিশুটি তাঁর কোলে পেশাব করে দিল। তখন নবীজী পানি আনিয়ে কাপড়ে পানি ঢেলে দিলেন। -সহীহ বুখারী, হাদীস ২২২, ৬৩৫৫; সহীহ মুসলিম, হাদীস ২৮৬; মুসনাদে আহমাদ, হাদীস ২৪২৫৬

উম্মে কায়স বিনতে মিহসান রা. নিজের ঘটনা শুনিয়েছেন-

... أَتَتْ رَسُولَ اللهِ صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلّمَ بِابْنٍ لَهَا لَمْ يَأْكُلِ الطّعَامَ فَوَضَعَتْهُ فِي حَجْرِهِ فَبَالَ، قَالَ: فَلَمْ يَزِدْ عَلَى أَنْ نَضَحَ بِالْمَاءِ.

তিনি নিজের দুগ্ধপোষ্য শিশুকে এনে নবীজীর কোলে দেন। শিশুটি তাঁর কোলে পেশাব করে দেয়। নবীজী তাতে কেবল একটু পানি ঢেলে দিলেন। -সহীহ মুসলিম, হাদীস ২৮৭

আমরা কি ভাবতে পারি, দোজাহানের বাদশা প্রিয় নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হৃদয়ে শিশুদের প্রতি অন্তহীন মমতার কি এক অচিন্তণীয় প্রস্রবন সদা বহমান ছিল। ছোট ছোট শিশুরা তার কোলে পেশাব করে দেয়, তিনি না একটু বিরক্তি প্রকাশ করেন, আর না সামান্য রেগে গেছেন। শিশুদের অপ্রীতিকর যে কোন বিষয়েই নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হৃদয় এমনই উদার এবং ভালোবাসায় পূর্ণ ছিল!

শিশুর ভুলভ্রান্তিতে বিরক্তি প্রকাশ না করাঃ

হাসি আনন্দের প্রতীক নিষ্পাপ শিশুরা ফুলের সাথে তুলনীয়। একটি শিশু বয়সের দিক থেকে যেমন শিশু, তেমনি বুঝ, জ্ঞান, বুদ্ধি সবকিছুতেই তার শিশুসুলভ আচরণই প্রত্যাশিত। তার কাজকে শিশুর কাজই ধরে নিতে হবে। তার কথাকেও মনে করতে হবে, এটা শিশুর কথা। এই বিষয়গুলো মনে রাখলে খুব সহজেই বিবেচনায় রাখা সম্ভব যে, শিশুদের কথা, কাজ, চলাফেরা সবকিছুতেই ভুল হওয়া স্বাভাবিক। তাদের ভুল-ভ্রান্তির জন্য ধমক দেওয়া, তিরস্কার করা বা বিরক্তি প্রকাশ করা উচিত নয়। হাঁ, তাদের সংশোধনের উদ্দেশ্যে কোমল শাসন তো করতেই হবে, যাতে তারা সচেতন হয়। তবে তা অবশ্যই হতে হবে সস্নেহ এবং হৃদ্যতাপূর্ণ; ধিক্কার, তিরষ্কার বা ধমক দিয়ে নয়।

আনাস ইবনে মালেক রা. বলেন, আমি দশ (বা নয়) বছর নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের খেদমত করেছি-

وَاللهِ مَا قَالَ لِي: أُفّا قَطّ وَمَا قَالَ لِشَيْءٍ صَنَعْتُهُ: لِمَ فَعَلْتَ كَذَا وَكَذَا؟ أَوْ لِشَيْءٍ تَرَكْتُهُ: هَلّا فَعَلْتَ كَذَا وَكَذَا ؟

আল্লাহর কসম! কোনো দিন আমাকে ‘উফ’ বলেননি। আমি (অযাচিত) কোনো কিছু করে ফেললে বলেননি- এটা কেন করলে? তেমনি কোনো কাজ না করলে বলেননি- এটা কেন করলে না? -সহীহ মুসলিম, হাদীস ২৩০৯; সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ৪৭৭৩

আনাস রা. আরো বলেন-

خَدَمْتُ النّبِيّ صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلّمَ عَشْرَ سِنِينَ، فَمَا أَمَرَنِي بِأَمْرٍ فَتَوَانَيْتُ عَنْهُ، أَوْ ضَيّعْتُهُ، فَلَامَنِي، فَإِنْ لَامَنِي أَحَدٌ مِنْ أَهْلِ بَيْتِهِ إِلّا قَالَ: دَعُوهُ، فَلَوْ قُدِّرَ - أَوْ قَالَ: لَوْ قُضِيَ - أَنْ يَكُونَ كَانَ.

আমি দশ বছর নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের খেদমত করেছি। তিনি কোনো নির্দেশ দিলে যদি অবহেলা করতাম বা জিনিসটা নষ্ট করে ফেলতাম তাহলে তিনি আমাকে তিরষ্কার করতেন না। তার পরিবারের কেউ কিছু বললে তিনি বলতেন, ওকে কিছু বলো না; তাকদীরে যা আছে তা ঘটবেই। -মুসনাদে আহমাদ, হাদীস ১৩৪১৮

নামাজের কাতারে শিশুদের অবস্থানঃ

এইক্ষেত্রে অপ্রাপ্ত বয়স্ক বাচ্চারা নামাযের কাতারে কোথায় দাঁড়াবে, সেটাও জেনে নেয়া প্রয়োজন। এর উত্তর হচ্ছে, যদি নাবলেগ বাচ্চা একজন হয় তাহলে তাকে বড়দের সাথে একই কাতারে দাঁড় করাতে হবে। আর যদি বাচ্চাদের সংখ্যা একাধিক হয় তাহলে তাদেরকে বড়দের পিছনে ভিন্ন কাতারে দাঁড় করানো মুস্তাহাব। বর্তমান সময়ে বাচ্চারা যেহেতু বেশী চঞ্চল তাই তাদের বড়দের একই কাতারে দাঁড় করানো উচিত। কিংবা যদি শিশুদের হৈ চৈ বা দুষ্টুমি করার আশংকা থাকে, তাহলে অভিভাবকরা তাদের যার যার শিশুকে পাশে নিয়ে দাঁড়াবেন। কান্নাকাটি করে এমন ছোট শিশু হলে অভিভাবক কাতারের এক পাশে তাকে দিয়ে দাঁড়াবেন।

এইক্ষেত্রে মুস্তাহাব আমল করতে গিয়ে ফরজ নামাজেও অনেক সময় সমস্যার সৃষ্টি হয়। বাচ্চাদেরকে পেছনের কাতারে দাড় করানো মুস্তাহাব বিবেচনায় সকল বাচ্চাদের পেছনের কাতারে দাড় করিয়ে নামাজ শুরু করা হয়। পরে দেখা যায়, নামাজের মধ্যে পরস্পর হাসাহাসি, ছোটাছুটির সুযোগটি তারাও ভালোভাবে পুরোপুরি পেয়ে যায়। এসবের পেছনে কারণ মূলতঃ বিষয়গুলোকে সঠিকভাবে হৃদয়াঙ্গম না করা কিংবা বড়দের যথাযথ সচেতনতার ঘাটতি। -আদদুররুল মুখতার ২য় খ- পৃষ্ঠা ৩০৯-১৪, আল বাহরুর রায়েক খ ১ম পৃ ৬১৮, হাশিয়াতুত তাহতাভি পৃ ৩০৮, ফাতাওয়া তাতারখানিয়া খ ১ম পৃ ৩৯০, ফাতাওয়া আলমগীরি খ ১ম পৃ ৮৮,৮৯, আল জাওহারাতুন নাইয়্যিরাহ খ ১ম পৃ ১৬৩, তাকরীরাতুর রাফেয়ী খ ২য় পৃ ৭৩, জামেউল ফাতাওয়া, ইসলামী ফিক্হ ও ফাতওয়া বিশ্বকোষ

অপ্রাপ্ত বয়স্ক শিশুদেরকে নামাজ-রোজার নির্দেশ দেয়া এবং তাদেরকে দীনও শেখানো পিতা-মাতা ও অভিভাবকের অপরিহার্য দায়িত্ব:

অপ্রাপ্ত বয়স্ক শিশুদেরকে বাল্য বয়স থেকেই নামাজ-রোজা, ওজু-গোসল, পাক-পবিত্রতা, পর্দা, মাহরাম-নন মাহরাম পার্থক্য, তাওহিদ-শিরক, সুন্নত-বিদআত, ইমান-কুফর ইত্যাদি বিষয়ে জ্ঞান দান করা এবং এ সব ক্ষেত্রে তাদেরকে প্রশিক্ষিত করে গড়ে তোলা অভিভাবকদের উপর অপরিহার্য দায়িত্ব।

তারা তাদের সন্তানকে কখনো সরাসরি নির্দেশ দিবে, কখনও উৎসাহ ও উপদেশ দিবে, কখনো ধমক দিবে- এমন কি দশ বছর বয়সের বাচ্চাদেরকে এ জন্য হালকাভাবে প্রহারেরও অনুমতি রয়েছে। যেন তারা বড় হয়ে শরিয়তের বিধি-বিধানগুলো ভালোভাবে জেনে-বুঝে, দিব্য জ্ঞানের উপর ভিত্তি করে সঠিক পদ্ধতিতে আল্লাহর ইবাদত-বন্দেগি সম্পাদন করতে সক্ষম হয় এবং তা তাদের অভ্যাসে পরিণত হয়ে যায়।

এমনটি করলে তাদের বাকি জীবন আল্লাহর সন্তুষ্টির উপর পরিচালনা করা সহজ হবে ইনশাআল্লাহ।

শিশুদের মসজিদে নেয়া প্রশংসনীয় একটি কাজঃ

প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার আগেই শিশুদের আল্লাহর ঘরের সঙ্গে পরিচয় করানো ও নামাজের জন্য অভ্যস্ত বানানো নিঃসন্দেহে একটি প্রশংসনীয় উদ্যোগ। কেননা শিশুকালে যে জিনিসে অভ্যাস হয়, পরে তা করা সহজ হয়, নচেৎ তা কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। এ জন্যই হাদিসে এসেছে, ‘তোমরা তোমাদের বাচ্চাদের সাত বছর বয়স থেকেই নামাজের নির্দেশ দাও। আর যখন ১০ বছর বয়সে উপনীত হবে, তখন তাদের নামাজে অবহেলায় শাস্তি প্রদান করো।’ -আবু দাউদ, হাদিস: ৪৯৫

দুষ্টুমির আশঙ্কায় শিশুদেরকে বড়দের কাতারে দাঁড় করানোই উত্তমঃ

অনেকের এ ধারণা রয়েছে যে নাবালেগ শিশুদের বড়দের কাতারের মধ্যে দাঁড় করালে পেছনের মুসল্লিদের নামাজ হয় না বা নামাজ ত্রুটিযুক্ত হয়, আসলে ব্যাপারটি সে ধরনের নয়। বরং যদিও জামাতের কাতারের সাধারণ নিয়ম ও সুন্নাত হলো, প্রাপ্তবয়স্করা সামনে দাঁড়াবে ও অপ্রাপ্তবয়স্করা পেছনে থাকবে। কিন্তু এর ব্যতিক্রম হলে নামাজ অশুদ্ধ হওয়ার কোনো কারণ নেই। এ জন্য শিশু একা হলে বা পেছনে দুষ্টুমির আশঙ্কা দেখা দিলে বড়দের কাতারে সমানভাবে দাঁড় করানোই উত্তম।

শিশুদের ধমক দেয়া উচিত নয়ঃ

কথায় কথায় আমরা শিশুদের ধমক দিয়ে থাকি। এটা নিতান্ত অনুচিত একটি কাজ। তা মসজিদে কিংবা মসজিদের বাইরে যেখানেই হোক। সর্বাবস্থায় একটি শিশু সদাচার তথা উত্তম আচরণপ্রাপ্তির অধিকার রাখে। শিশু বলে তাকে হেয় করা অন্যায়। বিশ্বাস করুন, শিশুদেরও সম্মান রয়েছে। তাদেরও রয়েছে আত্মসম্মানবোধ। তাদের আত্মসম্মানবোধ বরং আমাদের, অর্থাৎ বড়দের চেয়ে আরও প্রখর কোনো কোনো ক্ষেত্রে। তাই তাদেরকে অপমান করা, ধমক দেয়া কিংবা গালমন্দ করে হেয়প্রতিপন্ন করা কোনভাবেই উচিত নয়। শিশুদের অবজ্ঞা বা অবহেলা করাও গর্হিত একটি কাজ। এগুলো নিঃসন্দেহে অন্যায় এবং গুনাহর কাজ। আমাদের বরং উচিত তাদের প্রতি সদয় হওয়া। স্নেহপরায়ন হওয়া। তাদের সামনে সুন্দর আচার-আচরণ এবং উত্তম আদর্শ উপস্থাপন করে তাদেরকে মসজিদমুখী হতে উৎসাহিত করা। মসজিদে আসার ব্যাপারে তাদেরকে কোনোক্রমেই নিরুৎসাহিত নয়, বরং আরো উৎসাহিত এবং অনুপ্রাণিত করা।

শিশু সন্তানের নেক আমলের সাওয়াব প্রাপ্ত হন পিতামাতাওঃ

ছোট শিশু নেক আমল করলে তার সওয়াব যেমন তাদের আমলনামায় লেখা হবে তেমনি তাদের পিতামাতাও সওয়াব পাবে তাকে দ্বীন পালনে আদেশ, উপদেশ, উৎসাহ প্রদান ও নানাভাব সাহায্য-সহযোগিতা করার কারণে। এমনকি তারা মারা যাওয়ার পরও কবরে সুসন্তানের দুআ দ্বারা তারা উপকৃত হবেন। এক হাদিসে ইরশাদ হয়েছে-

عن أبي هريرة رضي الله عنه مرفوعا : إذا مات ابن آدم انقطع عمله إلا من ثلاث : صدقة جارية ، أوعلم ينتفع به ، أو ولد صالح يدعو له

আবু হুরাইরা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলে কারিম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, মানুষ মৃত্যুবরণ করলে তার যাবতীয় আমল বন্ধ হয়ে যায়, তবে ৩টি আমল বন্ধ হয় না- ১. সদকায়ে জারিয়া, ২. এমন জ্ঞান (ইলম)- যার দ্বারা উপকৃত হওয়া যায় ও ৩. এমন নেক সন্তান- যে তার জন্য দোয়া করে। – সহিহ মুসলিম : ৪৩১০

শেষের ফরিয়াদঃ

আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআ'লা আমাদের সন্তানদের আদর্শ মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার তাওফিক দান করুন। আমাদের মসজিদগুলো মুখরিত হয়ে থাকুক শিশুদের কচি কোমল পদবিক্ষেপে। প্রভাতের নরম আলোয় শিশুরা প্রাণের খোড়াকে ছুটে যাক মসজিদের আঙিনায়। কন্ঠে তুলে নিক মহান প্রভূর অমিয় কালাম। অন্তরের পরতে পরতে গেথে নিক কুরআনের বিমুগ্ধ কথামালা। আবার গোধুলিবেলায়ও তারা ফিরে আসুক প্রাণের টানে, গভীর হৃদ্যতায় মসজিদের পবিত্রতা আকীর্ণ প্রাঙ্গনে। এমনি করে তারা মসজিদে ছুটে আসুক সুবহে সাদিকের সৌম্য আলোক বেলায় ফজরের জামাতে। ভর দুপুরের নিরবতা ভেঙ্গে তারা এসে শরিক হোক যুহরের নামাজে। বিষন্ন বিকেলের মুখে হাসি ফোটাতে তারা আবার এসে অংশ নিক আসরের নামাজে। সন্ধ্যার ঝিঝি ডাকা আলো-আধারিতে তাদের ছোট ছোট পদবিক্ষেপ শেষ হোক মাগরিবের নামাজের জামাতে হাজির হয়ে। রাতের প্রথমভাগের নিস্তব্ধতাকে ভেঙ্গে খানখান করে ইশার নামাজে এসে শামিল হোক তারা। এভাবেই আমাদের মসজিদগুলোকে রব্বে কারিম কবুল করুন শিশু কিশোর নির্বিশেষে সকল বয়সের মানুষের দ্বীন, ঈমান এবং আমল শেখা ও চর্চার উত্তম ক্ষেত্র হিসেবে। আমিন।

মন্তব্য ২১ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (২১) মন্তব্য লিখুন

১| ২০ শে জানুয়ারি, ২০২৩ দুপুর ১২:৫৯

শূন্য সারমর্ম বলেছেন:


বাচ্চারা মসজিদে ভীড় করে ঠিকই,পেছনের সারি ও ২য়/৩য় তালায় শব্দে উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়।

২০ শে জানুয়ারি, ২০২৩ বিকাল ৪:১৩

নতুন নকিব বলেছেন:



জ্বি, ঠিক বলেছেন। তবে অধিকাংশ মসজিদের ২য়/ ৩য় তলায় বা উপরের তলায়/ ছাদের উপরে/ বারান্দায় বাচ্চাদের যাওয়ার কারণ মূলতঃ ভেতরে সম্মানজনকভাবে বসার স্থান না পাওয়া। তবে এর ব্যতিক্রমও যে নেই, তা নয়। অনেক বাচ্চারা বড়দের চোখ এড়িয়ে বা শাসনের হাত থেকে রক্ষা পেতেও ছাদে বা কিছুটা নাগালের বাইরে থেকে নামাজ আদায় করে থাকে। এতে করে তারা নিজেদের মধ্যে আনন্দ করার হয়তো একটু সুযোগও পেয়ে যায়।

সব মিলিয়ে বললে কিছু কিছু জায়গায় দেখা যায়, মসজিদে বাচ্চাদের প্রতি তাদের প্রাপ্য সঠিক আচরণ আসলে করা হয় না। মসজিদ হওয়া উচিত সকলের জন্য সদা উম্মুক্ত।

প্রথম মন্তব্যে অভিনন্দন। অনেক শুভকামনা।

২| ২০ শে জানুয়ারি, ২০২৩ দুপুর ১:৩৫

ঢাবিয়ান বলেছেন: মসজিদ হওয়া উচিত সবার জন্য উন্মুক্ত। বিদেশে সব মসজিদে পুরুষ, নারী, শিশু সবার প্রবেসাধিকার রয়েছে।

২০ শে জানুয়ারি, ২০২৩ বিকাল ৪:১৪

নতুন নকিব বলেছেন:



আপনার সাথে সহমত। এই সুযোগ সব মসজিদেই অবারিতভাবে থাকা উচিত।

কৃতজ্ঞতা এবং শুভকামনা জানবেন।

৩| ২০ শে জানুয়ারি, ২০২৩ বিকাল ৩:৪৮

রাজীব নুর বলেছেন: শিশুদের পদচারণায় মুখরিত হোক আমাদের মসজিদগুলো

আপনার শিরোনাম পড়লাম। পোস্ট পড়ার আর দরকার নেই। কি কি লিখেছেন সেটা বুঝতে পারছি। ভাত রান্না করতে গেলে সব ভাত টিপে দেখতে হয় না। যাইহোক, শিশুদের ক্ষতি করবেন না। শিশুরা যাবে স্কুলে। স্কুলের শিক্ষা তাদের জীবন ও জীবনের মান সুন্দর করবে।

আর যদি মসজিদে শিশুদের নিতে চান- তাহলে যেসব শিশু রাস্তায় ঘুমায় তাদের মসজিদে নিন। থাকতে দিন। খেতে দিন।

২০ শে জানুয়ারি, ২০২৩ বিকাল ৪:২৯

নতুন নকিব বলেছেন:



ধান ভানতে শীবের গীত গাওয়ার অভ্যাসটা ভালো লাগলো না। ভালো লাগার কথাও নয়। আমি এই পোস্টের কোথাও বলিনি/ লিখিনি যে, বাচ্চারা যেন স্কুলে না যায়। তাদের শিক্ষাকে সঙ্কুচিত করা আমার উদ্দেশ্য মোটেই নয়। যে কোন ধরণের/ ধারার শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে আদর্শ মানুষ হোক বাচ্চারা- এটা অবশ্যই চাই। একটি বাচ্চাও যেন অশিক্ষার অন্ধকারে থেকে না যায়- সেটাও একান্তভাবেই চাই। কিন্তু অধিকাংশ মসজিদে বাচ্চাদের সাথে যে অন্যায় আচরণ লক্ষ্য করা যায় সেটার পরিবর্তনের প্রত্যাশাই ছিল এই লেখার মূল উদ্দেশ্য। অথচ পোস্ট শিরোনামে আপনি মসজিদের নাম দেখেই সবকিছু গুলিয়ে ফেললেন। পোস্ট না পড়েই মন্তব্যও করে বসলেন।

আর বিষয়টা তো এমনও নয় যে, বাচ্চারা মসজিদে গেলেই তাদের পড়ালেখা বন্ধ হয়ে যাবে। তাই না? তাহলে? সমস্যা কোথায়? বাচ্চারা মসজিদে যাবে। মক্তবে যাবে। মাদরাসায় যাবে। স্কুলে যাবে। কলেজে যাবে। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়বে। সমস্যাটা কোথায়? জ্ঞান অর্জনের সকল রাস্তাই বাচ্চাদের জন্য উম্মুক্ত থাকবে, এটাই তো স্বাভাবিক। প্রসঙ্গতঃ কিছু মনে না করলে আপনার সদয় জ্ঞাতার্থে উল্লেখ করতে চাই যে, মাদরাসায় ধর্মীয় শিক্ষা অর্জন করলেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মত শিক্ষালয়েও একাডেমিক শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ আমাদেরও হয়েছিল। সুতরাং, পোস্টের মূল বিষয় উপলব্ধি বা অনুধাবন না করে যদি অনুমান নির্ভর মন্তব্য করেন, তাহলে কষ্ট পাওয়াটা খুবই স্বাভাবিক।

আচ্ছা, মসজিদের নাম শুনলে আপনার এত ভীত হওয়ার কারণটা কি জানতে পারি? দয়া করে যদি বলতেন।

অনেক অনেক শুভকামনা আপনার জন্য।

৪| ২০ শে জানুয়ারি, ২০২৩ বিকাল ৩:৫০

রাজীব নুর বলেছেন: মসজিদ থেকে শিক্ষার কিছু নেই। শিখতে হবে স্কুল থেকে।
এমনতেই আমাদের দেশে মসজিদ আছে লাখ লাখ। এত মসজিদ আমাদের দরকার নেই। আমাদের দরকার স্কুল। আমাদের দরজার ভাল ও দক্ষ শিক্ষক। আমাদের দরকার লাইব্রেরী।

২০ শে জানুয়ারি, ২০২৩ বিকাল ৪:৩৭

নতুন নকিব বলেছেন:



যাদের ধর্ম নেই, তাদের মসজিদ প্রয়োজন হয় না। কিন্তু যারা ধর্ম ফলো করেন তাদের তো মসজিদে যেতেই হয়। আপনি নিজের মত/ অভিমত/ বিশ্বাস সকলের উপরে চাপিয়ে দিতে চান- এটা তো মনে হচ্ছে স্রেফ একটা বোকামি। তাই নয় কি?

লক্ষ লক্ষ মসজিদ দেশে থাকার কারণে আপনার কষ্ট হওয়ার কারণটা বোধগম্য নই। প্রশ্ন হচ্ছে, আপনি নিজের টাকায় মসজিদ বানিয়ে দিয়েছেন একটাও? উত্তরে নিশ্চয়ই বলবেন যে, দেননি। তো, দেশে এত পরিমান মসজিদ থাকার দরকার আছে কি নেই, সে ব্যাপারে অভিমতও তো কেবলমাত্র তারাই দিতে পারেন, যারা মসজিদ গড়ে তোলেন। মসজিদের সাথে যাদের দূরতম সম্পর্ক নেই, মসজিদের নাম দেখেই যারা ভরকে ওঠেন- তারা মসজিদের সংখ্যা হ্রাস করার কথা বলার অধিকার আদৌ রাখেন কি? এগুলো অনধিকার চর্চা নয় কি?

আবারও শুভকামনা আপনার জন্য।

৫| ২০ শে জানুয়ারি, ২০২৩ সন্ধ্যা ৭:৫৬

ফেরদৌসী মাসুদ বলেছেন: কিছু মন্তব্য দেখে আল কোর‌আনের কয়েকটি আয়াতের কিছু অংশ মনে পড়লো خطم الله علي قلوابهمও في قلوبهم مرض

২১ শে জানুয়ারি, ২০২৩ দুপুর ১২:১৯

নতুন নকিব বলেছেন:



আপনাকে স্বাগত। আমরা আল্লাহ তাআ'লার কাছে প্রার্থনা করি, সকলকেই যেন তিনি সুপথ প্রদর্শন করেন।

৬| ২০ শে জানুয়ারি, ২০২৩ রাত ৮:৩২

ঢাবিয়ান বলেছেন: পোস্ট না পড়েই ফালতু মন্তব্য করাতে ব্লগার রাজীব নুরকে কেউই টেক্কা দিতে পারবে না।

২১ শে জানুয়ারি, ২০২৩ দুপুর ১২:২১

নতুন নকিব বলেছেন:



জ্বি, পোস্ট না পড়েই উল্টাপাল্টা মন্তব্য করার বিষয়টা সত্যি পীড়াদায়ক।

পুনরায় মন্তব্যে এসে আপনার মূল্যবান অভিব্যক্তি জানিয়ে যাওয়ায় বিশেষ কৃতজ্ঞতা।

৭| ২০ শে জানুয়ারি, ২০২৩ রাত ১০:১৬

রাজীব নুর বলেছেন: আমি এ পর্যন্ত কাউকে পাইনি যে মাদ্রাসা থেকে দাখিল এবং আলিম পাশ করে ডাক্তার বা ইঞ্জিনিয়ার হয়েছে। মাদ্রাসা শিক্ষার সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে মাদ্রাসার ছেলে-মেয়েরা ইংরেজি ও গনিতে দুর্বল হয় এবং মুক্ত চিন্তার দিক দিয়ে একেবারে পিছিয়ে থাকে।যে জাতি মুক্ত চিন্তা করতে পারেনা, পারলে সে জাতির কোন উন্নতি হয় না।

আরবী কখনো উচ্চশিক্ষার মাধ্যম হতে পারে না। কারণ, পৃথিবীতে বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, প্রকৌশল, কলা, সাহিত্য, … ইত্যাদি কোন দিকেই আরবী-ভাষী কোন দেশের কোন অবস্থান নেই। ধর্মীয় শিক্ষা যদি কেউ নিতে চায় তাহলে, তার জন্য আরবী ভাষার শর্ট কোর্স করাই যথেষ্ট।

২১ শে জানুয়ারি, ২০২৩ দুপুর ২:২৮

নতুন নকিব বলেছেন:



আপনি দয়া করে আপনার দৃষ্টিকে প্রসারিত করুন। দৃষ্টিভঙ্গির সংকীর্ণতা পরিহার করলেই মাদরাসায় পড়ুয়া শিক্ষার্থীরাও যে আজ দেশ বিদেশের গুরুত্বপূর্ণ অনেক দায়িত্বে নিয়োজিত রয়েছেন এবং স্ব স্ব স্থানে অত্যন্ত সাফল্যের স্বাক্ষর রেখে চলেছেন তা খুব ভালোভাবে প্রত্যক্ষ করতে সক্ষম হবেন।

আপনার জন্য শুভকামনা।

৮| ২০ শে জানুয়ারি, ২০২৩ রাত ১১:০৩

সোনাগাজী বলেছেন:



বেহেশতের সংখ্যা বাড়ানোর দরকার হবে, মনে হচ্ছে!

২১ শে জানুয়ারি, ২০২৩ দুপুর ২:৩৭

নতুন নকিব বলেছেন:



বেহেশতের কথায় পরে যাওয়া যাবে। আমি বরং আপনার চোখ নিয়েই এখনও চিন্তিত। চোখের সমস্যার কী হলো, সেটা যদি জানাতেন।

শুভকামনা।

৯| ২১ শে জানুয়ারি, ২০২৩ রাত ১:৪০

আল ইফরান বলেছেন: ব্লগার নতুন নকিব, আমি সাধারণত ধর্মীয় পোষ্টগুলোতে অংশগ্রহণ অথবা মন্তব্য করি না। আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত নিজের সেই নীতি নিজেই ভাঙ্গার কারণে।

রাজীব নুর বলেছেন: আমি এ পর্যন্ত কাউকে পাইনি যে মাদ্রাসা থেকে দাখিল এবং আলিম পাশ করে ডাক্তার বা ইঞ্জিনিয়ার হয়েছে।

দুঃখজনক বিষয় হচ্ছে আপনার পৃথিবী খুব বেশী বড় নয় এবং আপনি আপনার কুয়া থেকে বের হওয়ার কোন ইচ্ছেও পোষণ করেন না। আমি মিশনারি কলেজের ছাত্র হয়েও মাদ্রাসার ছাত্রদের মেধা নিয়ে কখনো প্রশ্ন তুলতে সাহস পাই নি যেহেতু বিশ্ববিদ্যালয়ে তাদের সাথে পাশাপাশি ৫ বছর একসাথে পড়েছি। স্ট্রাকচারাল ডিসক্রিমিনিশেন বলতে একটা শব্দ রয়েছে তা নিয়ে একটু পড়াশুনা করলেই বুঝতেন মাদ্রাসার ছেলেপেলেরা কেন গণিত এবং ইংরেজীতে দূর্বল।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আমাদের বিভাগে আমার ব্যাচে তেরোজন প্রথম শ্রেণীপ্রাপ্তদের মধ্যে চারজন মাদ্রাসার দাখিল-আলিম পাশ করা ছিলেন। এই মুহূর্তে উচ্চ আদালতে আইন পেশায় নিয়োজিতদের মধ্যে মাদ্রাসা থেকে পাস করা আমার সহপাঠীরা পেশাগত মূল্যায়ন এবং উপার্জনে তুলনামূলকভাবে ভালো অবস্থানে রয়েছেন। আমাদের বিভাগের অগুণিত ছাত্র যারা আপনার ভাষ্যমতে দাখিল-আলিম পাশ করা, তারা সাফল্যের সাথে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট/পুলিশ সার্ভিস/প্রশাসনের সাথে নিযুক্ত রয়েছেন।

২১ শে জানুয়ারি, ২০২৩ দুপুর ২:৩৫

নতুন নকিব বলেছেন:



ধন্যবাদ। কৃতজ্ঞতা জানবেন।

১০| ২১ শে জানুয়ারি, ২০২৩ দুপুর ১:৩৮

রাজীব নুর বলেছেন: আমি বলতে চাই- আমাদের দরকার স্কুল। মাদ্রাসা বা মসজিদ নয়।
কথা শেষ।

২১ শে জানুয়ারি, ২০২৩ দুপুর ২:৩২

নতুন নকিব বলেছেন:



শুধু স্কুল কেন? মাদরাসা কেন নয়? আপনার চিন্তায় সমস্যা বুঝা যাচ্ছে। যে দেশের ৯০ ভাগের বেশি মানুষ মুসলিম, সেই দেশে আপনি মসজিদ মাদরাসা সহ্য করতে পারছেন না। খুবই আপত্তিকর ব্যাপার।

আর মসজিদ ইবাদত বন্দেগীর স্থান। পড়াশোনা শেখানোর জন্য কোথাও মসজিদ নির্মান করা হয় না। সবকিছুকে গুলিয়ে ফেলার কোন মানে হয় না।

১১| ২১ শে জানুয়ারি, ২০২৩ সন্ধ্যা ৭:১১

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: ভালো লাগলো পোষ্টটা। ক্লাস ফাইভ বা সিক্সে পড়া অবস্থায় অনেক আগ্রহ নিয়ে মসজিদে যেতাম কিন্তু বড়রা জোর করে পিছনে পাঠিয়ে দিত। এটা এক রকম অন্যায়। বাচ্চারা নামাজের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলে। রসূলের (সা) জমানায় এরকম ছিল না।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.