নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আলহামদুলিল্লাহ। যা চাইনি তার চেয়ে বেশি দিয়েছেন প্রিয়তম রব। যা পাইনি তার জন্য আফসোস নেই। সিজদাবনত শুকরিয়া। প্রত্যাশার একটি ঘর এখনও ফাঁকা কি না জানা নেই, তাঁর কাছে নি:শর্ত ক্ষমা আশা করেছিলাম। তিনি দয়া করে যদি দিতেন, শুন্য সেই ঘরটিও পূর্নতা পেত!

নতুন নকিব

যবে উৎপীড়িতের ক্রন্দল-রোল আকাশে বাতাসে ধ্বনিবে না, অত্যাচারীর খড়্গ কৃপাণ ভীম রণ-ভূমে রণিবে না- বিদ্রোহী রন-ক্লান্ত। আমি সেই দিন হব শান্ত।

নতুন নকিব › বিস্তারিত পোস্টঃ

যুদ্ধ নয়, প্রতিরোধ: মহানবী (সা.)-এর যুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস ও মানবিক দর্শন

১৩ ই মে, ২০২৫ বিকাল ৪:৪৫

যুদ্ধ নয়, প্রতিরোধ: মহানবী (সা.)-এর যুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস ও মানবিক দর্শন

ছবি অন্তর্জাল থেকে সংগৃহিত।

মহানবী হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ছিলেন ‘রহমাতুল্লিল আলামিন’—সমগ্র সৃষ্টির জন্য করুণার উৎস। তাঁর জীবন ছিল শান্তি, সহনশীলতা, ন্যায় ও মানবতার অপূর্ব আদর্শ। তিনি কখনো আগ্রাসন বা সংঘাতের পথ বেছে নেননি। তবু ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়, তাঁকে বাধ্যতামূলকভাবে যুদ্ধে অংশ নিতে হয়েছিল—শত্রুদের চাপিয়ে দেওয়া আক্রমণ প্রতিহত করতে, নিজ সম্প্রদায়কে রক্ষা করতে এবং ইসলামের শান্তিপূর্ণ বাণীকে টিকিয়ে রাখতে। প্রায়শই কেউ কেউ জ্ঞাতসারে বা অজ্ঞতাবশত প্রশ্ন তোলেন: যিনি শান্তির দূত, তিনি কেন যুদ্ধ করলেন? এই নিবন্ধে ইসলামের প্রধান যুদ্ধগুলোর ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট বিশ্লেষণের মাধ্যমে এই প্রশ্নের যৌক্তিক ও তথ্যনির্ভর উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করা হবে, যাতে মহানবী (সা.)-এর প্রতিরক্ষামূলক ও মানবিক আদর্শ সকলের সামনে সুস্পষ্ট হয়ে ওঠে।

ইসলাম ও যুদ্ধ: মূলনীতি ও দর্শন

ইসলাম যুদ্ধকে শেষ অবলম্বন হিসেবে বিবেচনা করে। এটি শান্তি, সমঝোতা, এবং সংলাপের পথকে অগ্রাধিকার দেয়। কুরআন কারিমে স্পষ্ট নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে:

وَقَاتِلُوا فِي سَبِيلِ اللَّهِ الَّذِينَ يُقَاتِلُونَكُمْ وَلَا تَعْتَدُوا ۚ إِنَّ اللَّهَ لَا يُحِبُّ الْمُعْتَدِينَ

“যারা তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে, আল্লাহর পথে তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করো, কিন্তু সীমালঙ্ঘন করো না। নিশ্চয়ই আল্লাহ সীমালঙ্ঘনকারীদের পছন্দ করেন না।” — সূরা আল-বাকারা, আয়াত: ১৯০

এই আয়াত থেকে বোঝা যায়, ইসলামে যুদ্ধ অনুমোদিত শুধুমাত্র প্রতিরক্ষার জন্য, এবং তাও ন্যায় ও সংযমের সীমার মধ্যে। মহানবী (সা.) এই নীতির পূর্ণ অনুসরণ করেছেন। তিনি কখনো নিজ উদ্যোগে যুদ্ধ শুরু করেননি; বরং শত্রুদের আক্রমণের মুখে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছেন।

মক্কার ১৩ বছর: নির্যাতন ও সহনশীলতার অধ্যায়

মহানবী (সা.)-এর নবুওয়াতের প্রথম ১৩ বছর মক্কায় ছিল নির্মম নির্যাতন ও অত্যাচারের সময়। তিনি ও তাঁর সাহাবিরা মক্কার কুরাইশদের কাছ থেকে অকথ্য নিপীড়নের শিকার হন। হযরত বিলাল (রা.)-কে রোদে পুড়ানো, হযরত সুমাইয়া (রা.)-কে হত্যা, এবং শু’আইব গোত্রের তিন বছরের সামাজিক বয়কট—এসব ঘটনা ইসলামের প্রাথমিক সংগ্রামের নীরব সাক্ষী। এই দীর্ঘ সময়ে মহানবী (সা.) কখনো প্রতিশোধ বা সশস্ত্র প্রতিরোধের পথ বেছে নেননি। তিনি ধৈর্য ও সহনশীলতার অসাধারণ দৃষ্টান্ত স্থাপন করে মদিনায় হিজরত করেন, শান্তির পথে অটল থেকে।

মদিনার যুদ্ধ: প্রতিরক্ষার ইতিহাস

মদিনায় হিজরতের পরও মক্কার কুরাইশরা মুসলিমদের বিরুদ্ধে আক্রমণ অব্যাহত রাখে। ইসলামের তিনটি প্রধান যুদ্ধ—বদর, উহুদ, এবং খন্দক—এই প্রেক্ষাপটে সংঘটিত হয়। এই যুদ্ধগুলো বিশ্লেষণ করলে স্পষ্ট হয়, মহানবী (সা.) কখনো আগ্রাসী ছিলেন না; তিনি শুধুমাত্র প্রতিরক্ষার জন্য যুদ্ধে অংশ নিয়েছেন।

১. বদরের যুদ্ধ (৬২৪ খ্রি.): প্রতিরোধের প্রথম মাইলফলক

ইসলামের প্রথম বড় যুদ্ধ, বদর, মক্কার কুরাইশ বাহিনী ও মুসলিমদের মধ্যে সংঘটিত হয়। বদর মক্কা থেকে প্রায় ২৪০ কিলোমিটার এবং মদিনা থেকে মাত্র ৮০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। কুরাইশরা প্রায় ১,০০০ সৈন্যের শক্তিশালী বাহিনী নিয়ে মদিনা আক্রমণের উদ্দেশ্যে অগ্রসর হয়। তাদের লক্ষ্য ছিল মুসলিম সম্প্রদায়কে নির্মূল করা। এই আক্রমণের মুখে মহানবী (সা.) মাত্র ৩১৩ জন সাহাবির একটি ছোট, অপ্রস্তুত বাহিনী নিয়ে বদরে অবস্থান নেন। অলৌকিকভাবে মুসলিমরা বিজয়ী হন, যা ইসলামের অস্তিত্ব রক্ষার প্রথম মাইলফলক হিসেবে চিহ্নিত হয় যা মুসলিমদের আত্মবিশ্বাসের নতুন অধ্যায় তৈরি করেছিল। এই যুদ্ধে মহানবী (সা.) আগ্রাসী ছিলেন না; তিনি মদিনার নিরাপত্তা রক্ষার জন্য বাধ্য হয়েছিলেন।

২. উহুদের যুদ্ধ (৬২৫ খ্রি.): মদিনার দ্বারপ্রান্তে প্রতিরক্ষা

দ্বিতীয় বড় যুদ্ধ, উহুদ, মদিনার নিকটবর্তী উহুদ পাহাড়ের পাদদেশে সংঘটিত হয়। বদরের পরাজয়ের প্রতিশোধ নিতে কুরাইশরা ৩,০০০ সৈন্যের বিশাল বাহিনী নিয়ে মদিনার দিকে অগ্রসর হয়। মুসলিমরা, মাত্র ৭০০ সৈন্য নিয়ে, শহরের প্রতিরক্ষার জন্য উহুদে অবস্থান নেন। যুদ্ধে মুসলিমরা প্রাথমিক সাফল্য পেলেও কৌশলগত ভুলের কারণে পরাজয়ের মুখোমুখি হন। তবুও এই যুদ্ধের প্রেক্ষাপট স্পষ্ট: মক্কার আক্রমণ থেকে মদিনাকে রক্ষা করা ছিল এর একমাত্র উদ্দেশ্য। মহানবী (সা.) এখানেও প্রতিরক্ষকের ভূমিকায় ছিলেন।

৩. খন্দকের যুদ্ধ (৬২৭ খ্রি.): মদিনার চূড়ান্ত প্রতিরক্ষা

খন্দকের যুদ্ধ, যা ‘আহযাব’ নামেও পরিচিত, মদিনা শহরে সংঘটিত হয়। কুরাইশ ও তাদের মিত্র গোত্রগুলো মিলে ১০,০০০ সৈন্যের বিশাল জোট গড়ে মদিনা আক্রমণ করে। মুসলিমরা, মাত্র ৩,০০০ সৈন্য নিয়ে, মহানবী (সা.)-এর নেতৃত্বে শহরের চারপাশে খন্দক খনন করে উদ্ভাবনী প্রতিরক্ষা কৌশল গ্রহণ করে। এই যুদ্ধে মুসলিমরা বিজয়ী হন, যা মদিনার নিরাপত্তা নিশ্চিত করে। এটি ছিল সম্পূর্ণ প্রতিরক্ষামূলক যুদ্ধ, কারণ শত্রুরা মদিনার দ্বারপ্রান্তে এসে আক্রমণ চালিয়েছিল।

শান্তির বিজয়: হুদাইবিয়া ও মক্কা বিজয়

মহানবী (সা.)-এর জীবন শুধু যুদ্ধের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল না; তিনি শান্তির স্থপতি ছিলেন। হুদাইবিয়ার সন্ধি (৬২৮ খ্রি.) তাঁর শান্তিপ্রিয় মনোভাবের অসাধারণ দৃষ্টান্ত। এই সন্ধিতে তিনি কুরাইশদের সাথে শান্তি চুক্তি স্বাক্ষর করেন, যদিও এর শর্তগুলো মুসলিমদের জন্য প্রাথমিকভাবে অসুবিধাজনক ছিল। এই চুক্তি রক্তপাত রোধ করে এবং ইসলামের প্রসারের পথ সুগম করে।

মক্কা বিজয় (৬৩০ খ্রি.) মহানবী (সা.)-এর মানবিকতার শ্রেষ্ঠ প্রমাণ। তিনি ১০,০০০ সৈন্য নিয়ে মক্কা প্রবেশ করেন, কিন্তু কোনো রক্তপাত ছাড়াই শহরটি জয় করেন। তিনি প্রতিশোধের পরিবর্তে সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করেন, বলেন:

قَالَ: لا تَثْرِيبَ عَلَيْكُمُ الْيَوْمَ، اذْهَبُوا فَأَنْتُمُ الطُّلَقَاءُ

আজ তোমাদের বিরুদ্ধে কোনো প্রতিশোধ নেই, তোমরা মুক্ত। — সহীহ বুখারি, হাদিস নং: ৪২৮৭

এই ঘটনা ইতিহাসে বিরল, যেখানে একজন বিজয়ী শাসক প্রতিশোধের পরিবর্তে ক্ষমা ও করুণার পথ বেছে নিয়েছেন।

প্রশ্নের যৌক্তিক উত্তর: যুদ্ধ কেন?

যারা প্রশ্ন তোলেন, “মহানবী (সা.) যদি শান্তির দূত হন, তবে তিনি কেন যুদ্ধ করলেন?” তাদের জন্য উত্তর স্পষ্ট। মহানবী (সা.) যুদ্ধ চাননি; তাঁকে যুদ্ধে বাধ্য করা হয়েছিল। তাঁর প্রতিটি যুদ্ধ ছিল:

প্রতিরক্ষামূলক: তিনি কখনো মক্কার দিকে অগ্রসর হয়ে আক্রমণ করেননি। সব যুদ্ধ মদিনা বা তার নিকটবর্তী এলাকায় সংঘটিত হয়েছে।

ন্যায়নিষ্ঠ: তাঁর যুদ্ধ ছিল নিপীড়িতদের রক্ষা, অত্যাচার বন্ধ, এবং ইসলামের অস্তিত্ব রক্ষার জন্য।

সংযমী: তিনি কখনো সীমালঙ্ঘন করেননি। যুদ্ধের মধ্যেও তিনি নারী, শিশু, এবং অসামরিক ব্যক্তিদের প্রতি দয়া দেখিয়েছেন।

ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, মুসলিমরা সংখ্যায় ও অস্ত্রে সবসময় দুর্বল ছিলেন। বদরে ৩১৩ বনাম ১,০০০, উহুদে ৭০০ বনাম ৩,০০০, এবং খন্দকে ৩,০০০ বনাম ১০,০০০—এই সংখ্যাগত দুর্বলতা প্রমাণ করে, মুসলিমরা আগ্রাসী ছিলেন না; তারা বাধ্য হয়ে প্রতিরোধ গড়েছিলেন। আর এই সংখ্যাগত ব্যবধান ইসলামে 'যুদ্ধের কৌশল'ও নয়, বরং 'আল্লাহর ওপর নির্ভরতা' এবং ন্যায়ের ভিত্তিতে সংগ্রামের শিক্ষা দেয়।

মানবতার আদর্শ: যুদ্ধে, বিপন্ন পরিস্থিতিতেও করুণা

মহানবী (সা.)-এর যুদ্ধ ছিল শান্তি প্রতিষ্ঠার পথে অপরিহার্য পদক্ষেপ। তিনি যুদ্ধ করেছেন জুলুম বন্ধ করতে, নিপীড়িতদের মুক্তি দিতে, এবং ন্যায়ের পতাকা উড্ডীন করতে। তাঁর যুদ্ধে মানবতার প্রতি শ্রদ্ধা অক্ষুণ্ণ ছিল। উদাহরণস্বরূপ:

তিনি যুদ্ধে গাছ কাটা, ফসল ধ্বংস, বা অসামরিক ব্যক্তিদের হত্যা নিষিদ্ধ করেছেন।

তিনি বন্দিদের প্রতি দয়া দেখিয়েছেন, অনেককে মুক্তি দিয়েছেন বা শিক্ষা প্রদানের বিনিময়ে মুক্ত করেছেন।

মক্কা বিজয়ে তিনি শত্রুদের ক্ষমা করে মানবতার শ্রেষ্ঠ নজির স্থাপন করেছেন।

তায়েফে রক্তাক্ত অবস্থায় নবীজি (সা.)-এর দোয়া: করুণা ও আশীর্বাদের অশ্রুপ্রবাহ

নবীজী মুহাম্মাদ (সা.) যখন তায়েফবাসীদের হাতে নির্মমভাবে অপমানিত ও আঘাতপ্রাপ্ত হন, তখন তিনি তাঁর রবের দরবারে এক অন্তরবিদারক দোয়ায় আশ্রয় নেন। এই দোয়ায় তাঁর অন্তরের অতল দয়ার, আত্মসমর্পণের এবং আল্লাহর প্রতি নিরঙ্কুশ নির্ভরতার নিখুঁত প্রকাশ দেখা যায়।

আরবি পাঠ:

اللَّهُمَّ إِلَيْكَ أَشْكُو ضَعْفَ قُوَّتِي، وَقِلَّةَ حِيلَتِي، وَهَوَانِي عَلَى النَّاسِ، يَا أَرْحَمَ الرَّاحِمِينَ، أَنْتَ رَبُّ الْمُسْتَضْعَفِينَ، وَأَنْتَ رَبِّي، إِلَى مَنْ تَكِلُنِي؟ إِلَى بَعِيدٍ يَتَجَهَّمُنِي؟ أَمْ إِلَى عَدُوٍّ مَلَّكْتَهُ أَمْرِي؟ إِنْ لَمْ يَكُنْ بِكَ عَلَيَّ غَضَبٌ فَلَا أُبَالِي، وَلَكِنْ عَافِيَتُكَ هِيَ أَوْسَعُ لِي، أَعُوذُ بِنُورِ وَجْهِكَ الَّذِي أَشْرَقَتْ لَهُ الظُّلُمَاتُ، وَصَلَحَ عَلَيْهِ أَمْرُ الدُّنْيَا وَالآخِرَةِ، مِنْ أَنْ يَحِلَّ عَلَيَّ غَضَبُكَ، أَوْ يَنْزِلَ بِي سَخَطُكَ، لَكَ الْعُتْبَى حَتَّى تَرْضَى، وَلَا حَوْلَ وَلَا قُوَّةَ إِلَّا بِكَ

বাংলা অনুবাদ (আপনি সম্বোধনে):

“হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে অভিযোগ জানাচ্ছি আমার শক্তির দুর্বলতা, আমার কৌশলের অভাব এবং মানুষের কাছে আমার অপমানিত অবস্থার। হে সর্বাধিক দয়ালু, আপনি তো অসহায়দের প্রতিপালক, আপনিই তো আমার প্রতিপালক। আপনি আমাকে কাহার নিকট সমর্পণ করছেন? এমন কোনো দূরবর্তী শত্রুর নিকট, যে আমার সঙ্গে রূঢ় আচরণ করবে? নাকি এমন কোনো শত্রুর নিকট, যাঁর হাতে আপনি আমার ব্যাপারসমূহ সোপর্দ করেছেন? যদি আপনি আমার প্রতি রুষ্ট না হন, তবে আমি কিছুতেই পরোয়া করি না। তবে আপনার ক্ষমা ও নিরাপত্তাই আমার জন্য শ্রেয়তর। আমি আপনার সেই মুখমণ্ডলের আলোর আশ্রয় প্রার্থনা করছি, যার দ্বারা অন্ধকার দূর হয় এবং দুনিয়া ও আখিরাতের সমস্ত বিষয় সুষ্ঠুভাবে পরিচালিত হয়—যেন আপনার ক্রোধ আমার ওপর না আসে, অথবা আপনার অসন্তোষ আমাকে আচ্ছন্ন না করে। আপনি সন্তুষ্ট না হওয়া পর্যন্ত আমি আপনার দরবারে বিনয় প্রকাশ করে যাব। আর আপনার সাহায্য ছাড়া কোনো শক্তি বা ক্ষমতা নেই।” — সূত্র: ইবনে হিশাম, সীরাতুন নবী; ইবনে কাসীর, আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া; আলবানি, সহীহুল জামে, হাদীস নং: ১২৮৪।

এই দোয়া শুধু ইতিহাস নয়, এটি প্রতিটি মুমিনের হৃদয়ের জন্য এক অসীম প্রশান্তি ও আত্মসমর্পণের বার্তা।

উহুদের ময়দানে রক্তাক্ত নবী (সা.)-এর আর্তি: যারা আঘাত করল, তাঁদের জন্যই দোয়া!

উহুদের যুদ্ধে প্রিয় সাহাবিদের শাহাদাত, নিজের মুখমণ্ডল রক্তাক্ত, দাঁত ভেঙে গেছে, বুকের ওপর পাথরের মতো বেদনা—তবু প্রতিশোধ নয়, অভিশাপ নয়, বরং করুণার জলধারায় তিনি আকাশমুখী হয়ে শুধুই বললেন:

اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِقَوْمِي فَإِنَّهُمْ لَا يَعْلَمُونَ

"হে আমার প্রভু! আমার জাতিকে আপনি ক্ষমা করুন। তারা জানে না—তাই তো করেছে এমন অন্যায়।" —সহীহ বুখারি: ৪৩৮৭, সহীহ মুসলিম: ১৭৯২

এ যেন ক্ষমার অমর আদর্শ—যিনি ক্ষমা করেছেন, তিনি নিজেই ক্ষতবিক্ষত। যিনি রক্তাক্ত হয়েছেন, তিনিই চেয়েছেন যেন শত্রুরা হেদায়েত পায়।

উপসংহার

মহানবী হযরত মুহাম্মাদ (সা.)-এর জীবনের যুদ্ধগুলো ছিল আত্মরক্ষা, ন্যায় প্রতিষ্ঠা, এবং শান্তির পথ খুলে দেওয়ার সংগ্রাম। বদর, উহুদ, এবং খন্দকের যুদ্ধগুলো প্রমাণ করে, তিনি কখনো আগ্রাসনের পথ বেছে নেননি; বরং শত্রুদের আক্রমণ থেকে নিজ সম্প্রদায়কে রক্ষা করেছেন। তাঁর জীবন শেখায়, শান্তি ও প্রতিরক্ষা একসাথে চলতে পারে। তিনি ছিলেন ইতিহাসের একমাত্র সেনাপতি, যিনি যুদ্ধ জয় করেও ক্ষমার ঘোষণা দিয়েছেন, রক্তপাতের পরিবর্তে মানবতার পতাকা উড্ডীন করেছেন। যারা তাঁর যুদ্ধ সম্পর্কে সংশয় পোষণ করেন, তাঁদের প্রতি বিনীত অনুরোধ—আসুন নিরপেক্ষ দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে ইতিহাস অধ্যয়ন করি। তাহলেই মহানবী (সা.)-এর জীবনাদর্শ আমাদের কাছে স্বচ্ছ ও হৃদয়গ্রাহী হয়ে ধরা দেবে।

মন্তব্য ২০ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২০) মন্তব্য লিখুন

১| ১৩ ই মে, ২০২৫ বিকাল ৪:৫৫

যামিনী সুধা বলেছেন:


আজকের আরবের দিকে তাকালে, আরবদের শান্তিপ্রিয় মানুষ বলে মনে হয়? এখন তো আরবেরা সভ্য, ১৪০০ বছর আগে ওখানে ছিলো শুধু বেদুইন; ওরা শান্তিপ্রিয় ছিলো? আপনি নিজে কি ১ জন শান্তিপ্রিয় মানুষ?

১৩ ই মে, ২০২৫ রাত ৮:১০

নতুন নকিব বলেছেন:



১৪০০ বছর আগে আরবরা বেদুইন ছিল, অনেক অশান্তিও ছিল; কিন্তু ইসলাম এসে শান্তি ও ন্যায়ের শিক্ষা দেয়। আজকের আরবদের মধ্যে নানা বৈচিত্র্য আছে—তবে সবাইকে একভাবে দেখা ঠিক নয়। আর আমি নিজে শান্তিপ্রিয় কি না, সেটা বুঝতে হলে আপনার আরও কিছু গবেষণার প্রয়োজন আছে হয়তো। আমি বিশ্বাস করি, শান্তিতেই প্রকৃত উন্নয়ন ও মানবতা। ইসলাম শান্তির ধর্ম। দুনিয়া এবং আখিরাত উভয় জগতের সফলতা অর্জনের পথ ও পাথেয় নির্দেশ করেছে ইসলাম।

একই প্রশ্ন আপনাকে করা হলে কী উত্তর দিবেন?

২| ১৩ ই মে, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:০৭

নতুন বলেছেন: যুদ্ধ মানেই হত্যা, পুঙ্গুত্ব, এতিম শিশু, বিধবা নারী, দাসী

কেন ইউনিভার্সের সৃস্টিকর্তা এতো মানুষের দূদশা এড়াতে পাররো না? কেন শিশুরা এতিম হলো, নারীরা বিধবা হলো, নারীদের দাসী বানাতে হলো?

এটা তো অন্য দশটা রাজার রাজনিতিক গল্পের মতনই। সেখানে কারুর ব্যক্তির উদ্দেশ থাকে এখনা ধর্মের নামে রাস্টক্ষমতায় যাওয়া।

বানু কুরাইজার গোত্র কে রাসুল সা: এর উপস্থিতিতে নিমূল করা হয়েছিলো ৬০০-৯০০ বালেগ পুরুষ হত্যা করেছিলো এবং । তিনি সেখানে উপস্থিত ছিলেন কিন্তু তাদের ক্ষমা করতে বলেন নাই। সৃস্টিকর্তাও তাদের ক্ষমতা করতে কোন আয়াত নাজিল করননাই।

সেই হিসেবে প্রায় বাকি ৬০০-১২০০ শিশু, নারী বৃদ্ধ মানুষ দাস হিসেবে বিক্রি করা হয়েছিলো সাম বা ফিলিস্তিনের দিকে।

কিন্তু সৃস্টিকর্তা পালক পুত্রের স্ত্রীকে বিয়ে করার জন্য আয়াত নাজিল করেছেন।
রাসুল সা: একে ৪ এর চেয়ে বেশি বিয়ের অধিকার দিতে
রাসুল সা: এর ঘরে না বলে প্রবেশ করা নিষেধ করতে কোরানে আয়াত আছে।

অবশ্য যেহেতু এই সব মানুষ হত্যা এবং নারী শিশুকে দাস হিসেবে বিক্রি সুন্নতি কায়দায় হয়েছিলো তাই সেটা বৈধ/ হালাল। আর এই কাজের মাঝেও ঐসব মানুষের জন্য উপকারই নিদ্ধারিত ছিলো। সেটাই মুমিম হিসেবে সবার মেনে নিতে হবে।

১৩ ই মে, ২০২৫ রাত ৮:২৩

নতুন নকিব বলেছেন:



আপনার মন্তব্যে বহু জটিল ও সংবেদনশীল ঐতিহাসিক বিষয় উঠে এসেছে। সংক্ষেপে উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করছি:

ইসলামের ইতিহাসে যুদ্ধ একটি বাস্তবতা ছিল, তবে তা কখনোই নিছক রাজনীতি বা ক্ষমতালোভে হয়নি। বানু কুরাইজার ঘটনাটি ছিল একটি চরম বিশ্বাসঘাতকতার ফল, যেখানে তারা চুক্তিভঙ্গ করে মুসলিমদের বিরুদ্ধে শত্রুপক্ষকে সহায়তা করেছিল—যুদ্ধকালীন এই ধরণের অবস্থায় তৎকালীন আরব সমাজে প্রচলিত বিচারব্যবস্থাই প্রয়োগ করা হয়েছিল। এই রায় দিয়েছিলেন সাদ ইবনে মু'আয, যিনি সেই গোত্রের সঙ্গে পূর্ব পরিচিত ছিলেন।

সাদ ইবনে মু‘আয (রাঃ) ছিলেন আওস গোত্রের নেতা। আওস ও খাযরাজ — এই দুটি ছিল মদীনায় বসবাসকারী প্রধান আরব গোত্র, যাঁরা পরবর্তীতে ইসলাম গ্রহণ করে আনসার হিসেবে পরিচিত হন।

বানু কুরাইযা ছিল ইয়াহুদি গোত্র, যারা মদীনার সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ ছিল। সেই চুক্তি ভঙ্গ করে যখন তারা শত্রুপক্ষের পক্ষে অবস্থান নেয়, তখন নবীজি (সা.) তাদের ব্যাপারে রায় দেওয়ার দায়িত্ব দেন সাদ ইবনে মু‘আযকে, যিনি আগে থেকে বানু কুরাইযার মিত্র ছিলেন (চুক্তিপূর্ব সময়ে)। সাদ (রাঃ) তৎকালীন তোরাহ অনুযায়ীই রায় দেন, যা ছিল বিশ্বাসঘাতকতার শাস্তি।

দাসত্ব ছিল সেই সময়ের সামাজিক বাস্তবতা, কিন্তু ইসলাম তাকে নিরুৎসাহিত করেছে ও ধাপে ধাপে বিলুপ্তির পথ তৈরি করেছে—দাসমুক্তি ছিল অনেক ভালো কাজের কাফফারা। আর, রাসুল সা: এর বৈবাহিক জীবন ছিল সামাজিক ও রাজনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ, তাঁর প্রতিটি বিবাহই আলাদা উদ্দেশ্য বহন করত।

কুরআনের আয়াতগুলো কেবল ব্যক্তিগত নয়, বরং সামাজিক নীতিমালা ও নৈতিক নির্দেশনা হিসেবেও নাজিল হয়েছে। অনেক সময় আমরা বর্তমান দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে অতীতকে বিচার করি, অথচ সেসব ঘটনার সময়কাল, প্রেক্ষাপট ও মানবসভ্যতার স্তর ছিল ভিন্ন।

মুমিন হিসেবে আমাদের দায়িত্ব হলো—ঐতিহাসিক ঘটনাগুলোর গভীরে গিয়ে প্রেক্ষাপট বোঝা এবং আল্লাহর ন্যায়বিচারে আস্থা রাখা। ইসলামের মূল বার্তা সবসময়ই ছিল শান্তি, ন্যায়, এবং মানবতার উন্নয়ন।

৩| ১৩ ই মে, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:২২

জুল ভার্ন বলেছেন: বর্তমান জামানায় মহানুভবতা, উদারতাকে প্রতিপক্ষ দুর্বলতা মনে করে উপহাস করে।

১৩ ই মে, ২০২৫ রাত ১০:৩৬

নতুন নকিব বলেছেন:



আপনি খুবই বাস্তব ও গভীর একটা কথা বলেছেন। আজকের সমাজে অনেকেই মহানুভবতা, সহনশীলতা বা উদারতাকে দুর্বলতা ভেবে বসে, অথচ এ গুণগুলোই আসলে একজন মানুষের আসল শক্তির পরিচয়।

যখন মানুষ অন্তরে দৃঢ় হয়, তখনই সে ক্ষমা করতে পারে, সহানুভূতিশীল হতে পারে। দুর্বল নয়, বরং এই গুণগুলো ধারন করাই সত্যিকারের সাহস। সমাজ যদি এ মূল্যবোধগুলোকে সম্মান করতে শেখে, তাহলে সত্যিকার শান্তি ও উন্নয়ন সম্ভব হবে।

আপনার ভাবনার জন্য ধন্যবাদ। এমন চিন্তা সমাজকে আলোর পথে নিতে পারে।

৪| ১৩ ই মে, ২০২৫ রাত ৮:১৪

কামাল১৮ বলেছেন: নবী কয়েকটি যুদ্ধ করেছে,বেশির ভাগ গনিমতের কথা বলে করেছে লুটপাট।অতর্কিতে হামলা করেছে যেটা শ্রেফ ডাকাতি।

১৩ ই মে, ২০২৫ রাত ১০:৩৭

নতুন নকিব বলেছেন:



আপনার মন্তব্যে ইসলাম ও নবীজি (সা.)-কে ভুলভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে, যা ইতিহাস ও প্রমাণিত সত্যের পরিপন্থী। ইসলাম কোনদিনই লুটপাট বা ডাকাতিকে সমর্থন করেনি, বরং তা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ করেছে।

নবীজি (সা.) যে যুদ্ধগুলো করেছেন, সেগুলো ছিল আত্মরক্ষামূলক ও প্রতিকূল পরিস্থিতিতে অবধারিত প্রতিরোধ। মক্কার কাফেররা মুসলিমদের ঘরবাড়ি কেড়ে নিয়েছিল, নির্যাতন করেছিল, এমনকি হিজরত করেও শান্তিতে থাকতে দেয়নি। তখন মুসলিমরা অস্ত্র তুলে নিতে বাধ্য হয়েছিলেন।

গনিমতের সম্পদ—যা যুদ্ধের পর ব্যবস্থাপনা ও বণ্টনের অংশ ছিল—তা কোনো লুটপাট নয় বরং সুসংগঠিত ও ন্যায়ভিত্তিক ছিল।

আপনি ইসলাম নিয়ে সমালোচনা করতেই পারেন, তবে সত্যকে বিকৃত না করে, নিরপেক্ষভাবে জানা ও বোঝার চেষ্টা করলে আলোচনাটি ফলপ্রসূ হতো। সত্য ইতিহাস বিকৃত করে কোনো শুভ উদ্দেশ্য সাধন হয় না।

৫| ১৩ ই মে, ২০২৫ রাত ৮:৪১

যামিনী সুধা বলেছেন:


ইসলাম অথবা কোন ধর্ম শান্তি আনেনি। ইসলাম ইরাক, সিরিয়া, লেবানন, লিবিয়া , ইয়েমেন ও সৌদীর আরবদের বিভক্ত করে যুদ্ধ লাগিয়ে রেখেছে।

১৩ ই মে, ২০২৫ রাত ১০:৪০

নতুন নকিব বলেছেন:



যামিনী সুধা, আপনার মন্তব্যটি ইসলামের প্রকৃত রূপকে না জেনে বা উপেক্ষা করে দেয়া হয়েছে। ইতিহাস ও বাস্তবতা বলে—ইসলাম নিজে কোনো যুদ্ধ বা বিভাজনের জন্ম দেয়নি, বরং ইসলাম সবসময় শান্তি, ন্যায়বিচার ও মানবতা প্রতিষ্ঠার বার্তা দিয়েছে।

ইরাক, সিরিয়া, লিবিয়া, ইয়েমেন বা লেবানের বর্তমান সংকট ধর্মীয় নয়, বরং রাজনৈতিক, ভূ-রাজনৈতিক ও উপনিবেশবাদী হস্তক্ষেপের ফল। বিভিন্ন দেশের স্বার্থ ও ক্ষমতার দ্বন্দ্বে এই অঞ্চলগুলো অস্থির—এটা ইসলামের দায় নয়।

ইসলাম প্রথম আবির্ভাবেই গোত্র-ভিত্তিক সংঘাতময় আরবকে ঐক্যবদ্ধ করেছিল, নারী-পুরুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছিল, দাসপ্রথার বিলুপ্তির পথ দেখিয়েছিল।

ধর্মকে দোষারোপ করার আগে দরকার ইতিহাস ও বাস্তবতা সঠিকভাবে জানা। মতপ্রকাশের স্বাধীনতা আছে, কিন্তু তা যেন সত্য ও ন্যায়ের বাইরে না যায়—এটাই একজন চিন্তাশীল মানুষের পরিচয়।

৬| ১৪ ই মে, ২০২৫ সকাল ৭:৩৮

অগ্নিবাবা বলেছেন: ইসলাম যে আসলে কি, তাহা বেবাকেই জেনে গেছে, যতই সুগার দিয়ে কোট করে রাখেন না কেনো, সত্য জানতে কোরান হাদিস সীরাত ই যথেস্ট। বাংলাদেশে ইসলাম বাঁচাতে একটা কাজ করতে পারেন, তা হল কোরান হাদিসের সকল বাংলা অনুবাদ ব্যান করা।

১৪ ই মে, ২০২৫ সকাল ৭:৫৬

নতুন নকিব বলেছেন:



অগ্নিবাবা, আপনি যে ভাষায় ইসলামকে উপস্থাপন করেছেন, তা কোনো সত্য-অন্বেষণের নয়, বরং বিদ্বেষপ্রসূত মনোভাবের প্রকাশ। আপনি বলছেন, “কোরআন-হাদীসই ইসলামের আসল রূপ” — অথচ সেই গ্রন্থগুলোকেই ব্যান করার পরামর্শ দিচ্ছেন। এটাই প্রমাণ করে, আপনি ইসলামের সত্যিকারের জ্ঞান প্রচার নয়, বরং তা বন্ধ করতেই আগ্রহী।

আপনি যদি সত্য জানতে চান, তবে খোলা মন নিয়ে কোরআন, হাদীস ও রাসূল (সা.)-এর জীবনী পড়ুন। আপনি বিদ্বেষ নিয়ে নয়, ন্যায়বোধ নিয়ে ইসলাম অধ্যয়ন করলে বুঝতে পারবেন—ইসলাম মানুষের বিবেক, যুক্তি ও মানবিকতাকে ভিত্তি করেই শান্তি, ন্যায় ও সৌহার্দ্য প্রতিষ্ঠার শিক্ষা দেয়।

বিদ্বেষ কখনো সত্য প্রতিষ্ঠা করে না। ইতিহাসে ইসলামকে দমন করতে বহু চেষ্টা হয়েছে—কিন্তু সত্য সবসময়ই টিকে থাকে, কারণ তা আলো, আর আলো কখনো অন্ধকারে হারিয়ে যায় না।

৭| ১৪ ই মে, ২০২৫ দুপুর ১:১৪

রাজীব নুর বলেছেন: আমি একটু হাসতে পারি?

১৪ ই মে, ২০২৫ দুপুর ১:৩৫

নতুন নকিব বলেছেন:



একটু কেন? অনেক হেসে নিতে পারেন। প্রয়োজনে লাগাতার কয়েক দিন হেসে নিন।

৮| ১৬ ই মে, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৩৪

নতুন বলেছেন: লেখক বলেছেন: আপনার মন্তব্যে বহু জটিল ও সংবেদনশীল ঐতিহাসিক বিষয় উঠে এসেছে। সংক্ষেপে উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করছি: ইসলামের ইতিহাসে যুদ্ধ একটি বাস্তবতা ছিল, তবে তা কখনোই নিছক রাজনীতি বা ক্ষমতালোভে হয়নি। বানু কুরাইজার ঘটনাটি ছিল একটি চরম বিশ্বাসঘাতকতার ফল, যেখানে তারা চুক্তিভঙ্গ করে মুসলিমদের বিরুদ্ধে শত্রুপক্ষকে সহায়তা করেছিল—যুদ্ধকালীন এই ধরণের অবস্থায় তৎকালীন আরব সমাজে প্রচলিত বিচারব্যবস্থাই প্রয়োগ করা হয়েছিল। এই রায় দিয়েছিলেন সাদ ইবনে মু'আয, যিনি সেই গোত্রের সঙ্গে পূর্ব পরিচিত ছিলেন।
সাদ ইবনে মু‘আয (রাঃ) ছিলেন আওস গোত্রের নেতা। আওস ও খাযরাজ — এই দুটি ছিল মদীনায় বসবাসকারী প্রধান আরব গোত্র, যাঁরা পরবর্তীতে ইসলাম গ্রহণ করে আনসার হিসেবে পরিচিত হন।
বানু কুরাইযা ছিল ইয়াহুদি গোত্র, যারা মদীনার সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ ছিল। সেই চুক্তি ভঙ্গ করে যখন তারা শত্রুপক্ষের পক্ষে অবস্থান নেয়, তখন নবীজি (সা.) তাদের ব্যাপারে রায় দেওয়ার দায়িত্ব দেন সাদ ইবনে মু‘আযকে, যিনি আগে থেকে বানু কুরাইযার মিত্র ছিলেন (চুক্তিপূর্ব সময়ে)। সাদ (রাঃ) তৎকালীন তোরাহ অনুযায়ীই রায় দেন, যা ছিল বিশ্বাসঘাতকতার শাস্তি।
দাসত্ব ছিল সেই সময়ের সামাজিক বাস্তবতা, কিন্তু ইসলাম তাকে নিরুৎসাহিত করেছে ও ধাপে ধাপে বিলুপ্তির পথ তৈরি করেছে—দাসমুক্তি ছিল অনেক ভালো কাজের কাফফারা। আর, রাসুল সা: এর বৈবাহিক জীবন ছিল সামাজিক ও রাজনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ, তাঁর প্রতিটি বিবাহই আলাদা উদ্দেশ্য বহন করত।
কুরআনের আয়াতগুলো কেবল ব্যক্তিগত নয়, বরং সামাজিক নীতিমালা ও নৈতিক নির্দেশনা হিসেবেও নাজিল হয়েছে। অনেক সময় আমরা বর্তমান দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে অতীতকে বিচার করি, অথচ সেসব ঘটনার সময়কাল, প্রেক্ষাপট ও মানবসভ্যতার স্তর ছিল ভিন্ন।
মুমিন হিসেবে আমাদের দায়িত্ব হলো—ঐতিহাসিক ঘটনাগুলোর গভীরে গিয়ে প্রেক্ষাপট বোঝা এবং আল্লাহর ন্যায়বিচারে আস্থা রাখা। ইসলামের মূল বার্তা সবসময়ই ছিল শান্তি, ন্যায়, এবং মানবতার উন্নয়ন।


চ্যাটজিপিটি কমেন্টের জবাব দেবে কিন্তু আমি যেই দৃস্টিকোন থেকে বলেছি সেটা বুঝতে পারবেনা।

রাসুল সা: এই মহাবিশ্বের সৃস্টিকর্তার সবচেয়ে পছন্দের মানুষ। তার হাবিব। তার সাথে দেখা করেছেন।

তিনি ঐ সময়ে একটা গোত্রের সকল বালেগ পুরুষের হত্যা এবং বাকী শিশু ও নারীদের দাস হিসেবে বিক্রির সময় উপস্থিত ছিলেন। তিনি তাদের ক্ষমা করতেই পারতেন। সেটা তিনি করেন নাই।

তিনিও অন্য দশজন রাজনিতিকদের মতনই মুসলিমদের আপাত লাভ হয় সেই শিদ্ধান্তই সমর্থন দিয়েছেন।

ঐ সিদ্ধান্তে কতগুলি শিশু দাস হয়েছে, এতিম হয়েছে, নারী বিধবা হয়েছে, নারী তার অমতে সেক্স করতে বাধ্য হয়েছে তার মনিবের সাথে।

এগুলি কোন সৃস্টিকর্তার প্ররিতদূতের কাজ হতে পারেনা।

তিনি অবশ্যই কোন নিয়ম ভঙ্গ করেন নাই। নিজে এই মৃত্যুদন্ড দেন নাই। তাই তাকে দোষী বলা যাবেনা সেটা ঠিক আছে।

তিনি মক্কা জয়ের পরে সবাই ক্ষমা করে দিয়েছিলেন। যারা তাকে হত্যার চেস্টা করছিলো তাদেরকেও। কারন তিনি তখন ক্ষমতাধর। কিন্তু ঐ বানু কুরাইজার নারী শিশুগুলিকে তিনি ক্ষমতা করতে নির্দেশ দেন নাই। কারন তাদের দৃস্টান্তমুলক সাজা দরকার ছিলো রাজনিতিক কারনে।

ঐ নারী বা শিশুর গুলি যেই কস্ট জীবনে পেলো তার পেছনে তাদের কোন দোষ ছিলো না। পিতা স্বামীর দোষে তাদের জীবনে দাসত্ব নেমে আসলো।

তাই মহান সব ধর্মীয় নেতাদের কাজগুলিও অনেক সময় সাধারন রাজনিতিক নেতাদের মতনই। এতে ডিভাইন কিছু নাই। সাধারন মানুষের মতনই ক্ষমতা সার্থ কেন্দ্রকরেই সব কিছু ঘুরতে থাকে।

১৬ ই মে, ২০২৫ রাত ৯:১৫

নতুন নকিব বলেছেন:



সা‘দ ইবনে মু‘আয রা.-এর মাধ্যমে বণু কুরাইযা গোত্রের ওপর প্রদত্ত রায় ও তা বাস্তবায়নের ঘটনা ইসলামি ইতিহাসে এক জটিল এবং গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। এই ঘটনা রাজনৈতিক, সামরিক এবং মানবিক নানা দিক থেকে বিশ্লেষণ করলে একদিকে যেমন কঠোরতা দৃশ্যমান, অন্যদিকে তেমনই এর পেছনে থাকা ন্যায়বিচারের প্রেরণাও প্রতিভাত হয়।

বণু কুরাইযা গোত্রের সঙ্গে মুসলমানদের একটি সুস্পষ্ট চুক্তি ছিল, যার আওতায় তারা মদীনায় বসবাস করছিল। কিন্তু খন্দকের যুদ্ধের সময় যখন পুরো মদীনা ঘেরাও করে ফেলা হয়েছিল, তখন এই ইহুদি গোত্রটি ইসলামের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয় এবং মক্কার কুরাইশ ও অন্যান্য মুশরিকদের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করে চরম বিশ্বাসঘাতকতার পরিচয় দেয়। এটি ছিল এমন এক মুহূর্ত যখন মুসলিম সমাজ অস্তিত্বের সংকটে পড়েছিল। বণু কুরাইযার এই আচরণ যদি বাস্তবায়িত হতো, তবে ইসলামের ইতিহাস সম্ভবত অন্যরকম রূপ পেত।

এই বিশ্বাসঘাতকতার পর যখন মুসলিমগণ বিজয় অর্জন করেন, তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সরাসরি কোনো শাস্তি ঘোষণা করেননি; বরং বণু কুরাইযা নিজেদের প্রস্তাবেই সা‘দ ইবনে মু‘আয রা.-এর ওপর বিচারভার অর্পণ করেন। সা‘দ ছিলেন এই গোত্রের পুরনো মিত্র। তাঁর দেওয়া রায় ছিল তৎকালীন ইহুদি শরীয়তের আলোকে, যেটি মূলত পুরনো বাইবেলিক আইন (Deuteronomy 20:10–14) অনুসরণ করেছিল। সেখানে বলা আছে: শত্রু শহরের পুরুষদের হত্যা করা হবে এবং নারীদের ও শিশুদের দাসত্বে নেওয়া হবে। সা‘দের রায়ও এই সূত্র অনুযায়ীই প্রদান করা হয়।

তবে এ রায় মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে চ্যালেঞ্জিং—বিশেষত নারী ও শিশুদের পরিণতি বিবেচনায়। কিন্তু তখনকার আরব সমাজে যুদ্ধের নিয়ম ছিল নির্মম। দুঃখজনক হলেও সত্য, সেই সময়ে দাসপ্রথা এবং যুদ্ধবন্দীদের প্রতি কঠোরতা ছিল প্রায় সকল জাতিগোষ্ঠীর মধ্যে প্রচলিত। ইসলাম অবশ্য এই প্রথাকে একেবারে উচ্ছেদের পথেই নিয়ে গেছে। কুরআন ও সুন্নাহর নির্দেশনায় দাসমুক্তিকে উৎসাহিত করা হয়েছে, সদ্ব্যবহার এবং মানবিক মর্যাদার প্রতি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।

রাসূল (সা.) কেবল একজন রাজনীতিক বা সেনাপতি ছিলেন না, তিনি ছিলেন একজন মহান আদর্শ পুরুষও। তাঁর চরিত্রের শ্রেষ্ঠতা এমন যে, তিনি কখনোই প্রতিশোধপরায়ণ ছিলেন না। মক্কা বিজয়ের সময় তিনি শত্রুদেরও ক্ষমা করে দিয়েছেন। কিন্তু বণু কুরাইযার ঘটনা ছিল একেবারে ভিন্ন প্রেক্ষাপটে—এটি ছিল এক বিশ্বাসঘাতকতা, যার পরিণতিতে গোটা মুসলিম সমাজ নিশ্চিহ্ন হয়ে যেতে পারত। সে বিবেচনায়, এই সিদ্ধান্ত একটি কঠোর রাজনৈতিক ও নিরাপত্তা-ভিত্তিক পদক্ষেপ হিসেবে দেখা যায়।

তবে আজকের মানবিক মূল্যবোধ ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার চর্চার আলোকে এ ঘটনাকে দেখে অনেকেই প্রশ্ন করতে পারেন। এটি স্বাভাবিক। ইতিহাসের ঘটনাগুলো যখন আমরা সময়ের প্রেক্ষাপট ছাড়া বিশ্লেষণ করি, তখন অনেক কিছুই অনুচিত বা অনৈতিক বলে মনে হতে পারে। কিন্তু সেই সময়ের আরব সমাজ, যুদ্ধনীতি এবং কৌশলগত বাস্তবতা ছাড়া ঘটনাটিকে সম্পূর্ণরূপে উপলব্ধি করা সম্ভব নয়।

সা‘দ ইবনে মু‘আয রা.-এর দেওয়া রায় নিঃসন্দেহে কঠোর ছিল, কিন্তু তা ছিল ন্যায়বিচারের একটি রূঢ় বাস্তবায়ন, যা একটি চরম বিশ্বাসঘাতকতাকে মোকাবেলার জন্যই গৃহীত হয়েছিল। অতএব, ইতিহাসের এই অধ্যায় বিচার করতে গেলে আমাদের প্রয়োজন নিরপেক্ষ দৃষ্টিভঙ্গি, প্রেক্ষাপট বোঝার চেষ্টা এবং মানবিক উপলব্ধির একটি ভারসাম্যপূর্ণ চর্চা।

৯| ১৮ ই মে, ২০২৫ সকাল ১১:৪৩

নতুন বলেছেন: এই বিশ্বাসঘাতকতার পর যখন মুসলিমগণ বিজয় অর্জন করেন, তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সরাসরি কোনো শাস্তি ঘোষণা করেননি; বরং বণু কুরাইযা নিজেদের প্রস্তাবেই সা‘দ ইবনে মু‘আয রা.-এর ওপর বিচারভার অর্পণ করেন। সা‘দ ছিলেন এই গোত্রের পুরনো মিত্র। তাঁর দেওয়া রায় ছিল তৎকালীন ইহুদি শরীয়তের আলোকে, যেটি মূলত পুরনো বাইবেলিক আইন (Deuteronomy 20:10–14) অনুসরণ করেছিল। সেখানে বলা আছে: শত্রু শহরের পুরুষদের হত্যা করা হবে এবং নারীদের ও শিশুদের দাসত্বে নেওয়া হবে। সা‘দের রায়ও এই সূত্র অনুযায়ীই প্রদান করা হয়।

তবে এ রায় মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে চ্যালেঞ্জিং—বিশেষত নারী ও শিশুদের পরিণতি বিবেচনায়। কিন্তু তখনকার আরব সমাজে যুদ্ধের নিয়ম ছিল নির্মম। দুঃখজনক হলেও সত্য, সেই সময়ে দাসপ্রথা এবং যুদ্ধবন্দীদের প্রতি কঠোরতা ছিল প্রায় সকল জাতিগোষ্ঠীর মধ্যে প্রচলিত। ইসলাম অবশ্য এই প্রথাকে একেবারে উচ্ছেদের পথেই নিয়ে গেছে। কুরআন ও সুন্নাহর নির্দেশনায় দাসমুক্তিকে উৎসাহিত করা হয়েছে, সদ্ব্যবহার এবং মানবিক মর্যাদার প্রতি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।

রাসূল (সা.) কেবল একজন রাজনীতিক বা সেনাপতি ছিলেন না, তিনি ছিলেন একজন মহান আদর্শ পুরুষও। তাঁর চরিত্রের শ্রেষ্ঠতা এমন যে, তিনি কখনোই প্রতিশোধপরায়ণ ছিলেন না। মক্কা বিজয়ের সময় তিনি শত্রুদেরও ক্ষমা করে দিয়েছেন। কিন্তু বণু কুরাইযার ঘটনা ছিল একেবারে ভিন্ন প্রেক্ষাপটে—এটি ছিল এক বিশ্বাসঘাতকতা, যার পরিণতিতে গোটা মুসলিম সমাজ নিশ্চিহ্ন হয়ে যেতে পারত। সে বিবেচনায়, এই সিদ্ধান্ত একটি কঠোর রাজনৈতিক ও নিরাপত্তা-ভিত্তিক পদক্ষেপ হিসেবে দেখা যায়।


আমি কিন্তু এই বিচারে রাসুল সা: এর কোন দোষ দেইনাই। কারন সিদ্ধান্ত তার ছিলো না। সেটা আমার সমস্যা না।

সিদ্ধান্তটা সম্পূর্নই রাজনিতিক। একটা দৃস্টান্তমুলক সাজা দিলে এমন ঘটনা ঘটবেনা। এবং ঘটেনাইও তাই ঐ মৃত্যুদন্ড এবং ঐ নারী শিশুদের দাস হিসেবে বিক্রিতে অবশ্যই মুসলমান জাতীর বিরাট উপকার হয়েছে। নতুবা মুসলমানদের ইতিহাস অন্য ভালো লিখিত হতো।

আমার প্রশ্ন অন্য খানে। এই মহাবিশ্বের সৃস্টিকর্তা এবং তার বন্ধু কি যারা ঐ ষড়তন্ত্রের নেতাদের মৃত্যুদন্ড দিতে পারতেন না???

তাহলে ৮০০-৯০০ শত মানুষ হত্যা করতে হতো না। ১০০০-১২০০ নারী শিশুদের জীবন দাসত্ব বরন করতে হতো না।

সৃস্টিকর্তা ওমর রা: কে ইসলামের ছায়ায় এনে দিয়েছেন।

রাসুল সা: আবু জাহেল এবং ওমর রা: এর মাঝে একজনকে ইসলামে আনতে আল্লাহের কাছে দোয়া করেছিলেন। আল্লাহ রাসুল সা: এর দোয়া তো আর ফেলে দেবেন না। তার দোয়ার ফলে ওমর রা: ইসলাম কবুল করেছিলেন।

কিন্তু তিনি কিন্তু প্রায় ২/৩ হাজার মানুষের জীবনের জন্য এমন কিছু না করে তাদের মৃত্যু এবং দাসত্ব বরন করতে দিয়েছেন।

এটা কোন মহাবিশ্বের সৃস্টিকর্তা এবং তার বন্ধুর সিদ্ধান্ত হতে পারেনা। বরং এটা অন্য দশজন ক্লান লিডারের মতন নেওয়া সিদ্ধান্ত। এই মানুষ গুলির জীবন দিয়ে বাকিদের একটা ম্যাসেজ দিওয়া যে বিশ্বাসঘতকতার সাজা কেমন।

এমন অনেক ঘটনা আছে যেগুলি ধর্মের অসাড়তার প্রমান পাওয়া যায়। এইসব ছোট্ট ছোট্টো ঘটনাগুলিই ভেতরে ধর্মযে মানুষের সৃস্টি সেটার ক্লু গুলি পাবেন। প্রতিটা ধর্মের গল্পে এমন অনেক কাহিনি পাবেন।

১৮ ই মে, ২০২৫ দুপুর ১২:৪৮

নতুন নকিব বলেছেন:



প্রিয় নতুন ভাই,

আপনি নিজেকে মানবতাবাদী, মানব দরদি হিসেবে উপস্থাপন করলেও মন্তব্যে যেভাবে ইসলাম, রাসূল (সা.), ও আল্লাহর সিদ্ধান্তকে সাধারণ মানবীয় বা রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে নামিয়ে আনা হয়েছে, তা মৌলিক ভুল বোঝাবুঝির ফসল। ইতিহাস, ধর্ম ও মানবতা—তিনটি ভিন্ন মাত্রা।

ইসলামিক ইতিহাসের ঘটনাগুলো বিচ্ছিন্নভাবে না দেখে, সেই সময়ের সামাজিক, রাজনৈতিক ও যুদ্ধনীতির প্রেক্ষাপটে বিচার করা উচিত। ব্নু কুরায়জার ঘটনাও সেইরকম, যেখানে বিশ্বাসঘাতকতার দায়ে বিচার হয়েছিল। সেই রায় যে রাসূল (সা.) নিজে দেননি তা আপনি নিজেও আপনার মন্তব্যে উল্লেখ করেছেন, বরং বিশ্বাসঘাতক অপরাধীচক্র বনু কুরায়জা যাঁকে বিচারক মেনে নিয়েছিল, তার রায় অনুযায়ীই তা কার্যকর হয়—যা সে যুগের আইন অনুযায়ী সঠিক ছিল।

মোটা দাগে আপনার বড় প্রশ্ন—"সৃষ্টিকর্তা কেন কিছুই করলেন না?"—এটি অবশ্যই একটি মানবকেন্দ্রিক যুক্তি।
আল্লাহ মানুষকে পরীক্ষা করার জন্যই দুনিয়ায় পাঠিয়েছেন। তিনি মানুষকে ইচ্ছাশক্তি দিয়েছেন, নির্দেশনা দিয়েছেন, এবং বিচার দিবসের জন্য সময় রেখেছেন। পৃথিবীতে যা ঘটে, সবই পরীক্ষার অংশ—তা আপনি বোঝেন অথবা না বোঝেন। সুনির্দিষ্ট কার্যকারণ ব্যতিত আল্লাহ তাআ'লা কিছুই করেন না। অবশ্যই এইক্ষেত্রেও তা ছিল। তবে এই ঘটনার ভেতরে কি হিকমত ছিল তা একমাত্র আল্লাহই ভালো জানেন। আমাদের মানবীয় ক্ষুদ্র জ্ঞান তাঁর সীমাহীন কুদরতের অনেক কিছুই ধারণ করতে অক্ষম।

ধর্মের ছোট ছোট ঘটনাকে অসাড়তা প্রমাণের ক্লু মনে করাটা ধরে নিতে পারেন, একধরনের জ্ঞানের ঘাটতি কিংবা অহংকার। এটা কারও কারও ভেতরে দেখা যায়।

আপনি যদি সত্যিই মানবতাবাদী হোন, তাহলে দেখা উচিত—এই ধর্মই কীভাবে ক্রীতদাস মুক্ত করেছে, নারীর সম্মান দিয়েছে, অনাথের দায়িত্ব নিয়েছে, এবং দুনিয়ার বৃহৎ কল্যাণের ভিত্তি গড়েছে।

১০| ১৮ ই মে, ২০২৫ বিকাল ৪:১৫

নতুন বলেছেন: পৃথিবীতে যা ঘটে, সবই পরীক্ষার অংশ—তা আপনি বোঝেন অথবা না বোঝেন। সুনির্দিষ্ট কার্যকারণ ব্যতিত আল্লাহ তাআ'লা কিছুই করেন না। অবশ্যই এইক্ষেত্রেও তা ছিল। তবে এই ঘটনার ভেতরে কি হিকমত ছিল তা একমাত্র আল্লাহই ভালো জানেন। আমাদের মানবীয় ক্ষুদ্র জ্ঞান তাঁর সীমাহীন কুদরতের অনেক কিছুই ধারণ করতে অক্ষম।

আপনি যেই প্রশ্নের জবাব না পেয়ে সেটা সৃস্টিকর্তাই ভালো জানেন বলে ছেড়ে দিয়েছেন মানুষের এই না জানার স্থানেই ধর্মগুলি শক্তখুটি গেড়ে বসে আছে। :D

ধর্মের ছোট ছোট ঘটনাকে অসাড়তা প্রমাণের ক্লু মনে করাটা ধরে নিতে পারেন, একধরনের জ্ঞানের ঘাটতি কিংবা অহংকার। এটা কারও কারও ভেতরে দেখা যায়।

দুনিয়াতে কেউই বলতে পারেনা সে সব বিষয়ে জ্ঞানের সর্বচ্চ স্থানে পৌছে গেছে। আমিও ধর্ম, মানুষের চরিত্র, মানব মনের আবেগ, অভিমান নিয়ে জানতে চেস্টা করি মাত্র। এগুলি বড়ই একটা বিচিত্র জিনিস।

আপনি যদি সত্যিই মানবতাবাদী হোন, তাহলে দেখা উচিত—এই ধর্মই কীভাবে ক্রীতদাস মুক্ত করেছে, নারীর সম্মান দিয়েছে, অনাথের দায়িত্ব নিয়েছে, এবং দুনিয়ার বৃহৎ কল্যাণের ভিত্তি গড়েছে।

ইসলাম দুনিয়ার ধর্মের সবচেয়ে আপডেটেড ভার্সান। এটা অন্য ধর্মের তুলনায় আধুনিক বলা যায়।

তবে মানুষ বর্তমানে র্ধমের গ্রন্হ থেকে জ্ঞান অন্নেষন করেনা। বরং বিজ্ঞানের বই পড়ে, গুগুলে তথ্য খোজে, চ্যাট বটের কাছে প্রশ্ন করে। ধর্মের প্রভাব কমতে শুরু করেছে। সামনের দিনে মানুষ যতই জ্ঞান বিজ্ঞানে এগিয়ে যাবে, জীবনে ধর্মের প্রভাব কমতে থাকবে।

মানুষ আধুনিক হচ্ছে। আলো আসবেই।

ভালো থাকবেন। :)

১৮ ই মে, ২০২৫ বিকাল ৪:৫০

নতুন নকিব বলেছেন:



আপনি যেই প্রশ্নের জবাব না পেয়ে সেটা সৃস্টিকর্তাই ভালো জানেন বলে ছেড়ে দিয়েছেন মানুষের এই না জানার স্থানেই ধর্মগুলি শক্তখুটি গেড়ে বসে আছে। :D

-আপনার মন্তব্যটি গভীর অর্থবোধক, তবে ধর্ম কেবল অজানার ফাঁকে ঠাঁই নেওয়ার নাম নয়—বরং তা মানুষের প্রশ্নের উত্তর খোঁজার, নৈতিক দিকনির্দেশনা পাওয়ার এবং জীবনের গভীর অর্থ খুঁজে পাওয়ার এক পরিপূর্ণ পথ।

আল্লাহ নিজেকে “আল-আলীম” (সর্বজ্ঞাতা) নামে পরিচিত করিয়েছেন—তাঁর অনেক জ্ঞান আমাদের সীমিত বোধগম্যতার বাইরে। আর ঠিক এখানেই আসে বিশ্বাস বা ঈমানের আসল সৌন্দর্য—যেখানে আমরা সবকিছু বুঝে নয়, বরং বিশ্বাস করে পথ চলি, কারণ আমরা জানি তিনি ন্যায়বান, পরম দয়ালু এবং পরিপূর্ণ রূপে হিকমতের অধিকারী।

অজানা মানেই ভুল নয়—অনেক কিছুই আমরা জানি না, তবুও তার ওপর নির্ভর করি (যেমন: চিকিৎসা, প্রযুক্তি, ভবিষ্যৎ)। বিশ্বাস মানে অন্ধতা নয়, বরং যুক্তি, অভিজ্ঞতা ও অন্তরের প্রেরণায় এক গভীর আস্থা।

দুনিয়াতে কেউই বলতে পারেনা সে সব বিষয়ে জ্ঞানের সর্বচ্চ স্থানে পৌছে গেছে। আমিও ধর্ম, মানুষের চরিত্র, মানব মনের আবেগ, অভিমান নিয়ে জানতে চেস্টা করি মাত্র। এগুলি বড়ই একটা বিচিত্র জিনিস।

-এটাই বাস্তবতা। আপনার অনুসন্ধিৎসু মন এবং জানার আগ্রহ প্রশংসনীয়। সত্যিই, জ্ঞান একটি মহাসমুদ্র—কেউই বলতে পারে না যে সে এর সবটুকু আয়ত্ত করেছে। আপনি যেমন ধর্ম, মানবচরিত্র, আবেগ এসব নিয়ে ভাবেন, আমরাও তা-ই করি।

তবে এখানেই এক জায়গায় আমরা ভাবি—এই জটিলতা, এই সুসংগঠিত বাস্তবতা, এই গভীর মানবিক অনুভূতি সবই যদি কেবল দৈব, এলোমেলো সূত্রে গড়ে ওঠে, তাহলে এর পেছনে এত পরিপক্বতা, নীতি আর সৌন্দর্য কোথা থেকে আসে? কীভাবে সূর্য নির্ধারিত নিয়মে নির্দিষ্ট স্থানে প্রতিনিয়ত উদিত এবং অস্ত যায়? কার গোপন ইশারায় চাঁদ একই শৃঙ্খলাবোধে নিরবধি জোছনা বিলায়? এই আকাশ কার নির্দেশে স্থির? এই বাতাস কার আদেশে বহমান? এই মেঘ কার হুকুমে বৃষ্টি হয়ে ঝড়ে পড়ে? অথৈ সাগরের বিশাল জলরাশি নোনা হয়ে গেল কার নিয়ম মেনে? আবার একই পানি নদী, পুকুর, খাল, বিল, হাওর কিংবা মাটির নিচ থেকে আমরা যখন তুলে আনি সেই পানিকে সুমিষ্ট সুপেয় করে রাখেন কে? কোন সে জন তিনি?

সৃষ্টিকর্তা বিশ্বাসের বিষয় বটে, তবে অন্ধ নয়—যে বিশ্বে নিয়ম, সৌন্দর্য, অর্থ ও উদ্দেশ্য আছে, সেখানে একজন সর্বজ্ঞান স্রষ্টার অস্তিত্ব অনেক সময় যুক্তিসঙ্গত বলেই মনে হয়। আমরা সবাই জ্ঞান সন্ধানী পথিক, কেউ একটু আগে, কেউ একটু পরে সত্যের দেখা পায়। আশা করি আপনার যাত্রায় সেই আলো একদিন জ্বলবেই।

ইসলাম দুনিয়ার ধর্মের সবচেয়ে আপডেটেড ভার্সান। এটা অন্য ধর্মের তুলনায় আধুনিক বলা যায়।

-আপনার মত একজন ভাবুক, বিজ্ঞ ব্যক্তির নিকট থেকে এই কথাটা আসাটাই স্বাভাবিক। ;)

ধন্যবাদ আপনাকে। এভাবেই সত্য উম্মোচিত হবে ইনশাআল্লাহ।

তবে মানুষ বর্তমানে র্ধমের গ্রন্হ থেকে জ্ঞান অন্নেষন করেনা। বরং বিজ্ঞানের বই পড়ে, গুগুলে তথ্য খোজে, চ্যাট বটের কাছে প্রশ্ন করে। ধর্মের প্রভাব কমতে শুরু করেছে। সামনের দিনে মানুষ যতই জ্ঞান বিজ্ঞানে এগিয়ে যাবে, জীবনে ধর্মের প্রভাব কমতে থাকবে।

মানুষ আধুনিক হচ্ছে। আলো আসবেই।


-আপনার মন্তব্যে গভীরতা রয়েছে। সত্যিই, মানুষ জ্ঞান-বিজ্ঞানে অনেক দূর এগিয়েছে, এবং প্রযুক্তির অগ্রগতিও বিস্ময়কর। তবে এটাও ভাবার মতো—যত বেশি মানুষ জানতে শিখছে, ততই তারা মূল প্রশ্নগুলোর মুখোমুখি হচ্ছে: "আমি কে? কেন এসেছি? মৃত্যুর পর কী?" এই প্রশ্নগুলোর উত্তর কেবল বিজ্ঞান দেয় না, কারণ বিজ্ঞান বস্তুগত জগত বিশ্লেষণ করে, কিন্তু অস্তিত্ব, ন্যায়নীতি, উদ্দেশ্য—এসবের ব্যাখ্যা দেয় ধর্ম।

ইসলাম শুধু একটি ধর্ম নয়, এটি একটি পূর্ণাঙ্গ জীবনব্যবস্থা, যেখানে যুক্তি, ন্যায় এবং মানবিকতার এক অপূর্ব সমন্বয় রয়েছে। এর শিক্ষা কখনো অন্ধ অনুসরণ নয়, বরং চিন্তা, উপলব্ধি আর অন্তর্দৃষ্টির আহ্বান।

আধুনিক হওয়া মানে আত্মার প্রয়োজন অস্বীকার করা নয়। মানুষ আলোর দিকে যায়, কিন্তু সব আলো প্রযুক্তি নয়—কখনো কখনো তা আসে হৃদয়ের গভীরতম প্রশ্ন থেকে। হয়তো একদিন সেই আলো আপনার অন্তরেও নেমে আসবে—নিরব, কোমল, কিন্তু সত্যের মতো দৃঢ়।

ভালো থাকবেন। :)

-অনেক অনেক ভালো থাকবেন আপনিও। :)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.