নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আলহামদুলিল্লাহ! যা চেয়েছিলাম, তার চেয়েও বেশি দয়া করেছেন আমার পরম প্রিয় রব। যা পাইনি, তা নিয়ে বিন্দুমাত্র আক্ষেপ নেই—কারণ জানি, তিনি দেন শুধু কল্যাণই। সিজদাবনত শুকরিয়া।\n\nপ্রত্যাশার একটি ঘর এখনও কি ফাঁকা পড়ে আছে কি না, জানি না। তবে এটুকু জানি—

নতুন নকিব

যবে উৎপীড়িতের ক্রন্দল-রোল আকাশে বাতাসে ধ্বনিবে না, অত্যাচারীর খড়্গ কৃপাণ ভীম রণ-ভূমে রণিবে না- বিদ্রোহী রন-ক্লান্ত। আমি সেই দিন হব শান্ত।

নতুন নকিব › বিস্তারিত পোস্টঃ

পৃথিবীর কিছু অঞ্চলে প্রায় সারা বছর বৃষ্টিপাতের কারণ কী?

২৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ২:৪৯

পৃথিবীর কিছু অঞ্চলে প্রায় সারা বছর বৃষ্টিপাতের কারণ কী?



পৃথিবীর কিছু অঞ্চলে প্রায় সারা বছরই বৃষ্টিপাত হয়। মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, আফ্রিকার কিছু দেশ এবং দক্ষিন আমেরিকার কিছু দেশ ও অঞ্চলে বছরের অধিকাংশ সময়ই বৃষ্টি হতে দেখা যায়। এমনটা পৃথিবীর অন্যান্য এলাকায় হয় না, এর কারণ কী? বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিকোন থেকে এর কোন ব্যাখ্যা আছে কি?

মূলত পৃথিবীর কিছু নির্দিষ্ট অঞ্চলে বিশেষ করে মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, আফ্রিকার নিরক্ষীয় অংশ এবং দক্ষিণ আমেরিকার আমাজন অববাহিকায় বছরের অধিকাংশ সময় বৃষ্টি হওয়াকে কাকতালীয় কোনো ঘটনা হিসেবে দেখার সুযোগ নেই। এর পেছনে রয়েছে পৃথিবীর ভৌগোলিক অবস্থান, সূর্য ও পৃথিবীর পারস্পরিক সম্পর্ক এবং বায়ুমণ্ডলের জটিল কিন্তু সুসংহত বৈজ্ঞানিক প্রক্রিয়া। বৈজ্ঞানিক গবেষণা অনুসারে, এই অঞ্চলগুলোতে বার্ষিক গড় বৃষ্টিপাত ১৫০ সেন্টিমিটারেরও বেশি হয়, যা পৃথিবীর অন্যান্য অঞ্চলের তুলনায় অনেক বেশি স্থিতিশীল এবং নিয়মিত।

১. নিরক্ষীয় অবস্থান (Equatorial Location)

এই অঞ্চলগুলোর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হলো এগুলো নিরক্ষীয় রেখা বা ইকুয়েটরের (Equator - পৃথিবীর উত্তর ও দক্ষিণ গোলার্ধকে সমানভাবে ভাগ করা কাল্পনিক রেখা) খুব কাছাকাছি অবস্থিত। নিরক্ষীয় অঞ্চলে সূর্যের কিরণ সারা বছর প্রায় লম্বভাবে ভূপৃষ্ঠে পড়ে। ফলে এখানে ভূমি ও জলভাগ তুলনামূলকভাবে বেশি উত্তপ্ত হয়, যেমন গড় তাপমাত্রা ২৫ থেকে ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকে। তাপ বৃদ্ধির ফলে ভূপৃষ্ঠের কাছের বাতাস হালকা হয়ে দ্রুত উপরের দিকে উঠতে শুরু করে। এই উর্ধ্বমুখী বায়ুপ্রবাহই নিরক্ষীয় অঞ্চলে ঘন ঘন মেঘ সৃষ্টি এবং প্রবল বৃষ্টির সূচনা করে।

২. সংবহনজনিত বৃষ্টিপাতের আধিক্য (Convectional Rainfall)

উপরের দিকে ওঠা এই উষ্ণ বাতাসের সঙ্গে থাকে বিপুল পরিমাণ জলীয় বাষ্প। যখন বাতাস ওপরে উঠে উচ্চতায় পৌঁছায়, তখন তাপমাত্রা কমে যায় এবং জলীয় বাষ্প ঘনীভূত হয়ে মেঘে রূপ নেয়। এই প্রক্রিয়ায় যে বৃষ্টি হয়, তাকে সংবহনজনিত বৃষ্টি (Convectional Rainfall - তাপের কারণে বায়ুর উর্ধ্বগতি থেকে উদ্ভূত বৃষ্টি) বলা হয়। নিরক্ষীয় অঞ্চলে প্রায় প্রতিদিনই এই প্রক্রিয়া সক্রিয় থাকে, ফলে বৃষ্টি এখানে নিয়মিত ঘটনা হয়ে দাঁড়ায়।



৩. আন্তঃউষ্ণমণ্ডলীয় সংযোগ বলয় (Intertropical Convergence Zone বা ITCZ)

এই বৃষ্টিপাতকে আরও শক্তিশালী করে আন্তঃউষ্ণমণ্ডলীয় সংযোগ বলয় বা আইটিসিজি (ITCZ - উত্তর ও দক্ষিণ গোলার্ধের বাণিজ্য বাতাসের মিলনস্থল যেখানে নিম্নচাপ সৃষ্টি হয়)। এটি এমন একটি অঞ্চল, যেখানে উত্তর ও দক্ষিণ গোলার্ধের বাণিজ্য বাতাস (Trade Winds - নিরক্ষরেখার দিকে প্রবাহিত স্থায়ী বায়ু) এসে মিলিত হয়। বাতাসের এই মিলনস্থলে স্বাভাবিকভাবেই বাতাস উপরের দিকে উঠে যায় এবং দীর্ঘস্থায়ী মেঘ ও বৃষ্টির সৃষ্টি হয়। সূর্যের আপাত অবস্থান অনুসরণ করে আইটিসিজি সারা বছর নিরক্ষীয় অঞ্চলের আশপাশে অবস্থান করে। এর ফলেই এসব এলাকায় প্রায় বারোমাসই বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকে।

৪. উষ্ণ মহাসাগর ও অতিরিক্ত আর্দ্রতা (Warm Oceans and High Humidity)

এই অঞ্চলগুলোর চারপাশে বিস্তৃত উষ্ণ মহাসাগরের উপস্থিতিও একটি বড় কারণ। নিরক্ষীয় অঞ্চলের সমুদ্রের তাপমাত্রা সাধারণত বেশি থাকে। এর ফলে সমুদ্র থেকে প্রচুর জলীয় বাষ্প বাতাসে মিশে যায়। এই আর্দ্র বাতাস যখন সামান্য উত্তাপ বা বায়ুপ্রবাহের প্রভাবে উপরের দিকে ওঠে, তখন সহজেই বৃষ্টি শুরু হয়। তাই মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়ার মতো উপকূলীয় ও দ্বীপদেশগুলোতে আর্দ্রতা (Humidity - বায়ুতে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ) ও বৃষ্টিপাত দুটিই অত্যন্ত বেশি দেখা যায়।

৫. ভূপ্রকৃতি ও ভূউত্তোলনজনিত বৃষ্টি (Orographic Rainfall)

ভূপ্রকৃতিও এখানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ইন্দোনেশিয়া ও আশপাশের অঞ্চলগুলো পাহাড়, আগ্নেয়গিরি ও দ্বীপে পরিপূর্ণ। সমুদ্র থেকে আসা আর্দ্র বাতাস পাহাড়ে বাধা পেয়ে উপরের দিকে উঠলে বাতাস ঠান্ডা হয়ে যায় এবং ঘনীভবনের মাধ্যমে ভারী বৃষ্টিপাত ঘটে। এই ধরনের বৃষ্টিকে ভূউত্তোলনজনিত বৃষ্টি (Orographic Rainfall - পাহাড়ের বাধায় বায়ু উঠে যাওয়ার ফলে হওয়া বৃষ্টি) বলা হয়। এটি এসব অঞ্চলে বৃষ্টির পরিমাণ আরও বাড়িয়ে দেয়।

৬. ঘন বনভূমি ও ইভাপোট্রান্সপিরেশন (Evapotranspiration)

আফ্রিকার কঙ্গো অববাহিকা ও দক্ষিণ আমেরিকার আমাজন অঞ্চলে ঘন বনভূমির প্রভাবও উল্লেখযোগ্য। এসব বনাঞ্চলের গাছপালা তাদের পাতা ও কাণ্ডের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ জলীয় বাষ্প বায়ুমণ্ডলে ছাড়ে। এই প্রক্রিয়াকে ইভাপোট্রান্সপিরেশন (Evapotranspiration - মাটি থেকে বাষ্পীভবন এবং উদ্ভিদ থেকে জলীয় বাষ্প নির্গমনের সম্মিলিত প্রক্রিয়া) বলা হয়। এর ফলে স্থানীয়ভাবে আর্দ্রতা বৃদ্ধি পায় এবং বৃষ্টিপাত যেন নিজেই নিজেকে পুনরুজ্জীবিত করে। তাই একবার বৃষ্টির পরিবেশ তৈরি হলে তা দীর্ঘ সময় ধরে বজায় থাকে।

সবশেষে বলা যায়, নিরক্ষীয় অঞ্চলের এই অবিরাম বৃষ্টিপাত কোনো একক কারণে ঘটে না। উপরোক্ত প্রতিটি কারণ পরস্পরের সঙ্গে যুক্ত হয়ে কাজ করে বলেই মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, আফ্রিকার কিছু অংশ এবং দক্ষিণ আমেরিকার অনেক অঞ্চল পৃথিবীর সবচেয়ে বৃষ্টিবহুল এলাকায় পরিণত হয়েছে। এই ব্যাখ্যা বৈজ্ঞানিক গবেষণা এবং পর্যবেক্ষণের উপর ভিত্তি করে তৈরি, যা এই অঞ্চলগুলোর জলবায়ুকে আরও স্পষ্টভাবে বুঝতে সাহায্য করে।

ছবি, সংগৃহিত।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ২৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:০০

সৈয়দ মশিউর রহমান বলেছেন: পড়তে পারিনি তবে ছবিগুলো সুন্দর।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.