নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আসো, মুখোশ পড়ে খেলতে বসি, আমি জানি আমি জিতবো - আমি এই খেলাটায় বড্ড পটু!

নাজমুস সাকিব পাখি

৭০০ কোটির মাঝে একজন, সাধারণ!

নাজমুস সাকিব পাখি › বিস্তারিত পোস্টঃ

এক হাজার এক রাত্রি বনাম আধা ঘণ্টার চা-বিরতি

২৬ শে জুলাই, ২০১৩ দুপুর ১২:১৩





আরব্য রজনির মেয়েটার কথা মনে আছে? শেহরাজাদ নাম, ওই যে যে-মেয়েটা গল্পগুলো বলে। শেহরাজাদ একটা কাল্পনিক চরিত্র হলেও একটু খেয়াল করলে আপনার আশেপাশে একাধিক শেহরাজাদকে আবিষ্কার করবেন আপনি। পার্থক্য এই, শেহরাজাদের গল্প শুনতে চেয়েছিল বাদশাহ, আর বাস্তবের শেহরাজাদরা হয়তো গল্প বলার সুযোগটুকুও পান না। যদি পেতেন, আপনি অবাক হয়ে দেখতেন, এক হাজার এক দিনেও শেষ হচ্ছে না তাদের গল্প।



মিউজিশিয়ানরা হচ্ছেন আধুনিক কালের শেহরাজাদ। একটা অ্যালবাম তৈরির পেছনে যে-গল্পগুলো থাকে, সেটাকে কেবল আরব্য রজনির সাথেই তুলনা করা যায়। ধরা যাক, দশটা গান থাকে একটা অ্যালবামে। দশটা গানের পেছনে দশ রকম গল্প। এরপর সুর। লাগসই সুরটা ধরতে ধরতে পার হয়ে যায় অনেকগুলো বিনিদ্র রাত আর দিন। সুরের পর সঙ্গীত। একটা গানের যন্ত্রানুষঙ্গ কেমন হবে। ডাকো বাদকদের। স্টুডিও বুকিং, প্র্যাক্টিস, রেকর্ডিং, প্রত্যেকটা ইন্সট্রুমেণ্ট আলাদা-আলাদা রেকর্ড করে তারপর মিক্সিংয়ের মাধ্যমে ট্র্যাক তৈরি হয়, সেই ট্র্যাকের ওপর দেয়া হয় ভয়েজ। সাদা চোখে মোটামুটি ব্যাপারটা এই। কিন্তু গল্পের পেছনেও গল্প থাকে। রাগের গল্প, অভিমানের গল্প; বিরক্তি, মতানৈক্য, কিংবা হঠাৎ কোন আইডিয়া পেয়ে যাওয়ার গল্প। হতাশার গল্পও আছে। দেখা গেল, সব রেডি করার পর স্পন্সরওয়ালারা নিতে চাইছে না। নানান টালবাহানা। অ্যালবামটা পড়ে থাকল মাসের পর মাস, এমন কি বছরের পর বছর। এত কিছুর পর যখন একটা অ্যালবাম রিলিজ হয়, টাকায় এর মূল্য হয় না। অমূল্য। কিন্তু মাত্র ৫০ কি ৬০ টাকার বিনিময়ে অ্যালবামগুলো আপনাদের হাতে তুলে দিচ্ছেন তারা। একেকটা অ্যালবাম শাহরাজাদের একেকটা আনটোল্ড স্টোরি। সেখানে আরও আছে কভার ডিজাইনের গল্প, রাত জেগে পোস্টার সাঁটার গল্প, লাইভ শোতে নতুন গান গেয়ে শ্রোতাদের সারপ্রাইজ দেওয়ার গল্প, মিডিয়া লঞ্চিং, ইন্টারভিউ, মিউজিক ভিডিও তৈরির গল্প। কৃতজ্ঞতা স্বীকারের গল্প। ক্রেডিট লাইনে আপনি যখন স্টুডিও ঝাড়ু দেওয়া লোকটা কিংবা সময় ভুলে যাওয়া সেশনের মধ্যে নাস্তা-পানি, লাঞ্চ-ডিনারের যোগান দেওয়া কারও মা-বোনের নামটা আবিষ্কার করবেন, আপনার অনুভূতিই হবে অন্যরকম। এই অনুভূতিটা কিন্তু আপনি পাইরেটেড লিঙ্ক থেকে ডাউনলোড করে পাবেন না। অ্যালবাম ডাউনলোড দিয়ে আধা ঘণ্টার জন্য চা খেতে গিয়ে ফিরে এসে আপনি পাবেন একটা ফোল্ডার। যতগুলো অ্যালবাম, ততগুলো ফোল্ডার। বৈচিত্রহীন, অলঙ্করণবিহীন। সেই ফোল্ডারে থাকবে না কভার-আর্ট দেখে মুগ্ধ হওয়ার গল্প, সিডি কিনতে গিয়ে কোনও সুন্দরীতমার সাথে চোখাচোখি হওয়ার গল্প, শিল্পীর স্বহস্তে দেওয়া অটোগ্রাফ পাওয়ার গল্প, ভাগ্যবান ক্রেতা হিসেবে অফিসিয়াল টি-শার্ট পাওয়ার গল্প। অর্থাৎ এত সব গল্পের সঙ্গে আপনার নিজের গল্পটাও যোগ হওয়ার সুযোগ নষ্ট করছেন আপনি নিজেই। লিরিক, বুকলেট ইত্যাদি কিছুই পাবেন না আপনি সেই ফোল্ডারে।



এখন, অ্যালবাম কিনে শেহরাজাদদের গল্পের চরিত্র হবেন, নাকি ফোল্ডার জমাবেন, সেই সিদ্ধান্ত আপনার।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২৬ শে জুলাই, ২০১৩ দুপুর ১২:২৯

নূর আদনান বলেছেন: এখন বুঝলাম কাহিনীটা কি......

২| ২৬ শে জুলাই, ২০১৩ দুপুর ২:২৮

প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: অনেক সুন্দরভাবে কথাটা বলেছেন। প্রিয়তে নিলাম।

৩| ২৬ শে জুলাই, ২০১৩ বিকাল ৪:৩২

নীল_সুপ্ত বলেছেন: বাহ, দারুণভাবে বুঝিয়েছেন তো :) +++

৪| ২৬ শে জুলাই, ২০১৩ রাত ৯:৫২

কালীদাস বলেছেন: বাংলা কোন গানের ডাউনলোড লিংক কখনও ব্লগে শেয়ার করিনা ঠিক এই কারণেই; আমার মনের কথাগুলো খুব সুন্দরভাবে লিখেছেন। থ্যাংকস :)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.