নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

হু

হু

হু - সম্পূর্ন রাজনীতি মুক্ত একটি ব্লগ। এখানে বাংলা সহ বিশ্ব সাহিত্যের মজার কিছু ছোট গল্প প্রকাশ করা হবে। এই গল্প গুলো প্রকাশের ক্ষেত্রে আমার নিজস্ব কোন সৃজনশীলতা নেই যেটি আছে সেটি হলো পরিশ্রম। এছাড়া মাঝে মাঝে নিজের লেখা দু একটি ছোট গল্প পেতে পারেন, তবে সেই গল্পের মান নিয়ে আমি নিজেই সন্দিহান। এই ব্লগটির বাংলার ইতিহাস, ঐতিহ্য, প্রত্নতত্ত্ব, সমাজ, অর্থনীতি ইত্যাদি বিষয়ে লেখা প্রকাশ করতে আগ্রহী।

হু › বিস্তারিত পোস্টঃ

ভারতীয় পৌরাণিক কাহিনী: পর্ব-২ ( অপ্সরা: মেনকা, রম্ভা, তিলোত্তমা)

২১ শে জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ১০:৫৫





অপ্সরা মেনকার বিশ্বমিত্রের ধ্যন ভঙ্গের চিত্র (শিল্পীর চোখে)





অপ্সরা মেনকা:



আমরা যে কয়েক জন অপ্সরীর নাম জানি তার মধ্যে অন্যতম হলে উর্বশী, মেনকা, রম্ভা অন্যতম। অপ্সরীদের মধ্যে মেনকা একটি বিশেষ স্থান দখল করে আছে। মেনকা শকুন্তলার জননী। অপ্সরা মেনকাকে নিয়ে সাধারণ দুইটি মিথের কথা বেশি শোনা যায়। এই মিথ দুইটি হলো:-



১.



হিন্দু ধর্ম মতে ব্রাহ্মণগন কঠোর তপস্যার কারণে দেবতা পর্যায়ে চলে যেতে পারতেন। বিশ্বমিত্র ঠিক তেমনই একজন ব্রাহ্মণ, কিন্তু তার উপর দেবতা ইন্দ্র সন্তুষ্ট ছিলেন না। তাই দেবতা ইন্দ্র তাকে ঈর্ষা করতেন, ইন্দ্র অনেক সময় তাকে ভয়ও করতেন কারণ তিনি যদি দেবতাতুল্য হয়ে যান তবে ইন্দ্রের স্বর্গরাজ্যে এসে বিশ্বমিত্র হানা দিতে পারেন। দেবতা ইন্দ্র তার এই তপস্যা ভংঙ্গের জন্য ষড়যন্দ্রে লিপ্ত হন। আর এই ষড়যন্ত্রে ইন্দ্র মেনকাকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করেন।



বিশ্বমিত্রের কঠোর তপস্যা সন্তুষ্ট হয়ে ব্রহ্মা তাকে ঋষিত্ব প্রদান করেন। কিন্তু এতেও বিশ্বমিত্র সন্তুষ্ট হতে পারননি, তাই তিনি আবার উগ্রতর তপস্যায় নিজেকে নিয়োজিত করেন। যেহেতু দেবতা ইন্দ্র তাকে ঈর্ষা ও ভয় করতেন তাই তিনি মেনকাকে পাঠান বিশ্বমিত্রের ধ্যান ভঙ্গ করার জন্য। অপ্সরা মেনকা পুরাতীর্থে স্নান করতে গেলে বিশ্বমিত্র মেনকার রূপে আকৃষ্ট হন এবং তারা সহবাসে দীর্ঘ ১০ বছর অতিবাহিত করেন। এই সহবাসের ফলে মেনকার গর্ভে শকুন্তলা নামে এক কন্যা সন্তান জন্ম গ্রহণ করেন। যখন বিশ্বমিত্রের বোধোদয় হয় তখন তিনি মেনকাকে ত্যাগ করে উত্তর দিকে গমন করেন এবং হিমালয়ের কৌশিক নদীর তীরে আবার ধ্যান মগ্ন হন। পরবর্তীতে মেনকাও শিশু শকুন্তলাকে নদীর তীরে রেখে চলে যান।



২.



দক্ষ কন্যা সতী যখন হিমালয়ে মহাদেব অর্থাৎ শিবের সাথে হিমালয়ে বসবাস করতেন তখন মেনকা ছিলেন সতীর সখি। কিন্তু সতী যখন মারা যান তখন মেনকা কঠোর তপস্যা করতে আরম্ভ করলেন- যেন সতী তার কণ্যা হয়ে আবার জন্ম গ্রহণ করেন। তার তপস্যা ভগবতী সন্তুষ্ট হয়ে তাকে বর দেন- তার একশত পুত্র সন্তান ও একটি কন্যা সন্তান হবে। বর লাভের পর মৈনাক প্রভৃতির জন্ম হয় এবং সতী পনরায় জন্ম গহেণ করেন। (উৎস: কালিকা পুরাণ)



রম্ভা:



স্বর্গের অপ্সরীদের মধ্যে অন্যতম। অপ্সরা রম্ভাকে নিয়ে বেশ কয়েকটি মিথ পাওয়া যায় পৌরাণিক গ্রন্থগুলোতে।এগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো:-



১.



রম্ভা কুবেরের পুত্র নবকুলের নিকট অভিসার গমন কালে রাবণ তাকে দেখে কামমুগ্ধ হয়ে পড়েন। তাই রাবণ তাকে ধর্ষণ করেন। রম্ভা নবকুলকে এই ঘটনা বললে নবকুল রাবণকে অভিশাপ দেন, যদি রাবণ কোন নারীর অনিচ্ছায় তার প্রতি বল প্রয়োগ করে ধর্ষণ করতে গেলে রাবণের মাথা সাত খন্ডে বিভক্ত হয়ে যাবে। এই জন্যই সীতা রাবণ কর্তৃক অপহৃত হয়েও নিজের সতীত্ব রক্ষা করতে পেরেছিলেন। (সূত্র: রামায়ন-উত্তর)



২.



একবার ইন্দ্র বিশ্বমিত্রের তপস্যা ভঙ্গ করার জন্য অপ্সরা রম্ভাকে প্রেরণ করেন। কিন্তু বিশ্বমিত্রের অভিশাপে রম্ভা শিলাতে পরিণত হয়ে ১০০০ বছর অস্থান করেন। ( উৎস: রামায়ন, মহাভারত)। রম্ভা যখন বিশ্বমিত্রের আশ্রমে শিলারূপে বাস করছিলেন তখন অঙ্গকার নামে একজন রাক্ষসী সেখানে নানা উপদ্রব করতে আরম্ভ করেন। তখন ঐ আশ্রমে তপস্যা রত শ্বেমুণি বায়ব্য অস্ত্রে ঐ শিলাখণ্ড দুই ভাগে ভাগ করে রাক্ষসকে উদ্দেশ্য করে নিক্ষেপ করেন। অস্ত্রের ভয়ে ভীত হয়ে রাক্ষসী পলায়ন করে কপিতীর্থে এলে তার মাথায় সেই শিলা খন্ড পড়ে রাক্ষসের মুত্যু হয়। এই শিলাখন্ড কপিতীর্থে নিমগ্ন হলে রম্ভা আবার নিজের রূপ ফিরে পান। (স্কন্ধ পুরাণ)



৩.



ইন্দ্র সভায় নৃত্যকালে রম্ভার তালভঙ্গ হয়। তখন ইন্দ্র ক্রদ্ধ হয়ে রম্ভাকে অভিশাপ দেন-রম্ভা স্পন্দনহীন বিকলাঙ্গ হয়ে ভূতলে পতিত হন। পরে নারদের পরামর্শে শিবের পূজা করে পুনরায় স্বর্গে ফিরে যান। (স্কন্ধ পুরাণ)



৪.



ইন্দ্রের আদেশে রম্ভা জাবালি মুনির তপোভঙ্গ করেন। মুনির ঔরষে রম্ভার এক কণ্যা জন্মগ্রহণ করে। জাবালি এই কন্যার প্রতিপালন করেন; এই কন্যার নাম ফলবতী।





তিলোত্তমা:



দৈত্যরাজ নিকুম্ভের দুই পুত্র সুন্দ ও উপসুন্দ ব্রহ্মার কঠোর তপস্যা করে ত্রিলোক বিজয়ের জন্য অমরত্ব প্রার্থণা করেন। কিন্তু ব্রহ্মা এদের অমরত্বের বরদান করতে সম্মত হন নি। তবে তিনি বলেন যে, স্থাবর-জঙ্গমের কোন প্রাণী তাদের ক্ষতি করতে পারবে না। যদি এদের মৃত্যু হয় তবে পরস্পরের হাতেই হবে। এই বর পাবার পর তারা দেবতাদের উপর নিপীড়নে ব্যস্ত হয়ে পড়ল। তখন দেবতারা প্রাণ রক্ষা করার জন্য ব্রহ্মার নিকট প্রার্থনা করেন এদের বদ করার জন্য। ব্রহ্মা এদের বদ করার জন্য পরমা সুন্দর এক রমনীর সৃষ্টি করলেন। ত্রিভুবনের সমস্ত উত্তম জিনিস তিল তিল করে সংগ্রহ করে ব্রহ্মা এক অতুলনীয়া নারী সৃষ্টি করেন। তিল তিল সুন্দর বস্তু মিলিত হয়ে এই সুন্দরী সৃষ্টি হয়েছিল বলে এর নাম হয় তিলোত্তমা। তিলোত্তমাকে সৃষ্টির পর ব্রহ্মা সুন্দ ও উপসুন্দরের নিকট পাঠিয়ে দেন। তিলোত্তমা এদের দুই জনের সামনে নৃত্য করতে থাকে। সুন্দ ও উপসুন্দ তিলোত্তমার রূপে মুগ্ধ হয়ে তাকে পাবর জন্য পরস্পর যুদ্ধে লিপ্ত হন। এতে একে অন্যের হাতে নিহত হন।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ১:৫৭

সন্ধ্যা প্রদীপ বলেছেন: তিলোত্তমা তিল তিল করে সৌন্দর্য দিয়ে সৃষ্টি বলেই হয়ত আজও অনেক বেশি সুন্দরী নারীকে তিলোত্তমা বলে উপাধি দেয়া হয়?

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.