নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সোহাইল বিন জয়নুল

সোহাইল বিন জয়নুল › বিস্তারিত পোস্টঃ

সৌরজগতের কেন্দ্র ও ধর্ম বনাম বিজ্ঞানের তুমুল সংঘাত, ধর্ম-আদালতের অযৌক্তিক বিরোধিতা এবং একজন সত্যসন্ধানী বিজ্ঞানীর করুন অন্তর্ধান--------- ।। ২।।

০৪ ঠা অক্টোবর, ২০১৫ সকাল ১০:৪৩

,
পিসা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ও ১৫৮৯ সালে ঐ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসেবে যোগ দেয়া গ্যালিলিওর সাথে ঐ বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য শিক্ষকদের মতের বিরোধিতা ছিল প্রবল।যেখানে অন্য শিক্ষকদের বিশ্বাস ছিল 'চরম সত্যকে জানতে হবে বই পড়ে সেখানে গ্যালিলিওর মত ছিল বই পড়ে নয় বরং পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমেই বাস্তব সত্যকে জানা যায়।দুষ্টুমিচ্ছলে পিসার হেলানো মিনার থেকে বিভিন্ন ওজনের সীসার একই সময়ে মাঠি ছোঁয়ার দৃষ্টান্ত দেখিয়ে অ্যারিস্টটলকে ভুল প্রমাণ করা গ্যালিলিও অ্যারিস্টটলপন্থী শিক্ষকদের প্রবল রোষানলে পতিত হন।সত্যাসন্ধানী গ্যালিলিও কে সবচেয়ে বিপজ্জনক সত্য রাস্তায় ঠেলে দেয় দূরবীক্ষণ।তিনি দূরবীক্ষণের সাহায্যে টলেমীর তত্ত্ব কে ভ্রান্ত প্রমাণ করে কোপার্নিকাসের তত্ত্ব কে সত্য বলে প্রতিষ্ঠিত করার জোর চেষ্টা চালান।তিনি কোপার্নিকাসের বিরুদ্ধে উত্থিত যুক্তিকে স্বপক্ষের যুক্তিতে রূপান্তর করেন।তিনি সৌরকলঙ্ক আবিষ্কার করে সবচেয়ে বেশি রোষানলের শিকার হন।তার এই অনুসন্ধিৎসা ত্রানকর্তা ও তার ক্ষমতা সম্পর্কে মানুষকে ভাবিয়ে তোলতে পারে এই আশাংকায় তাকে নাস্তিকতার অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়।তার বিরুদ্ধে ধর্ম আদালত দুটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেয়--
ক.সূর্য পৃথিবীর কেন্দ্রে অবস্থিত এবং পৃথিবীর চারদিকে ঘুরছে না এটা বলা চরম মূর্খতা ও ধর্মবিরোধীতা।
খ.পৃথিবী কেন্দ্রে নয় এবং সূর্যের চারদিকে ঘুরছে এই কথাটি চরম মিথ্যাচার ও সত্য বিশ্বাসের পরিপন্থী।।
তাকে ১৬১৬ খ্রিস্টাব্দে ধর্ম আদালতে হাজির করে জোরপূর্বক তার প্রচারিত সকল মত ভ্রান্ত ও কোপার্নিকাস ভুল ছিলেন বলানো হয় এবং ধর্মগ্রন্থ ছুঁয়ে এই মর্মে শপথ করানো হয় যে,ভবিষ্যতে তিনি এসব প্রচার থেকে বিরত থাকবেন।
এই ঘটনার পর গ্যালিলিও ফ্লোরেন্সে চলে যান এবং সেখানে বেশ কয়েকবছর নিরব জীবন-যাপন করেন।অতঃপর মূর্খ ধর্মগুরুদের দেয়া শপথ উপেক্ষা করে তিনি রচনা করেন তার বিখ্যাত গ্রন্থ "Dialogues on the two greatest system of the World'। ১৬৩২ সালে প্রকাশিত এই বইটি ছিল মূলত টলেমীর তত্ত্বের ভ্রান্থতা ও কোপার্নিকাসের সত্যতার উপর জোরালো যুক্তির একটি চমকপ্রদ গ্রন্থ।এই গ্রন্থটি বিজ্ঞানমনস্কদের কাছে সমাদৃত হলেও খেপিয়ে তোলে ধর্মযাজকদের।জেসুইট ফাদার মেলচিওর ইনচোফার এই গ্রন্থকে ধর্মের প্রতি কুৎসা উল্লেখ করে সমগ্র ধার্মিকদের উত্তেজিত করেন।অসুস্থ,বৃদ্ধ ও হাটাচলায় অক্ষম এই মহান সত্যসন্ধানীকে আবারো ধর্ম আদালতে হাজির করা হয়।ধর্মযাজকদের রচিত গ্যালিলিওর মতবাদের প্রতি ঘৃনাবাক্য সংবলিত দীর্ঘ শপথ বাক্য তাকে দিয়ে পাঠ করিয়ে নেয়া হয়।তারপর তার বাকি জীবন বন্দীদশায় কাটানোর সিদ্ধান্ত দেয় ধর্ম আদালত।১৬৬৩ সালে নিজ বাড়ি অরসেট্রিতে ফিরে যাওয়ার অনুমতি দেয়া হলেও তার চলাফেরা ছিল নিয়ন্ত্রিত,এমনকি পরিবারের সদস্যদের সাথেও তাকে দেখা করতে দেয়া হত না।এরই মধ্যে তার বড় মেয়ে সিস্টার সেলেস্টির মৃত্যুতে অনেকটাই ভেঙ্গে পড়েন গ্যালিলিও।১৬৩৭ সালে তিনি পুরোপুরি অন্ধ হয়ে যান।এরপর চরম কস্টে কাটিয়ে দেন আরো পাঁচটি বছর।অতঃপর ১৬৪২ খ্রিস্টাব্দের ৮ জানুয়ারি এই মহান সত্যসন্ধানী প্রয়াত হন।।

মন্তব্য ৫ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৫) মন্তব্য লিখুন

১| ০৪ ঠা অক্টোবর, ২০১৫ সকাল ১১:১৯

রাঘব বোয়াল বলেছেন: শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।

০৪ ঠা অক্টোবর, ২০১৫ সকাল ১১:৫৫

সোহাইল বিন জয়নুল বলেছেন: কৃতজ্ঞতা জানবেন,,,,,,,

২| ০৪ ঠা অক্টোবর, ২০১৫ দুপুর ২:৫৮

ময়না বঙ্গাল বলেছেন: তার কষ্টে ত্যাগের কারণেই বিজ্ঞান চলার ফোর্স পেয়েছে । এটা আল্লারই এক মহান ইশারা ।

৩| ০৪ ঠা অক্টোবর, ২০১৫ বিকাল ৫:৫৮

দরবেশমুসাফির বলেছেন: ভাল লিখেছেন।

গালিলিওর অপমানই মানুষকে আস্তে আস্তে ধর্মগুরুদের ভণ্ডামি থেকে সত্যিকার ধর্মের দিকে আকৃষ্ট করেছিল। ফলে সে সময়ের খ্রিস্টীয় সমাজ জ্ঞানে বিজ্ঞানে উন্নত হতে পেরেছিল।

০৪ ঠা অক্টোবর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:০১

সোহাইল বিন জয়নুল বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই,,,,

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.