নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ফয়সাল ইসলাম িনশান

ফয়সাল ইসলাম িনশান › বিস্তারিত পোস্টঃ

জাতি হিসাবে আমরা খুব হিংশুক !!

১৯ শে মার্চ, ২০১৩ সকাল ১১:৩৪

জাতি হিসাবে আমরা খুব হিংশুক !!



আমরা কোন ভালো জিনিস কে বেশি দিন সহ্য করতে পারিনা ।।

যেমন আমাদের দেশের ক্রিকেটার দিয়ে শুরু করা যাক

একসময় যখন আমিনুল ইসলাম বুলবুল প্রথম টেস্টে ১৪৫ রান করলেন

তখন তাকে নিয়ে সেই সময় খুব মাতা মাতি হয়েছিল , যখন তিনি কয়েক টেস্ট খারাপ করলেন তাকে বাদ দিয়ে দিলেন আমাদের বিসিবির কর্তারা । তখন মানুষের ও কোন প্রতিবাদ দেখা গেলো না বরং আমিনুল ইসলাম কে নিয়ে অনেক আজে বাজে কথা বলা শুরু করা হল । অথচ এই অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান সেই সময় যদি তাঁর টেস্ট ক্রিকেটটা চালিয়ে যাবার সুযোগ পেতেন তাহলে আজ হইতো আমাদের টেস্ট এ আমিনুল একটা বড় নাম হয়ে থাকতেন। এরপর আসা যাক বাংলাদেশের প্রথম সফল ক্যাপ্টেন হাবিবুল বাশার সুমন এর কথা ,যাকে আমরা মিস্টার ফিফটি বলে চিনতাম , ঐ সময় বাংলাদেশ হারুক আর জিতুক বাশার নামলেই ফিফটি হবেই তাঁর। এই ক্রিকেটারটির নেতৃত্ব গুন এতই ভালো ছিল যে ভারত, অস্ট্রেলিয়া , সাউথ আফ্রিকার মত দেশ গুলাকেও তখন আমরা প্রথম হারাতে সক্ষম হই , হুম আশরাফুল এর ভুমিকা অস্বীকার এর উপায় নাই ঐ ম্যাচ গুলাতে কিন্তু তারপর বাশার এর নেতৃত্ব এর একটা ব্যাপার ছিল। যে আশরাফুলকে এত স্নেহ করত আমাদের বাশার তাঁর মধ্যেও ঢুকে গেলো হিংশুক ভাব জেমি সিডন্স এর কল্যাণে । তিনি আশরাফুল কে বুঝালেন যে তুমি এখন বাংলাদেশের সেরা খেলোয়াড় তাই বাশার এর মত বুড়ো কে বাদ দিতে হবে আমাদের। যার ফলশ্রুতিতে বাশার এর অধ্যায় সমাপ্তি । তখন আশরাফুলের সাথে এই দেশের নাগরিকরাও হিংসুক হয়ে গেছিল তাঁরা এই সিদ্ধান্ত কে একবার ও প্রতিবাদ করে নি । আশরাফুলের বাজে ফর্মের কারনে আশরাফুল কে বাদ দিয়ে অধিনায়ক আমাদের নড়াইল এক্সপ্রেস মাশরাফি । কিন্তু ভাজ্ঞের এক নির্মম পরিহাস ইনজুরির কারনে ছিটকে পরলেন তিনি দল থেকে।

এর পর এক নতুন অধ্যায় বাংলাদেশ ক্রিকেটে সাকিব আল হাসান অধ্যায় যা এখন পর্যন্ত বহমান । বাঙ্গালী বিদেশিদের উপদেশ বেশি পছন্দ করে । সাকিব ও তাঁর বাতিক্রম হবেন কেন তিনিও বাঙ্গালী , অধিনায়কত্ব পাবার পর তিনি এইবার সিডন্সের কথায় এসে লাগলেন মাশরাফি এবং আশরাফুল কর্তনে । দেশের মাটিতে হল বিশ্বকাপ দেশের সেরা পেস বোলার কে দেওয়া হল বাদ তবুও সেটা ইনজুরির বাহানাই। আশরাফুল কে মিডিয়ার চাপে নেওয়া হল কিন্তু ম্যাচ খেলানো হল অনেক কম। তখন মনে হচ্ছিল বিশ্ব এর কনিষ্ঠ সেঞ্চুরিয়ান এর নতুন পরিচয় হতে চলেছে বোলার হিসাবে । কিছু মানুষ তখন মাশরাফি কে বাদ দেওয়া নিয়ে মিছিল , হরতাল করলেন কিন্তু কোন লাভ হই নাই কারন জাতিগত ভাবে আমরা বিভক্ত । এইটা অবশ্য আমাদের দুই রাজনৈতিক দলি শিখিয়েছে। এর পর বিশ্বকাপ শেষে যখন বুঝল দেশবাসী সিডন্স বাংলার ক্রিকেট কে ধ্বংস করছে হয়ে গেলো তাঁর বিদায় , কিন্তু এই বিদায়টা আর ও আগে দিলে হইত আমাদের ৫৮ , ৭৮ এর লজ্জাই ডুবতে হত না। হল সাকিব এর অধিনায়ক অধ্যায় এর সমাপ্তি।



এর পর আসলেন যিনি আমার মনে হয় বাংলাদেশ ক্রিকেট এর একটা নিস্পাপ চরিত্র মুশফিকুর রহিম , প্রথমে আমি নিজেই এই মানুষটিকে পছন্দ করতাম না ঐ যে জাতি হিসাবে আমরা হিংসুক তাই । আমার ভুল ভাঙল এশিয়া কাপে । সত্যি বুঝলাম আমি কতটা ভুল ছিলাম , মুশফিকুর রহিম শুধু দল কে এক করেন নাই ঝামেলা মিটিয়েছেন মাশরাফি সাকিব এর মধ্যেও । আশরাফুল এর সাথে সবার এখন ভালই পরছে। এখন মনে হচ্ছে আমাদের টাইগাররা একটা টিম হিসাবে খেলে, তাই এখন হারলে জিতলেও দেখতে ভালো লাগে। কারন একটা জায়গায় আমরা এক ।

কিন্তু খারাপ লাগে অনেকেই মুশফিক কে আওয়ামীলীগ এর ছেলে হাবিজাবি কথা বলে এইটা কারন আমরা জাতি হিসাবে মন খুলে কারোর সুনাম করতে পারিনাহ । অনেকেই সাকিব কে নিয়েও সমস্যা । সাকিব কেন শিশির কে বিয়ে করল আমার বোন অথবা বান্ধবি করলেই পারত এমন কথা শুনছি চার পাশে , আবার অনেকে বলছেন এক প্লে বয় পার্টি তে যাওয়া মেয়ে শিশির, কেউ কেউ তো বলছেন স্পিনাররা সবসময় second hand বল পায়। এই সব কথা আসলে হিংসার থেকে তাঁর বলেন । কারন তাঁরা নিজেরা জানেন তারা কখন ও সাকিব হতে পারবেন না। শিশিরের মত মেয়ে তাঁরাও চান , একটা কথা আছে একটা বস্ত্রহীন নারী দেখতে সবার মনের ভিতরে একটা বাসনা থাকে কেউ দমায় রাখে কেউ সামনা সামনি দেখাই ।



এর পর আসা যাক আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে এই দেশে ভালো মানুষ কে কেউ পছন্দ করেন না এইটা সবার জানা। এর জন্যই যখন বিএনপির শাসন আমল শেষ হবার পর তত্ত্বাবধায়ক সরকার ফখরুদ্দিন আসলেন সব দুর্নীতি বাজ নেতাদের ধরলেন তখন অনেকেই তাকে বাহবা জানালেন এর পর যখন আওয়ামীলীগ ভোট এ জিতে গেলো তখন শুরু হল ফখরুদ্দিন কে গালি দেওয়া। আসলে এই দেশের মানুষ ভালো মানুষ কে ভালো বলতে এত হিংশা করে । যখন আপনি কাউকে মন খুলে সুনাম করতে পারবেন না তখন বুঝতে হবে আপনি কোন ভালো মানুষই না । হিংশা মানুষের ভালো আমল গুলাকে কেরে নেই ।।



হুম হিংশা আমাদের চরিত্রের একটা বৈশিষ্ট্য যা আমরা একটু যুক্তি দিয়ে ভাবলে দূর করতে পারি ।।



এখন আসা যাক আমাদের দেশের হরতালে প্রাইভেট কার বা গাড়ি ভাঙ্গার বিষয়ে , যে যেই দল সাপোর্ট করেন সেই দল যদি হাজার গুনাহ করে সব মাফ , এই ক্ষেত্রে আমরা কেন যে হিংশুক না । যখন কোন পিকেটার প্রাইভেট কার বা গাড়ি ভাঙ্গেন তখন অনেকেই দেখি বিরাট খুশি হন কারন কি আপনার ঐ গাড়িটা না , আপনি ঐ মানুষটির গাড়িটা নিয়ে হিংসা প্রকাশ করছেন । এর কারনে ভাংলে পুরালে এত খুশি আপনি । অনেকেই বলবেন গাড়িটি দুরনিতির টাকায় কেনা ?? আপনি এত নিশ্চিত কিভাবে হলেন এইটা দুর্নীতির টাকায় কেনা ?? এই দেশে সবচেয়ে বেশি দুর্নীতি আমাদের দেশের বিজনেস ম্যান ও রাজনীতিবিদরা করেন তাদের একটা গাড়ি পুরাতে পারছেন ?? যাইহোক দুর্নীতির জায়গা পর্যন্ত আপনার যাবার যোগ্যতা থাকলে আপনিও এই একই দুর্নীতি করতেন , অনেকেই বলবেন করবেন না ।

হুম আছে এমন লোক তবে তাঁরা হিংশুক নন আপনার মত , হিংশুক লোক বড় হতে পারেনা ।



সরকারের বাস ভাংছে আমার কি ?? আসলে ঐ বাসে তো আপনি চরেন না

আর ঐটা সরকারের বাস কিভাবে জানলেন আরে বোকা বলদ হিংশুক ঐ বাসের কেনার টাকাটা আপনার পকেট থেকে নেওয়া হয়েছে, শুধু শুধু বলদ এর মত গাড়ি ভাঙ্গা। সে যেই বিরোধী দল থাকুক আর আপনি যারই সমর্থক হন এইধরনের বলদামু চিন্তা থেকে বেরিয়া আসুন ।।



হিংশা করে বেশি দূর আগানো যায় না তা আমাদের দেশের তথাকথিত বুদ্ধিজীবী দেখলেই বুঝা যায় । তাঁরা নিজেরে কি যে মনে করে । একটি ক্লাসের ফাস্ট বয় বা গার্ল এর থেকে কেন একজন মধ্যম মান এর ছাত্র বেশি উন্নতি করে জানেন কারন মধ্যম মানের ছাত্র ছাত্রী টি কম হিংশুক থাকে ।



আপনার বন্ধু ভাই বড় পজিসনে আছে এতে হিংশার কিছু নাই গর্ব করুন। আর যদি সে অহংকার করে মনে রাখবেন তাঁর পতন হবেই । আপনি তাঁর বদনাম করলে আল্লাহ তাঁর শাস্তি বিলম্ভ করবে । তাই কখন হিংশুক ভাব ধারন করবেন না ।



একবার ভাবুন তো যিনি টিভি আবিস্কার করেছেন সে যদি হিংসা করে বলত আমি কাউকে শিখাব না এই টিভি বানানোর কৌশল তাহলে কি তিনি বড় হতে পারতেন ?? জ্ঞানীরা তাদের জ্ঞান উদার ভাবে প্রকাশ করেন ।



মেয়েরা জন্মগত বেশি হিংশুক থাকে এইটা আমাদের ইতিহাস ঘাঁটলেই দেখবেন । এই জন্য বড় বিজ্ঞানী , বড় ডাক্তার , ইঞ্জিনিয়ার মেয়ের সংখ্যা অনেক কম । আমাদের দেশে নারী শিক্ষা বাড়ছে ঠিক আছেন কিন্তু নিজেদের ভিতরে হিংশুক ভাব টা তাঁরা দূর করতে একে বারে পারেনি ।

আপনি একটা ডাক্তার বা ইঞ্জিনিয়ার মেয়ে কে জিজ্ঞেস করবেন তোমার

aim in life কি ?? সে সামনে বেশ চাপা মারবে কিন্তু বাস্তবে তাঁর এইম ইন লাইফ হল তাদের বান্ধবির থেকে ভালো টাকা পয়সা আলা স্বামী ধরা। শুনতে খারাপ লাগছে । কিন্তু শতকরা ৯৫ % নারীর কোন এইম নাই বিয়ে ছাড়া । আর বাকি ৫ % এর ৩ % মহা অহংকারী হিংশুক । আর ২ % পাবেন উদার জ্ঞানী । তারাই আসল ।



আমাদের প্রধান দুই নেত্রী কে দেখলেই মেয়েদের হিংশুকতা সম্পর্কে ব্যাপক ধারনা পাবেন ।



আর ছেলেদের ভিতরে শতকরা ৮০ % এইম ছাত্র জীবনে যে আমার গার্ল ফ্রেন্ড হবে যা হবে আমার বন্ধুর গার্ল ফ্রেন্ড এর থেকে সুন্দর , তারপর আমি পরব ব্রান্ডডেড জামা কাপড় সবাই আমার দিকে দেখবে , আমি নিজের জ্ঞান কাউকে জানাবো না , পারলে আমার অল্প জ্ঞান দিয়ে বন্ধুদের অপমান করব ।



এইটাই হচ্ছে ৮০ % এর কাজ , বাকি ১০ % মেধাবী কিন্তু অসাধারন হিংশুক । আর বাকি ১০ % এর ভিতরে ৮ % পক্ষপাতিত্ব মুলক জ্ঞানী । ২%আসল জ্ঞানী যারা দেশের জন্য কিছু একটা করবেন , ইতিহাসে নিজেদের উদার জ্ঞানী হিসাবে লিখে যাবেন ,



আসলে আমাদের হিংশুক ভাবটাই আমাদের সমাজ গোটা জাতিকে পিছিয়ে দিচ্ছে , প্রতিযোগিতা আর হিংশুকতা এক জিনিস না, এইটা বুঝতে হবে ।





আমার জ্ঞানের উপর আমার ভাই , বোন, বন্ধু, গোটা জাতির অধিকার আছে । যা সবার মাঝে বিলিয়ে দেওয়া সার্থকতা ।

একজন জ্ঞানী হতে না পারলেও জ্ঞানী দের উদার ভাবে সুনাম করে যাওয়া টা আসল মানুষের কাজ ।।



এই ক্ষেত্রে আমাদের বাবা মা , ভাই বোন সকলকেই হিংশুকতা দূর করতে হবে । ছোটবেলা থেকে উদার ভাবে গড়ে তুলতে হবে সন্তান কে ।।



আসুন হিংশুকতা পরিহার করি ।।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৯ শে মার্চ, ২০১৩ দুপুর ১:৩৬

মোঃ মাহমুদুর রহমান বলেছেন: ভাল লাগল লেখাটা পড়ে।

সহমত

২| ২০ শে মার্চ, ২০১৩ দুপুর ২:৪১

ফয়সাল ইসলাম িনশান বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.