![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সচরাচর অনেকেই বলেন পাটকে একসময় 'সোনালী আঁশ' বলা হতো। উক্তিটি বৈরিতামূলক। পাট এখনো আমাদের 'সোনালী আঁশ'। বর্তমানে বাংলাদেশের প্রধান অর্থকরী ফসল। তৈরি পোশাক শিল্প বিপ্লবের আগে আমাদের পাট ও পাটজাত পণ্য ছিল রপ্তানির প্রধান ও বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনকারী পণ্য। স্বাধীনতার পরও দেড় যুগ ধরে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে পাটের অবদান ছিল মুখ্য। পাটের সেই ভূমিকা পুনরুজ্জীবিত হতে পারে যদি 'পাটের বহুমুখী ব্যবহার বাড়ানো যায়’। পাট উৎপাদনকারী পৃথিবীর অন্য দেশগুলোর তুলনায় বাংলাদেশের পাটের মান সবচেয়ে ভালো।
২০১৭-১৮ অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে (জুলাই-জানুয়ারি) পাট এবং পাটজাত পণ্য রফতানি থেকে বৈদেশিক মুদ্রা আয় হয়েছে ৬৬ কোটি ১৮ লাখ মার্কিন ডলার। ২০১৬-১৭ অর্থ বছরের একই সময়ের তুলনায় রফতানি আয় বেড়েছে ১৭ দশমিক ৩৬ শতাংশ। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে কাঁচা পাট ও পাটজাত পণ্য রফতানিতে আয় হয়েছে ৯৬ কোটি ২৪ লাখ ২০ হাজার মার্কিন ডলার বা প্রায় ৭ হাজার ৭০০ কোটি টাকা। দেশে বর্তমানে রাষ্ট্রায়ত্ত খাতে মোট ২২টি পাটকল চালু রয়েছে এবং বেসরকারিখাতে প্রায় ২০০ পাটকল। পৃথিবীর বৃহত্তম পাটকল ও এশিয়া মহাদেশের সর্ববৃহৎ কারখানা হিসাবে বিখ্যাত ছিল আমাদের আদমজী জুট মিল। ২০০১ সালে যখন বিএনপি সরকার ক্ষমতায় এসে আদমজী জুট মিল বন্দ করে দিল। ফলে ৮৭,০০০ শ্রমিক চাকরি হারালো।
বাংলাদেশ থেকে পাটজাত নমুনা-পণ্য নিজের খরচে এনে যেখানে লোকসমাগম সেখানে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশকে বিশ্বের কাছে তুলে ধরার দৃঢ়সংকল্প নিয়ে মরুর দেশে যাদের অদমনীয় এগিয়ে চলা তাদের অগ্রদূত শামস শাহিন, হোসেন এম এ মুরাদ ও শাহাবুদ্দিন শামীম। কাতার কিংবা বাংলাদেশের যে কোন জাতীয় দিবসগুলোতে এই হাসিমাখা পরিচিত মুখগুলোর সাথে প্রবেশপথে দেখা হবে এটা অনেকটা নিশ্চিত। কখনো কর্মকর্তার অনুমতি নিয়ে, আবার কখনো কর্মক্ষেত্রে ফাঁকি দিয়ে, নতুবা কর্মঘন্টা শেষে ক্লান্তিহীন ভাবে এগিয়ে চলছে তাদের স্বপ্নময় পথ চলা। উদ্দেশ্য শুধু একটাই, লাল-সবুজে আদৃত নয়নাভিরাম সৌন্দর্যের লীলাভূমি বাংলাদেশকে বিশ্বের কাছে তুলে ধরা, সম্ভাবনাময় পর্যটন শিল্পকে বহিবিশ্বে উপস্থাপন করা। এই পথচলায় অনেক সঙ্গতি প্রকাশ করে আবার অনেক বিদ্রুপ করে কিন্তু থেমে থাকে না তাদের অপ্রতিরোধ্য পথ চলা।
বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইন্সটিটিউটের বিজ্ঞানীরা বলছেন তারা পাটের পাতা থেকে 'চা' উদ্ভাবনে সক্ষম হয়েছেন এবং এটি হবে অর্গানিক চা। দেশের পাট থেকে উন্নত মানের ভিসকস (viscous-চটচটে) সুতা তৈরি ও বাজারজাত সম্ভাব্যতা দ্বার উন্মোচন হয়েছে। পাট আঁশের মান, দৈর্ঘ্য ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার জন্য দায়ী চারটি জিনের পেটেন্ট (কৃতিস্বত্ব) পেয়েছে বাংলাদেশ। এছাড়া ক্ষতিকর ছত্রাকের তিনটি জিন শনাক্ত করে সেগুলোর পেটেন্ট ও পেয়েছে বাংলাদেশ। এর মধ্য দিয়ে পাটের নতুন যুগে প্রবেশ করলো বাংলাদেশ। এবারের ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায় বাংলাদেশ পাটকল কর্পোরেশনের প্যাভিলিয়নে পাটের তৈরি জিন্স (ডেনিম), পাটখড়ি থেকে উৎপাদিত ছাপাখানার বিশেষ কালি (চারকোল), পাট ও তুলার মিশ্রণে তৈরি বিশেষ সুতা (ভেসিকল), পাটের তৈরি বিশেষ সোনালি ব্যাগ ও পাটপাতা থেকে উৎপাদিত ভেষজ পানীয় মেলায় আগত দর্শনার্থীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম হয়েছে। পাট দিয়ে শাড়ি, লুঙ্গি, সালোয়ার-কামিজ, পাঞ্জাবি, ফতুয়া, বাহারি ব্যাগ, খেলনা, শোপিস, ওয়ালমেট, আল্পনা, দৃশ্যাবলি, নকশিকাঁথা, পাপোশ, জুতা, স্যান্ডেল, শিকা, দড়ি, সুতলি, দরজা-জানালার পর্দার কাপড়, গহনা ও গহনার বক্সসহ ২৮৫ ধরনের পণ্য দেশে ও বিদেশে বাজারজাত করা হচ্ছে। পৃথিবীর প্রায় ৫০টি দেশে এসব পণ্য রপ্তানি হচ্ছে।
জলবায়ু আন্দোলনের অংশ হিসেবে পানি, মাটি ও বায়ু দূষণকারী পলিব্যাগ উৎপাদন ও ব্যবহারের বিরুদ্ধে বিশ্বের সর্বত্র জনমত তৈরি হয়েছে। বিশ্ব যত পরিবেশ সচেতন হবে পাট ও পাটজাত পণ্যের প্রসারণ তত ত্বরিত হবে। পাটকে পুনরুজ্জীবিত করার জন্য সরকার সম্প্রতি গ্রহণ করেছে বিভিন্ন পদক্ষেপ। পাট ও পাটজাত পণ্য উৎপাদন ও প্রসার, গবেষণা ও পাট চাষে উদ্বুদ্ধকরণে পাট আইন, ২০১৭ মহান জাতীয় সংসদে অনুমোদিত হয়েছে। পাট চাষীদের সহায়তা করার জন্য একটি তহবিল গঠন করা হয়েছে। এ লক্ষ্যে এরই মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক ও ১৬টি বাণিজ্যিক ব্যাংকের মধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। আমদানি নির্ভরতা কমিয়ে পাটের বীজ উৎপাদনে ভর্তুকি প্রদান করা হচ্ছে। তবে আমাদের দাবী শুধু দেশের অভ্যন্তরে এই সুযোগ-সুবিধা অন্তরীণ না রেখে প্রবাসে শাহিনদের মত যারা দেশের পণ্য ও পতাকাকে সমুন্নত রাখতে কাজ করছে তাদেরকে রাষ্ট্রীয় পৃষ্টপোষকতা প্রদান করা হোক। 'সোনালী আঁশের সোনার দেশ, পাট পণ্যের বাংলাদেশ' এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে বাংলাদেশ এগিয়ে চলুক।।
২| ২৮ শে মার্চ, ২০১৮ রাত ১০:৫০
বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: ভালো খবর। যোগ্য নেতৃত্ব যদি সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারে আর কী...
৩| ২৮ শে মার্চ, ২০১৮ রাত ১০:৫১
সত্যপথিক শাইয়্যান বলেছেন: ভালো লাগলো। তবে কাতারের বাজারে ইতিমধ্যে ভারত, মিসর, তুরস্কের পাটজাত পণ্যের বাজার প্রতিষ্ঠিত। বাংলাদেশের পণ্য সেখানে জায়গা করে নিক এই আশায় বুক বাঁধলাম।
২৯ শে মার্চ, ২০১৮ দুপুর ২:৫১
প্রহর্তা অন্তর বলেছেন: কাতারের মত ছোট একটি দেশে প্রবাসী বাংলাদেশির সংখ্যা ৪ লক্ষের ঊর্ধ্বে। অন্য দেশের ক্রেতাদের পাশাপাশি আমাদের দেশীয় ক্রেতার সংখ্যা দৃশ্যমান। এছাড়া আমাদের পণ্যের মান ভাল। বাজারজাত ও বাজারদখল করতে সময় লাগবে না।
৪| ২৯ শে মার্চ, ২০১৮ রাত ১:০৭
মামদুদুর রহমান বলেছেন: জি খুব ভালো বলেছেন। বিদেশে এমন পাটের মানুষ থাকলে বাংলার পাট বিশ্ব জয় করতে সময় নিবে না আশা করি।
৫| ২৯ শে মার্চ, ২০১৮ সকাল ৮:২০
বরুন মালাকার বলেছেন: আদমজী বন্ধ করা বিএনপির বড় ভুল বা অন্যায় কাজ ছিল। এটি সম্ভবত সাইফুর রহমান সাহেবের বুদ্ধি ।
৬| ২৯ শে মার্চ, ২০১৮ রাত ৯:৫০
শামচুল হক বলেছেন: ভালো খবর
৭| ৩১ শে মার্চ, ২০১৮ রাত ৩:১৭
কাওসার চৌধুরী বলেছেন: ভাল লাগল।
©somewhere in net ltd.
১|
২৮ শে মার্চ, ২০১৮ রাত ১০:৪১
রাজীব নুর বলেছেন: গুড জব।