![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
যদি আমি ঝঁরে যাই একদিন কার্তিকের নীল কুয়াশায়: যখন ঝরিছে ধান বাংলার ক্ষেতে ক্ষেতে ম্লান চোখ বুঝে, যখন চড়াই পাখী কাঁঠালীচাঁপার নীড়ে ঠোঁট আছে গুঁছে, যখন হলুদ পাতা মিশিতেছে খয়েরী পাতায়, যখন পুকুরে হাঁস সোঁদা জলে শিশিরের গন্ধ শুধু পায়, শামুকের গুগলিগুলো প'ড়ে আছে শ্যাওলার মলি সবুজে, - তখন আমারে যদি পাও নাকো লালশাক-ছাওয়া মাঠে খুঁজে, ঠেস দিয়ে ব'সে আর থাকি নাকো বুনো চালতার গায়, তাহলে জানিও তুমি আসিয়াছে অন্ধকারে মৃত্যুর আহবান ---।
ভাবছি, এই কুলাঙ্গারদের বাবা-মা, আত্নীয়-স্বজনদের মনের অবস্থাটা এখন কেমন। তাদেরকে নানান যুক্তিতে দায়ী করা যেতে পারে। কিন্তু একবারও কি ভেবে দেখেছেন, ওদের মতো ঘটনার শিকার আমি বা আপনিও হতে পারি! কে জানে কার ঘরে দুধ কলা খেয়ে পরম অাদর যত্নে এমন কালসাপ বেড়ে উঠেছে। আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতে হবে। যাইহোক দেখে নেই এই সাক্ষাৎ আজরাইলদের, যাদের কারণে এখন রীতিমতো প্রাণ হাতের মুুঠোয় নিয়ে রাস্তায় বের হতে হচ্ছে।
রোহান: অভিযানে নিহত রোহান ইবনে ইমতিয়াজের বাবা এস এম ইমতিয়াজ খান ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের নেতা, বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের উপমহাসচিব ও সাইক্লিং ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক। রোহানের মা শিক্ষিকা। দুই ভাইবোনের মধ্যে রোহান বড়। তিনি ঢাকার স্কলাসটিকা থেকে এ লেভেল শেষ করে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তেন।
গতকাল দুপুরে রোহানদের ঢাকার লালমাটিয়ার বাসায় গিয়ে তাঁর বাবা-মাকে পাওয়া যায়নি। রোহানের খালা জেসমিন আক্তার বলেন, ‘গত ৩০ ডিসেম্বর থেকে রোহান নিখোঁজ ছিল। তার সন্ধান চেয়ে পুলিশ, র্যাব এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছেও গিয়েছি আমরা। কেউ তার সন্ধান দিতে পারেনি।’ তিনি বলেন, ‘আমরা শুধু জানতে চাই, সরকার কেন আমাদের নিখোঁজ ছেলেকে বের করতে পারল না।’
মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জামাল উদ্দীন মীর বলেন, রোহান নিখোঁজ হয়েছেন উল্লেখ করে গত ৪ জানুয়ারি থানায় জিডি করা হয়েছিল। জিডিতে বলা হয়, ৩০ ডিসেম্বর বন্ধুদের সঙ্গে ঘুরতে গিয়ে রোহান আর বাসায় ফেরেনি। পরে তদন্তে দেখা যায়, রোহান জঙ্গি কর্মকাণ্ডে যুক্ত হয়েছেন। এরপর তাঁকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলে, যাতে দেশের বাইরে না যেতে পারেন, সে জন্য বিমানবন্দরেও জানানো হয়েছিল।
প্রতিবেশীরা জানান, গত বছর ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদে রেডিও প্রতীকে নির্বাচন করেছিলেন রোহানের বাবা ইমতিয়াজ। নির্বাচন উপলক্ষে তখন স্থানীয় সাংসদ জাহাঙ্গীর কবির নানক ভোটারদের উদ্দেশে একটি খোলা চিঠি দেন। চিঠিতে তিনি ইমতিয়াজকে আওয়ামী লীগ-সমর্থিত প্রার্থী হিসেবে উল্লেখ করেন। ইমতিয়াজ খানের নির্বাচনী প্রচারপত্রের তথ্য অনুযায়ী, তিনি ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়াবিষয়ক সম্পাদক, মোহাম্মদপুর থানা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ও ৩১ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। এখন তিনি বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের উপমহাসচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তথ্যসূত্র: প্রথম আলো।
মোবাশ্বের: গত ২৯ ফেব্রুয়ারি কোচিংয়ে যাওয়ার কথা বলে মীর সামেহ মোবাশ্বের বনানীর ডিওএইচএসের বাসা থেকে বের হয়ে আর ফেরেননি। গতকাল ওই বাসায় তাঁর বাবা মীর এ হায়াৎ কবিরের সঙ্গে প্রথম আলোরকথা হয়। তিনি বলেন, সামেহ স্কলাস্টিকা স্কুল থেকে ও লেভেল পাস করেছে। এ লেভেল পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছিল। যেদিন সামেহ নিখোঁজ হয়, সেদিন তার গুলশানের আজাদ মসজিদের পাশের একটি কোচিং সেন্টারে যাওয়ার কথা ছিল।
বাবা মীর এ হায়াৎ কবির একটি টেলিকম প্রতিষ্ঠানে উচ্চ পদে চাকরি করেন। মা একটি কলেজের সহযোগী অধ্যাপক।
হায়াৎ কবির বলেন, ‘মোবাশ্বের বোধ-বুদ্ধিতে কিছুটা পিছিয়ে ছিল। আমার মন বলছিল ও কারও খপ্পরে পড়েছে। আমরা সচেতন অভিভাবক ছিলাম। তারপরও আমার সুরক্ষিত বাড়ি থেকে বাচ্চাকে কেড়ে নিল। ওরা কত শক্তিশালী যে কেউ ধরতে পারছে না? আজ আমারটা নিয়েছে, কাল আর কারও কপাল আমার মতো হবে। এটা তো একটা জাতীয় দুর্যোগ।’ তিনি বলেন, ‘মোবাশ্বের নিখোঁজ হওয়ার পরে সেখানকার ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, গুলশানের আগোরার পাশে গাড়ি ছেড়ে দিয়ে সে একটি রিকশায় করে বনানী ১১ নম্বরের দিকে যাচ্ছে। এরপর মুঠোফোনে বা অন্য কোনো মাধ্যমে সে পরিবারের কারও সঙ্গে যোগাযোগ করেনি।’
হায়াৎ কবির বলেন, পত্রপত্রিকায় যে ছবি ছাপা হয়েছে, তার সঙ্গে ছেলের চেহারা মেলে। নিখোঁজ হওয়ার পর প্রথমেই তিনি গুলশান থানায় জিডি করেন। এরপর ডিবি, র্যাব ও অন্যান্য সংস্থার কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। সংস্থাগুলো তাঁকে জানিয়েছে, যেদিন মোবাশ্বের নিখোঁজ হয়েছেন তার দু-এক দিনের মধ্যে গুলশান-বনানী এলাকা থেকে আরও চার-পাঁচটি ছেলে নিখোঁজ হয়। মোবাশ্বেরের কম্পিউটারে জঙ্গিবাদী গোষ্ঠীর কিছু যোগাযোগের তথ্য-প্রমাণ পায় তারা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কোনো সংস্থাই তাঁকে খুঁজে বের করতে পারেনি। পরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তারা বলেন, তাঁদের ধারণা ছিল, মোবাশ্বের দেশের বাইরে কোথাও চলে গেছেন। যদিও তাঁর পাসপোর্ট বাসাতেই ছিল।
নিবরাস: মোনাশ বিশ্ববিদ্যালয়ের মালয়েশিয়া ক্যাম্পাসের ছাত্র ছিলেন নিবরাস ইসলাম। ব্যবসায়ী নজরুল ইসলামের এক ছেলে ও এক মেয়ের মধ্যে নিবরাস বড়। বাসা ঢাকার উত্তরায়। তাঁর নিকটাত্মীয়রা সরকারের বিভিন্ন উচ্চ পদে চাকরি করেন। পরিবারের ঘনিষ্ঠ সূত্র জানায়, নিবরাস যে মালয়েশিয়া থেকে ঢাকায় এসেছিলেন, তা-ই জানত না পরিবার।
খায়রুল: পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, ছয়-সাত মাস ধরে উত্তরবঙ্গের অন্তত তিনটি হত্যাকাণ্ডে খায়রুল ইসলামের নাম এসেছে। তাঁকে তখন থেকেই খোঁজা হচ্ছিল। খায়রুল যে গুলশানে হামলার নেতৃত্ব দিয়েছিলেন, এ ব্যাপারে পুলিশ মোটামুটি নিশ্চিত।
বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার চুতিনগর ইউনিয়নের ব্রিকুষ্টিয়া গ্রামের দিনমজুর আবু হোসেনের দুই মেয়ে ও এক ছেলের মধ্যে খায়রুল বড়। ব্রিকুষ্টিয়া দারুল হাদিস সালাদিয়া কওমি মাদ্রাসায় কিছুদিন পড়েছিলেন খায়রুল। এরপর ডিহিগ্রাম ডিইউ সেন্ট্রাল ফাজিল মাদ্রাসা থেকে তিনি দাখিল পাস করেন বলে প্রতিবেশীরা জানান।
খায়রুলের মা পেয়ারা বেগম বলেন, এক বছর ধরে খায়রুল নিখোঁজ ছিল। স্থানীয় সাংবাদিকদের কাছে হারানো বিজ্ঞপ্তি দেওয়ার জন্য আট-নয় মাস আগে গিয়েছিলেন বাবা-মা। কিন্তু থানায় জিডি করতে হবে শুনে তাঁরা আর বিজ্ঞপ্তি দেননি।
ধারণা করা যায়, ঢাকার অভিজাত কোন এলাকায় বসে কেউ একজন এই হামলার সমন্বয় ও পরিকল্পনা করেছেন বলে তাঁরা মনে করছেন। যার কারণে বগুড়ার নিম্নবিত্ত পরিবারের একজন মাদ্রাসাছাত্রের সঙ্গে ঢাকার অভিজাত পরিবারের চারটি ছেলের যোগাযোগ সম্ভব হয়েছে।
২| ০৪ ঠা জুলাই, ২০১৬ সকাল ৮:৫৫
রাফা বলেছেন: এভাবেই রিক্রুট করা হয়ে থাকে।যাতে অপারেশনের পুর্বে কোন একজন ধরা পড়লেও পুরো মিশন বাতিল না করতে হয়।জঙ্গীরা এখানেই পুলিশের বা অন্য কোন সংস্থার চাইতে এগিয়ে রয়েছে।
©somewhere in net ltd.
১|
০৪ ঠা জুলাই, ২০১৬ ভোর ৫:১২
মহা সমন্বয় বলেছেন: কি বলব!!!