নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি পান্থজন জাহাঙ্গীর নিতান্তই শাদা মনের মানুষ। যার কারণেই প্রথম দর্শনে যে কাউকে আপন করে নিতে চায় মন। এই জন্য মানুষ সহজেই আঘাত দেয়। ব্যক্তিগত জীবনে আমি বিবাহিত। আমার এক ছেলে ও এক মেয়ে। দর্শণ নিয়ে অধ্যয়ন করলেও আমি সাহিত্যের একজন সমঝদার মানুষ। শিক্ষকতার পাশ

পান্থজন জাহাঙ্গীর

লেখক পরিচিতি : গল্পকার পান্থজন জাহাঙ্গীর,১৫ অক্টোবর, ১৯৮২ সালে চট্টগ্রামের জেলার বাঁশখালী থানার পুকুরিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার মূল নাম জাহাঙ্গীর আলম। পিতার নাম জাগির হোছাইন,মাতার নাম ফুলতাজ বেগম। তিনি ১৯৯৯ সালে নাটমুড়া পুকুরিয়া উচ্চবিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এস এস সি এবং ২০০১ সালে পটিয়া সরকারি কলেজ থেকে এইচ এস সি পাস করেন। ২০০৬ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফিলোসফিতে অনার্স এবং একই বিভাগ থেকে ২০০৮ সালে মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেন। পেশাগত জীবনে তিনি একজন শিক্ষক।বর্তমানে তিনি ইউসেপ-বাংলাদেশ এর শিক্ষক হিসেবে কর্মরত আছেন। পাহাড়-নদী-সমুদ্রঘেরা বাঁশখালী জনপদ। এই বাঁশখালীর পুকুরিয়া গ্রামে পান্থজন জাহাঙ্গীরের বেড়ে ওঠা। উত্তরে কুলকুল ধ্বনিতে বয়ে যাওয়া শঙ্খ, পূর্বে পাহাড়ঘেরা প্রকৃতির সুবিশাল অরণ্যাচ্ছাদিত চা-বাগান এবং দক্ষিণে নির্জন সমুদ্রের বিশালতায় কেটেছে তার শৈশব আর কৈশোরের সকাল-বিকাল-দুপূর। তার গল্পের বিষয় সমাজের নিম্নবিত্তের মানুষ। তাই গল্পের চরিত্রগুলোকে সব সময় ক্ষুধা, প্রেম-তৃষ্ণা ও যৌনতার মধ্যে বেচেঁ থাকার নিরন্তর সংগ্রামে মুখর হতে দেখা গেছে। পান্থজন জাহাঙ্গীর গল্পের পাশাপাশি কবিতাও লিখেন। মূলত: কবিতা দিয়েই সাহিত্যে হাতেখড়ি। মালঞ্চ লিটল ম্যাগে তার প্রথম কবিতা ‘ফিরে থাকা’, দৈনিক প্রথম আলোতে অনুবাদ গল্প ‘রাজা’ এবং দৈনিক পূর্বকোণে প্রথম মৌলিক গল্প ‘স্বপ্নগুলির মৃত্যু’ প্রকাশিত হলে তিনি পাঠক পরিচিতি লাভ করেন। দেশের স্বনামধন্য আঞ্চলিক ও জাতীয় সংবাদপত্র, লিটলম্যাগ এবং বিভিন্ন অনলাইন সাহিত্য পোর্টালে পান্থজন জাহাঙ্গীর নিয়মিত সাহিত্য চর্চা করে চলেছেন। ২০১৮ সালে তার প্রথম কিশোর গল্পগ্রন্থ “সক্রেটিসের ভাবশিষ্য” প্রকাশিত হয়। বইটির গল্পগুলোর বিষয়গত বৈচিত্র্য পাঠক-সমালোচক, সকলের দ্বারা ব্যাপক প্রশংসিত হয়েছে।

পান্থজন জাহাঙ্গীর › বিস্তারিত পোস্টঃ

বাঘ মামা

১৭ ই মে, ২০১১ বিকাল ৫:০৮

আজ থেকে দোয়েল কে মা আর গল্প বলবেনা। কারণ গল্প বলতে বাঘ দিয়েই শুরু করতে হয় আর পরে জেব্রা হরিণ ইত্যাদি দিয়ে শেষ করতে হয়। তবে মায়ের রসিয়ে রসিয়ে গল্প বলাই হচ্ছে বাঘের প্রতি দোয়েলের দুর্র্নিবার আকর্ষণের একমাত্র কারণ।



ইদানীং বাঘ প্রসঙ্গটা দোয়েলের মাথায় গিজগিজ করছে। কারণ ডিসেম্বরেই পরীক্ষা শেষ। বহুদিন পর তাদের স্কুল তাদেরকে সুন্দরবন নিয়ে যাচ্ছে। দোয়েলের মা গল্প শুরু করতেই সুন্দরবনের বাঘ দিয়ে শুরূ করতো। আর সেই সুন্দরবনের জানা-অজানা কাহিনী নিয়ে দোয়েলের মনে যত জল্পনা-কল্পনা। আর আসন্ন শিক্ষাসফর তার সেই জল্পনা-কল্পনার পরিধি আরো বাড়িয়ে দিল। সুতারাং এই সুযোগ যে দোয়েল মিস করতে চাইবেনা তা দোয়েলের মা আগ থেকেই জানতো। তাই দোয়েলের এই শিক্ষাসফর নিয়েই দোয়েলের মায়ের যত উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা। সে সুন্দরবনের মতো জায়গায় দোয়েলের শিক্ষাসফর কিছুতেই মেনে নিতে পারছেনা। সুন্দরবনের নাম নিলেই মেয়ের মতো দোয়েলের মায়েরও আগে বাঘের কথা মনে উঠে। কারণ এমন কোন দিন নেই যেখানে এক-দু’টা মানুষ বাঘের পেঠে যাচ্ছেনা। আর কোন সাহসে মেয়েকে সে সেখানে নিয়ে যাবে? তাছাড়া মেয়ে তো খুব দুরন্ত। বন-জঙ্গল দেখলেই তার দস্যিপনা বেড়ে যায়।



বৃহস্পতিবারে স্কুল একটু আগেই ছুটি হয়। তাই দোয়েলের মা আগে বাগে গিয়ে স্কুলের মাঠে হাসনাহেনা গাছটির নিচে বসল। বাগানে নতুন ফুল ফোটেছে। পাতাবাহারের নতুন পাতা গজিয়েছে। গোলাপের নরম ডগায় ঘাসফড়িং ঝিমুচ্ছে। রাত্রে বিলানো হাসনাহেনার গন্ধ এখনো নাকে লাগছে। ঝির ঝির বাতাসে গা এলিয়ে দিয়ে দোয়েলর মা স্কুলের ছুটির ঘন্টার দিকে চেয়ে আছে।



-কি বল মা বাঘদের মধ্যে কি ভদ্রতা আছে?

-হ্যাঁ ।

-কিছু কিছু বাঘ আছে খুব ভদ্র। এগুলো মানুষের ক্ষতি করেনা। তবে সব বাঘ নয়।

-অভদ্র বাঘগুলো মানুষের কি করে?

-অভদ্র বাঘগুলো মানুষ কে বিপদে ফেলে।

-কি রকম বিপদ

- যেমন ধরো বনের পাশে পুকুর, সে পুকুর থেকে জল তুলতে নামা জেলেদের ওপর হালুম বলে ঝাপিয়ে পড়া অথবা পুকুরের কাছে গল্প করতে থাকা জেলেনীদের ওপর ধমক দিয়ে তাড়িয়ে তাদের কলসগুলো থাবড়িয়ে ভেঙ্গে ফেলা । একবার এক মজার ঘটনা ঘটেছিল। শুনলেই তোমার হাসি পাবে।

- কি করম ঘটনা?

-একবার এক জেলে পায়খানা আসছিল্। জেলেটি গাছে ওঠে আরাম করে হাগু করিেছল। নিচে এমন সময়। এক বাঘ এসে হালুম হালুম বলে কি ধমক দিচ্ছিল্ । প্রায় একঘন্টাখানেক নাকি ধমকায়ছিল।

-তারপর

Ñতারপর আর কি জেলে বেচারার তো হাগামুতা বন্ধ মরমর অবস্থা।

-তো জেলেটি নিচে হাগু করতে পারছিল না গাছে ওঠছিল কেন?

-বোকা মেয়ে নিচে হাগু করতে বসলেই তো বাঘ এসে খপ করে ধরে নিয়ে যাবে ।

-একবার কি হয়েছিল জান?

-কি হয়েছিল?

-শচি নামের এক জেলে তার ছেলে কে নিয়ে বনে ধারে মাছ ধরতে গিয়েছিল। তখন ছিল নদীতে ভাটা। যখন তারা জঙ্গলের ধারে জালের খুটি পুততেছিল। ঠিক তখনই একটা বাঘ সতীশ কে ধরার জন্য ঝাঁপ দেয়। কিন্তু প্রথম ঝাপে সতীশ কে ধরতে পারে নি। বরং বাঘটি কাদায় গেল আটকে। কাদায় আটকে যাওয়ার ফলে বাঘ গেল রেগে। সে রীতিমতো হুংকার দিচ্ছিল। এমন সময় সতিশের ছেলে বাঘকে দেখতে পেয়ে বল্লি হাতে বাবার সাহায্যোর্থে এগিয়ে এল । সে বাঘ কে পেটাতে শুরু করে । তখন বাঘ কাদা ছাড়িয়ে ওঠে সতিশের ওপর হামলে পড়ে। সতীশের ছেলে বাঘকে পেটতে শুরু করলে বাঘ সতীশকে আধামরা অব¯থায় রেখে তার ছেলেকে নিয়ে যায়।

-আচ্ছা বাঘের সাথে মানুষ পেরে ওঠতে পারেনা কেন?

- বাঘ শিকার ধরার সাথে সাথে ঘাড় ভেঙ্গে ফেলে। আর মানুষের শরীর থেকে ঘাড় আলাদা হলে তার কি হুশ থাকে? একবার জঙ্গলের সামান্য ভিতরে কাওসার নামের একটা ছেলে প্রস্রাব করছিল হঠাৎ কোথাও থেকে বাঘ এসে ঝাপিয়ে তার ঘাড় ভেঙ্গে ফেলে একঝটকায়। তার সঙ্গিরা এতই হতভম্ব হয়ে পড়ছিল। যে তারা বকাঘকে গুলি করার বুদ্ধিও হারিয়ে ফেলছিল।

-আচ্ছা মা, বনে এত জন্তু থাকতে বাঘ মানুষ মারে কেন?

-এর অনেক কারণ ্আছে। প্রথমতো বাঘের চলাফেরা রাজার মতো। সে তার নির্দিষ্ট এলাকা ছেড়ে অন্যের এলাকায় শিকার করতে পারেনা। তাছাড়া সুন্দর বনের বাঘের প্রিয় শিকার হচ্ছে হরিণ। আর হরিণ কিন্তু খুব চালাকও র্দুদান্ত। সহজেই বাঘকে ধরা দিতে চাইনা । বাঘ যখন হরিণ শিকার করতে ব্যর্থ হয় তখন তার তো খিদে পায়। তখন সে অন্যের এলাকায়ও শিকারের সন্ধান করতে পারেনা। এটা তার জন্যে লজ্জাকর। তাছাড়া বাঘ যখন বুড়ো হয়ে যায় তখন তার শরীররে শক্তি কমে যায়। ফলে সে শিকার করতে ব্যর্থ হয়। যার ফলে সে লোকালয়ে এসে হানা দেয়। এবং সহজেই মানুষ মেরে নিয়ে যায়। একবার এক বাঘ যখন গ্রামে ঢুকে যায় তখন এলাকাবাসীর চোখে পড়ে।

-তারপর?

-তারপর এলাকাবাসীর যার যা হাতিয়ার আছে তা নিয়ে জঙ্গলের দিকে ফাকঁ রেখে বাঘ কে ঘিরে ধরল।

- তারপর বাঘটির কি হল?

-তারপর লোকজন হেকে ওটে। বাঘ এক গৃহস্থের ঢোল কলমীর ঝোপে আশ্রয় নেয় । এরপর লোকজন বাঘ তাড়ানোর জন্য রাইফেলের গুলি ফোটাতে থাকে। লোকজন মনে করলো বাঘ চলে গেছে। কিন্তু বাঘ কলমি ঝোপের মধ্যে যে আসন গেড়ে বসে আছে তা কেউ জানলো না। বাঘ নাই মনে করে লোকজন ঝোপের মধ্যে ঢিল,গাছের ঢাল ইত্যাদি ছুড়তে থাকে। এমন সময় বাঘ ঝোপের আড়াল থেকে ঝাপিয়ে পড়ে বনমাঝি ঈমান আলির ওপর। এর পর দমাদম গুলি চালায় লোকজন। এরপর আহত অব¯তায় ঈমান আলিকে রেখে বাঘ বনে চলে যায়।

-বাঘ কি-মেয়ে মানুষদের মেরে না খেয়ে চলে যায়,মা?

-কি বলিস বোকা মেয়ে? বাঘের কাছে মেয়ে আর ছেলে মানুষ কোনো পরিচয় আছে নাকি?

- আচ্ছা বাঘের হাতে মারা পড়া এক মায়ের গল্প শুনো।

- হ্যা বলো।

- সুন্দর বনের পাশে কাটাখালী নামে এক জায়গায় এক বিধবা ও তার দুই ছেলে বাস করতো। দুপুরের রান্নার জন্য জ্বালানি আনতে বনে ঢোকে। তারা ছিল খুব গরীব। ছোট ভাইকে গাছে পাহারায় বসিয়ে বড় গাছ কোপাতে থাকে। বাঘ খুব সšর্তপনে এসে তার ওপর হামলা পড়লো। ছোট ভাই চিৎকার করে বড় ভাইকে সতর্ক করায় বড় ভাই বাঘের দিকে ঘুরে বলি উচিয়ে ধরে। ছোট ভাইও গাছ থেকে নেমে পড়ে। দা হাতে বাঘের দিকে এগিয়ে যায়। বাঘ বড় ভাইকে থাবা দিয়ে প্রায় শুয়ে ফেলেছে। ছোট ভাই তখন বাঘকে দা দিয়ে কোঁপাতে থাকে। ছোট ভাইয়ের দায়ের কোপে বাঘ বড় ভাইকে ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়। বড় ভাই সাহস না হারিয়ে মাকে ডেকে হাক দেয়। দুই ভাইয়ের পাল্টা হামলায় বাঘ হটে যেতে বাধ্য হয়। এদিকে মায়ের কানে সন্তানের আর্তচিৎকারে পৌছে গেলে তিনিও বটি হাতে ছেলেকে উদ্বারের জন্য এগিয়ে যান। একই পথে পরাজিত বাঘ পরবর্তী মতলব বাজার জন্য ফিরে আসছিল।পথে আর্ত মাকে সে সহজে পেয়ে মেরে ফেলে।

-তারপর!

-তারপর ছেলেরা এসে পৌছাতে পৌছাতে বাঘ তাকে নিয়ে সরে পড়ে। ছেলেদের কি কান্না! পত্রিকায় পড়ে আমিও কেঁদেছিলাম।

-আচ্ছা মা বাঘের সাথে ঝগড়া করে মানুষ পালিয়ে আসতে পারেনা?

পারে অনেকে বাঁচার জন্য রীতিমতো যুদ্ব করে। মানুষ খেকো বাঘের হাত থেকে অনেকে এরকম বেঁচে এসেছে। মনু মোল্লা নামে এক জেলে কোনক্রমে বেঁচে এসেছেন বাঘের হাত থেকে। বাঘের থাবায় তার মাথার খুলি উপড়ে নিয়েছিল বাঘ। গোলপাতার ঝাড়ে বাঘ আটকে না গেলে হয়তো মনু মোললার জীবন ফিরে পেতো না। আংটি হারার গৌবিন্দও পিঠে-মাথায় আচড় নিয়ে বেঁচে আছেন। পরানমন্ডল ও জুড়ানমন্ডলও নাকি এরকম বাঘের সাথে যুদ্ব করে বেঁচে আসছিল।

-বাঘ কি পরে প্রতিশোধ নেয়?

-হ্যাঁ কখনো কখনো বাঘ মানুষের মতো প্রতিশোধ পরায়ন হয়।

-কি রকম ?

-এক সময় একটি বাঘ হরিন মেরে টানতে টানতে বাওয়ালিদের কাছাকাছি চলে আসে। বাওয়ালিয়া জাহর দিয়ে বাঘ তাড়িয়ে হরিণ রেখে দেয়। রাতে হরিনের মাংসের কিছুটা রান্না করা হয়। বাকিটা বাওয়ালিরা টংয়ের উপর রোদে শুকানোর ব্যবস্তা করে। বাঘ রাতে টংয়ের উপর উঠে হরিনের মাংস ছড়িয়ে ছিটিয়ে দেয়। বাওয়ালিরা বাঘের সাড়া পেয়ে হৈ হুল্লোড় করলে ও বাঘ এক জনকে ধরে নিয়ে যায়। বাঘটি ঐ বাওয়ালি তিন জনকেই বিভিন্ন সময় এই বাঘটি মেরে ফেলে।



হঠাৎ স্কুলের ঘন্টা বেজে উঠল। সাথে সাথেই দোয়েল এসে হাজির । মা চমকে উঠে।

-এতক্ষন বসে বসে কি ভাবঠিছলে মা?

-কই কিছুই না। একটু আগেবাগে এসে পড়েছি তো তাই ঝিমুচ্ছিলাম।

-আজ রাতে কিন্তু আমাকে একটা বাঘের গল্প শুনাতে হবে ।

-কেন?

-আগামীকাল ভোরেই আমরা সুন্দরবন যাচ্ছি। ডেইট ফিক্রড হয়ে গেছে। সাথে চারজন স্যার আপা যাবে। হেডস্যার বলছে প্রত্যেকের সাথে একজন মা কিংবা বাবাকে যতে হবে। তার জন্য আলাদা এক হাজার টাকা দিতে হবে। আমরা প্রথম রাত যশোর সাকিট হাউসে থাকবো। ডিসি থেকে আগেই অনুমতি নেয়া হয়েেেছ। তিনি নাকি স্যারের বন্ধু।



পরের দিন সকালে দোয়েল ও তার বাবা রওয়ানা দিল। স্কুলের সামনে থেকে গাড়ি ছাড়ল। রাতটা তারা বাগের হাট সার্কিটহাউসে কাটাল। সকালে তারা মৌষের দই ও পিটা খেয়ে ষাট গম্বুজ মসজিদ পরিদর্শন করে একেবারে পশুর নদী হয়ে সুন্দরবন পৌছে গেল। পৌছামাত্রই তারা হৈ হল্লা করে বনে ঢুকে গেল। হেডস্যারের কড়া নিষেধ বেশি ভেতরে ঢুকা যাবেনা। কিন্তু কার কথা কে শুনে। দোয়েল তো যাওয়ার পর হতেই একটার পর একটা বায়না ধরছে। হরিণ দেখা হলেই কুমির, কুমির দেখা হলেই বাঘ ইত্যাদি ইত্যদি। বাঘের প্রস্গং উঠতেই বাবা গোলপাতার দিকে নিয়ে গেল। জনো এই গোল পাতা দিয়ে এখানকার মানুষরা ঘর বাঁধে। আস তোমাকে একটি গোলপাতার ঘর দেখাই। তারপর বাবা গোলপাতার দেখানোর জন্য সোজা পশ্চিম দিকে বাশের রাস্তা বেয়ে চলে গেল। শুকনো গোলপাতা নির্মিত বাশের টংযের নিচ বাবা বসে আছে। দোয়েল সামনে ঘোলপাতা ঝোপের গোড়ায় গিয়ে কিছু গোলপাতা ছিড়ে খেলা করছে। আর বাবা কিছ অবিভাবকদেও সাথে জমিয়ে আড্ডা দিচ্ছে। হঠাৎ ঝম করে সকিসের যেনশব্দ হল। চোখ ফেরাতেই দেখা গেল একটা বাঘ দোয়েলর শরীরের ওপর বসে আছে। কি কান্ড! দোয়েলেরচিৎকার চ্যাচাম্যাচি কিছউ নেই। মার চোখ তো ছানাবড়া একি! মেয়ে কি বেহুশ হয়ে গেল। মা বাবাকে জড়িয়ে ধরে। দু’জনই দোয়েলের দিকে চেয়ে থাকে। কি বিপদ! বাঘ তো কিছুই কর ছেনা। শুধু জ্বল জ্বল কওে চেয়ে আছে। তারা একজন আরেকজনের দিকে তাকাই। আর বলতে থাকে ‘বাঘ কি ভুলে গেছে যে তার নিছে দোয়েল আছে?’ দোয়েল হাত দিয়ে বাঘের শরীওে বুলাই, ‘আহ! কি নরম কেশরাশি।এ দিকে ভীত সন্ত্রস্ত বাবা মা কি করবে ভেবে পাচ্ছে না কি করবে। মা বলছে কোন না কোন একজনকে মরতেই হবে। এই দস্যি মেয়ে তো বাচার জন্য কোন চেষ্টাই করছেনা। হিংস্র প্রাণী কে ভয় পায়না জ গতে এমন কেউ কি আছে? এটা কি তার ঘরের সেই ওলের বাঘ না মিনি বিড়াল ? নাকি বাঘ বেটি দু’জনই আমাদেরকে ফাদে ফেলেছে? না না এমন কথা মুখে আনতে নেই। শাহানা নিজের ঠোট চেপে ধরে। তার ইচ্ছা করছে জোরে গলা ছেড়ে কাদতে। এই দ্বিমুখী বিপদে সে আর ধৈর্য রাখতে পারছেনা। শাহানার ধৈর্যের বাধ ভেঙ্গে গেল। সে তার সর্ব শক্তি দিয়ে জোরে এক চিৎকার দিল,‘ বাচাও! কে আছ বাচাও। সাথেই সাথেই বাঘ সবুজ শাহানার াদকে হুংকার ছেড়ে দিল এক লম্প। আর এতেই বাঘ চিৎ পটাং। বড় শিকারের লোভে ধ্যানে মজে থাকা বাঘ টেরই পেলনা কখনযে দোয়েল ধারালো ব্লেড দিয়ে আলতো তার নরম পেটে প্যোচ দিয়ে দিছে । দোয়েলের মা দোয়েলের দিকে দিকে দৌড় দিতেই বিছানাথেকে পড়ে গেলঅ। তারপর নাজমিন কে ডাকল, ‘নাজু নাজু ! আমাকে এক গ্লাস জল দাও। কি হয়েছে খালাম্মা ? না কিছু না দুঃস্বপ্ন দেখছি।



মন্তব্য ৪ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১৭ ই মে, ২০১১ বিকাল ৫:১৫

ফাইরুজ বলেছেন: ভাল লিখেছেন

১৭ ই মে, ২০১১ বিকাল ৫:২৩

পান্থজন জাহাঙ্গীর বলেছেন: ভালো লাগচে

২| ১৭ ই মে, ২০১১ বিকাল ৫:৩১

শায়েরী বলেছেন: Hahah amar soto bon k poee sonate hobe
+++

২০ শে মে, ২০১১ রাত ১২:৫৬

পান্থজন জাহাঙ্গীর বলেছেন: পড়ার জন্য ধন্যবাদ

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.