নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ইস আমি তো ভুলতে পারিনি

পিকেকে টিটু

পিকেকে টিটু › বিস্তারিত পোস্টঃ

‘এবার, মোদি সরকার’

১৬ ই মে, ২০১৪ রাত ৮:২৮



ধর্মনিরপ্রেক্ষতার তত্ত্ব প্রতিষ্ঠা হয়েও বাস্তবে কী দেখা গেল? সংঘর্ষ, সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা, গণহত্যা, উগ্র সাম্প্রদায়িক আদর্শ, সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার জন্য কুখ্যাত নরেন্দ্র মোদী ভারতের প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন....



ভারতের ১৬তম লোকসভা নির্বাচনের ফলাফলে সুস্পষ্ট ব্যবধানে এগিয়ে সরকার গঠনের পথে বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোট।

মোদি জনগণের কাছে আকাশের চাঁদতারা এনে দেওয়ার স্বপ্ন দেখিয়েছেন। জনগণ সেই স্বপ্ন লুফে নিয়েছে। অর্থনৈতিক উন্নয়নকেই ইস্যু করে নরেন্দ্র মোদি তার প্রচারণা চালান। ভবিষ্যতে অধিক কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও গুজরাটে শিল্পায়নের দৃষ্টান্ত টেনে তরুণ ভারতীয়দের কাছে জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন তিনি।



সাংবিধানিক, আর্থিক, সামাজিক ও হিন্দুত্ববাদের বিতর্কিত ইস্যুগুলিকে রেখেই একটা সার্বিক ভারসাম্য রাখার চেষ্টা করা হয়েছে বিজেপির ৫২ পাতার নির্বাচনি ইশতাহারে। ইশতাহার প্রকাশের পর বিজেপির প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী নরেন্দ্র মোদী মন্তব্য করেন, ইশতাহার প্রকাশ নিছক একটা আনুষ্ঠানিক বিষয় নয়, এটা দলের ও সরকারের লক্ষ্যও দিশা নির্দেশ, সুশাসন ও বিকাশ যার মূলমন্ত্র৷ বিতর্কিত ও গোঁড়া হিন্দুত্ববাদী ইস্যুগুলির সঙ্গে একটা ভারসাম্য বজায় রেখে বিজেপির ইশতাহার৷ যেমন, সাংবিধানিক কাঠামোর মধ্যে রাম মন্দির নির্মাণ, সংবিধানের যে ধারা অনুযায়ী জম্মু-কাশ্মীর বিশেষ সুযোগ সুবিধা পায়, আলাপ আলোচনার মাধ্যমে সেই ৩৭০ নং ধারার বিলোপ, সন্ত্রাস দমন, অভিন্ন দেওয়ানি বিধি চালু করা, মাদ্রাসাগুলির আধুনিকীকরণ, গো-হত্যা নিবারণ, ওয়াকফ বোর্ডের স্বশক্তিকরণ, উর্দু ভাষার উন্নতি,

বিদেশি বিনিয়োগকে স্বাগত জানানো হলেও ঢালাও অনুমতি দেয়া হবে না ৷

এছাড়া ইশতাহারকে বলা যায়, মোটামুটি চর্বিত চর্বণ৷



লোকসভা নির্বাচনের ফল ঘোষণার আগেই নরেন্দ্র মোিদ ভারতে বসবাসকারী বাংলাদেশিদের এই দেশ ত্যাগ করতে বলেছেন৷ এতে বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে একধরনের ঘৃণামিশ্রিত ক্রোধ জন্ম নিয়েছে৷ মোদি ভারতের প্রধানমন্ত্রী হোন, এটা বাংলাদেশে কেউ চায় না৷ মুসলমানদের বিরুদ্ধে তঁার বিষাক্ত কথাবার্তার কারণে বাংলাদেশের মানুষ মনে করছে, মোিদ ক্ষমতায় গেলে একটি ধর্মনিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক প্রতিবেশীর জায়গায় তারা একটি দক্ষিণপন্থী হিন্দু রাষ্ট্রকে প্রতিবেশী হিসেবে পেতে যাচ্ছে। তাদের মনে এর চেয়েও বড় ভয় হচ্ছে, বাংলাদেশের স্বাধীনতার সময় থেকে ভারত-বাংলাদেশের যে মৈত্রী গড়ে উঠেছে, তা ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

রাজনীতিতে ধর্মের অনুপ্রবেশ দেখেছি। মোিদ ও বিজেপি হিন্দুত্ব ইস্যুকে কেন্দ্র করে ভারতের বহুধর্মীয় ও বহুসাংস্কৃতিক সমাজে মেরুকরণ ঘটিয়েছে। এতে এক অপূরণীয় ক্ষতিই হয়েছে বলে ধারণা করা যায়। পূর্বপুরুষেরা যে বহুত্ববাদী রাষ্ট্রের স্বপ্ন দেখেছিলেন, তা বাস্তবায়নের পথে এটা এক বড় বাধা। যদিও ধর্মের ভিত্তিতেই ভারতবর্ষ ভাগ হয়েছিল, তবু ১৯৪৭ সালে স্বাধীনতা পাওয়ার পর থেকে আমরা হিন্দু-মুসলিম বিভেদের পানি ঢেলে পরিস্থিতি শান্ত করতে পেরেছিলাম৷ কিন্তু মোিদ আবারও সেই নিবু নিবু আগুনে হাওয়া দিয়ে তা কিছুটা জ্বালিয়ে দিতে পেরেছেন।

রাজনীতির শরীরে যে বিষ ঢোকানো হয়েছে, তা একদিন নিঃসন্দেহে দূরীভূত হবে। কিন্তু এই সময়ে একধরনের অবিশ্বাস ও বিভেদের সুর শোনা যাবে। উভয় সম্প্রদায়েই উদারনৈতিক মানুষের সংখ্যা কমে যাচ্ছে৷ ধর্মনিরপেক্ষতার ঝান্ডা ঊর্ধ্বে তুলে ধরতে হলে তঁাদের আরও বহু কাঠখড় পোড়াতে হবে।

মোিদ ও বিজেপির জন্য এমন সুসময় খুব কমই এসেছে। ভারতের জনগণ পরিবর্তন চায়, এ ছাড়া তাদের সামনে আর কোনো পথ খোলা নেই। কারণ, অর্থনৈতিক উন্নয়ন থেকে শুরু করে শাসনব্যবস্থা—সব ক্ষেত্রেই কংগ্রেস ব্যর্থ হয়েছে। আম আদমি পার্টি (এএপি) একেবারেই নতুন, শুধু উত্তর ভারতের শহরাঞ্চলেই দলটি সীমাবদ্ধ আছে। সে কারণে বিজেপি ও মোিদ যে ভোট পেয়েছে তা মূলত নেতিবাচক ভোট। মনমোহন সিংয়ের ১০ বছরের নির্জীব শাসনের কারণে কংগ্রেস বিপদে পড়েছে। এ সময়কালে বেশ কিছু দুর্নীতির ঘটনা উন্মোচিত হয়েছে, এতে দলটি আরও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

এই নির্বাচনের ব্যাপারে সবচেয়ে খারাপ খবর হচ্ছে, ভারতের বাম শক্তিগুলোর অপমৃত্যু। তারা মৌলবাদীদের রুখতে পারত, পারত ধর্মনিরপেক্ষ শক্তিকে আরও চাঙা করতে। কিন্তু তারা আজ নেই; এটাই আসলে পুরো উপমহাদেশের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের ট্র্যাজেডি৷ ১৯৪০-এর দশকে বলা হতো, ২৫ বছর বয়সে যদি আপনি বামপন্থী না হন, তা হলে আপনার চিকিৎসকের কাছে যাওয়া উচিত। এই ধারণা ধীরে ধীরে থিতিয়ে আসে। ডানপন্থীরা চুপচাপ বসে থাকেনি, তারা কঠোর পিরশ্রম করে তরুণদের মনে নাড়া দিতে পেরেছে। তরুণেরা আজ অর্থ ও ক্যারিয়ারের মোহে মশগুল। আজ আর কার্ল মার্ক্সের লেখা কেউ পড়ে না, তঁাকে নিয়ে আলোচনা তো হয়-ই না।

নির্বাচনী প্রচারণায় যে বামপন্থীদের আদর্শ উঠে আসেনি, এতে আমি অবাক হইনি। এমনকি পোড়খাওয়া বামপন্থীরাও সমাজতন্ত্র ও সামাজিক সাম্যের কথা বলেননি। তঁারাও এটা বিশ্বাস করতে শুরু করেছেন, মনমোহনের ১০ বছরের শাসনামলে যে মুক্তবাজার অর্থনীতি ও ব্যক্তিগত উদ্যোগের জয়জয়কার হয়েছে, তাতে বামপন্থার আবেদন নেই বললেই চলে। অবাক হওয়ার বিষয় হচ্ছে, নিবেদিতপ্রাণ বামপন্থীদের নীরবতা।  আজ শুধু ত্রিপুরাতেই বামপন্থীরা ক্ষমতায় আছেন। লোকসভায় তঁাদের আসনসংখ্যা ক্রমেই কমছে।

আমার ধারণা, ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি মস্কোর ওপর অতিমাত্রায় নির্ভরশীল ছিল। আর কমিউনিজমের দুর্গ সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর তারা এতিম হয়ে গেছে, বাম আদর্শ মারাত্মকভাবে মার খেয়েছে। ভারতে বাম আদর্শের সমর্থকেরা এতটাই হতোদ্যম হয়ে পড়েছেন যে সারা পৃথিবীটাকে পুঁজিবাদীদের কাছে ছেড়ে দিয়ে তঁারা রাজনীতির ময়দান ছেড়ে চলে গেছেন৷

 

সব কিছুর পরও নির্বাচনে অভাবনীয় জনসমর্থন পেয়েছে বিজেপি, ভরাডুবি হয়েছে গান্ধী পরিবারের প্রতাপ আর ভারতীয় কংগ্রেসের৷ ৬৩ বছর বয়সি মোদীর নেতৃত্বেই তৃতীয়বারের মতো সরকার গঠন করতে যাচ্ছে ধর্মভিত্তক দলটিন

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ১৬ ই মে, ২০১৪ রাত ৮:৪৪

পংবাড়ী বলেছেন: ধর্মনিরপেক্ষ হলো ভারত, মানুষ নয়, সরকার; মগজটুকু কাজে লাগান; সরকার ও আইন ধর্মকে ব্যভার করবে না।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.