নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আসসালামু 'আলাইকুম

“তোমরা যেখানেই থাক না কেন, মৃত্যু তোমাদের নাগাল পাবেই; যদিও তোমরা সুউচ্চ সুদৃড় দুর্গে(High Fortified Castle) অবস্থান কর” [নিসা ৭৮]

আলোর-ভূবন

বিসমিল্লাহির রহমানির রহীম আস্সালামুয়ালাইকুম। সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর, যিনি আমাদেরকে এই ব্লগে লেখালেখির সুযোগ করে দিয়েছেন। ইসলাম আজ বহু অভিযোগে অভিযুক্ত একটি জীবন-ব্যাবস্থা।এর অনেক কারণের একটি কারণ, ইসলামের বিভিন্ন খুঁটিনাটি বিষয় সম্পর্কে অভিযোগকারীদের অজ্ঞতা(আপনারা ভাববেন না যে আমি নিজেকে আপনাদের সামনে বিজ্ঞ বলে প্রমাণ করতে চাচ্ছি)।আর আমি আপনাদের সামনে ইসলামের বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরব-(ইনশা’আল্লাহ), বিশেষত তাওহীদ সম্পর্কে। জাযাকাল্লাহু খাইর(আল্লাহ আপনাদের উত্তম বিনিময় দান করুন)

আলোর-ভূবন › বিস্তারিত পোস্টঃ

যেই সমাজে বিয়ে কঠিন হয়, সেই সমাজে ব্যভিচার সস্তা হয়ে যায়

১২ ই আগস্ট, ২০১৪ রাত ১১:৫০

আজকাল প্রতিটি ঘরেই স্যাটেলাইন কানেকশন। সারাদিন সিরিয়ালে দেখা যায় সুন্দরী প্রদর্শনক্ষম মেয়েদের মূল্য, আকর্ষন। 'সিক্সপ্যাক' শব্দটা আগে শোনা যেতনা, এখন ছেলেরা প্যাক অর্জনের যন্ত্রণায় অস্থির থাকে। যতই জ্ঞানীগুণী আর হুজুরের পরিবার হোক, এখনকার কিশোর-কিশোরীরা এগুলো অবশ্যই অবশ্যই জানে–এগুলোই তাদের চারপাশ। তাদের এফএম রেডিও সারাদিনই প্রেমের গানে, প্রেমের আলাপে, লাভগুরুতে ভরপুর থাকে। ফ্রেন্ডসদের আড্ডাবাজির এসএমএস পড়ে শোনায়। যাদের কোন মেয়ে/ছেলে নাই "আড্ডা" মারার, "গল্প" করার, "পিকনিক" করার, "ফোনে কথা" বলার–তারা নিজেদের অসহায় ভাবতে বাধ্য হয়। পারিবারিক জ্ঞান বাবা-মা দিয়ে রাখলে সেক্ষেত্রেও তাদের যুদ্ধ হয় কঠিন যুদ্ধ। প্রতিদিন, অনেকবার। বয়ষ্করা এসব জানেনা, বুঝতেও পারবে না ভিতরে এসব কালচার কীভাবে কাজ করে, আমরাই পারিনা ঠিকমতন! মাত্র ১০বছর আগে অমন ছিলাম তাই অনেক ব্যাকডেটেড আছি!!

একটা ছেলে তার বন্ধুদের মাঝে গিয়ে শুধু গার্লফ্রেন্ডের আলাপ শুনে–তার কাছে মনে হতে থাকে, আমারো হয়ত থাকা উচিত ছিল। তার সামনে অকূল পাথার, নৈতিকতার সাথে যুদ্ধ। ক'দিন? শরীর আর মনের এই অমোঘ চাওয়ার সাথে ক'দিন যুদ্ধ? ১৬-১৭ তে পরিপূর্ণ বড় হয়ে যাওয়া ছেলেটি সামনে ১০ বছরের বেশি সময়ের নিরাশার দেখা খুজে পায়। বিয়ে হয় এখন ৩০ বছরে। আগে তাদেরই কেবল বিয়ে হয় — যাদের সম্পদ বেশি। এবং তারা প্রেম করে ধনী মা-বাবার ঘাড়ে উঠেই খরচা করে বিয়ে করে। তাহলে? ১৫ বছর এই ছেলেটা প্রতিটি দিন, প্রতিবেলা যুদ্ধ করে যাবে? আর বাবা-মা কখনই তাদের হয়ে ভাবেন না। আর সম্ভাবনার সীমানা দেখতে না পাওয়ায় তাদের "স্বাভাবিকভাবেই" হতাশা আগলে ধরে।

অনেক সুশীল ইতর লোক আছে–এমন আলোচনায় এসে টাকা ইনকামের প্রয়োজনীয়তার গল্প ফাঁদবেন। টাকা দিয়ে বিয়ে হয়না, চলার পথেও টাকার ব্যাপার যা–তার চাইতে অনেক বেশি স্বভাব আর চরিত্র। চরিত্রহীন সন্তান বা স্বামীর টাকা দিয়ে কারো কিছুই আসে যায় না। অথচ, এই টাকার দেখা, উপার্জনক্ষমতা তখন আপনার কাছে মূল্যহীন হবে, যখন আপনার সন্তান অনৈতিক সম্পর্ক গড়ে বাসায় ফিরবে। হয়ত তাকে এই শহরের চিপায় চাপায় দেখা যাবে আর ক'দিন পরেই। তখন উপার্জন ধুয়ে পানি খেতে হবে এইসব বেকুব অভিভাবকদের।

পূর্বের প্রজন্মের পাপ, অলসতা, বুদ্ধিবৃত্তিক অসারতার খেসারত আমাদের নোংরা সংস্কৃতি। সেই অভিভাবকরা আবার সংস্কৃতির উত্তাপের কড়াইতে পরের প্রজন্মকে ভেজে ভেজে লবণ ছিটিয়ে দেন তাদের কথার বুলিতে। অভিভাবকরা তো তাদের উপযুক্ত শিক্ষা পাবেই–তারা কোনদিনই শান্তি পাবেন না অন্তরে–এইটা আমি হলফ করে বলতে পারি।

একটা ছেলে ভার্সিটি লাইফে ক্লাস করে ফিরে পরের দিন ল্যাব/কুইজ না থাকলে কি করে বাসায়/হলে? তার আশেপাশের সবই তার পশুত্বকে জাগিয়ে তোলার জিনিসপত্র। টিভি চ্যানেল, মুভি, নাটক, গান, পত্রিকা, টেলিভিশনের অ্যাড — সে যদি শুধুই যুদ্ধ করে। ঘরে শিক্ষা না থাকলে ফোনে মেয়েদের কাছে পৌছাতে চায়। রোমান্স আজকাল পথে ঘাটেই থাকে। ভ্যাসলিনের কোমলতা বুঝাইতে টপস পরা মেয়েদের বিলবোর্ডে দেখা যায়। বছরের পর বছর 'ভালোবাসার টানে, পাশে আনে' বিলবোর্ডে ছেলের বুকে একটা মেয়ে মাথা রেখে হেলান দিয়ে থাকে বিশাল মাঠের ঘাসে। আর এসব থেকে বছরের পর পছর একটা ছেলে যুদ্ধ করতে থাকবে–তাকে অভিভাবকরা সন্নাসী মনে করে, নাকি নপুংসক মনে করে–কে জানে? নীতিকথায় শরীর ভিজে? ক'দিন থিওরি বুঝিয়ে সামলাবেন এইসব?

যেই সমাজে বিয়ে কঠিন হয়, সেই সমাজে ব্যভিচার সস্তা হয়ে যায়।

আমার এই লেখা কেউ পড়ুক না পড়ুক। আমি জানি এই ভয়াবহতা কত বেশি। একটা মানুষ কল্পনাও করতে পারবে না এই প্রজন্মের ছেলেমেয়েদের হাল। যারা সংকীর্ণমনা নির্বোধ ইতর, তারাই কেবল এই কথার প্রতিবাদ করবে–চিন্তিত না হয়ে। কেননা, আপনি/আপনার সন্তান হয়ত সাময়িকভাবে মুক্ত (আমি বিশ্বাস করিনা, কেননা পদস্খলনে কয়েক মূহুর্ত লাগে), কিন্তু তারা যাদের সাথে চলে–অথবা এই সমাজেরই আরো অনেক ছেলেমেয়ে সম্পূর্ণ অন্যরকম হয়ে চলেছে। নীতির কথা তাদের কাছে হাস্যকর। তারা আপনাদের ভেজে খাবে। আপনাদের চিন্তার অসারতার কারণেই তা হবে, হবেই। আমি হলফ করে বলতে পারি। এই প্রজন্মের ছেলেমেয়েরা অনেক অল্পতেই শারীরিক ব্যাপারগুলো ভালো করে বুঝে ফেলে। দায়িত্ববোধের শিক্ষা দিয়ে সপাত্রে/সপাত্রীতে হস্তান্তর করে দিতে না পারলে ভুক্তভোগী পরিবারের হর্তাকর্তারাই হবে–হচ্ছে হরদম।

অথচ এসব ভাবার কেউ যেন নাই। একদিন পারিবারিক বন্ধনগুলো সব ধ্বংস হবে–তখন হয়ত টের পাবে। প্রতিটি পরিবারের অবস্থা সঙ্গীন। প্রতিটি ছেলেমেয়েরই নৈতিক অবস্থা ভয়াবহ। এখানে এগিয়ে আসার কেউ নাই। আফসোস। সজ্ঞানে বিগত ৫-৭ বছর ধরে এসব দেখতে দেখতে আজকে প্রথম লেখলাম। না লিখে পারলামনা। এই চিন্তাগুলা প্রতিদিনই আমাকে আতঙ্কগ্রস্ত করে।

যারা সবকিছুকে এড়িয়ে চলতে পারে–তারা এই লেখাকেও এড়াবে। আমি এই চিন্তাগুলোর বাস্তবতা খুব ভালো করে দেখছি। শত শত সমসাময়িক ছেলেমেয়েকে উদাহরণ হিসেবে জানি। হাজারখানেক ছেলেমেয়ের সার্কেলের ও কালচারাল ট্রেণ্ড জানি। অভিভাবকরা পদক্ষেপ না নিলে একটা ধ্বংস অবধারিত। যেহেতু সাংস্কৃতিক আগ্রাসনকে ঠেকানোর উপায় নেই–পরিবারকে ঠেক দেয়াই এখনকার প্রথম কর্তব্য হওয়া উচিত। তাই বলছি, বিপদে যাবার আগে, সমাজকে ধ্বংস হতে দেবার আগে সুশিক্ষায় শিক্ষিত করে, নৈতিক শিক্ষা বলীয়ান করে সন্তানদের বিয়েকে এগিয়ে নিয়ে আসুন। অন্যথা? সাধু সাবধান!!

- সাফওয়ান

মন্তব্য ২ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৩ ই আগস্ট, ২০১৪ রাত ১২:০৯

দেশপ্রেমিকা বলেছেন: চমৎকার লিখেছেন! প্রায় ছ' বছর আগে বিয়ে হয়েছে আমার। তখন বাংলাদেশে প্রযুক্তির এতটা অপব্যবহার কিংবা অপব্যবহারের সুযোগ ছিলোনা। তখন ছিল মোবাইল। হোস্টেল এ ছিলাম যখন ইন্টারমিডিয়েট এ পড়ি। তখন যা অবস্থা ছিল ১৭-১৮ বছর বয়সের মেয়েদের! ছেলেদের কথাতো বাদ ই দিলাম। যেসব মেয়ে কখনো ছেলেদের সাথে দু লাইন কথা বলেনি ঠিকমত, তারাই মোবাইল ফ্লারটিং এ এক্সপার্ট হয়ে বেরিয়েছে! ঠিক ই বলেছেন। নৈতিকতার সাথে যুদ্ধ! বড়ই কঠিন। পদে পদেই পদস্খলনের হাতছানি! আর এখন ফেসবুকের যুগ। মাঝে মাঝে শুকরিয়া আদায় করি আল্লাহর কাছে যে ভালই হয়েছে ২০ এর আগে বিয়ে হয়েছে। তখন অবশ্য বাবা-মা র উপর অনেক অভিমান ছিল যে কেন এত আর্লি বিয়ে দিল। আমার মনে হয় মেয়েদের ২০ এর মধ্যে বিয়ে হয়ে যাওয়াটাই ভাল। আর ছেলেদের জন্য দুঃখই লাগে। উপায় নেই।

২| ১৬ ই আগস্ট, ২০১৪ রাত ১০:২৪

জহিরুল লাইভ বলেছেন: জনাব, আমি অভিভূত হলাম কারণ এই কথাগুলো আমি অনেকদিন থেকে মনে পুষে আসছি। কিন্তু চারপাশের অবস্থা ভয়াবহ। আতঙ্কিত হই। নৈতিকতা শিকাতে তবে কি অনেক আগে রেখেছি। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য আরও ভয় লাগে।
এখনই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের যে অবস্থা তাতে আমার আমেরিকার একটি কাহিনী প্রায়ই মনে হয়,

৭০-৮০ এর দশকে আমেরিকার কিছু প্রতিষ্ঠানে জরিপ হচ্ছে, শিক্ষার্থীদের আবস্থা কি?


তখন দেখা গেল, তারা পড়াশোনায় ব্যস্ত থাকে, মা-বাবাকে সম্মান করে, সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে অনেক কাজ করে, শ্রেণীকক্ষে পাঠদান ভাল হয়, অন্য কাজও শিক্ষিত সুনাগরিক এর মত করে।


৯০ এর দশকে আবার জরীপে দেখা গেল, তারা পড়াশোনা ঠিক মত করা থেকে বিরত থেকে বিভিন্ন ডিভাইস ব্যবহার করে, ধর্ষণ, গর্ভপাত ও শ্রেণী কক্ষে অশালীন ভাবে থাকে। সেখানে পাওয়া যায় ব্যবহৃত জন্ম- নিয়ন্ত্রণ সামগ্রী।

অর্থাৎ উন্নতি নয় দিন দিন অবনতি।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.