নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

phon

I want to free from failure. I don,t belive failure is the piller of suceess

Masuk

অামি একজন ব্যর্থ মানুষ। জীবনে কখনো সফলতার স্বাদ পায়নি। জীবনে যা চেয়েছি তার বিপরীতটাই পেয়েছি। এর পর থেকেই হতাশা অামাকে গ্রাস করে। হতাশা থেকে মুক্তির জন্য ঘুরেত থাকি। হতাশা থেকে মুক্তি পাই না। কেউ অামাকে হতাশা থেকে মুক্তি দিতে পারে না। অামি নিজেকে ও হতাশা থেকে মুক্ত করতে পারছিলাম না। সমগ্র পৃথিবী তন্ন তন্ন করে খেঁাজেছি এক মুঠো শান্তির অাশায়। হতাশা থেকে মুক্তির অাশায়। কেউ অামাকে মুক্তি দিতে পারে নি। মুক্তি অামি শেষ পর্যন্ত পাই। মুক্তি পাই বই থেকে। প্রচুর বই পড়তে থাকি হতাশা থেকে মুক্তির জন্য। কবিতা, গল্প, উপন্যাস, নাটক সব। সাহিত্যর সব জায়গায় বিচরণ করতে থাকি। এভাবেই চলে অনেক বছর। এর পর থেকে নিজের মনেই অাসতে থাকে কিছু সৃষ্টি করার। নতুন কিছু সৃষ্টি করার। নতুন কিছু সৃষ্টি থেকেই কবিতা, গল্প, উপন্যাস, নাটক লেখা শুরু করি। যা অামাকে হতাশা থেকে মুক্তি দেয়। এখানে ও জানি সফলতা পাব না। ব্যর্থতা যাকে ঘিরে ধরে সে সফলতা পায় না। অামি ও পাব না। অনেক লেখি। কোন লেখা বই অাকারে প্রকাশ পায় না। কোন লেখা থেকে জীবন বাঁচানোর জন্য এক কাপ চায়ের পয়সা ও অাসে না। লেখক হিসেবে ও স্বীকৃতি মিলে না। যাক কিছু না হোক হতাশা মুক্ত হোক

Masuk › বিস্তারিত পোস্টঃ

টেরা মজিদের ফাঁসি উপন্যাস

০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ১০:৩৫

টেরা মজিদের ফাঁসি উপন্যাস

কামরুল হাছান মাসুক

পার্ট ১



টেরা মজিদের ফাঁসির রায় হয়ে গেছে। ফাঁসির রায় হলে কি হবে কার্যকর করা যাচ্ছে না। কার্যকর করতে হলে টেরা মজিদকে ধরতে হবে। তাকে ধরা যাচ্ছে না ফাঁসিও কার্যকর করা যাচ্ছে না। ইন্টারপোলের সহায়তা নেওয়া হয়েছে। কোন কাজ হয় নি। সে কোথায় কেউ জানে না। মাঝে মাঝে বের হয়ে আসে। পত্রিকায় কয়েকদিন শিরোনামে থেকে আবার আড়ালে চলে যায়। আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী কিছু করতে পারে না। ধরতে পারলে কিছু করা যেত। যে লোককে ধরা যায় না তার ফাঁসি দেওয়া না দেওয়া সমান কথা। ধরা পড়লেই তাকে ফাঁসিতে ঝুলানো হবে।



টেরা মজিদের খোঁজ পাওয়া গেল কুমিল্লার কোটবাড়িতে। সে নাকি ঐখানে ঘাপটি মেরে বসে আছে। এরকম ওড়া খবার পুলিশের কাছে প্রায়ই আসে। সরকারকে শান্ত করতে যেতে হয়। যারা যায় তারা চরম বিরক্তি নিয়ে যায়। প্রতিটি মিশনেই যায় কোন কাজ হয় না। টেরা মজিদ দূরে থাক তার চেলা পেলাও পাওয়া যায় না। সে কোন কালে ঐ জায়গায় গিয়েছিল এরকম কোন তথ্যও পাওয়া যায় না। খবরগুলি যে কোথায় থেকে আসে তা কেউ জানে না। টেরা মজিদের কোন খবর আসলেই পুলিশ, সাংবাদিক, রাজনীতিকরা ঝাঁপিয়ে পড়ে। জনগণ টেরা মজিদের নাম শুনতে শুনতে বিরক্ত হয়ে গেছে। জনগণ টেরা মজিদের নাম আর শুনতে চায় না। তাদের জোর করে শুনায়। টিভি চালু করলেই টেরা মজিদের একটা ছবি ভেসে আছে। তার কার্যকলাপের চিত্রগুলি ফুঁটে উঠে। অধিকাংশ জনগণ জানে না টেরা মজিদের মূল অপরাধ কি? জনগণ জানে টেরা মজিদ ভয়ংকর বিপদজনক ব্যক্তি। সে নাকি দাবা ঘরের গুটি উঠল পালট করে দিয়েছিল। যারা বুদ্ধিজীবী তারা বিষয়টা জানেন। তারা বলেন, টেরা মজিদ রাজার জায়গায় কিছু ঘোড়াকে বসিয়েছিলেন। ঘোড়াকে বসিয়ে বেশি দিন রাখতে পারেন নি। রাজা ঘোড়াকে আউট করে নিজের জায়গায় এসে গেছেন। রাজা এখন প্রতিশোধ নিতে চান। ভয়ংকর প্রতিশোধ। যারা ঘোড়া হয়ে বসেছিল তাদের প্রতি রাজার বিন্দুমাত্র অভিযোগ, অনুযোগ নেই। সব অভিযোগ সে রাজার জায়গায় ঘোড়াকে বসিয়েছিল। অজ্ঞাত কারণ বসত টেরা মজিদের নামই এসেছে। সেই সব কিছুর নায়ক। তাকে ধরে ফাঁসিতে ঝুলালেই রাজা শান্তি পাবেন। সুতরাং তাকে যে করেই হোক ঝুঁলাতে হবে।



কুমিল্লার কোটবাড়িতে বাংলাদেশের কয়েকজন গোয়েন্দা সংস্থার লোক চরম বিরক্তি নিয়ে যায়। তারা জানে টেরা মজিদকে পাওয়া যাবে না। গিয়ে গোয়েন্দা সংস্থার লোকগুলি নিশ্চিত হল টেরা মজিদ পাহাড়েই লুকিয়ে আছে। অনেক দিন যাবৎ এখানে লুকিয়ে ছিল। এলাকার অনেকেই বিষয়টা জানত। ভয়ে কেই মুখ খুলেনি। টেরা মজিদ কাউকে অস্ত্র ধরেনি। তবুও মানুষদের মাঝে অজানা আতঙ্ক কাজ করছিল। টেরা মজিদ বলে কথা।



গোয়েন্দা সংস্থার লোকদের সাথে ভারি কোন অস্ত্র ছিল না। তারা ঐ রকম ভারি কোন অস্ত্র নিয়েও যায় নি। ভারি অস্ত্র ছাড়া টেরা মজিদের সাথে যুদ্ধ করতে যাওয়া বোকামি হবে। গোয়েন্দা সংস্থার লোক এক রকম হাল ছেড়ে দিল।



সরকার থেকে সংকেত আসল যে করেই হোক টেরা মজিদকে ধরতে হবে। অস্ত্র না থাকলে অস্ত্র ছাড়াই যুদ্ধ করতে হবে। দরকার হলে জীবন দিয়ে হলেও টেরা মজিদকে ধরতে হবে। সরকারের কর্মচারী যদি সরকারের কথা না শুনে তাহলে চাকুরি থাকে না। তারা চাকুরিকে ভয়ংকর ভয় পায়। জান যাক সমস্যা নেই। চাকুরি যেন না যায়। জান গেলে সমস্যা হবে না। পরিবার সরকার দেখবে। চাকুরি গেলে পরিবারকে কে দেখবে। নিজেকে দেখার মতই কেউ নেই।



গোয়েন্দা সংস্থার বিশেষ টিম অভিযানে নামল। ভারি অস্ত্রবিহীনই টেরা মজিদকে ধরার জন্য অভিযানে গেল। টেরা মজিদের অবস্থান সনাক্ত করা গেল। একটা গুহার মধ্যে টেরা মজিদ থাকে। দূর থেকে দূরবিনের সাহায্য গুহার মুখটা দেখা যাচ্ছে। গুহার ভিতরে কেউ আসে কিনা তা বুঝা যাচ্ছে না। তাকে নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য আশে পাশে কেউ আসে কিনা তাও বুঝা যাচ্ছে না।



না বুঝা গেলেও অভিযান পরিচালনা করতে হবে। গোয়েন্দা টিম জীবনের ঝুঁকি নিয়ে গুহার দিকে সতর্কভাবে এগুতে লাগল। এতটা সতর্ক হল যে, মনে হচ্ছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় সন্ত্রাসীকে ধরতে যাচ্ছে। যাকে ধরতে পারলে বিশ্ব মিডিয়ায় তাদের নাম ফলাও করে প্রচার হবে।



গোয়েন্দা টিম গুহার দিকে এগুতে লাগল। যত গুহার দিকে আসতে লাগত তত শরীলে কাঁপন ধরতে লাগল। তারা এর আগেও ভয়ংকর ভয়ংকর অভিযান পরিচালনা করেছে। তাদের ভয় লাগেনি। তারা এক চরমপন্থি নেতাকে ধরতে গিয়ে যা বিপদে পড়েছিল তা বলার মত না। এখনও ঐ ঘটনা মনে পড়লে হাত পাঁ কাঁপতে থাকে। অভিযান পরিচালনার সময় এ রকম মনে হয়নি। তখন তাদের কাছে স্বাভাবিকই লেগেছিল। ঘটনাটি ছিল এরকমঃ সুন্দরবনে পাহাড়ি এলাকায় অভিযানটি ছিল। সবচেয়ে বেশি চরমপন্থিদের বাস সুন্দরবন এলাকায়। ঐ খানে জনসংখ্যা কম। পাহাড়ি এলাকা। লুকিয়ে থাকার মত জায়গার অভাব নেই। অবস্থা বেগতিক দেখলে পার্শ্ববর্তী দেশ সমূহে চলে যেতে পারে। গোয়েন্দা টিম রাতের বেলায় অভিযানে গেল। সাথে ভারি অস্ত্র এবং পর্যাপ্ত পরিমান লাইট ছিল। সাধারণা পোশাকে গেল। সরকারি পোশাক পড়ার সময় ছিল না।



গোয়েন্দাদের হাতে চরমপন্থি নেতাদের ছবি ছিল। যদি ধরা না যায় তাহলে এনকাউন্টার করারও নির্দেশ দেওয়া ছিল। গোয়েন্দারা চরমপন্থি নেতাদের অবস্থান সনাক্ত করে হামলা করতে যাবেন তখনই আকাশ কাল করে ঝড় বইতে লাগল। ঝড়ের বেগ ধীরে ধীরে বাড়তে লাগল। আকাশ ছেড়ে বৃষ্টি নামতে লাগল। বনের গাছ পালা ভেঙ্গে পড়তে লাগল। চারদিকে পাখির কিচিরমিচির শব্দে চারদিকে ভয়াবহ অবস্থায় রূপ নিল।



গোয়েন্দাদের কোন তাবু ছিল না। তারা দুই ঘন্টার অভিযানে এসেছেন। দুই ঘন্টার ভিতরে চরমপন্থিদের হাতে নাতে ধরবেন নয়ত এনকাউন্টারে হত্যা করে চলে যাবেন। বাংলাদেশ সরকারে বিশেষ বাহিনী তারা। তাদের বিদেশ থেকে সর্বোচ্চ পরিমান প্রশিক্ষণ দিয়ে এনেছেন। বিশেষ বিশেষ মুহুর্তেই তাদের পাঠানো হয়। তাদের কার্যক্ষমতাও চমৎকার। দ্রুত তারা তাদের অভিযান পরিচালনা করতে পারেন। এবার অভিযানের পূর্বেও তাদের ধারণা এরকমই ছিল। বৃষ্টি, ঝড় এগুলি তাদের এলোমেলো করে দিয়েছে।



অবস্থা আরও ভয়াবহ হল। বৃষ্টির ঝাঁপটার সাথে সাথে গাছ গাছালির ডাল ভাঙতে লাগত। এর পর আবার আরেকটি ঝামেলা যুক্ত হল। হাঁটা যাচ্ছে না। বৃষ্টির পানিতে মাটি কাঁদা হয়ে গেছে। বুট নিয়ে হাঁটা যায় না। হাঁটতে গেলেই দেবে যাচ্ছে। গোয়েন্দা টিম অবস্থা বেগতিক দেখে পাশেই আশ্রয় নিল। দূরে একটা তাবু দেখা গেল। তাবুতে মিটিমিটি আলো জ্বলছে। গোয়েন্দারা ঝড়ের ঝাঁপটা থেকে বাঁচার জন্য তাবুর দিকে গেল। তাবুতে গিয়ে তাদের চোখ বড় বড় হয়ে গেল। যেই চরমপন্থি নেতাদের তারা ধরতে এসেছিল তাদের তাবুই এখানে। চরমপন্থি নেতারা গোয়েন্দাদের তাবুতে ঢুকতে গিয়েছে। চরমপন্থি নেতারা গোয়েন্দাদের সন্দেহ করেনি। গোয়েন্দাদের এখন কিছু করার নেই। তাবুতে ঢোকার আগেই তাদের নিরস্ত্র করে ফেলেছে। গোয়েন্দাদের হাতে এখন কিছুই নেই। এমনকি লাইটও কেড়ে নেওয়া হয়েছে।



চরমপন্থি নেতারা গোয়েন্দাদের এসে বলছে, আপনারা এত আধুনিক অস্ত্র পেলেন কোথায় থেকে। এগুলি রাশিয়া থেকে আনা। এগুলি একমাত্র বাংলাদেশের চৌকস গোয়েন্দা টিমের কাছেই পাওয়া যায়। আপনারা এগুলি পেলেন কোথায় থেকে।



গোয়েন্দারা একে অপরের দিকে চাওয়া চাওয়া করতে লাগল। ধরা পড়ে গেলে নির্ঘাত মৃত্যু। ভাল মানুষদেরই তারা বাঁচতে দেয় না। গোয়েন্দা নাম শুনলে মারবে নিশ্চিত। তারপর শুলে চরানোর ব্যবস্থা করবে।



গোয়েন্দাদের মধ্য একজন প্রধান আজিজুল হক, সে বলল, আমরা এখানে ঘুরতে এসেছিলাম। রাস্তা ভূলে গিয়েছিলাম। সঠিক রাস্তা পেতে পেতে রাত হয়ে যায়। কিছুক্ষণ পরই দেখি বৃষ্টি নামছে। ভয়ে আমাদের অবস্থা খারাপ হয়ে যায়। আমরা চারদিকে ছুটাছুটি করতে থাকি। ছোটবেলা গোল্লাছুট খেলছিলাম বলে রক্ষা। অনেক ছুটাছুটি করার পরও কোন কূল কিনারা পাচ্ছিলাম না। পরে দেখলাম অস্ত্রগুলি পড়ে আছে। ভাবলাম অস্ত্রগুলি থাকলে বাঘ, সিংহ, হায়েনা থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে। অস্ত্রগুলি নিতে গিয়েই দেখি বুট, গেঞ্জি পড়ে আছে। কি আর করব পানির জ্বালায় হাঁটতে পারছিলাম না। পড়ে নিলাম।



যাক ভালই হল। গুলি চালাতে পারিস।

হ্যাঁ পারি। ছোটবেলা বাবার সাথে পাখি শিকার করতে গিয়েছিলাম। ঐখান থেকে গুলি চালানো শিখে গেছি। ভাল করে পারি না। শিখিয়ে দিলে পারব।



তুই একটু বেশি কথা বলিস। কম কথা বলবি। কম কথা বলা মানুষদের আমি ভালবাসি। তর সাথের লোকগুলি বেশি কথা বলে না। তুই এত বেশি কথা বলিস কেন।



আমার কথা বলা রোগ আছে। ছোটবেলা এর জন্য অনেক মার খেয়েছি। মা আমাকে এর জন্য অনেক মারত। বাবা চরম বিরক্ত হয়ে যেত। আমি বিরক্ত হতাম না। আমি কাউকে না পেলে নিজে নিজেই কথা বলতাম। কি বলতাম নিজেও জানতাম না। আগডুম বাগডুম কত ধরণের কথা যে বলতাম তা আমি নিজেও বুঝতাম না।



থাপ্পড় মেরে এবার থাম। এত কথা বলিস কেন। কথার মাঝে স্পেস দিতে হয়। এত কথা বলবি না। আমরা যা বলি তা শুন। আমাদের কাছে খবর আছে এখানে নাকি চৌকস গোয়েন্দা টিম আসছে। আমাদের নাকি ওরা ধরে নিয়ে যাবে। আমাদের যে নেতা আসে তিনি বলেছেন আমরা যেন তাদের সাথে যুদ্ধে লড়ি। তদের পেয়ে ভালই হল। তরা আমাদের সাথে যুদ্ধে লড়বি। তদের সব শিখিয়ে দিব।



ঠিক আছে।



ঠিক আছে রে কি ব্যাটা। ভাই বলবি। আমাদের এই লাইনে সবাই সবারে ভাই বলে।



ঠিক আছে বড় ভাই।



এইত বুঝে গেছিস। বড় ভাই মানে বুঝিস। আমাদের লাইনে বড় ভাই মানে সম্মানিত ব্যাক্তি। আমি বড় ভাই এখনও হতে পারি নি। এই মিশনে যদি গোয়েন্দাদের মারতে পারি তাহলে বড় ভাই হয়ে যাব।

ঠিক আছে বড় ভাই।



ঐ তর নামি কিরে। তুই হাত তুলে আসিস কেন।



বড় ভাই আমার নাম এ বি এম মূসা। আমার একটা প্রশ্ন ছিল। আপনাদের কথার মাঝে কোন স্পেস পাচ্ছিলাম না তাই অনেকক্ষণ ধরে হাত তুলে আছি।



বল বল তারাতারি বল। আমার কাজ আছে।



বড় ভাই আপনারা গোয়েন্দাদের মারবেন কেন?



উনারাই আমাদের সবচেয়ে বড় শত্র“। আমাদের কাজ আমাদের মত করতে দিচ্ছে না। শুধু শুধু ঝামেলা করে। কয়েকদিন পর পর কয়েকজনকে মেরে লাশ নিয়ে যায়।



বড় ভাই আমি বলছিলাম কি, আপনারা কি তাদের সাথে পারবেন। শুধু শুধু এখানে বসে আছেন কেন। চলে গেলেই পারেন। তারা এখানে নিয়মিত আসবে না। যখন চলে যাবে তখন না হয় আবার আসবেন।



এই তর নাম কি?



আব্দুস সালাম ভাই।



বুঝতে পারলি না। বিষয়টা হচ্ছে আমাদের যে বড় ভাই তিনি অবস্থা খারাপ দেখলেই পার্শ্ববর্তী দেশে চলে যান। কয়েকদিন যাবৎ তিনি যেতে পারছেন না। পার্শ্ববর্তী দেশে আমাদের যে এ্যাজেন্ট ছিল তারা ধরা খেয়ে গেছে। পার্শ্ববর্তী দেশে এখন নজরধারী বৃদ্ধি করা হয়েছে। তাই উনি যেতে পারছেন না। এদিকে আমাদের কাছে খবর এসেছে গোয়েন্দা টিম আমাদের ধরতে আসবে। কালকের ভিতরে মনে হয় আসবে। আমরা খোঁজ নিয়ে জেনেছি তারা আসে নি। কালকে আসবেন। আমরা যদি তাদের হটিয়ে দিতে পারি তাহলে আমরা এখানে চিরস্থায়ী ভাবে থাকতে পারব। না পারলে আমাদের হয়ত কয়েকজন ধরা পড়বে। কয়েকজন মারা যাবে। বড় ভাই ঠিকই পালিয়ে যাবেন। বড় ভাইকে টেকেল দেওয়ার জন্য প্রতিরক্ষা বলতে পারেন।



ও তাই।



তদের একটা গোপন কথা বলি। আমাদের মাঝে কিছু কিছু লোক তদের সন্দেহ করছে। তদের ভাবছে গোয়েন্দা সংস্থার লোক। আমিও সন্দেহ করেছিলাম। তদের সাথে কথা বলে নিশ্চিত হলাম।



গোয়েন্দা সংস্থা লোকদের ভয়ে শরীলের পানি শুকিয়ে গেল। ধরা কি তাহলে তারা পড়েই গেল। বিনা প্রতিদ্বন্ধিতায় তাদের মরতে হবে।



ভাই, আপনি কি নিশ্চিত হলেন।



আমি নিশ্চিত হলাম তরা গোয়েন্দা সংস্থার লোক না। গোয়েন্দা সংস্থার লোক এত ভেবদা হয় না। ওরা অনেক চৌকস হয়। তদের মত এত বেশি কথা বলে না।



গোয়েন্দা সংস্থার লোক ভেবদা কি জিজ্ঞেস করবে। ভয়ে জিজ্ঞেস করল না। যমের মুখে থেকে যমের সাথে বেশি কথা বললে যদি ধরা পড়ে যাই।



গোয়েন্দা সংস্থা তিনটা লোকদের ভয়ে ভয়ে রাত পার হতে লাগল। কখন ধরা পড়ে যায়। রাতে বিন্দুমাত্র ঘুম হয়নি। সারাক্ষণ একটা চিন্তাই ঘুরপাক খাচ্ছে এই বুঝি ধরা পড়ে গেলাম। ভোর রাতের দিকে এক লোক এসে জানাল গোয়েন্দা সংস্থার লোক এসে গেছে। বনে কোথায়ও তারা ঘাঁটি ঘেড়েছে। আমাদের সবার সতর্ক থাকতে হবে।



আমাদের এখানে কিছু লোক আসে। যারা গত রাতে আমাদের এখানে এসেছিল। তারা নাকি বনে ঘুরতে এসেছে। রাস্তা হারিয়ে ফেলেছে। রাতে ঝড়ের সময় আমাদের এখানে আশ্রয় নিয়েছে।



তাদের তারাতারি বের করে দাও। গোয়েন্দারা যদি আক্রমণ করে তাহলে কি হবে অবস্থা বুঝতে পারছ।



আমার একটা পরিকল্পনা ছিল। আমরা যদি ধরা খেয়ে যায় তাহলে লোকগুলিকে মানবঢাল হিসেবে ব্যবহার করতে পারব। ওদের কাছে অত্যাধুনিক কিছু অস্ত্রের ভান্ডার আছে। আমার মনে হয় গোয়েন্দারা এনে মজুদ করেছিল। ওরা বনের মাঝে হাঁটতে গিয়ে পেয়ে যায়। আমরা যদি তাদের অস্ত্র ব্যবহারটা শিখিয়ে দিতে পারি তাহলে আমাদের দলের হয়ে তাদের ব্যবহার করতে পারব।



যা করবে বুঝে শুনে করবে। আমার মনে হয় তাদের চোখে চোখে রাখাই নিরাপদ হবে। ওরা যদি গোয়েন্দা সংস্থার লোক হয়। আমার মনে হয় এত কিছু না ভেবে ওদের গুলি করেই মেরে দাও। ঘুরতে এসেছে। ওদের মেরে ফেললে তেমন ক্ষতি হবে না। সংবাদপত্রও এতটা মাথা ঘামাবে না।



ঠিক আছে তাই করি। মেরেই দেই।



গোয়েন্দা সংস্থার লোকগুলি দোয়া ইউনূস পড়ছে। মৃত্যু আসন্ন। কালেমা, দোয়া ইউনূস পড়ে মৃত্যুর জন্য তৈরী হতে থাকে। যত বড় বুদ্ধিমানই হোক না কেন অস্ত্র ছাড়া কোন বুদ্ধিই কাজে লাগে না। তবুও চেষ্টা করতে দুষ কি।



চরমপন্থি নেতারা অস্ত্র হাতে প্রবেশ করল। আজিজুল হক বললেন, ভাই বাহিরে কিসের যে শব্দ পেলাম। ওরা বাহিরের দিকে দৃষ্টি দিতেই এ বি এম মূসা একটি অস্ত্র কেড়ে নিল। সাথে সাথে গোয়েন্দারা সবাই মাটিতে লুটিয়ে পড়ল। তড়িৎ গতিতে পলকের মধ্যে মূসা গুলি করল। সাথে সাথেই কয়েকজন গুলির আঘাতে মাটিতে লুটিয়ে পড়ল। গুলির শব্দ হল তবুও কেউ আসল না। ওরা হয়ত ভেবেছে অচেনা পথিকগুলিকে মেরেছে। তাই এ দিক নিয়ে তাদের কোন মাথাব্যাথা নেই। গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন অস্ত্র হাতে এবার অস্ত্রযুক্ত হলেন। তাদের মধ্য থেকে ভয় চলে গেল। অস্ত্র হাতে থাকলে মানুষ ভয়ংকর হয়ে উঠে। তাদের তখন কোন ধরণের ভয় কাজ করে না। এটা আজব এক রহস্য। অনেক রহস্যর মধ্য এটাও একটা রহস্য। তারপর একে একে সব চরমপন্থি নেতাদের খুন করলেন। যাদের ধরা সম্ভব হয়েছে তাদের ধরে মিশন শেষ করেছেন। গুহা থেকে জার্মানির তৈরী ভারি ভারি অস্ত্র পাওয়া গিয়েছিল। চরমপন্থি নেতাদের কাছে আধুনিক এত অস্ত্র ছিল যে, বাংলাদেশের সর্বোচ্চ গোয়েন্দা প্রধানের কাছেও এরকম অস্ত্র নেই। গুহার ব্যাংকার গুলিও ছিল নিরাপদ। বাহির থেকে গুলি করলে জীবনেও ব্যাংকার পর্যন্ত পৌঁছাবে না। ওরা অনায়াসেই ব্যাংকার থেকে গুলি করে বাহির অবস্থানরত যে কাউকেই কাবু করতে পারত। ব্যাংকার গুলি এরকম নিখুঁত ভাবে তৈরি করা ছিল যে কেউ ইচ্ছে করলে ভয়াবহ অবস্থা হলে পালিয়ে যেতে পারত। বাহির থেকে দেখে মনে হয় অস্থায়ী তাবু ছাড়া এগুলি কিছু না। আসলে এগুলি অস্থায়ী তাবু ছিল না। এগুলি ছিল বড় ধরণের ব্যাংকার। যেই ব্যাংকারে চরমপন্থি নেতারা লুকিয়ে থেকে কলকাঠি নাড়েন।



টেরা মজিদকে ধরতে এসে এগুলির কথা বারবার মনে হচ্ছে। মনে হওয়া উচিত না তবুও মনে হচ্ছে। অস্ত্রের ক্ষমতার সাথে সাথে নিজের ক্ষমতা মনে হয় কমে যাচ্ছে। না হলে এরকম ভয় ভয় লাগবে কেন। গুহাতে প্রবেশ করার মুখে গোয়েন্দারা অনেক সময় পর্যন্ত অপেক্ষা করেছেন। কত আর অপেক্ষা করা যায়। গুহা থেকে কোন আলামত পাওয়া যাচ্ছে না। গুহার ভিতরে প্রবেশ ছাড়া আর কোন পথ ছিল না। এখন যদি মরা পড়তে হয় তাহলেও কিছু করার নেই। গুহাতে প্রবেশ করতেই হবে।



আস্তে আস্তে গোয়েন্দা টিম গুহার মুখে আসতে লাগল। টেরা মজিদকে নিশ্চই ধরতে হবে। গুহার ভিতরে প্রবেশ করার পরও টেরা মজিদের কোন আলামত পাওয়া যাচ্ছে না। সে কোন প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। এটা কি বিশ্বাস করা যায়। যত বড় সন্ত্রাসী তত বড় তার রণকৌশল। টেরা মজিদ ও রণকৌলশ দেখাবেন। উনি হয়ত অপেক্ষা করছেন। পা টিপে টিপে গুহার ভিতরে প্রবেশ করছে। মনের ভিতরে ভয় না থাকলেও নামের কারণে ভয় লাগছে। ছোট্ট একটা বিড়াল বের হতে দেখা গেল। সাদা বিড়াল। গোয়েন্দারা চমকে উঠল। অস্ত্র তাক করতেই দেখা গেল সাদা সুন্দর একটা বিড়াল। অনেকটা খড়গোসের মত। কোটবাড়িতে নাকি প্রচুর খরগোস পাওয়া যায়। এখন খড়গোস ধরার সময় না। এখন টেরা মজিদ ধরার সময়। কেন যে খরগোস এর দিকে দৃষ্টি গেল। দৃষ্টিটা কিচ্ছুক্ষণের জন্য হলেও টেরা মজিদ অন্য দিকে ধাবিত করতে পেরেছে। বড় সন্ত্রাসীদের এই হচ্ছে গুন। যে কাউকেই একটা আবেশের মধ্যে ফেলে দিতে পারে। তাদের প্রশংসার ঝুড়ি নেই। যত যাই হোক। তাদের প্রশংসা না করে পারা যায় না। গুন থাকতেই হবে। গুন না থাকলে কি আন্ডারওয়ার্ল্ডের মত বড় একটা জগতকে এত সহজে নিয়ন্ত্রণ করা যায়। সারা বিশ্বের নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে ফাঁকি দিয়ে আন্ডারওয়ার্ল্ডের মত বড় এক জগৎ কে কয়েকটা ব্যক্তি মাত্র নিয়ন্ত্রণ করছে। আজিজুল হকের দীর্ঘ দিনের স্বাদ ছিল আন্ডারওয়ার্ল্ড দেখা। উনার মাঝে মাঝে মনে হয় গোয়েন্দা থেকে অবসর নিয়ে আন্ডারওয়াল্ড গঠন করা। নৈতিকতার জন্য পারেন না।



লালবাগ, ঢাকা।

মোবাইল ০১৯২৩২৪৪৫২৮

মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ১১:০২

সপ্নাতুর আহসান বলেছেন: বেশ ভাল।

২| ০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ সকাল ১১:২০

Masuk বলেছেন: ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.