![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
পরিচালক, চিত্রনাট্যকার, সম্পাদক
পুরোন বইয়ের স্তুপ,
ঝেড়ে ফেলার সময় হল
কাগজওয়ালার চিৎকারে।
ঘরের সিলিং জুড়ে মাকড়শার সংসার,
চোখে আজকাল দৃষ্টির জোর নেই।
সফিকের মার এক গল্প রোজ শোনা
নিশ্চুপ ইশারায় হাসি দিয়ে মেনে নেয়া।
কলিং বেল বাজিয়ে দরজার ওপাশে
মাছওয়ালার মুখস্ত বিজ্ঞাপন।
নেব না বলে দিয়েছি
তবুও চুপটি করে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা।
কাগজ মেপে যায় সফিকের মা,
আর কথার কাটাকাটিতে ন্যায়ের বিচার।
সুহান আজকাল হেমন্ত মান্নার
আবেগে সকাল বেলায় থাকে আপন মনে।
১৫ কেজি কাগজের দাম
গুনে নিচ্ছে সফিকের মা।
অবহেলায় বেড়িয়ে পড়ে বহু পুরান খাম।
চিনতে আমার ভুল হলনা
ধক করে আপন লেগে যাওয়া লেখা।
সময়টা তখন ৯৩ থেকে ৯৫ এর ধূলো মাখা।
মাছওয়ালা বলে দিদিমনি,
তাজা পাবদা আপনার জন্যই এনেছি।
ঘরে সুহান ভলিউম বারিয়ে শুনছে
কফি হাউসের সেই আড্ডার গল্প।
মাছ নেবনা বলেও কিনে নিলাম।
নিজের হাতে ধুইলাম, কুটলাম
পেঁয়াজ দিয়ে ভুনা করলাম।
সুহান রান্নার ঘ্রানে চোখ নাচিয়ে
জড়িয়ে ধরল আমাকে।
অনেক পরিচিত সেই ছোঁয়া
মনটা কেমন জানি কেঁপে উঠল।
মনে পড়ে রিক্সায় করে টিএসসির প্রাঙ্গন
অভিমানের ঝগড়ায় জড়িয়ে ধরা।
গলির মাথার দোকানে বসে
আড় চোখে সিগারেটের ধোঁয়ার ছলে,
হেসে আমাকে দেখা।
টেইলার্সের ছেলের কাছে রেখে যাওয়া
হলুদ খামের চিঠি,
রবীন্দ্রনাথের ভাষায়, সুনীলের নীরায় সাজি।
সদ্য গাওয়া নচিকেতার নীলাঞ্জনা আমি...
কে জানত হয়ে যাব, অঞ্জনের বেলা বোস?
চল্লিশ পেড়িয়ে আজো স্পষ্ট দেখি
সেই খোলা আকাশের নিচে
পাবদা মাছের ঝোলে তোমার গাল।
সুহান খাওয়া শেষ-
মা তোমার পাবদার রেসিপি
তোমার বৌমাকে শিখিয়ে দিও।
হাতে হলুদ খাম নিয়ে
বসার ঘরে সিলিং এ ফের তাকালাম।
মাকড়শার সংসার
আজ না হয় কাল থাকবেনা !
কি আজব এই ধরা
এক ঘর ভেংগে
আরেক ঘরের সৌন্দর্য রক্ষা।
হয়ত এটাই নিয়ম
হয়ত...হয়ত সুখটাই এমন।
©somewhere in net ltd.