নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

টুকটাক লেখালেখির অভ্যাস আছে। যদি ও তা অখাদ্য! তা ও লেখি। কেন লেখি তা জানি না! ।ফেসবুকে আমার আইডি :-\n\n.\n http://www.facebook.com/khaledulislampriyo\n\nধন্যবাদ সবাইকে :)

অপ্রিয় প্রিয়

অপ্রিয় প্রিয় › বিস্তারিত পোস্টঃ

"তমার পেঁচা" (পর্ব-৩)

২৭ শে মে, ২০১৫ দুপুর ১:৪৯

আমার মোবাইলে সচারচর কোন কল আসে না। ফোন আসলে অবাক হই। কে আমায় ফোন দিলো!

তেমনি অবাক করার মতো একটা কান্ড ঘটে গেলো। হঠাৎ করে কল এসে গেলো।
না নাম্বারটা পরিচিত। শেষে 86। তার মানে এটা তমা'র নাম্বার। তমা'র পুরো নাম্বারটা আমি মুখস্ত করতে পারি নি। তবে শেষ দুটি ডিজিট আমি সহজেই মনে রেখেছি। কারো নাম্বার মনে রাখার এটাই সহজ উপায়।

রিসিভ করলাম। উপাশ থেকে তমা'র কন্ঠে শুনতে পেলামঃ

- হেমন্ত ভাইয়া ?

আমি মোবাইল কিনার সময় শিখছি কেউ ফোন দিলে কিংবা কাউকে দিলে "হ্যালো" নামক ইংরেজী শব্দ টা বলতে হয়।

কিন্তু তমা তা বলে না। সবসময় ই বলে "হেমন্ত ভাইয়া"। হয়তো তমা'র কাছে হ্যালোর বাংলা শব্দ হেমন্ত ভাইয়া।

- বলো তমা
- আপনি কোথায় ?
- এইতো আমি আমার রুমে। শুয়ে আছি। সিলিং ফ্যানটার দিকে তাকিয়ে আছি। জানো,,সিলিং ফ্যান টা অদ্ভুদ ভাবে ঘুরছে। আর,,,
- আমি আপনার কাছে এতো কিছু জিজ্ঞেস করি নাই। শুধু বলছি কোথায় আছেন। কি করছেন না করছেন জিজ্ঞেস করি নাই। যতটুকু প্রশ্ন করবো ঠিক ততটুকু উত্তর দিবেন। ওকে?
- আচ্ছা। আমি আমার রুমে আছি। কেন?
- এই পড়ন্ত বিকেলে কেউ রুমে থাকে ?
- এখন বিকেল? তুমি শিউর তমা? আমার তো মনে হচ্ছে সকাল। সকাল বেলার আবহাওয়া ও ঠিক এরকম থাকে।
- একদম কথা প্যাঁচাবেন না হেমন্ত ভাইয়া। এটা আপনার একটা বদ অভ্যাস। ঠিক সিগারেট খাওয়ার মতো।

কথাটা বলা হয়তো আমার ঠিক হয় না। তমার কন্ঠে রাগ বুঝা যাচ্ছে। সুন্দরী মেয়েদের রাগ বেশী। তাদের রাগ উঠলে তা শেষ হতে অনেক সময় লাগে। লং টাইম ব্যাপার-স্যাপার.।

- কি হলো কথা বলছেন না যে হেমন্ত ভাইয়া
- বলো তমা
- একটু ছাদে আসবেন ?
- কেন তমা?
- আপনাকে ধাক্কা দিবো তাই।

কথাটা বলে তমা হেসে দিলো। কাউকে ধাক্বা দেয়ার জন্য ফোন দিয়ে ডেকে নেয়া এই প্রথম দেখলাম। তা ও আবার হেসে হেসে বলছে। ভাবা যায়!

- কি হলো ভয় পেয়েছেন মিঃ হেমন্ত?

এবার আরো একবার চমকানোর পালা। তমা আমাকে প্রথম মিঃ হেমন্ত বলছে। আগে ভাইয়া বলতো শেষে আর এখন আগে "মিঃ" শব্দটা যুক্ত হইছে। রহস্যজনক!

- মিঃ হেমন্ত কথা বলছেন না যে ?
- আমার নামের আগে কিংবা পরে কিছুই নেই তমা। "মিঃ" শব্দটা ও নেই
- সেটা আপনে বুঝবেন না মিঃ হেমন্ত
- কেন? বুঝিয়ে বলো
- থাক বাদ দেন।
- আচ্ছা দিলাম
- ছাদে আসবেন না ?
- কেন তমা?
- ধাক্কা দিবো বলে
- মানে ?
- ভয় পেলেন মিঃ হেমন্ত?
- ভয় পাওয়ার ই কথা। তুমি আমাকে ধাক্কা দিলে আমার শরীর টা পড়বে নীচে কিন্তু রুহু টা চলে যাবে উপরে। তা শত চেষ্টা করে ও নামানো যাবে না
- ভয় পাইয়েন না মিঃ হেমন্ত। আমি আপনাকে আস্তে ধাক্কা দিবো
- আস্তে ধাক্কা দিলে কি আমি ব্যাথা পাবো না?
- আপনি কি আসবেন?

তমা"র কন্ঠে বিরক্তির ছাপ। সে কথাটা রিরক্ত হয়ে বলেছে। তাই যাওয়া ই উত্তম কাজ। ভয় পেলে চলবে না। তমা আমাকে আস্তে ধাক্কা দিবে। আস্তে ধাক্কা দিলে কম ব্যাথা পাবো।

ছাদে যাওয়ার সাথে সাথে দেখলাম একটি মেয়েকে। শাড়ি পড়ে দাড়িয়ে আছে। শাড়ির রং টা ঠিক ধরতে পারছি না। গোলাপি রং এর মতো কিন্তু গোলাপি না। মাঝামাঝি কিছু একটা। চুলগুলো ছাড়া। বাতাসে উড়ছে। মেয়েটা তমা।

তমা আমার দিকে তাকালো আজ তমাকে খুব সুন্দর লাগছে। মনে হচ্ছে আমি তমাকে প্রথম দেখছি। শাড়ি পড়া, চুলগুলো বিকেলেন মৃদু বাতাসে উড়ছে সাথে ঠোঁটের কোনে এক চিলতে হাসি। সবথেকে বড় কথা তমা হাসলে তার গালে একটা টোল পরে। সব মিলিয়ে তমাকে খুব সুন্দর লাগছে । যে কেউ দেখলে ওর সৌন্দর্যেরর ফাঁদর পড়ে যাবে।

-কি হলো মিঃ হেমন্ত কি দেখছেন?
-তোমাকে দেখছি
-আমাকে এই প্রথম দেখলেন বুঝি?
- হ্যাঁ
-কি?
- না মানে শাড়ি পড়ে এই প্রথম দেখলাম তোমাকে
-আমাকে কেমন লাগছে?
- সুন্দর
-ও

তমা হয়তো ভেবেছিলো আমি এর থেকে বেশী প্রশংসা করবো। বলবো খুব সুন্দর, অনেক সুন্দর কিংবা ইংরেজীতে যাষ্ট অসাম,সুপার্ব,বিউটিফুল এসব। কিন্তু আমি এসব বলি নাই। শুধু সুন্দর বলেছি।

তবে হ্যাঁ প্রশংসা একটু কম হয়ে গেছে। খুব সুন্দর বলার দরকার ছিল। কিন্তু সুন্দরীদের তার সৌন্দর্যের বেশী প্রশংসা করতে নেই। তাহলে তার মধ্যে একটা ভার চলে আসে। নিজেকে পৃথিবীর সেরা সুন্দরী ভারা শুরু করে দেয়। তাই একটু কম বলাই ভাল।

- পেঁচার মতো তাকিয়ে আছেন যে মিঃ হেমন্ত?
- কই না তো। পেঁচারা বড় বড় চোখ করে তাকিয়ে থাকে। আর আমার চোখ অতো বড় না যে চোখ বড় করে তাকিয়ে থাকবো।
- আপনাকে চোখ বড় বড় করা পেঁচার মতোই লাগছে

পরক্ষনেই চোখ দুইটা টুপ করেই বুজিয়ে ফেললাম। হয়তো তমাকে দেখে আমার চোখ দুটো বড় বড় হয়ে গেছে। আর তমার সেই পুরোনো অভ্যাস আমাকে পেঁচা বলা।

-কি হলো মিঃ হেমন্ত?
-কিছু না। বলো কেন ডেকেছো?
-বলতেই হবে?
-তোমার ইচ্ছা
-আচ্ছা বলছি। ওয়েট

তমা হাঁটতে হাঁটতে ছাদের শেষ মাথায় চলে যাচ্ছে। পিছন থেকে আমি দেখছি। তমা আবার লাফ দিবে না তো! তমা কে থামাতে হবে।

-তমা তুমি কি লাফ দিবে? আমি তোমাকে সাহায্য করবো লাফ দিতে ?
-হ্যাঁ। এদিকে আসেন হেমন্ত
- কেন তমা?
- ধাক্কা দিবো
- তাহলে থাক
- আসতে বলছি কিন্তু

আমি আস্তে আস্তে হেঁটে হেঁটে তমার কাছে যাচ্ছি। ধাক্কা খেতে যাচ্ছি। ভাবা যায়! ধাক্কা ও খাওয়ার জিনিস। ধাক্কাটা আস্তে দিবে এই ভেবে একটু সাহস লাগছে।

-আকাশের ওই দিকটায় তাকান
-তাকালাম
-কি দেখলেন মিঃ হেমন্ত?
-দুটি পাখি উড়ে যাচ্ছে একসাথে
-কোথায় যাচ্ছে বলতে পারেন?
-নীড়ে
-না। ওরা দূর কোন অজানার উদ্দেশ্যে যাচ্ছে
- তুমি পাখিদের ভাষা বুঝো তমা? ভালো তো। আমি শুধু কাকের ভাষা বুঝি। তারা আমাকে "কাকা" বলে ডাকে।
-রাগ উঠাবেন না কিন্তু। তাহলে কিন্তু সত্যিই ধাক্কা দিবো
-আচ্ছা ঠিকাছে

যাক বাঁচা গেল। তমার কথায় বুঝা গেল যে তমা আমাকে ধাক্কা দিবে না। হয়তো কিছু একটা বলবে। কথাটা শুনতে হবে।

-হেমন্ত?
-বলো তমা?
-একটা কথা বলবো
-হ্যাঁ বলো
-না কিছু না
-ও
-ওই পাখি দুটোকে দেখলেন?
-হ্যাঁ
-ওরা দুজন দুজনাকে ভালবাসে
-তুমি কিভাবে বুঝলে?
-বুঝা যায়

তমা মেয়েটা অনেক জ্ঞানী। পাখির ভাষা ও বুঝে। ভালবাসা ও।

-হেমন্ত?
-তমা তুমি কি কিছু বলবা?
-আমি উড়বো
-কিভাবে?
-পাখিদের মতো। সাথে থাকবে আরেকটি পাখি
-কিন্তু তোমার তো পাখা নেই তমা
-উড়তে পাথা লাগে না। মন লাগে। যা আপনার নেই
-ও
-এটা রাখেন। আমি যাই।

একটা সিগারেটের প্যাকেট দিয়ে তমা চলে গেল। সিগারেট প্যাকেট দেয়ার কারন আমি সিগারেট খাই।
সিগারেট এর প্যাকেট এ সিগারেট থাকার কথা। কিন্তু খুলে আমি তন্য তন্য করে খুজে ও কোন সিগারেট পেলাম না। তবে একটা কাগজ পেলাম। কাগজ টা খুললাম। হৃদয় আকৃতির সাদা কাগজ।
যাতে লেখা:- "আমার একটা পেঁচা আছে। আমি আমার পেঁচাটাকে নিয়ে আকাশে উড়বো। চলে যাবো দূর কোন অজানায়। কেউ পাবে না আমাদের। চলে যাবো দূরে,,,,অনেক দূরে,,,অনেক দূরে,,,,"






মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.