নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি খুব সাধারণ একজন মানুষ।হাজারো মানুষের ভিড়ে মিশে থাকা একজন।এইতো আমি!

কুর্দি আয়লান

মৃত্যুর জন্য বেঁচে আছি!

কুর্দি আয়লান › বিস্তারিত পোস্টঃ

\'খুন\'

২৩ শে এপ্রিল, ২০১৬ রাত ৯:৫২




সিগারেটের গোড়াটা অ্যাশট্রেতে পিষতে গিয়ে দেখলাম হাতটা কাঁপছে। মাথাটা হালকা ঘুরছে, ভেতরে কেমন একটা চাপ ধরা অনুভূতি। কাঁপা কাঁপা হাতে আরেকটা সিগারেট ধরিয়ে বারান্দায় গিয়ে দাঁড়ালাম। কষে একটা টান দিয়ে কায়দা করে ধোঁয়া ছাড়লাম। অস্থির ভাবটা কেন যেন কাটছে না কিছুতেই। অবশ্য এত তাড়াতাড়ি হয়ত কাটবেও না। কারণ কিছুক্ষণ আগেই আমি একটা 'খুন' করেছি। না, পাঠক, আঁতকে উঠবেন না। শুনতে খুব নির্লিপ্ত বা ভাবলেশহীন মনে হলেও ব্যাপারটা আমাকে যে একদমই নাড়াচ্ছে না তা নয়। বরং ভীষণভাবে অস্থির করেছে। স্বীকার করতে দ্বিধা নেই, এটাই আমার প্রথম খুন নয়, এর আগেও বেশ কয়েকবার খুন করেছি, খুন করে স্বভাববশত সিগারেট ফুঁকে তা বেমালুম ভুলে গেছি, এমনকি পরবর্তী খুনের পরিকল্পনা পর্যন্ত করেছি! তবে এই প্রথমবারের মত মাথা থেকে দূর করতে পারছি না কিছুক্ষণ আগের খুনটা। এমনকি ক্ষনিকের জন্য কি কিছুটা অনুতাপও উকি দিয়ে গেল না।


রাস্তার পাশের টং দোকানটাতে কয়েকটা ছেলে জটলা পাকিয়েছে। ওদের আড্ডার আওয়াজ ছাপিয়ে এখনো কানে ভাসছে রূপার আর্তচিৎকার, জীবন বাঁচানোর শেষ আকুতি। কতই বা বয়স হবে মেয়েটার! আঠারো কি বিশ হয়ত! জীবনের আরো কতটা পথ তো বাকিই ছিল ওর। বেঁচে থাকলে হয়ত বিয়েও করত ওর ভালবাসার মানুষটিকে। ঘরসংসার করত, ছেলেপুলে মানুষ করত। বৃষ্টি দেখলে হয়ত এক দৌড়ে গিয়ে ভিজতে শুরু করত অথবা ভরা জোছনায় থালার মত চাঁদ দেখে ছোট্ট কিশোরীর মত মুঠো পাকিয়ে ধরার চেষ্টা করত অথবা বিকট আওয়াজে বজ্রপাতের শব্দে হয়ত স্বামীর কাছে নিরাপদ আশ্রয় খুঁজত। মেয়েটার সাথে আমার পরিচয়, জানাশোনা মাত্র মাসখানেকের। এর ভেতরেই কেমন কেমন করে যেন এক অদৃশ্য বন্ধন তৈরি হয়ে গিয়েছিল। না হলে কি আর এই প্রথমবারের মত সব নিয়ম ভেঙে এত খারাপ লাগে! অনেকবারই অনেকের কাছে শুনেছি, জন্ম-মৃত্যু সবই নাকি উপরওয়ালার হাতে। কিন্তু এই প্রথমবারের মত মনটা তা মানতে সায় দিল না। নিধির মৃত্যুর দায়ভার কি পুরোটাই আমার উপর বর্তায় না!


চিন্তায় ছেদ পড়ল দরজার কড়া নাড়ার আওয়াজে। ওই মনে হয় প্রকাশক এসেছে! গত একমাস ধরে ঘুরঘুর করছে নতুন কোন লেখার জন্য। দরজার দিকে এগোতে গিয়ে চোখ পড়ল টেবিলের উপর রাখা পান্ডুলিপির শিরোনামের উপর, 'নিধির চোখে জল'। ফোঁস করে একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে ভাবলাম আজ মনে হয় পান্ডুলিপি না নিয়ে ব্যাটা নড়বেই না!

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.