![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
যে কাব্যে ছন্দ নেই,যে সাহিত্যে রস নেই,যে প্রবন্ধে শিক্ষনীয় কিছু নেই,যে দর্শনের নিতীগত দিক নেই,আমি উহাসমগ্রের পাঠক।বরাবরই স্রোতের বিপরীতে চলাচল করে আসছি।আমি নকল সায়ানাইডের ফাদে পরে পার পেয়ে যাওয়া এক যুবক !!!
রাত জাগার বদঅভ্যাস হয়েছে । মাস দশেক হতে চললো রাতে প্রায় ঘুমাই না । অনেকেই প্রশ্ন করে আমার কি এমন হয়েছে যে এত রাত অবধি জেগে থাকি । আসলে আমি নিজেও জানি নাহ , কেনো জানি ঘুমই আসে নাহ । আসলে তাদের প্রশ্নের উত্তর দিয়ে একটা লেখা লেখার জন্যে অনেক দিন ধরেই ট্রাই করেছিলাম কিন্তু মাথাটা যে একদম বৃদ্ধ হয়ে গেছে । আচ্ছা গল্প আকারে কিছু লিখি ; আমার আবার ব্যকরনগত জ্ঞানের সল্পতার কারনে গল্প কিংবা কবিতা লেখার সাহস একদম হয়ে ওঠে না । অন্ধকার খুব খারাপ একটা ব্যাপার , মানুষকে ইমোশোন্যাল করে তোলে । তাই একটা হ-য-ব-র-ল দিনের শেষের সন্ধ্যা দিয়েই শুরু করার চেষ্টা করে দেখি । দেখা যাক শেষ পর্যন্ত গল্প কিংবা কবিতায় রূপ নেয় নাকি আমার চিরায়ত অগোছলো নিয়ম বহির্ভূত সাহিত্য চর্চায় নষ্ট হবে বাবার টাকায় কেনা কিছু এফোর সাইজের পেপার ।
বয়সের হিসেবে যুবকই বলা চলে আমাকে । শরীরের দিক দিয়ে হ্যাংলা পাতলা একদম বাতাসে উড়ে যাওয়ার মতো অবস্থা আমার । সন্ধ্যার পরে আমার ক্লান্তিরা ক্লান্ত হয়ে আসে । আমার এই অদ্ভুত জগতের বিচিত্র রূপগুলো হরেকরঙা মুখোশ পরে বেড়াতে বের হয়। ফেল করার অপবাদ ঘোচাতে, পরীক্ষার পড়া করতে না হলে, প্রতিটা সন্ধ্যাই আমার জন্য লালন সামলিয়ে টেনিদা, ফেলুদা কিংবা শার্লক হোমস এর সাথে আড্ডায় মাতা। পলক না ফেলে কখনো কখনো চাঁদ দেখা, কখনো অমাবস্যায় ভাগ বসানো তারা আর কখনো অ্যাটমোস্ফিয়ারের আইনত অসভ্য অসংযমের দিকে চেয়ে থাকা ।
সব কিছু ফেলেই সেদিন বেরিয়েছিলাম রাতের ঢাকায় । রাতেও ব্যস্ততা কমে না এই নগরীর মানুষের । রাতের ঢাকার মানুষেরা দিনের শালিকের চেয়ে বেশি ব্যস্ত। ছোপ লাগা সন্ধ্যার ব্যস্ততা একটু অন্য ধরণের । দিনের আলোতে কাছে টানা নিষিদ্ধ এ শহরে । সন্ধ্যার পর শরীর আর মন দুটোই মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে শহরের ফিকে হয়ে আসা দূরত্বে । সোডিয়াম লাইটের ফুটপাথের পাশে কিংবা বৃক্ষের অভয়ারণ্যে । ত্রিচক্রযান টেনে নিয়ে যায় ভালোবাসাগুলো ।।।
স্বপ্ন গুলো পরিপূর্ণ বিবর্তনের স্বাদ পায়নি যাদের, তাদের কেউ পিছু থেকে লোভ চকচকে ইচ্ছে লুকিয়ে পিছন থেকে পলিসিমেকারদের মতো কমেন্ট ছুড়ে দেয় জোড়াশালিকদের দিকে - "মাল্টা তো সেইরকম রে - উহহহহহহ মামা সেই " ।
মেনে নিলাম সেটা তাদের হিংস্র আক্ষেপ কিংবা আক্ষেপের হিংস্র বহি:প্রকাশ মাত্র । তাদের ছেড়ে এগিয়ে গেলাম আর একটু সামনে দেখা গেলো একদল তরুণ গিটার বাজিয়ে গান গাচ্ছে। প্রচন্ড রকম হাহাকার না থাকলে নাকি গলায় দরদ আসে না। কিছু ধোঁয়ার উড়ে যাওয়া , ক্ষয়ে যাওয়া জীবনের কন্ঠ চিড়ে বেরিয়ে আসা সুর। এশার আযান কিছুক্ষণের জন্য বাজতে থাকে একঘেয়ে সুরে । মুয়াজ্জিন ডেকেই চলেছে বৃথা এসো কল্যাণের দিকে ।
আরো কিছুদূর এগিয়ে যাবার পরে দেখা গেলো , আমার সাথে সাথে রাত ও নামছে প্রবল আকারে । টাইম ইক্যুয়াল ডিসট্যান্স বাই ভেলোসিটিতে সময়টা দেখে নিলাম । আবাসের দিকে এগুচ্ছি । কারওয়ান বাজারের দিকটায় বিলাসী জীবনের ফাকে ; ঝাকার মাঝে বিছানা করে নিয়েছে কিছু মানুষ। একজন সাধারণ মানুষের তিন ভাগের একভাগ জায়গা নিয়ে প্রতিরাতে ঘুমুতে যায় তারা। ভোরের সূর্যকে আড়াল করার জন্য হাত দিয়ে চোখ ঢাকে । বিস্বাদ আলোর স্বাদ তবুও নিতেই হয় তাদের।
রাত বাড়ে,
মাংসের পসরা সাজিয়ে ।
আমাদের ভালো মানুষ রুপগুলো খসে পড়তে থাকে ,
আবেগি হতে থাকে সময় গুলো।
স্রষ্ঠা বিকারে ভোগেন সৃষ্টি মেলাতে গিয়ে ।
নরম বিছানা বালিশ গুলো পাপের আখড়ায় পরিণত হয়-
পাপ মানে প্রশান্তি ,
প্রশান্তি মানে উন্মাদনা ,
পূন্য মানে সুযোগের অভাব আর অভাবী সুযোগ ,
দুমড়ে মুচড়ে ছিড়ে যাওয়া ভালোবাসা বলা যায় ,
বলাযায় এটা নৈশ প্রেম।
ধোয়ামেশানো সময় ......
এক একটা লাশ হেটে বেড়ায় শহরের আনাচে কানাচে ।
অর্থনীতি বেশ চাঙা হয়ে ওঠে সূত্র না মেনেই।
গাছতলা আর লাশতলা সমান । সরে যায় কিছু মানুষ রাতের আঁধারে। আজকের রাত কালকের শোক সংবাদ। আকাশে কিন্তু তখনো চাঁদ থাকে । নিচের চাঁদ মুখগুলোর চিড়ে চ্যাপ্টা হয়ে যাওয়া রাত বিছানায় মিশে প্রতিবাদ জানায় । আমি জেগে থাকি তাদের কর্মকান্ডের স্বাক্ষী হতে ।
রাতের আবর্জনাগুলো পরিষ্কার করে নিয়ে যাচ্ছে পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা। কাকের সাথে ঘুম ভাঙে তাদের । বাতাস পরিষ্কার করে আকাশ, আর মুখে মাস্ক বেঁধে সভ্যতা পরিষ্কার করে ওরা । রাতের শকুনরা খোলস পাল্টাবে এখন ।
গোসল করে পরিষ্কার করবে দস্যুবৃত্তির চিহ্ন । বিছানার চাদর আর বালিশের কাভারগুলো পরিবর্তিত হবে । এয়ার ফ্রেশনারের গন্ধে চারিদিকে একটা সুফী ভাব ভর করবে। তারপর ভালোমানুষের দল ভেবে নেবে তারা ভালোমানুষ। শুধু রাত হলে তাদের মতিভ্রম হয়। ছেলেমানুষির কবর হবে ভালোমানুষিতে । স্লোগান ধরে এগিয়ে যাবে সভ্যতা গড়ার ।
কারো দেহে পুতে রেখে দেয়া অপরিশোধিত জিঘাংসার দাম স্থির অভিশাপে লেপ্টে যাবে ওদের শার্টে, ওদের বা পাশের অনুভূতিহীন প্রকোষ্ঠে । তারা ভাবে তাদেরও হৃদপিন্ড আছে । কী আশ্চর্য !! হৃদয় নেই যাদের তাদের প্রকোষ্ঠ-সারীর নাম হৃদপিন্ড হবে ক্যানো ?
জানালার পাশে একটা কাক কা কা কা কা করে চড়ুই দের জড়ো করে একযোগে ধিক্কার জানিয়ে যাবে।
ঘাসের উপর পড়ে থাকা,
কিছু পোড়া সিগারেটের টুকরো সাক্ষী দেবে রাতের ।
অগোছালো চুল,
রক্তজমাট চোখ বলে দেবে নৈশ উত্তেজনার গল্প ।
আচ্ছা সকাল হয়ে গেলো দেখি-
থাক আজ বাকীটা আর একদিন ,যেদিন গুছিয়ে কিছু কথা লিখতে শিখবো।
রাব্বি রহমান ,
১১ ডিসেম্বর , ২০১৪
সকাল – ৬ টা ২০ মিনিট ।
©somewhere in net ltd.